বারো হাজার সিঁড়ি পেরিয়ে একটা প্রাসাদ তৈরি করা, এমন খেয়াল কারও মাথায় আসে! পাহাড়ের চূড়ায় প্রাসাদ বানানো! এই প্রাসাদের চূড়ায় চড়ে তো আর নামতে ইচ্ছে করবেনা। রাজা কিভাবে রাজকার্য পরিচালনা করতেন!
সেই বারো হাজার সিঁড়ি বেয়ে উপরে ওঠার জন্য মোটামুটি গোলাকার এক পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। পাহাড়টিকে এখন সবাই চেনে ‘সিগিরিয়া রক ফোর্ট্রেস’ নামে। সিগিরিয়া পড়েছে শ্রীলঙ্কার একদম বুকের মাঝে। ঘন জঙ্গল আর পাহাড়ি এলাকা। এখানে এসেছি কলম্বো থেকে। শ্রীলঙ্কার সব জায়গায় যে সমুদ্রসৈকত আছে তা নয় আর সব জায়গায় যে তাতানো গরম তাও নয়। ফেব্রুয়ারি মাসে এখানকার আবহাওয়া মনোরম। বেশ ঠান্ডা হাওয়া থাকে সারাদিন। রাতে সামান্য ঠান্ডা পড়ে৷ আশেপাশে পাহাড় থাকার কারণেই।
কলম্বো থেকে ১৮০ কিলোমিটার বাসে করে পাড়ি দিতে গতকাল সময় লেগেছিল সাড়ে চার ঘন্টা। রাস্তা ভালোই ছিল। ভেবেছিলাম কোনো শুনশান জঙ্গলের মধ্য দিয়ে বাস চলবে আর জঙ্গলের মাঝে বাস থামিয়ে দেবে হয় আদিবাসী অথবা কোন দস্যু অথবা তামিল টাইগার্স। আমি ভ্রমণে অ্যাডভেঞ্চার খুঁজি বাচ্চাদের মতো আর একেবারেই ভয় করে না যদি এমন গোলমেলে পরিস্থিতিতে পড়ে যাই।
পাহাড় চড়ার অভিজ্ঞতা আমার অনেক দিনের। রক ক্লাইম্বিং করেছি। তবে এখানে পাহাড়ের গা কেটে কেটে সিড়ি তৈরী করে দিয়েছে সরকার। রাজা সেই ৪৭৭ সালে ৬৫৯ ফিট উঁচু একপ্রস্তর খন্ডের মাথায় প্রসাদ দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। সেই থেকে আর পাহাড় চড়ার অভ্যেস করেছিল তাঁর বাহিনী কিভাবে কে জানে! পিচ্ছিল এক খন্ড বিশাল পাথরের পাহাড়।
আমাদের অবশ্য সিঁড়ি বেয়ে ওপরে ওঠার মতো মনোবল থাকলেই হল। খটখটে শুকনো পাথুরে পাহাড়ের চারপাশের সমতলের বাগানে এখন সবুজের সমারোহ। গাছপালা আর ঘাসের বিছানার সবুজের জলরঙের ক্যানভাস হয়ে রয়েছে। গতরাতের সামান্য বৃষ্টিপাতে এখন ঘাসের ডগার বিন্দু বিন্দু জল আর এ জগতের বলে মনে হচ্ছেনা। সতেজ নির্মল নিষ্পাপ শরীরে দুলে দুলে জলবিন্দুর ভারসাম্য রাখতে রাখতে স্বর্গীয় জলতরঙ্গ বাজাচ্ছে।
বাতাসের উল্লাস আর স্নিগ্ধতা দেখলে তো পাহাড় চড়া হবে না। আমাকে ছাড়িয়ে আমার পরে আসা ভ্রমণার্থীরা এগিয়ে গেছেন পর্বত পানে। আমিই বা কেন একলা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ঘাসপাতা দেখব। আমার মুখের ভাষা ট্যাক্সিচালক জয়রাম পড়তে চাইলেন। তিনি এই বিস্ময়কর অভিব্যক্তিকে ভীত হবার কারণ আর আমার সম্ভাব্য করুণ দশার কথা ভেবে বললেন, ‘সিস্টার, আমিও তোমার সাথে আসি তাহলে। আমি অনেকবার গিয়েছি কিন্তু তোমাকে একা ছাড়বোনা সিস্টার। অনেকটা পথ।’
হায় আমার বিস্ময়কর অভিব্যক্তি! চেহারার ছিরিছাঁদ এতই খারাপ যে লোকে আরেকটা মানে ভেবে নেয়৷ যাই হোক জয়রাম আন্না কে সাথে নিতে আমার আপত্তি নেই। গতকাল ডামবোলা বাসস্ট্যান্ডে দেখা। ডামবোলা শহরের হোটেলে আমাকে নামিয়ে দিয়ে এর পরের দু’দিন তাঁর ট্যাক্সি করে ঘোরার একটা ওয়াদা করিয়ে নিয়েছেন। আমিও ভাঙ্গাচোরা তামিলে এতক্ষণে তাঁকে আন্না বা বড় ভাই ডাকা শুরু করেছি। দক্ষিণ ভারতে থাকার সুবিধা হল চারটি ভাষার যে কোন একটি জানলে অন্যগুলো আপনা হতেই আয়ত্তে এসে যায়। আর সিংহালা তো তামিলের অন্য রূপ। যেমন কলকাতার বাংলা আর ঢাকার বাংলা৷
আমি আর আন্না চললাম। প্রথমে হেঁটে পাহাড়ের পাদদেশে। পাহাড়টির চারধারে এই বিশাল বাগান এবং চারকোনা ছক কাটা চ্যানেলের মতো জলাধার নির্মাণ করেছিলেন রাজা কাশ্যপ।
এরপর শুরু হল আমাদের সিঁড়ি বাওয়া। আশেপাশে অনেক ইউরোপ আমেরিকা থেকে আসা ট্যুরিস্ট। কয়েকজন পূর্ব এশিয়ার ভিক্ষু। পূর্ব এশিয়ার ট্যুরিস্টও প্রচুর।
৪৭৩ সালে রাজা ধাতুসেনা এর পুত্র কশ্যপ রাজাকে বলপূর্বক সরিয়ে নিজেই রাজ্যের ভার হাতে তুলে নেন। রাজার উত্তরাধিকারী ছিলেন রাজপুত্র মোজ্ঞালানা। কশ্যপ রাজপুত্র ছিলেন না। ছিলেন রাজার এক রক্ষিতার পুত্র। কিন্তু ক্ষমতার লোভে অন্ধ হয়ে রাজ্য দখল করে রাজাকে বন্দী করেন। এদিকে রাজপুত্র মোজ্ঞালানা প্রাণ ভয়ে পালিয়ে যান দক্ষিণ ভারতে। রাজা কশ্যপ পিতাকে চাপ দিতে থাকেন তাঁর অসীম রত্নভান্ডারের খোঁজ দেবার জন্য পিতা অনতিদূরে একটি বিশাল দিঘীর কাছে নিয়ে যান এই পুত্রকে এবং বলেন, ‘আমার রত্নভান্ডার বলতে যদি কিছু থাকে তাহলে তা এই দিঘী, আমি নিজ হাতে খনন করেছি জনগণের জলের অভাব পূরণ করার জন্য।’
রত্নের সন্ধান না পেয়ে রাগে দিগ্বিদিকশূন্য হয়ে কাশ্যপ পিতাকে হত্যা করেন।
আরো পড়ুন: সিগিরিয়া রক:রাবনের স্বর্গের সিঁড়ি
নিজের নিরাপত্তার জন্য দূর্গ তৈরি করলেন পাহাড়ের একদম চূড়ায়। পূর্বে রাজার প্রাসাদ ছিল অনুরাধাপুরায়। সেখান থেকে রাজধানী সরিয়ে নিয়ে আসা হল সিগিরিয়ায়। প্রসাদও তৈরি হল পাহাড়ের চূড়ায় পাহাড়ের মুকুটের মতো। কাশ্যপ রাজা হিসেবে রাজকার্য পরিচালনা করেছিলেন আঠারো বছর। আঠারো বছরে মোজ্ঞালানা নিজের সেনাবাহিনী তৈরি করেছিলেন দক্ষিণ ভারতে থাকাকালীন সময়ে। সময় এবং সুযোগ বুঝে আক্রমণ করেন কাশ্যপ বাহিনীকে। কিন্তু আশ্চর্যের ব্যাপার হল কাশ্যপের সেনাবাহিনীর পালটা আক্রমণ না করে মোজ্ঞালানার পক্ষ নেয়। রাজা কাশ্যপ বুঝে গিয়েছিলেন তাঁর পাশে এখন আর কেউ নেই। তাই তিনি নিজ দূর্গেই আত্মহত্যা করেন। কাশ্যপের মৃত্যুর পর রাজা মোজ্ঞালানা রাজধানী সরিয়ে নিয়ে যান পোলোনারুয়া নামক জায়গায়। আর এই স্থানটি বৌদ্ধ ভিক্ষুদের দান করেন মঠ হিসেবে ব্যবহার করবার জন্য। চতুর্দশ শতাব্দী অবধি এই মঠ ব্যবহারের ইতিহাস রয়েছে এরপর কোন এক অজানা কারনে স্থানটি লোক চক্ষুর আড়ালে চলে যায় এবং উনবিংশ শতাব্দী অবধি তেমন কোন খবর পাওয়া যায়না। ১৮৩১ সালে বৃটিশ আর্মির মেজর জোনাথন ফোর্বস পোলোনারুয়া থেকে ফেরার পথে এই ঘন জঙ্গলে আবৃত, অপরিচিত স্থানটি আবিস্কার করেন। তখন থেকেই এ স্থানটি প্রত্নতত্ত্ববিদদের অন্যতম আকর্ষণ হয়ে আছে এবং প্রায় অর্ধ শতক ধরে ভ্রমণ পিপাসুদের।
আমি নিজের মতো পাহাড়ের সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠতে লাগলাম। যতই উপরে উঠি সিঁড়ি ততই সরু হতে থাকে আর নীচের সবুজ জলতরঙ্গের মতো বনভূমি আরও উদারভাবে চোখে ধরা দেয়। সিঁড়িগুলো খাড়া নয়। ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে তৈরি করা হয়েছে যাতে চড়তে অসুবিধে না হয়, পাশে রেলিং দেয়া, শক্ত ইস্পাতের সিড়ি ও রেলিং তৈরি করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। তবে কাশ্যপ বাহিনী কিভাবে এই আস্ত খাড়া পাহাড় চড়তেন সে এখনও রহস্য হয়েই রয়ে গিয়েছে।
শত্রুপক্ষের যে কাউকে সিঁড়ির পেছনের জায়গা থেকে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করা যেত এবং আক্রমণ করা যেত।
পাহাড়ের সিঁড়ি চড়ে ওপরে উঠতে উঠতে মাঝখানে দাঁড়িয়ে দেখে নিলাম স্যান্ডস্টোনে তৈরি বিশাল আয়না, পাহাড়ের বাইরের দিকের দেয়ালের গায়ে খাড়াভাবে বসানো আছে। কাশ্যপ বানিয়েছিলেন চৌকোনা আকারে, এখন আকার বোঝা যাচ্ছেনা। পৃষ্ঠ ছিল চকচকে আয়নার মতো, যাতে করে যে কারো অবয়ব দেখা যায়, এখন অবশ্য চকচকে ভাব নেই, দেখে আয়নাও মনে হয় না, মনে হয় পাথরের দেয়াল। এটি তৈরি করা হয়েছিল মূলত দূর থেকে শত্রুদের চিহ্নিত করার জন্য।
আর কিছু সিঁড়ি পার হলে মিলবে রাজপরিবারের ব্যবহারের জন্য বিশাল আকারের পুকুর। মানুষের বাসার ছাদে সুইমিং পুল দেখেছি। পাহাড়ের উপরে পুকুর কাটা এই প্রথম দেখলাম। পাহাড় চূড়ায় ঘাপটি মেরে কয়েক সপ্তাহ বসে থাকলেও ক্ষতি নেই দেখছি। পুকুরের অপর পাশে রাজার সিংহাসন, পাথরের তৈরি। দেখতে আমাদের দেশের পুকুর ঘাটে বাঁধাই করা বেঞ্চের মতো, তেমন বিশেষ কোন অলংকরণ দেখা যাচ্ছে না। হয়তোবা এক সময় এর উপর গদি বিছিয়ে রাজা বসে রাজকার্য পরিচালনা করতেন। এখন সেই সিটে দর্শনার্থীর বসা বারণ। একই তলায় অপর পাশে পাথরে সিংহের বিশাল আকারের পায়ের পাতা খোদাই করা আছে। সিগিরিয়া শব্দটি এসেছে সিমহাগিরি শব্দ থেকে যার অর্থ, সিমহা মানে সিংহ আর গিরি মানে পর্বত, সিংহ পর্বত।
বাকি পথ সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠতে গেলে অনেকেরই খানিক হাঁপ ধরে আসতে পারে। আমাকে তখন প্রাসাদ দেখার নেশায় চেপেছে। আমি লাফিয়ে লাফিয়ে সিঁড়ি পেরোচ্ছি যেন এখনই না পৌঁছাতে পারলে ফুরিয়ে যাবে। পেছনে কোথায় যে আন্না পড়ে রয়েছেন সে খেয়াল নেই।
প্রাসাদের প্রবেশদ্বারটি সরু। ভেতরে ভেবেছিলাম রাজকীয় কারুকাজের সমারোহ দেখতে পাব। ভেতরটা একটা গুহার মতো। কয়েকটি কক্ষ আছে, ফাঁকা। কোনটা কি কক্ষ তা এখন বলবার জো নেই। তবে যে কারণে হাজার হাজার ভ্রমণার্থী হাজার মাইল পার হয়ে আসে সিগিরিয়ায় আসেন তার কারণ হল প্রসাদের ভেতর দেয়ালের কিছু অমূল্য চিত্রকর্ম। পঞ্চম শতাব্দীতে আঁকা চিত্রকর্মগুলো এখনও বলে সে সময়কার শিল্প সংস্কৃতির গাঁথা। দেয়ালের চিত্রগুলো সবই নারীর। দেখা যাচ্ছে কেউ পূজোর থালা হাতে এগিয়ে যাচ্ছেন বা কেউ সখীর সাথে কি যেন মনের কথা কইছেন। সবার মাথা, কান, গলা, হাত অলংকারে ভূষিত। সব নারীর উর্ধাঙ্গে বসন নেই, শুধু নিম্নাঙ্গ বসনাবৃত।
শ্রীলঙ্কায় সে সময় নারীদের উর্ধাঙ্গ আবৃত রাখা চল ছিল না। আর অলংকারের বৈচিত্র থেকে সে সময়কার গয়নার ব্যাপারে ধারণা করা যায়। অনেকে এই গুহাচিত্রকে ভারতের অজন্তা গুহার চিত্রের সাথে মিলিয়ে দেখেন। কিছু মিল অবশ্যই খুঁজে পাওয়া যায় অঙ্গভঙ্গিতে। প্রায় হাজারখানেক চিত্রের মাখে মাত্র কুড়িটি চিত্র এখন রয়েছে দেয়াল আকড়ে।
গুহার ভেতরে অন্ধকার অথচ বাইরের আকাশ পরিস্কার। গুহার এক ধাপ উপরে পাহাড়ের ছাদ। এখান থেকে দিগন্তে বহু দূর অবধি দেখতে পাওয়া যায়। সবুজে চোখের আবেশ আনে।
এই স্থানটি রাজা কাশ্যপের জন্য বিখ্যাত নয়। এ স্থানটি পরে বিখ্যাত হয়েছিল প্রায় এক হাজার বছর ধরে বৌদ্ধ মঠের উপস্থিতির কারণে। যদিও রাজা কাশ্যপ এটি নির্মাণ করেছিলেন কিন্তু ভিক্ষু এবং সকল দেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা এখানে আসেন পূজো দিতে, পূন্য লাভের আশায়।
যদিও রাজার আমলের বা মঠে চোখে পড়ার মতো উপস্থিতি নেই তবুও ধর্মের টানে বা নেহাতই কৌতুহলবশত অথবা ভ্রমণ পিপাসা মেটাতে খুঁজে নেন এক বেলা এই দুর্গম গিরি পথ পারি দেবার।
যে স্পিডে উপরে উঠেছি, নীচে নামতে সময় ব্যয় হল তার চেয়েও কম। নীচে নামার পথ খানিকটা ঝুঁকিপূর্ণ। এরই মধ্যে সাথে আনা জলের বোতল খালি হয়ে গিয়েছে। টেম্পল কমপ্লেক্সের ভেতরে কোন দোকান বা ফেরিওয়ালা নেই। এই ব্যপারটা ভালো লাগল৷
শ্রীলঙ্কা দেশটিও বেশ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন বলেই মনে হল।
মেইন গেইট গলে বেরিয়ে ট্যাক্সিতে বসেই আন্নাকে বললাম, ‘পানি খাব।’
আন্না বললেন, ‘অনতিদূরে পথে থামব।’
এখনকার দৃশ্য বর্ণনাতীত। চারিদিকে ঘন জঙ্গল, কান পাতলে শেয়ালের ডাক শোনা যাবে। জঙ্গলের মাঝে পিচঢালা পথ। দু একটা বাঁদর এদিক সেদিক ঘুরে বেড়াচ্ছে। আর এই শুনশান নীরব পথের মাঝখানে ভয়ঙ্কর চেহারার একটি লোক সাদা হাফ শার্ট আর সাদা লুঙ্গি পরে হাতের দা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে৷ আমি ভাবলাম, এই তো শুরু অ্যাডভেঞ্চার। এ নিশ্চয়ই ফরেন টুরিস্ট পেয়ে কিডন্যাপ করবে আর মুক্তিপণ দাবী করবে।
কিন্তু আন্না একটা কথা না বলে চুপচাপ গাড়ি পার্ক করলেন একপাশে। আর সেই দস্যুমার্কা লোকটি পথের পাশে রাখা ডাবের পাহাড় থেকে একটা ডাব নিয়ে আমার হাতে দিল।
লোকটি ছিল ডাব বিক্রেতা।
পর্যটক, কথাসাহিত্যিক
জন্ম ঢাকায়। বেড়ে উঠা ব্যাঙ্গালোরে, পড়াশোনা ব্যাঙ্গালোর ও সিঙ্গাপুরে।
পেশায় ফিন্যানশিয়াল অ্যানালিস্ট।