বোকা আমাকে দেখে দাঁড়িয়ে গেল। বলল, ছিরুদা গো! কখন এলে?
বললাম, রাত্রিরে। তুমি কেমন আছ বোকা?
খুব ভালো না, খুব খারাপও না। বলে বোকা এসে বারান্দার ধারে পা ঝুলিয়ে বসল।
ওর মধ্যে একটা রূপান্তর চোখে পড়ল এবার। দু বছর আগেও গ্রামে এসে ওকে হাসিখুশি দেখেছি ছোটবেলার মতোই। এখন দেখছিলাম পোড়খাওয়া চেহারা, বসা চোখ, ঠেলেওঠা চোয়াল আর নাক। ওর পরনে আঁটোসাঁটো ছাইরঙা প্যান্ট, নীলচে হাতাআটা গেঞ্জি, পায়ের রাবারের দুফিতের স্যান্ডেল। তাছাড়া ওর চোখের চাউনিতে শীতলতা, পাতা নড়ে না। কণ্ঠস্বরও মৃদু। ওর হাতে একটা গামছা, সেটা ছোট্ট পুঁটুলির মতো জড়ানো। জিগ্যেস করলাম, অসুখ হয়েছিল নাকি?
বোকা আস্তে মাথাটা নাড়ল।
গামছাটায় কী?
পিস্তল।
অন্তত আধমিনিট লেগে গেল শব্দটা বুঝতে। তারপর হেসে ফেললাম। ‘পিস্তল’ নিয়ে কোথায় গিয়েছিলে এখন?
টার্গেট প্রাকটিস করতে যাচ্ছি।
আরও হেসে বললাম, কোথায় টার্গেট প্রাকটিস করবে?
বোকা ঘুরে পেছনদিকের ছোট্ট পানাপুকুরটা দেখিয়ে বলল, ঘাটের মাথায় ডুমুর গাছটা দেখছ, ওখানে।
আমাদের বাড়ির এদিকটায় মাঠ। এই চৈত্রে ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পের দরুন চোখে আঁঠার মতো মেখে যায় বিশাল একটা সবুজরঙের কোমলতা। বারান্দার উত্তরে পানাপুকুরের দিকটা সবসময় নিঝুম নিরিবিলি হয়ে থাকে। পুকুরের তলায় ঠেকেছে জলটা। তাই ঘাটটাও স্মৃতিচিহ্নে পরিণত। তার মাথায় ওই ডুমুরগাছ, বয়সে ঠাকুর্দারও ঠাকুর্দার মতো প্রাচীন এবং যথেষ্ট স্থিতপ্রজ্ঞ তার চেহারা। ঠাকুর্দা ছিলেন রেলের চাকুরে। ছুটিতে এসে এই বারান্দায় বসে বলতেন, এখানটাতেই যত শান্তি। ঘাটে বসে থাকোমণি বেওয়া, সম্ভ্রান্ত ঘরের যুবতি ছিলেন তিনি, একটা ছোট্ট পেতলের ঘটি মাজতে সকালকে দুপুর এবং দুপুরকে বিকেল করে ছাড়তেন এবং আমাকে দেখামাত্র ঠাকুর্দা চোখ পাকিয়ে বলতেন, খেল গে যাও। সুতরাং আজও ওই ডুমুরগাছটার দিকে তাকালে হাস্যমুখী থাকোমণির দর্শন পাই, যিনি ঠাকুর্দার শান্তি।
বোকার কথাগুলোকে বারকতক টিপে-টুপে পরীক্ষা দেখে আবার হ্যা হ্যা করে হাসতে থাকলাম। তখন বোকা আলতো হাতে গামছার মোচড় ফাঁক করল। তারপর সত্যি সত্যি বেরিয়ে পড়ল অবিশ্বাস্য একটা পিস্তল। আমার হাসি থেমে গেল। বোকা পিস্তলটার দিকে তাকিয়ে বলল, ওমাসে মাসির বাড়ি গিয়েছিলাম। পদ্মার বর্ডারে। তেরশো টাকায় কিনে এনেছি। বর্ডার এরিয়াতে মুড়ি-মুড়কির মতো বিক্রি হচ্ছে।
বলো কী?
বোকা একটু হাসল। গাঁসুদ্ধু শত্রু। বাঁচতে তো হবে।
হিম হয়ে বললাম, কেন? কী করেছ তুমি?
কিছু শোনোনি? বোকা একটু চুপ করে থেকে বলল, গতবছর বাবাকে নদীর ধারে বোম মেরে বসল। মাসতিনেক আগে দাদাকে স্টাব করে মারল। এবার টার্গেট আমি। ব্যাঙা মিত্তির বলেছে, পোদো ঘোষের বং ফিনিস করবে।
মিত্তিরদের সঙ্গে ঘোষেদের বিবাদের কথা আবছা শুনে আসছি ছোটবেলা থেকে। গ্রামে তো এসব ব্যাপার ঘটেই থাকে। কখনও ওনিয়ে মাথা ঘা্মাইনি। কিন্তু বোকার বাবা ও দাদাকে খুন করা হয়েছে, এবং বোকার হাতে পিস্তল- উদ্বিঘ্ন হয়ে বললুম, বিবাদটা কী নিয়ে?
বোকা বলল, জানি না। বাবা জানত হয়তো।
নিশ্চয়ই জমিজমা নিয়ে?
বোকা মাথা নাড়ল। নাঃ। তাহলে তো আমি জানতে পারতাম। বলে সে কিছুক্ষণ পিস্তলটার নকশাকাটা বাঁট থেকে ময়লা খুঁটে ফেলার চেষ্টা করতে থাকল। তারপর একটু মুখ তুলে হাসল।।.. প্রথমে ঠিক করেছিলাম রিভলবার কিনব। কিন্তু ভেবে দেখলাম রিভলবারে মোট ছটা গুলি থাকে। তাতে ছয়জনকে ফিনিস করতে পারব। কিন্তু লোকতো আরও বেশি। পিস্তলে আঠারটা পর্যন্ত গুলি থাকে। পঁচিশ ফুট দূর থেকেও গুলি ছোঁড়া যায়। একবার ট্রিগার টানছ, গুলি বেরিয়ে যাচ্ছে, আবার একটা গুলি এসে জায়গামতো বসছে। কত সুবিধে তাহলে দ্যাখো ছিরুদা!
পিস্তলটা দেখে আমার ভীষণ লোভ হচ্ছিল। গা শিরশির করছিল উত্তেজনায়। জীবনে এই প্রথম হাতের নাগালে একটা সত্যিকার পিস্তল দেখছি। ইচ্ছে করলে ওটা হাতে নিতেও পারি। হাতে নিলেই যেন বা এই সসাগরা ধরিত্রী আমার পদানত হবে। আসলে ক্ষমতার উৎস তো এইরকম ইস্পাতের নলে। যদিও এই নলটা খুব ছোট, আমার মতো মানুষের পক্ষে একটা ছোট্ট পৃথিবীর শাসন ক্ষমতাই যথেষ্ট। আমার চোখে নিশ্চয়ই প্রচুর বিহবলতা এসে গিয়েছিল। কই, গুলি দেখি। বলে চেয়ার থেকে একটু ঝুঁকে গেলাম।
বোকা বলল, দেখাচ্ছি। প্যান্টের পকেটে ঢোকানো যায় না তাই গামছায় জড়িয়ে রাখি। তবে গুলি পকেটে রাখা যায়। এই দ্যাখো।
সে পা টানটান করে পকেট থেকে একটা গুলি বের করে দেখাল। খুদে রকেটের মাথার মতো ছূচলো গড়নের গুলি আমার হাতে দিচ্ছিল, নিলাম না। বললাম, থাক।
বোকা পকেটে ঢুকিয়ে বলল, পরশু মাঠে বোরোধানে জল খাওয়াচ্ছিলাম। তখন ওরা বোম নিয়ে তাড়া করেছিল। পিস্তলটা এখনও তত প্রাকটিস হয়নি। তাই রিস্ক না নিয়ে পালিয়ে এসেছিলাম। তুমি এখনো কয়েকদিন আছ তো ছিরুদা?
না। কালই যেতে হবে।
বোকা উঠে দাঁড়াল।।.. থাকলে দেখতে পেতে। শিগগির একটা কিছু হয়ে যাবে এস্পার-ওস্পার। বলে সে হালকা পায়ে পুকুরঘাটে গিয়ে উঠল। কালাকাসুন্দে আর নিশিন্দাঝোঁপের ভেতর দিয়ে ওপাশে তাকে ডুমুরতলার ঘাটের দিকে যেতে দেখছিলাম।
উৎকণ্ঠা এবং আগ্রহে তাকিয়ে রইলাম। বোকা ডুমুরগাছটার তলায় গিয়ে সিগারেট ধরাল। তার হাতে একটা সত্যিকারের পিস্তল, অথচ আমার সামনে সিগারেট টানেনি–একথা ভেবে আমার খুব ভালো লাগল ওকে। বোকা, তুমি জিতে যাও। ওদের ফিনিস করে তুমি বেঁচে থাকো। মনে মনে ক্রমাগত ওকে বলতে থাকলাম। একটুতেই পেন্টুল খসে পড়া, নাকে ছিকনিঝরা, তুলতুলে পুতুলের মতো ঘোষ বাড়ির সেই ছেলেটা, যে সব সময় খিটখিট করে হাসত, ঘুমিয়ে থাকলে আমার চুল টেনে দিয়ে পালাত, এই ঘাসজমিটায়–আমাদের এই বিপর্যস্ত বাগানে বিকেলে তাকে ডিগবাজি খেতে দেখেছি, একটা ছাগছানার মতো! ঘোষগিন্নি চেরা গলায় হাঁক দিতেন, অনিল রে অনিল, ও অনিল। ছেলেটা এসে লুটিয়ে পড়ত ঠাকুর্দার এই শান্তির ঘরে এবং ফিসফিসিয়ে বলত, বোলো না যেন ছিরুদা! মা মারবে!
সেই ছেলেটা পিস্তল নিয়ে লক্ষ্যভেদ করতে চায় নেহাতই বেঁচেবর্তে থাকার জন্য। আমার কষ্ট হচ্ছিল। বোকা, তুমি গুলি চালাও, আমি দেখি। ওই ডুমুরগাছটা হোক তোমার শত্রুর প্রতীক। তুমি ওকে এফোঁড়-ওফোঁড় করে ফ্যালো। ঝাঁঝরা করে দাও ওকে।
গাছেরা বুঝি সব বোঝে। মনে হল, স্থিরপ্রজ্ঞ ডুমুর মিটিমিটি হাসছে। আয় বাপ, বুক পেতে দাঁড়িয়ে আছি। হাত প্রাকটিস করে নে যত খুশি।
ডুমুরগাছটাকেও আমার খুব ভালো লেগে গেল। সে বোকাকে বাঁচাতে সাহায্য করার জন্য তৈরি। গ্রামীণ বৃক্ষদের এই স্বভাব। ছায়া দেয়। ফল দেয়। সারাদিন অক্সিজেন দেয়। বুক পেতে টার্গেটও হয়। নাও বোকা, এবার গুলি ছোড়ো, আমি দেখি।
বোকা গাছটার দিকে তাকিয়ে সিগারেট টানছে তো টানছেই। আমি অস্থির। একটু পরে হঠাৎ দেখি, বোকা হনহন করে এগিয়ে গিয়ে নিশিন্দাজঙ্গলে ঢুকল। তারপর আর তাকে দেখতে পেলাম না।
তারপরই দাদা এসে গেল। ব্যস্তভাবে চাপা গলায় বলে উঠল, এই ছি্রু! ভিতরে এসে বস শিগগির! আঃ, চলে আয় না!।
দাদা আমাকে টেনে ঘরে ঢুকিয়ে এদিকের দরজা বন্ধ করে দিল। ফিসফিস করে বলল, পুলিশ ডেকে এনেছে ব্যাঙাদা। বোকা ডুমুরতলায় রোজ পিস্তলের গুলি ছোঁড়ে। বুঝলি না? হাত প্রাকটিস। তাই তাহের দারোগাকে নিয়ে এসেছে। ওই দ্যাখ!
জানালা দিয়ে দেখলাম, একদঙ্গল পুলিশ এসে ডুমুরতলায় দাঁড়াল। কিছু ভিড়ও জমছে। ব্যাঙা মিত্তির ডুমুরগাছটা দেখিয়ে কিছু বলছে। তারপর দেখলাম, দারোগাসায়েব গাছটার দিকে ঝুঁকে গেলেন। আঙুল দিয়ে গুঁড়িতে সম্ভবত গুলির দাগগুলো ঠাহর করতে থাকলেন। বুঝলুম, রীতিমতো একটা তদন্ত হবেই।
দাদা এবার জানালাটাও বন্ধ করে দিল। ভয় পাওয়া গলায় গলায় বলল, এ ঘরে থাকিসনে। ভেতরে চলে আয়। আমরা বাবা গ্রামে সাতে-পাঁচে থাকি না। তাহের দারোগা জিজ্ঞেস করলে বলব, গুলি-ফুলির শব্দ-টব্দ আমরা শুনিনি।।..
বিকেলে বার ঠাকুর্দার সেই শান্তিস্থলে চেয়ার পেতে বসে আছি, রাম মোহন্তের মেয়ে ঠুমরি এসে হাজির। আমার ছেলেবালায় মোহন্ত কাঁধে খোল ঝুলিয়ে রোজ গাঁ চক্কর দিত। এতটুকু ফ্রকপরা মেয়েটা বাজাত খঞ্জুনি। বাবা ও মেয়ের গানের কলি এখনও খঞ্জুনির হৃদয়ভেদী ধ্বনিসমেত সেই ঠুমরি! কানের ভেতরে সেঁটে আছে খোলের শব্দ। বললাম, ঠুমরি, তুমি কেমন আছ?
ঠুমরি আমার ক্থায় কানই করল না। চঞ্চল চাউনিতে এদিক-ওদিক দেখতে দেখতে আনমনে বলল, বোকাদাকে দেখেছ গো ছিরুদা।?
না তো! কেন?
ঠুমরি বলল, ওকে খুঁজে বেড়াচ্ছি। ভীষণ দরকার। বাড়িতেও পাচ্ছি না। ভাবলাম ডুমুরতলায় আছে নাকি। সত্যি দ্যাখোনি ওকে ছিরুদা?
ঠুমরি চলে গেলে বউদি এল গল্প করতে। হাতে দুকাপ চা। ধরিয়ে দিয়ে বলল, ঠুমরির গলা শুনলাম যেন। কই সে?
চলে গেল। বোকাকে খুঁজে বেড়াচ্ছে।
বউদি চটুল হাসল। এদ্দিন এলে ডুমুরতলায় দুজনের যুগলমিলন দেখতে পেতে। আজকাল তো লাজ-লজ্জার বালাই নেই মানুষের। বউদি গলা চেপে বলল ফের, প্রকাশ্যে ডুমুরতলায় ওরা যা করে, দেখলে ভাবতে, কোথায় লাগে সিনেমার সিন! আমরা ঘরে বসেই দুবেলা সিনেমা দেখছি, বুঝলে তো ঠাকুরপো?
বুঝলাম। কিন্তু বোকা তো বরাবরই গোবেচারা ছেলে ছিল।
বউদি চোখ পাকিয়ে বলল, থামো! নামে বোকা, ভেতরে যা আছে তা আছে।
আছেটা কী শুনি?
বউদি গম্ভীর হয়ে বলল, বোকা ভীষণ ডেঞ্জারাস। হাসিমুখে মানুষ খুন করতে পারে, জানো?
করেছে কি?
করেনি, এবার করবে। হাতে পিস্তল পেয়েছে। প্রাকটিস করছে রোজ। বলে বউদি বালিকার মতো চঞ্চল পায়ে শূন্য বাগানের ঘাসে টহল দিতে গেল এবং হাতে চায়ের কাপ। আর মেয়েরা এমন যে, যেখানে হাঁটে চারপাশে জেগে ওঠে ফুলের বন। প্রজাপতি ওড়ে। কোকিল-টোকিল খুব চ্যাঁচায়। এসবের ফলে বোকা, তার পিস্তল ও ডুমুরগাছটাকে ভুলে গেলাম সে-বেলার মতো।
সেইরাতে ঘুম ভেঙ্গে গেল প্রচণ্ড বিস্ফোরণের শব্দে। ধুড়মুড় করে উঠে বসলাম। কোথাও মুহূর্মুহু বোমা ফাটছে এবং আবছা হল্লার শব্দ। বাইরে হুঁশিয়ারি শোনা গেল, বেরুস নে ছিরু। রোজ রাতে এইরকম। চুপচাপ শুয়ে থাক। আমরা কারুর পাঁচ-সাতে নেই!
বিস্ফরণের শব্দ ক্রমশ থেমে এল। তারপরও কুকুরগুলো কতক্ষণ ধরে ডাকল। শেষদিকে শুধু একটা কুকুর ডাকতে ডাকতে গলা ভেঙ্গে ফেলল। তার ডাকে প্রশ্ন ছিল। কিন্তু জবাব দেবার কেউ নেই।
সকালে শুনলাম বোকাদের বাড়িতে হামলা হয়েছিল। বোকাকে ফিনিস করেছে। গাঁয়ে পুলিশের ক্যাম্প বসেছে। তাহের দারোগা বাঙা মিত্তিরকে নিয়ে গেছেন। দাদার মতে, ওবেলা তাঁকে রেখে যাবেন দারোগাসায়েব। কেস লেখা হবে ডাকাতির।।..
বোকার পিস্তল বোকাকে বাঁচাতে পারেনি। পরপর আঠারোটা গুলি ছোঁড়া যায়, তবুও। অবাক হয়ে বারান্দার সেই অংশটুকু দেখছিলাম, যেখানে কালই সকালে বসেছিল। তারপর মুখ তুলে দেখলাম। পানাপুকুরের ঘাটের ডুমুরগাছটাকে। সেই স্থিরপ্রজ্ঞ বৃদ্ধ বৃক্ষ নির্বিকার। বুড়ো, তুমি ব্যর্থ হয়েছ। বুক পেতে দিয়েছিলে, তবু কাজে লাগল না। আসলে দিনকাল খারাপ। তুমি কী করবে বলো?
গাছটাকে কাছ থেকে দেখতে গেলাম।
গিয়েই দেখতে পেলাম ঠুমরিকে। থমকে দাঁড়িয়ে গেলাম। লাল চোখ, ফুলো-ফুলো গাল, মেয়েটা তাকিয়ে আছে গাছটার দিকে।
ক্রুদ্ধ প্রফেট যীশু ডুমুরগাছকে অভিশাপ দিয়েছিলেন, তুমি বন্ধ্যা হও।
রামলোচন মোহন্তের মেয়ে তাকে অভিশাপ দিল, তুমি মরো! তুমি মরো! তুমি মরো।
তারপর দুহাতে মুখ ঢেকে হিঁপিয়ে হিঁপিয়ে কাঁদতে লাগল। ডুমুরগাছটা কি শিউরে উঠল? একটা হাওয়া এলো মাঠ থেকে। একটা কাঠবিড়ালি পড়ি কী মরি করে গাছটা থেকে ঝাঁপ দিয়ে পালিয়ে গেল। আর্তনাদ করে উঠল একটা মাছরাঙা পাখি। আর দেখলাম, গুঁড়ির উপর অসংখ্য ক্ষতচিহ্ন চোখ হয়ে যাচ্ছে–অসংখ্য ভিজে চোখ দিয়ে বৃদ্ধ বৃক্ষ মোহন্তের মেয়েকে দেখছে। বৃক্ষেরা এও অসহায়!
তক্ষুণি সরে এলাম। কান্নাটান্না আমার একেবারে সয় না।।..