| 19 এপ্রিল 2024
Categories
গল্প সাহিত্য

শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের গল্প : শিয়ালদা কেমন আছে?

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

লেখক পরিচিতি – শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়- (১৯৩৩ – ২০০১) প্রখ্যাত বাংলা সাহিত্যিক। বহু উপন্যাস ও ছোট গল্পের স্রষ্টা। সাহিত্য আকাদেমী পুরস্কার পান ১৯৯৩ সালে ‘শাহজাদা দারাশুকো’ উপন্যাসের জন্য। শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখার ভূগোল কখনো একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপে থেমে থাকেনি। আকাশ চাটা বাড়ির হাই এক্সিকিটিভ থেকে শুরু করে ইঁদুরের গর্তের ধান চুরি করা মানুষও তাঁর বিষয় হয়েছে। প্রেমে এবং প্রেমহীনতায়, বিষাদে এবং আনন্দে তিনি সব্যসাচী। জীবনের নানা বাঁকে লুকিয়ে থাকা মজা, বিপন্নতা, আলো-অন্ধকারে তিনি সমান সাহসী, একই রকম বেপরোয়া – এসবই তাঁর লেখায় উঠে এসেছে।



হৃদয়লাল খেতে বসে জানতে চাইলেন, এ মাছের দাম কত?

তার ছেলে অশোক বলল, দাম জেনে কি হবে? খেতে বসেছ খাও। অশোকের নতুন বিয়ে-করা বউ নন্দা মাথার ঘোমটা টেনে বলল, দাম জেনে কি হবে বাবা? আরেকখানা দেব?

না না-বলে ছেলের বউকে থামালেন হৃদয়লাল। এই হজম হোক আগে।

অশোক খেতে খেতে ফোড়ন কাটল, দাম শুনলে এও হজম হবে না। কথাটা নন্দাকে লক্ষ করেই চাপা গলায় বলা। কিন্তু সে কথাও যে হৃদয়লাল শুনতে পাবেন–ভাবতে পারেনি অশোক।

হৃদয়লাল ভাত খাওয়া বন্ধ করে এঁটো হাতে সিধে হয়ে বসলেন। ছোট ডাইনিং টেবিল। এতদিন অশোক আর হৃদয়লাল মুখোমুখি বসে এসেছেন। এখন খেতে বসলে নতুন সঙ্গী নন্দা। সে জানতে চাইল, কি হল বাবা?

কত দাম?

শুনবেই?–বলে অশোক জানাল, পঞ্চান্ন টাকা করে তিনশ’ এনেছি–ষোল টাকা পঞ্চাশ।

সের আড়াই টাকা কাটাপোনার সময়ে স্কুল থেকে রিটায়ার করে আর বাজার যান নি হৃদয়লাল। তিনি তিনশ’ গ্রামের দাম শুনে হেসে ফেললেন, তোর জন্মে দাই নিয়েছিল সাকুল্যে ছ-টাকা।

বেশ চাপা গলায় অশোক রসিকতা করল। শুধু নন্দাকে শোনাবে বলেই। সস্তায় কাজ সেরেছ! তাই তো মা অসময়ে চলে গেল–

হৃদয়লাল এবার শুনতে না পেয়ে জানতে চাইলেন, কি বললি?

বলছিলাম–পাঞ্জাবীর কাপড় তো অনেকগুলো পেলে। বিয়ে, পুজো, পয়লা বৈশাখ মিলে কম পাও নি। বিকেলে নন্দার সঙ্গে বেরিয়ে মাপ দিয়ে এস–

অশোকের ঘুরিয়ে দেওয়া কথার শেষটুকু শুনে হৃদয়লাল বললেন, না। আমার দত্তপুকুরের টেলারিংয়েই দেব।

ওঃ! তোমার সেই ছাত্রের দোকানে-

হৃদয়লাল ভাত ভেঙেই কথা বলতে লাগলেন। তড়বড় করে। তার মানে স্রেফ আন্দাজে। কেননা- এসব তিনি কিছুই শুনতে পাননি। প্রথমেই বললেন, তোদের কলকাতায় সবই গলাকাটার দর।

অশোক বলল, তোমার ছাত্রের দোকান তো! এখনো দু-টাকাই পাঞ্জাবি সেলাই নেবে তোমার কাছ থেকে। সেই আশায় বসে থাক।

এবারও কিছুই শুনতে পাননি হৃদয়লাল। তুব আনকোরা ছেলের বউয়ের সামনে কিছু একটা বলতে হয়। তাই তিনি চোখ কপালে তুলে জানতে চাইলেন পঞ্চান্ন টাকা মাছের কেজি। তুই কত টাকা আয় করিস?

অশোক তার ছোটছেলে। অন্য ছেলেরা অশোকের চেয়ে বেশি মাইনের চাকরি করে। তারা তাদের বিপত্নীক বাবাকে এড়িয়ে গিয়ে আলাদা সংসার পেতেছে। সে-কথা মনে পড়তে অশোক খেপে উঠে বলল, আমার চেয়ে যারা বেশি মাইনে পায়–তারা তো বিজয়ার প্রণাম করেই কেটে পড়ে!

এ-কথাও শুনতে পেলেন না হৃদয়লাল। তার পৃথিবীতে শব্দ বড় কম। পাড়ার কুচো মস্তানরা পেটো ফাটালে শুনতে পান। আর শুনতে পান মাইক বাজলে। কিংবা ভাসানের তাসা পার্টির আওয়াজ।

নন্দা অশোককে চোখ টিপল। মুখে বলল, বাবাকে ও ভাষায় কথা বলে না।

মুখ মুছতে মুছতে অশোক বলল, না–বলবে না। সব জানে বুড়ো। পেনশন পাচ্ছে প্রায় চল্লিশ বছর–পেনশনই তো পাচ্ছে আগের চেয়ে এখন তিনগুণ। তা জিনিসের দাম বাড়বে না?

অশোক অফিসে চলে যেতে পাশের ঘরে নতুন বিয়ের নতুন পালঙ্কে গিয়ে নতুন বউ ঘুমিয়ে পড়ল। শ্বশুর আছে। স্বামী আছে। ভাসুর জা সব কলকাতায় ছড়িয়ে ছড়িয়ে আছে। ননদদের বিয়ে অনেকদিন হল হয়ে গেছে। শাশুড়ি স্রেফ দেওয়ালের ফটোতে। ঠিকে ঝি, কাজের মেয়ে -দুজনই কাজ তুলে দিয়ে বাড়ি গেছে।

হৃদয়লাল রোদে পিঠ দিয়ে কাগজ দেখলেন সকালের। তারপর এই চল্লিশ বছর ধরে সকাল, বিকেল, সন্ধে-যা করে আসছেন তাতে নেমে পড়লেন। এটাই এখন তার বড় কাজ। বছরের পর বছর তিনি পদ্মছন্দে মহাভারত অনুবাদ করে আসছেন। কলম ধরলেই একরকমের ছন্দ নাচতে নাচতে এসে নিবে ভর করে। অনুবাদে অনুবাদে তক্তপোশের তলাটা বোঝাই। শেষে র‌্যাক বানাতে হয়েছে। দীর্ঘকাল মহাকাব্যের অলিতে-গলিতে ঘুরতে ঘুরতে হৃদয়লাল এখন নিজের জীবন, মানুষের জীবন, পৃথিবীর জীবন পরিষ্কার জীবন পরিষ্কার দেখতে পান। ছন্দে একটা মাইকেলি চাল চেলে তিনি আলাদা একটা আনন্দ পান।

অর্জুনের প্রতিজ্ঞা ( দ্রোণ পর্ব)
ত্রয়োদশ দিবসের রণ যবে হল
শেষ। দিন-মণি গেল চলি ক্লান্ত দেহে
অস্তাচলে, ক্ষণ কাল লইতে বিশ্রাম।

এই অব্দি লিখে হৃদয়লাল থামলেন। দিনমণি তো চিরকালই অস্তাচলে যায়। ঠিক এখন ঘরের বাইরে, দিনমণির কী দশা একবার দেখি না কেন? বাইরে বেরিয়ে দেখলেন-ঝকঝকে রোদ। সারা পাড়া খাঁ খাঁ। তার বয়সী কোনো লোক এ-পাড়ায় নেই যে তার সঙ্গে গিয়ে তিনি বসতে পারেন। দুটো রাস্তা পরে শিকদার লেন থেকে মন্মথবাবু আসতেন বিকেল বিকেল। হৃদয়লালের চেয়ে সাত বছরের বড় ছিলেন। খুব সাবধানী লোক। বৈশাখ মাসেও গলায় মাফলার। তা তিনিও ওপরে চলে গেছেন।

আচমকা কী মনে হল হৃদয়লালের। বেলা তো বেশি নয়। পাশের ঘরে বউমা ঘুমিয়ে। গায়ে জামা গলিয়ে রাস্তায় নামলেন হৃদয়লাল। কাঁধের ঝোলায় সারা বছরের উপহার পাওয়া পাঞ্জাবির কাপড় সব। ছেলেরা দিয়েছে। মেয়েরা দিয়েছে। দিয়েছেন নতুন বেয়াই। কাপড়ের জুতো গলিয়ে নিজের ঘরের দরজার বাইরে থেকে তালা দিলেন তিনি। এই ব্যবস্থাই আজ ক-বছর অশোকের সঙ্গে। বিয়ের আগে অশোকও তাই করত।

শিয়ালদা কেমন আছে?

কতকাল এ স্টেশনটায় যাওয়া হয় নি হৃদয়লালের। এই স্টেশন দিয়েই একদিন তিনি দেশভাগের পর কলকাতায় ঢোকেন। চাকরির শেষদিনটায় এই স্টেশন দিয়েই তিনি দত্তপুকুরে গিয়ে উঠেছিলেন। তখনো স্কুলে স্কুলে সংস্কৃত ছিল। এখনকার মত এমন করে তুলে দেওয়া হয় নি তখনো। আর হৃদয়লাল ছিলেন সংস্কৃতের হৃদয় স্যার।

বেলা তিনটে নাগাদ দত্তপুকুরে গিয়ে নামলেন তিনি। স্টেশন, প্ল্যাটফর্ম, বাইরের রাস্তা সব পাল্টে গেছে। তখন রেলের হ্যারিকেনে সন্ধের পর আলো জ্বলত। এখন বাইরের রাস্তাতেও নিওন আলো।

শ্রী টেলারিং খুঁজে বের করতে দেরি হল না হৃদয়লালের। স্টেশন ছাড়িয়ে লেবেল ক্রসিংয়ের গায়ে স্কুল। ক্রুসিংয়ের ওপারেই বাজার। বাজারের গায়ে পুকুরপাড়ে বাঁশের চ্যাটাই-ঘেরা শ্রী টেলারিং। বাইরে মাচায় ঘষা কাচের চশমা চোখে একজন লোক পা তুলে বসেছিল। হাঁটু বের করে। ঘরের ভেতর থেকে পা-কলের একটানা ঘর ঘর। একটা মশারির মটকা সেলাই হতে হতে একা একাই দোর ছাড়িয়ে দুব্বো ঘাসে পড়েছে। হৃদয়লাল জানতে চাইলেন, শ্রীধর আছে?

চশমা চোখে লোকটি মুখ তুলে বলল, আমি শ্রীধর। কে আপনি?

নিজের আবছা দৃষ্টিতে হৃদয়লাল বুঝলেন, এই শ্রীধর বিশেষ দেখতে পায় না। মুখে বললেন, তুমিই সেই শ্রীধর-

আজ্ঞে। আপনি কে তা তো বুঝি না।

অনেক্ষণ চুপ করে থেকে একটা বড় ‘ওঃ’! বলেই শ্রীধর লোকটি মাচা থেকে নেমে দাঁড়াল। চিনতে পারিনি স্যার। চোখে ছানি এসে-

কাটাওনি কেন? বলে মাচায় বসলেন হৃদয়লাল। কটা জামা বানিয়ে দিতে হবে যে-

আমি তো আজকাল আর বানাই না স্যার।

তোমার কল তো চলে দেখছি।

তা চলে স্যার। সেই বছর সাত-আট আগে এসে একবার বানিয়ে নিয়ে গেলেন। সেবার আমি পৌঁছে দিয়েছিলাম।

এবারও দিতে হবে।

সেই বাড়িতে আছেন তো। ভাইপোটাকে পাঠাব তাহলে।

ও-কথায় মন না দিয়ে হৃদয়লাল বলতে লাগলেন, পাশ করে বসে আছ। বললাম-একটা দর্জির দোকান দাও। নিজে কাজ শেখো। তা খারাপ হয়নি। কি বলো-

চলে যাচ্ছে স্যার। কলেজে পড়ার পয়সাও ছিল না। আর পড়লে জায়গা-জমিও দেখা হত না। পথে ভেসে যেতাম।

একটু পরে মাপ নিতে নিতে আর দিতে দিতে কথা হচ্ছিল দুজনে। মাপ বিশেষ কিছু নয়। একটা ফিরে হাতে অন্ধ শ্রীধর। মাথার ওপর বটগাছে পাখি ফল খেয়ে বিচি ফেলচে নিচে। ছাগল চরছে গাছতলায়। বিকেল হবে বলে জায়গাটা জেগে উঠেছে। ছাগলটা বাংলা বুঝলে সে এইসব কথা জানতে পারত-

স্কুল তো বারো ক্লাস হয়ে গেছে স্যার।

ভাল।

অশোক বড়টি এখন?

বিয়ে করেছে।

তাই নাকি।

হু। আমিওই পুকুরপাড়ে ঘরভাড়া করে থাকতাম। তা ওখানে তো দেখছি এখন পাকাবাড়ি।

স্কুল কোয়ার্টার হয়েছে স্যার।

ভাল করে মাপ নাও। বউমা বলে আমার সব পাঞ্চাবি নাকি পাশ-বালিশের খোল।

সে আপনার ভাবতে হবে না।

সে আমি জানি শ্রীধর। মোহিত বিশ্বাস-রোল টুয়েলভকে মনে পড়ে? ঢ্যাঙা মত-শিবনিবাস থেকে নদী পেরিয়ে স্কুলে আসত?

খুব মনে আছে স্যার। আপনার কথায় তো ডেন্টিস্ট হল। এখন বনগ্রামের মতিগঞ্জ বাজারে চেম্বার খুলেছে।

ওর কাছে একবার দাঁত তুললাম। বছর কুড়ি আগে। তা এমনই দাঁত বাঁধিয়ে দিল-সজনে ডাটা চিবিয়েও ফিট হল না। এখনো জলে ভেজানোই থাকে।

জামা নিয়ে ভাববেন না স্যার।

দাঁত তোলা বলো–পাঞ্জাবি মাপ দেওয়া বলো–এখনো ছাত্রদের কাছে ছুটে আসি কেন জান শ্রীধর?

নিজের হাতে তৈরি ডেন্টিস্ট-দর্জি–আসবেনই তো স্যার।

আজকাল বিশেষ শুনতে পাই না। তবু দরদাম যা শুনি–শুনে মাথা খারাপ হবার জোগাড়! একটা পাঞ্জাবি বানাতে বিশ টাকা চায় কলকাতায়-

ছিঃ! ছিঃ! বলেন কি স্যার?

সেবারে দু-টাকা করে মজুরি নিয়েছিলে। এখন কত নিচ্ছ?

দু-টাকা করেই দেবেন স্যার।

না। তোমার একটা যাতায়াত খরচও তো আছে। ছটা পাঞ্জাবি মোট-প্রত্যেকটা আড়াই টাকা করেই নিও। এখন একটা লাউ নাকি তিন কেজি হলেই ছ-টাকা। ছ-আনা ছিল রেলের টিকিট। এলাম তিন টাকা দিয়ে। যেতেও হবে তিন টাকা দিয়ে। হল কি বলো তো দেশের।

মানুষের মুখের কথা শুনতে শুনতে গাছতলায় চরে বেড়ানো ছাগলী এই সময় তিড়িং করে লাফ দিল।

শ্রীধর বলল, ফিতে তুলে রাখি স্যার।

রাখিস’খন। একটু বস। এদিকে এখন ঘর ভাড়া কি রকম?

কেন? চলে আসবেন কলকাতা ছেড়ে?

আরে না। এদিককার অবস্থাটা জানছি। সারা দুনিয়াই কি একদশা?

তা একখানা ভাল ঘর দেড়শ-দুশ। মানে পাকা ঘর আর কি।

আমি তো তিনখানা ঘর নিয়ে থাকতাম সতোরো টাকায়। আর যখন কলেজে পড়েছি কলকাতায়– তখন তো মেসে ২ টাকা সিটরেন্ট মাসে। খাওয়া-দাওয়া সারা মাসে ছ-টাকা। মাংস খেতাম না বলে আমায় আলাদা করে রাবড়ি খাওয়াত মেসের ম্যানেজার। তখন ভাল ভাল খাইয়েরা মিষ্টির দোকানে গিয়ে পেটচুক্তি করত।

সে কি রকম স্যার?

দোকান সুদ্ধ চক্তি হত। যতক্ষণ খেতে পারবে খাবে। সেই মত একটা টাকা ধরে দেওয়া। শ্রীধরেরও বছর ষাট-বাষট্টি হবে। মশারিটা সেলাই হতে হতে দুব্বোর মাঠে এসে পড়েছে। চ্যাটাই-ঘেরা ঘরে পা-কলের কোনো থামান নেই। পুকুরে মাছরাঙা ডুব দিল বোধহয়। কেমন একটা গুড়ুম শব্দ প্রায়ই শুনতে পাচ্ছেন হৃদয়লাল। ঝমঝম করে একবার ট্রেন চলে গেছে কলকাতার দিকে।

শ্রীধর দেখতে পায় না বিশেষ। হৃদয়লাল শুনতে পান না। দেখতে পান সামান্য। ছাগলটা দেখতে পায়। শুনতেও পায়। গাছে মগডালে পাখিগুলো দেখছিল। শুনছিল। খাচ্ছিল।

হৃদয়লাল বলল, যা শুনি–তা কি সত্যি শ্রীধর? একটা লাউ ছ-টাকা? মাছের কিলো পঞ্চান্ন? পাঞ্চাবি সেলাই বিশ টাকা? দুনিয়ার সব জায়গাই কি এরকম হয়ে উঠল।

ছাগলটা এ-কথা শুনে খুব বড় একটা লাফ দিল। একটা বড় মাছি তার ঘাড়ের ওপর ঘাতে এসে বারবার বসছিল। সে শিং দিয়ে মাছিটাকে গুঁতোতে গিয়ে এই কাণ্ড করে বসল। শিং কখনো মাছির নাগাল পায়! চারপায়ে জটাঘটি পাকিয়ে ছাগলটা পড়ে গেল। বিষম ব্যথায় সে উঠতে পারল না।

শ্রীধর বলল, চলুন স্যার। স্টেশন অব্দি এগিয়ে দিয়ে আসি আপনাকে।

এরপর সেই পাঁচটা চল্লিশ। শেয়ালদা চিনতে পারবেন না রাতে। তারপরও তো রাস্তা আছে।

হৃদয়লাল বললেন, চলো।

দুজনে রওনা হতে যাবেন এমন সময় হৃদয়লালের পরিষ্কার মনে হল- সে নিজেও কি মহাভারতের মত অতটা মহাকাব্য না হলেও–নিদেন জীবন নামে একটা চ্যাপ্টা নভেলের কোনো ভাঙাগলি ধরে স্টার্ট দিচ্ছেন না! ওই পুকুর–এই বটতলা–স্কুলবাড়ি, রেললাইন, শ্রীটেলারিং পেছনে ফেলে…

 

 

 

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত