| 19 এপ্রিল 2024
Categories
গীতরঙ্গ

প্রকৃত কবি কি জন্ম ইনসমেনিয়াক । সৌরভ দত্ত

আনুমানিক পঠনকাল: 4 মিনিট

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,কবিতা সমগ্রের প্রথম খণ্ডের ভূমিকাংশে ভাস্কর চক্রবর্তী ‘কবিতা কবিতা নিয়ে…’ শীর্ষক রচনায় বলেছেন–“সারা পৃথিবীটাই কবিতা দিয়ে তৈরী, একেকদিন,ভেতরকার দরজা জানালাগুলো সব খুলে যায়। হালকা হয়ে যায় শরীর।যা-কিছুই আমি দেখি,শুনি,ঘ্রাণ পাই সহসা, মুহূর্তেই তা অভিনব হয়ে ওঠে আমার কাছে।” এরকম নিগূঢ় আত্মকথনের পরিশীলন বোধ আষ্টেপৃষ্ঠে বাঁধা পড়েছে তাঁর ‘শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা’ কাব্যগ্রন্থে।যে গ্রন্থের নির্মাণ শৈলীর সাথে ওতপ্রোতভাবে মিশে রয়েছে যাপন সংগীত ও প্রাত্যহিকতার দর্শন।লাল চুনির বিন্দুর মতো ফুটে ওঠা ক্ষরণজাত সে ভালোবাসার রক্তগোলাপগুলির সামনে কবিতা প্রিয় পাঠক,অনুরাগী,কবিদের মুগ্ধতার দৃষ্টিতে চেয়ে থাকতে হয়। ‘শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা’ গ্রন্থটি কবির প্রথম কিতাব।বইটি দায়িত্ব নিয়ে প্রকাশ করেছিলেন কৃষ্ণগোপাল মল্লিক।১৯৭১ সালের শেষদিকে গ্রন্থটি প্রকাশ পায়।বইটির প্রচ্ছদ ভাবনা ছিল গৌতম রায়ের।ভাস্কর চক্রবর্তীর স্বপ্নচারিনী কাব্যবিতানটিতে মোট চল্লিশটি কবিতা সন্নিবিষ্ট হয়েছে।

কবিতাগুলির গহীনে একটা অপূর্ব নির্যাস রয়েছে।মায়াময় আলোর গভীরে একটা সমাচ্ছন্ন স্পেসিফিক গ্যাভিটি তৈরি হয় যা ঘুমের জার্নাল হয়ে হরিদ্রাভ মৃত্যুর অক্ষর ঠোঁটে নিয়ে অবিরত ঝোলে–সেখানে শীতকালীন হিমেল বিষণ্নতা অদ্ভুত মিঠে এক তান জাগিয়ে তোলে।ভাস্করের পঙক্তিগুলির আঘ্রাণ নিতে নিতে পাঠক পৌঁছে যায় এক সুপারন্যাচারাল জগতে।কবিতা স্তর ছাড়িয়ে ছাড়িয়ে শাঁসটুকু খেয়ে নিতে ইচ্ছে করে জলদি জলদি।এ যেন তাঁর নিজস্ব স্বরের বুনোনে রেখান্বিত জীবনচরিত।গোটা বইটি শর্তহীন নিশ্বাসে পড়ে ফেলা যায়।এর প্রতিটি শব্দ তৈরি করে ভিন্নধর্মী অভিঘাত।মস্তিকের গোপনে রেখে যায় অনুপম স্বপ্নময়তার ডিম।উজ্জ্বল নির্ঝরিণী নেমে আসে মৌহূর্তিক প্রবাহে, একটা হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসার গল্প থেকে যায়–আর কিছু জৈবনিক পিছুটান।শব্দ খণ্ডের মধ্য লুক্কায়িত থাকে অখণ্ডের আভাস।স্মৃতিপ্রদ ধ্রুপদী চারণভূমি।বইটির নিবিড় পাঠ করতে করতে এক মায়াবী ভালোবাসা আহত করে পাঠককে।মেধাবী পাঠক,অনুজ কবিরা রক্তাক্ত হয় তাঁর অমোঘ ভাষাচয়নে।কবি উৎসর্গ করেছিলেন চিত্রপরিচালক,কবি বুদ্ধদেব দাশগুপ্ত’কে।গ্রন্থটির স্তরে স্তরে রয়েছে অন্তহীন কাব্যময়তার রূপদর্শিতা।প্রগাঢ় ঘুমের তির্যক আচ্ছন্ন হিমানীমালা।অনেকটা জীবনানন্দীয় বা শক্তি চট্টোপাধ্যায়ের ইমেজারির সাথে আনকনসাসলি মিলে যায় কবির মৃত্যুচেতনা।বইয়ের প্রথম কবিতার লাইনটিই বেশ চমকিত করে অনেকদূর পর্যন্ত ইনফ্যাচুয়েড ইশারায় টেনে নিয়ে যায়–“শেষ রাত্তিরের ঝড়ে আমার হলদে চাদর উড়ে গিয়েছিল,তোমাদের/বাগান বাড়ির দিকে–” কবিতায় বেশ রহস্য করে কথা বলতে ভালোবাসেন কবি।সেই রহস্যময়তার ধ্বনিই যেন চিরায়ত পুষ্পগুচ্ছ হয়ে ফোটে রোদের সান্নিধ্যে।কবিতাটির শেষ লাইনে নিজস্ব কনফেশনধর্মিতার ভাবনা বেশ অভিনব–“তুমি শীতের রাতের মতো শব্দহীন–আমার ভালোবাসা তোমাদের বাগানবাড়ি জানে।” কত সহজসাধ্য ভাষায় প্রেমজ এক্সপ্রেশনকে প্রকাশ করা যায় তা কবি জানেন।’চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে’ আমরা চারজন’ কবিতার হৃদস্পন্দে চারজন আসলে কারা এ প্রশ্নচিহ্ন রয়ে যায় অবচেতনে।কবিতার সমাপ্তি লাইনটি বেশ জোরালো ধাক্কা দেয় যার প্যারামিটারে বিন্যস্ত রয়েছে হতাশার অন্তর্জাল–“আমাদের স্বর্গ নেই স্যারিডন আছে।” স্যারিডনের মধ্যে থাকা নারকোটিক ক্যাফিন কি সারিয়ে দেয় প্রেমিক ভাস্করের নরক যন্ত্রণার দগ্ধলিপিগুলি?তবে কি কবির সামনেও দৃশ্যমান ছিল টি.এস এলিয়টের ওয়েস্টল্যাণ্ডের বন্ধ্যাভূমির ক্ষয়িষ্ণুতা? আমরা জানি না!বেঁচে থাকা কাকে বলে–আসলে পোস্টমাস্টারের মেয়ে গোলাপি যুবকের সাথে কাট মারার পর ‘বুকে কুঠার সইতে’ থাকা কবির সঙ্গীণ হৃদয় জুড়ে শুধু ধ্বংসের আর্তনাদ,ভেঙে যাওয়া স্বপ্নের চালচিত্র।দুঃখময়তার অগণিত সামগান।অন্য একটি কবিতায় তিনি কিছুটা নিজের প্রতি অবহেলা আর তীব্র শ্লেষাত্মক সুরে বলেন–“হাস্যকর তোমার অতীত–হাস্যকর তোমার ভবিষ্যৎ “।অর্থাৎ,আমাদের জীবনের সমস্ত দুঃখদায়ক ব্যথা হাসির মোড়ক দিয়ে ঢাকা।যা উন্মোচিত হলেই বেরিয়ে আসে ‘শতজল ঝরণার ক্রন্দনধ্বনি’।’ঘুমের মধ্যে’ কবিতাটির শরীরাভাসে দ্যোতিত হয় সম্পর্ক নিঃশেষিত হওয়ার নিদারুণ হাহাকার,জন্ম নেয় নিঃসীম ব্যর্থতা–“কোথাও নদী নেই–অথচ কোথায় যে পাড় ভাঙার শব্দ”।এভাবেই এক চরম অস্তিত্বহীন আঁধারতলিতে নিমগ্ন হন কবি যার অন্য নাম মৃত্যুকে ছুঁয়ে দেখা।আসলে তাঁর কবিতার নাচঘরে মৃত্যু আসে তন্দ্রালু চোখের মুদ্রায়।অনেকটা যেন জীবনানন্দের ‘শিকার’ কবিতার ব্যবহৃত চিত্রকল্প “হিম–নিঃস্পন্দ নিরপরাধ ঘুমে’র” মতো আক্ষরিক জায়মানতায়।কবির এই বইয়ের একটি কবিতার শিরোনাম ‘১৯৬৭’ যা বিশেষ কালস্রোতকে চিহ্নিত করে।মৃদু ভাষণ প্রবণতায় তিনি লেখেন–“এখনো আমি বেঁচে আছি ঘুরে বেড়াচ্ছি ভাবতেই অবাক লাগে কেমন–“এও ঠিক যেন জীবনানন্দ প্রোথিত বিপন্ন বিস্ময়ের ব্যক্তিগত বাকমিতি।নিজের থাকা বা না থাকা নিয়ে বেশ সন্দিহান কবি।ঠোঁটে ক্যাপিস্টান সিগারেটের টান,মেট্রোপলিসের নীল নিয়ন আলোর চোরাটান দেখে কোনমতে টিকে থাকা।সিগারেট কবির জীবনের অন্যতম সহায়ক উপাদান।কবিতা লেখার আলম্বন।আর মৃত্যুর পূর্বে অন্তিম সাধস্বপ্নে সিগারেট খাওয়ার বাসনা গোটা বিশ্ব সাহিত্যেই স্থান পেয়েছে।আলবেয়ার কাম্যুর আউটসাইডার এর নায়ক মোরসো তাঁর মৃত্যু নিদানের পূর্বে আগে একটা সিগারেট চেয়েছিল…কবি ও তাঁর অন্য একটি কবিতায় বলেছেন–“‘যখনই মৃত্যুর কথা মনে পড়ে, ইচ্ছে করে, সিগারেট ধরাই।” মৃত্যুর সঙ্গে সিগারেটে নিয়তিতাড়িত সংযুক্তি কবিকে চুম্বকের মতো টেনে রাখে–ইথারের ঘ্রাণে।

কবি ভাস্কর চক্রবর্তীর বিষাদগাথার প্রতিপর্বে যদিও কোনো ক্রিটিসিজম লুকিয়ে থাকে তা টেনে বের করা খুব মুশকিল কাজ।কবি অন্যরকম স্পেস তৈরি করেছেন বইটির মেটাফোরে।বইয়ের নাম কবিতা-‘শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা’ এই একটা লাইন যেন দুরূহ প্রস্তরফলক যা নিয়ে হাজার পৃষ্ঠা লেখা যায়।নেশাহত সন্ধ্যার পর সন্ধ্যা রক্তিম আলোচনা চলতে পারে।খুব আস্তে আস্তে পাঠ করতে হয় গোটা কবিতাটি শুধুমাত্র তার সারতত্ত্ব জানার জন্য।শীতকালের সাথে ঘুমের আচ্ছন্নতার নিবিড় সংযোগ রয়েছে।কবির এই লাইনটির সাথে যেন নিভৃত সঙ্গম ঘটে পাঠকের,যেভাবে কবি ভাস্করের অভিচিন্তনে আসে জীবনের সাথে মৃত্যুর ঘনিষ্ঠ মৈথুন মুহূর্ত। শীতকাল জন্মদিনের মাস,ক্রিসমাস ইভের সেই ‘দিনগুলি-রাতগুলি’ কবিকে হর্ষ জাগায়; আবার ক্লান্ত করে। ‘স্বপ্ন দেখার মহড়া’ তৈরি করে কবি ঘুমিয়ে পড়তে চান শ্যাডোর নিচে।সুপর্ণা এখানে প্রতীকচিহ্ন স্বরূপ।হয়ত কবির প্রিয়তমা, কিংবা উদ্ধত শাখার রডড্রেনডনগুচ্ছ। যার আঙুলের হিরণ্য স্পর্শে রয়ে গেছে ওষধিসুধা।সমস্ত জটিল সাইকোপ্যাথ অসুখ সেরে যাওয়ার প্রগাঢ় প্রতিশ্রুতি।কবিতাটির সূচনায় কবি লেখেন–“শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা আমি তিনমাস ঘুমিয়ে থাকবো–/প্রতি সন্ধায় কে যে ইয়ার্কি করে ব্যাঙের রক্ত ঢুকিয়ে দেয় আমার শরীরে”–কবিমানসী সুপর্ণার আগমন এখানে কবির লভ ব্যারোমিটারে কালের অনন্ত প্রবাহকে সূচিত করে; সান্দ্রতায় প্রশান্তির মিথ গড়ে দেয়।কবিপ্রেম প্রদাহী ম্যাডোনা মূর্তি হয়ে ওঠে।প্রতি সন্ধ্যায় ডুবন্ত সূর্যের আশ্লেষ রং ভাঙার খেলায় মাতে কবিকে নিয়ে যায় এক রেপ্টাইল পৃথিবীর অন্তর্লোকে।যেখানে তিনি নিজের রক্তকোষে ব্যাঙের হিমরক্ত অনুভব করেন।গোটা কবিতা জুড়ে ঘুমের মোহিনী আবরণ রচিত হয়।আসলে এখানে শীতঘুমের এক আকর্ষণীয় অনুষঙ্গ এসেছে।যা চমকিত করে; দোলা লাগায় পাঠক হৃদয়ে।অদ্ভুত এক আবহে ফুটে উঠেছে বন্ধুদের ঠাট্টা,মস্করার বৃত্তান্ত।প্রাচীনকাল থেকে ঘুমের সাথে কবিদের বিশেষ রিলেশন ওয়েভের সংযোগ রয়েছে।বিনিদ্র রাত জেগে দীর্ঘলেখা শেষ হওয়ার পর নার্সিসাসের আয়নার দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে অবসেশনে কবিদের পাংশু চোখে সহজে ঘুম আসতে চায় না।ক্রিয়েশনের উচ্চমার্গে অবস্থানরত কবিরা অ্যালজোলাম বা ক্লোনোজিপাম খেয়েও নেশার মধ্যে হঠাৎ জেগে উঠে ছুঁতে চায় –সুপর্ণার মুখ,চোখ,ঠোঁটের আস্তরণ।প্রাপ্তির মধ্যে কাজ করে চরম অপ্রাপ্তি,হতাশা–নিরন্তর একটা যুদ্ধ চলতে থাকে মৃত্যুর এক্সটেনশন কর্ডে।কবিতাটির সহজ স্বীকারোক্তি যেন চেরিব্লসমের মতো জীবনানন্দের বনলতা সেন,সুনীলের নীরার আঙ্গিকে যৌনতার স্পামাটিন জাগায়।কবির এই ইনসমেনিয়াক আচরণ অনেকটা ঠিক ‘আট বছর আগের একদিন’ কবিতার সেই আত্মহননপ্রিয় প্রেমিকের মেগাসিস্থেসিস স্বরের রিপিটেশন–“…অথবা হয়নি ঘুম বহুকাল–“।নির্দিষ্ট এই লাইনটির সঙ্গে কবির ‘শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণার’ এপিক বিষয় ভাবনা কোথাও ভ্যানিশিং পয়েন্টে মিশে যায়।সুদূরসঞ্চারী জোরালো কনট্রাস্টনেশ তৈরি করে শব্দভ্রূণের ছত্রে ছত্রে।কবিতাগুলি লিখতে লিখতে কবির মধ্যে তীব্র দহন কাজ করেছে।তাঁর খসখসে ঠোঁটে পুড়তে থাকা সিগারেটের নীল ধোঁয়ায় ধূমায়িত হয়েছে ঘর-গেরস্থলি।ইমেজিস্ট যাপন ‘শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা’ কবিতাটিকে সম্যক উজ্জ্বলতা দান করেছে।কবি দৈনন্দিন পারিপার্শ্বিকতায় যা দেখেন,তার সাথে নিজস্ব দর্শনের আলোক উদ্ভাসে রাঙা হয়ে ওঠে। এই পর্বের প্রতিটি কবিতাই যেন সিগনেচার কবিতা হয়ে উঠেছে।মনস্তত্ত্বের প্রিজমের ভিতর কবিতার সন্ধ্যারাগের টুকরো,টুকরো অসংখ্য ধূসর ছবি রয়েছে।আসলে কোনো কবির একটি পূর্ণাঙ্গ গ্রন্থ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা করা মুশকিল। কারণ আপেক্ষিকতার মোড়কে সজ্জিত থাকে কবির রহস্যময় স্বরভাষ।প্রতিটি শব্দ পরম ব্রহ্ম থেকে উচ্চারিত,সে শব্দের বিচ্ছুরণ ভাষার সিনট্যাক্সকে ভেঙেচুরে তছনছ করে দেয়।নিজেকে পোড়াতে পোড়াতে লেখেন রক্ত-অশ্রু মিশ্রিত আবেগপূর্ণ দহন লিপি। যদিও গ্রন্থটির কোরকে কোরকে অত্যাশ্চর্য এক গদ্য মাদকতা রয়েছে।যে কোন কবিতার বই’ই এপিকধর্মী।তার প্রতিটি লাইন তন্ময় হয়ে ধ্যানস্থ করতে হয়।পাঠককে স্বপ্নে-জাগরণে ইন্টারপ্রিট করতে করতে হয় ছন্দের চলন,প্রেমের বর্ণালী,মৃত্যুকুসুম,ভয়-ভীতি,হতাশার নিরেট কঙ্কালগুলিকে।’শীতকাল কবে আসবে সুপর্ণা’ একটি ইমাজিনেশন;পাগলকরা লাইন– যা জলের রেখার মতো বারবার ঘুরে ফিরে এসেছে গোটা কবির নিজস্বী স্ট্যাটাসে।শীতকালের জন্য কবির অপেক্ষা;অন্তহীন অপেক্ষা–অন্ধকার কুহক সরিয়ে কবে আসবে চিরনিদ্রিত ভালোবাসার সেই লাজ-রক্তিম সোনালি দিন–ঘড়ির কাঁটা আস্তে আস্তে সরে যায়–শীত আসলে তবেই তো বসন্তের কিশলয়ে আলোকিত হয়ে উঠবে প্রেমিক কবিতার মরাগাছ।

 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত