Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,soyla o vasan music-irabotee-gitaranga

গীতরঙ্গ: সয়লা ও মনসা ভাসান গান । সৌরভ দত্ত

Reading Time: 5 minutes

হাওড়া জেলার সয়লা ও মনসা ভাসান গানের প্রবাদপ্রতিম পুরুষ চন্দর ঠাকুর ও তাঁর পরিবার 

সৌরভ দত্ত

পল্লী বাংলার বৈশাখ-জৈষ্ঠ্য মাসে অথবা স্থান-কালভেদে বৎসরের বিভিন্ন সময়ে বাংলার নানাপ্রান্তে লৌকিক দেবদেবীর থানে বাৎসরিক পূজা উপলক্ষে সয়লা গান অনুষ্ঠিত হয়।বাংলা লোকসংস্কৃতির এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত শীতলার গান বা সয়লা গানে নৃত্য-গীত-বাদ্য ও অভিনয় পরিবেশিত হয়।ভক্ত বা পূর্ণ্যার্থীদের উপস্থিতিতে এই ধরণের পালাগান গাওয়া হয়।সয়লা গানের মূল পালাকার ও সহযোগী যন্ত্রশিল্পী তথা (হারমোনিয়াম,বাঁশী,ক্ল্যারিওনেট,বেহালা,মৃদঙ্গ,করতাল,ঝাঁঝর,ব্যাঞ্চো প্রভৃতি)যন্ত্রবাদন ও ধুয়া সহযোগে এই গান পরিবেশন করেন।পালাগানের মূল গায়ক গৈরিক বসন ধারণ করে মাথায় তিলক চন্দনের টিপ পরে গানের সাথে চামর দুলিয়ে দেবতার কাছে পুন্যার্থীর জন্য আশীর্বাদ প্রার্থনা করেন।সুপ্রাচীন কাল থেকেই লোকসমাজের মধ্যে হার্দিক মেলবন্ধনের জন্য এই সয়লা গানের উদ্ভব।মেয়েদের শৈশবে সই পাতানো থেকেই সই কথাটির উদ্ভব যার সাথে লা প্রত্যয় যুক্ত করে এক মনোরম শৈল্পিক বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের গূঢ় তান থেকেই সয়লা কথার প্রজনন।যুক্তি-তর্ক নির্ভর তরজার ক্ষেত্রেও সয়লার ধারা অনুসৃত হয়।শাস্ত্রীয় সংগীতেও এর উল্লেখ রয়েছে। দক্ষিণ মাজু গ্রামের চক্রবর্তী পরিবারের কিংবদন্তি পুরুষ  চন্দরঠাকুর ছিলেন এই গানের অসামান্য গায়ক।তাঁর জন্ম (১৬ই আষাঢ় মঙ্গলবার ১৩১৬ বঙ্গাব্দ)। চন্দনঠাকুর জীবিকার তাড়নায় একদা বর্ধমানে বেশ কিছু সময় কাটিয়ে ছিলেন।তিনি কাটোয়ার পাঁচালিকার নিরাপদ আচার্যের কাছে শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন।এবং বিখ্যাত কীর্তনীয়া কেশব গোস্বামীর কাছে তালিম নেন।বর্ধমানে সেলিমাবাদ অঞ্চলে আদি নিবাস থাকায় কেতকাদাস ক্ষেমানন্দের মনসামঙ্গলের ভাসান গান বা পাঁচালি আঙ্গিকের গান তার সংগীত চর্চার প্রধান মাধ্যম হয়ে ওঠে।যদিও পাঁচালি গানের শ্রষ্টা হিসাবে দাশরথি রায়কে ধরা হয়।বর্ধমান থেকে ফিরে তিনি দক্ষিণ মাজুতে সয়লা ও ভাসান গানের দল তৈরী করেন।পূর্বে হাওড়া জেলার উত্তর মাজু বারোয়ারিতলা সংলগ্ন পঞ্চানন্দ তলায়,মধ্য মাজু ওলাবিবি তলা,মধ্য মাজু মুখার্জি পরিবারের শীতলাবন্দনায়,উত্তর মাজু সত্যপীর তলায়,দক্ষিণ মাজু শিবতলা প্রভৃতি স্থানে প্রতি বছর সয়লা ও ভাসান গানের আসর বসত।ভাসান গান আসলে কেতকাদাস ক্ষেমানন্দ বিরচিত ‘মনসা মঙ্গল’ কাব্যের কাহিনি অবলম্বনে পরিবেশিত।ভাসান হল এক ধরণের পাঁচালি গান।ভাসান গানের মূল উপজীব্য -মনসা,শীতলারগান,মাণিকপীরের গান,সত্যপীরের পাঁচালি, ও ওলাবিবির গান।এর বিশেষ বৈশিষ্ট্য হল–অন্যান্য মাঙ্গলিক বা মঙ্গলকাব্য অনুসৃত গানের মতই এই গানের পরিবেশনায় দুজন খোল ও দুজন মন্দিরা বাদক থাকেন।পাঁচালি গানে ব্যবহৃত পাঁচটি বিশেষ ভঙ্গি –১.পা-চালি বা পদচারণা করে ঘুরে ফিরে গান করা। ২.হাব-ভাব সুর সহযোগে পদের সটীক ব্যাখ্যা।৩.লাচাড়িতে নৃত্য সহযোগে কন্ঠস্বর নিক্ষেপ ৪.বৈঠকী আড্ডার মেজাজে বা বসে বসে সঙ্গীতালাপ করা।৫.দাঁড়া কবিদলের মতো দাঁড়িয়ে দোহারের সঙ্গে সমবেত সুরে সঙ্গীত প্রক্ষেপণ।এগুলিই ভাসান গানে বহুল চর্চিত বিষয়।মধ্যযুগের পাঁচালি গানের প্রধান মাধ্যম ছিল-রামায়ণ,মহাভারত, এবং মঙ্গলকাব্যের কাহিনি সমূহ।ভাসান ও পাঁচালি গান প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে ড.শ্রীকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর ‘দাশু রায় ও তাঁহার পাঁচালি ‘ গ্রন্থে বলেছেন–“গানের আসরে চমক-প্রত্যাশা-পিপাসু কথার মারপ্যাঁচে রসগ্রহণে উৎসুক,একসঙ্গে ভাবাবেগে বিভোর ও উচ্চহাস্য উতরোল জনসংঘের ছবি লিখিবার সময় তাঁহার কল্পনায় সর্বদাই সীমা ছাড়াইয়া যাইত।বাঁধহারা শিল্পরীতির শাসনকে পদে পদে উলঙ্ঘন করিত।” মূলত জনসাধারণের মনোরঞ্জনের জন্য পাঁচালি গান গাওয়া হত।চন্দরঠাকুরও তাঁর ভাসান গান পরিবেশনের ক্ষেত্রে দর্শক সাধারণের মধ্যে এরকমই এক মিষ্টি সুরের আলিম্পন রচনা করতেন।চন্দরঠাকুরের ভাসান গানের সূচনায় গীত হত–

“ব্রহ্মার দুর্লভ রথ দিয়েছেন বাপে।

সেই রথে এসো দেবী পূজার মণ্ডপে।।

পুরাণ পবিত্র গাণ শুনহ পাঁচালি।

শ্রুতি করি গাই মোরা প্রেমেতে ভরি।।”

ঠাকুরদাস চক্রবর্তী’র পরবর্তী তিন প্রজন্মের উজ্জ্বল পুরুষ চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী(চন্দর ঠাকুর) মাজুর চংঘুরালি গ্রামের পণ্ডিত গোপাল চন্দ্র ভট্টাচার্যের কাছেও শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন।ভাসান গানে যন্ত্রানুসঙ্গে তাঁর দলে ব্যবহৃত হত

খোল,কর্ত্তাল,হারমোনিয়াম,বাঁশী,বেহালা,মণ্দিরা ও ক্যাসিও।লোকসংস্কৃতির স্বতন্ত্র্য ব্যক্তিত্ব চন্দ্রশেখর বিভিন্ন স্থানে পরিব্রাজন করে ভাসান গান গাইতেন।এই ধরণের গানে দুজন দুজন খোলও দুজন মণ্দিরাবাদক থাকতেন।তাঁর পুত্র ভাস্কর চক্রবর্তী বাঁশি বাজাতেন।খঞ্জনি বাজাতেন তরজাকার মোহন সিংহ।হারমোনিয়াম বাজাতেন রবিরতন রায়।এই দলে ক্ল্যারিওনেট বাজাতেন রাজকুমার রায়।বর্তমানে চন্দনঠাকুরের পরিবার বংশানুক্রমে এই ধারাকে বহন করে চলেছেন। তাঁর পুত্র দিবাকর চক্রবর্তীর মৃত্যু হলেও প্রভাকর চক্রবর্তী ও তাঁর পুত্র বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীর নিজস্ব সয়লা ও ভাসান গানের দল রয়েছে।বিশ্বজিৎ চক্রবর্তী সহকারী শিল্পী হিসাবে ধুয়ো গান পরিবেশন করে থাকেন।চন্দরঠাকুরের সয়লা গানের শৈলী একান্ত নিজস্ব।তৎকালীন সময়ে তাঁর পরিবেশিত সয়লা গানের বেশকিছু অংশ রেকর্ড করে দুরদর্শনে প্রদর্শিত হয়েছিল।তাকে বাংলা সয়লা ও মনসা ভাসান গানের কিংবদন্তি পুরুষ বলা যায়।তিনি বলেছেন-“তিনি সয়লাগানের আসরে  মনসামঙ্গল,চণ্ডীমঙ্গল,শীতলামঙ্গল,কৃষ্ণমঙ্গল,পঞ্চানন্দের গান,ওলাবিবির গান,মাণিকপীর,বদরসাহেব ইত্যাদি আরো অনেকে পালাগান করতেন।এর সাথে তিনি পাঁচালিগান ও গাইতেন।তাঁর সয়লা ও পাঁচালি গানে কীর্তনাঙ্গ শৈলীর প্রকাশ ঘটত খুব বেশি,বিশেষ করে কোনো পালাগানের করুণ ঘটনার বিবরণ ও দৃশ্য প্রদর্শনের সময়।”

সয়লা গানের উৎপত্তি নিয়ে মতপার্থক্য লক্ষ্যণীয়।কেউ বলেন মেয়েরা পরস্পরের মধ্যে সই পাতায়।তার সই কথাটির সাথে  ‘লা’ প্রত্যয় যুক্ত হয়ে (গ্রাম্য মেয়েদের বন্ধুত্ব সম্পর্কিত শৈলী হিসাবে )সয়লা গান বিকাশ লাভ করেছে।আবার অনেক লোকগবেষক মনে করেন সওয়াল >সয়াল কথাটি এসেছে সওয়াল-জবাব বা প্রশ্ন-উত্তর দেওয়া অর্থে লোকসংস্কৃতির আঙিনায় এই গানের প্রচলন আছে।পশ্চিমবঙ্গ পত্রিকার ২২শে এপ্রিল ১৯৮৩ সংখ্যায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে হাওড়া জেলার বিভিন্ন লোকউৎসবের খবরের মধ্যে চন্দ্রশেখর চক্রবর্তীর লেখা ভাসান গানের প্রক্ষিপ্ত অংশ–

“দেবতা সভায় আসি যেন নৃত্য করি সেকি/গায় যেন কোকিলের ধ্বনি/করে কংস করতাল আর সবে ভালে ভাল/ভালো নাচে বেহুলা সুন্দরী।”

সূত্র:’কৌশিকী বেলাভূমির ইতিকথা’-মাজু অধ্যায়-১ম খণ্ড/নারায়ণ ঘোষাল)।

চন্দ্রশেখর চক্রবর্তীর প্রয়াণ ঘটে ১৩৯৩ বঙ্গাব্দের ৬ই কার্ত্তিক।চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী তাঁর রেওয়াজ ও সুন্দর গায়কী কন্ঠ,গৌরবর্ণের সুরম্য দেহের জন্য দর্শক সাধারণের কাছে চন্দ্রঠাকুর বা চন্দর ঠাকুর নামে বহুল জনপ্রিয়তা লাভ করেছিলেন।সয়লা গানের ধুয়া পরিবেশনের সময় তাঁর উচ্চারিত সুর বারংবার পরিবর্তিত হত।এক রাগ থেকে আচিরেই পৌঁছে যেতেন আর এক রাগে।বাংলার বহু জেলার লোক সংস্কৃতির আঙিনায় তিনি সয়লা ও পাঁচালি গানকে পৌঁছে দিয়েছিলেন।কিন্তু সয়লা গানকে জীবনের জীবিকা হিসাবে গ্রহণ করলেও কখনও অর্থ উপার্জনকে সেভাবে গুরুত্ব দেননি।তৎকালীন সময়ের লোকসংস্কৃতি দপ্তর পরিচালিত কিছু অনুষ্ঠানে তাঁর সয়লা,পাঁচালি ও ভাসান গানের রেকর্ড দুরদর্শনে পরিবেশিত হয়েছে। তাঁর মৃত্যুর পর সুযোগ্য তিন পুত্রের মধ্যে দিবাকর চক্রবর্তী,প্রভাকর চক্রবর্তী ও ভাস্কর চক্রবর্তী এবং পরবর্তীকালে দিবাকর চক্রবর্তীর পুত্র শ্রীবাস চক্রবর্তী ও প্রভাকর চক্রবর্তীর পুত্র বিশ্বজিৎ চক্রবর্তীরা মনসা ভাসান ও সয়লা গানকে লোকঅঙ্গনের আরো উচ্চস্তরে নিয়ে যেতে আন্তরিক প্রয়াসী।আগে সারারাত ধরে পালাগান গাওয়া হলেও এখন মাত্র তিন-চার ঘন্টা গাওয়া হয়।বর্তমানে একটি অনুষ্ঠান করে পাঁচ-সাত হাজার টাকা সাম্মানিক পাওয়া যায়।বহুপূর্বে এইধরণের পালাগানের সাম্মানিক সেরকম ছিল না।ভক্তরা যে যা পারত খুশি হয়ে দিত।

চন্দন ঠাকুররের পুত্র সঙ্গীত শ্রষ্টা ও তন্ত্রসাধক ভাস্কর চক্রবর্তী :-ধ্রুপদী সংগীতের পুরোধা ব্যক্তিত্ব ভাস্কর চক্রবর্তীর জন্ম দক্ষিণ মাজু গ্রামে।পিতা-স্বর্গীয় চন্দ্রশেখর চক্রবর্তী ও মাতা-স্বর্গীয়া পদ্ম চক্রবর্তীর কনিষ্ঠ পুত্র।ছেলেবেলা থেকে গভীর ধর্মাচারণ ও সংগীত চর্চার আবহেই বেড়ে ওঠা।পিতা চন্দ্রশেখর চক্রবর্তীর সাথে পশ্চিমবঙ্গের  বিভিন্ন প্রান্তে মনসা,শীতলার ভাসান গানের পসরা নিয়ে যন্ত্রানুসংগীতের একজন দক্ষ পরিবেশক।শিক্ষাগত যোগ্যতা অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ।মার্গ সংগীতের আকর্ষণে মাত্র আঠারো বছর বয়সে যন্ত্রসংগীতের তালিম নিতে চলে গিয়েছিলেন লখনউতে।দীর্ঘদিন বাঈজি কুঠিতে যন্ত্রসংগীত পরিবেশন করেছেন।তিনি মনে করতেন প্রকৃত মানুষ হতে গেলে কলাবিদ্যা ও প্রেমানুভাব বাজায় রাখতে হবে।দু’বছর বেনারসে থাকার পর তিনি ফের দক্ষিণ মাজু গ্রামে ফিরে আসেন।সুলেমান খান তাঁর যন্ত্রসঙ্গীতে মুগ্ধ  হয়ে নিজস্ব সারেঙ্গি’টি ভাস্কর চক্রবর্তীকে প্রদান করেন।তাঁর যন্ত্রসংগীতে মুগ্ধ হয়েছেন ডালিয়া বাঈ,সাহানা বাঈ প্রমুখেরা। তাঁদের সাথে সঙ্গতে ভাস্কর চক্রবর্তী বিশিষ্টতা অর্জন করেছেন।তিনি একসাথে হারমোনিয়াম,তবলা,বাঁশি,দিলরুবা,সেতার,এসরাজ,পিয়ানো,কর্নেট,মৃদঙ্গ,ট্রামপেস্ট,পারকাশন,পাখোয়াজ,মেলোডিকা,গিটারের মতো প্রায় চল্লিশটি যন্ত্র বাজানোর দক্ষতা অর্জন করেছেন।তিনি ক্ল্যারিওনেটে তালিম নিয়েছেন তাঁর প্রথম শিক্ষাগুরু কালিপদ ঘোষালের কাছে।বাঁশের বাঁশী(ফ্লুট) শিখেছেন পান্নালাল ঘোষের কাছে।অর্গান,অর্কেডিয়ান,মেলোডিকা,পিয়ানোর তালিম গ্রহণ করেছেন প্রখ্যাত মন্ত্রী ভি.বালসারার কাছে।তবলা শিখেছেন বঙ্কিম সাউ,বেহালায় শিক্ষা গ্রহণ করেছেন অনিরুদ্ধ পাঠক,মানবেন্দ্র মুখার্জি প্রমুখের কাছে।ভারতের মুম্বাই,আসাম,লিডু,নগাঁও,ত্রিপুরা,শিলং,বেনারস,শিলচর,মেঘালয়,ডিব্রুগড় প্রভৃতি বিভিন্ন স্থানে মানভূমের ঝুমুর,ধ্রুপদী,ফোকগান,কেষ্টযাত্রা,ওয়েস্টার্ন মিউজিক প্রভৃতি গানের পসরা নিয়ে ঘুরেছেন।তিনি–“বাঁশিতে ভৈরবী থেকে শুরু করেস ট্রামপেটের সুরে দেশরাগ–মার্গ সঙ্গীতের নানা স্তরে তাঁর স্বচ্ছন্দ বিচরণ।”বর্তমানে তিনি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের লোকপ্রসার প্রকল্পের অন্তভূক্ত মাসিক বৃত্তি পাচ্ছেন।ভাস্করবাবুর কাছে রয়েছে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত এসরাজ।যেটি রবীন্দ্রনাথ একদা রবীন্দ্রনাথ অবীন্দ্রনাথের কন্যা সবিতা দেবীকে দিয়েছিলেন।পরবর্তীকালে সবিতা দেবী সেটি দেন অবনীন্দ্রনাথের সুযোগ্য ছাত্র চিত্রকর কালিপদ ঘোষালকে।কালিপদ ঘোষালের সাথে স্নেহভাজন সম্পর্কের সূত্রে ভাস্কর চক্রবর্তী বহু মূল্যবান এসরাজ’টি লাভ করেন।তাঁর কাছে প্রায় ২৫০ বছরের পুরনো একটি ক্ল্যারিওনেট রয়েছে যেটি অমৃতলাল ঘোষ প্রথম বাজিয়েছিলেন।সেটিও তিনি কালিপদ ঘোষালের থেকে লাভ করেছেন। ।বাপী লাহিড়ী তার যন্ত্রসংগীতে মুগ্ধ হয়ে তাঁর সাথে বোম্বেতে গিয়ে কাজ করার জন্য পত্র লিখেছিলেন।শুধুমাত্র যন্ত্রসংগীতেই তিনি আবদ্ধ থাকেননি রবীন্দ্র সংগীত,নজরুলগীতি,মনসা-শীতলার ভাসান গানেও তিনি সমান পারদর্শী।নিজগৃহে সংগীত চর্চার পাশাপাশি তিনি তন্ত্রমতে কামাক্ষ্যাদেবীর সাধনা করে থাকেন।দূর দূরান্ত থেকে বিভিন্ন ধর্মের ভক্তরা তাঁর কাছে আসেন।১৪০১বঙ্গাব্দ থেকে তিনি নিজগৃহের মন্দিরে কামাক্ষ্যা কালীমাতার পূজা-অর্চনা কৌলাচারে করে আসছেন।চন্দনঠাকুরের উজ্জ্বল উত্তরাধিকার বহন করে চলেছেন ভাস্কর চক্রবর্তী।শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তাঁর স্বরব্যঞ্জনা সকলকে মুগ্ধ করে।

(ঋণ স্বীকার:-

১.’পশ্চিমবঙ্গ’ পত্রিকা ১৯৮৩ সংখ্যা’ ৪০

২.’সঙ্গীত তরঙ্গ’ পত্রিকা শারদীয়া ২০০৭

৩.’আনন্দবাজার’ পত্রিকা ১৫ই ডিসেম্বর,২০১৫

৪.’কৌশিকী বেলাভূমির ইতিকথা’-মাজু অধ্যায়-১ম খণ্ড–নারায়ণ ঘোষাল

৫.শাস্ত্রীয় সঙ্গীতশিল্পী ভাস্কর চক্রবর্তীর সাক্ষাৎকার )

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>