ইরাবতী সাহিত্য: চারুবালা ও অন্যান্য কবিতা । সুমন জানা
চারুবালা
শাল জঙ্গলের পাশে স্বাস্থ্যকেন্দ্র, হাইওয়ে থেকে কাছাকাছি।
“ওই দিকে ছোট এক পাহাড়ের ঝর্নাও তো আছে,
হায়তো বা তোমাদের ভালো লেগে যাবে”,
বলেছিল, তুমি যার বদলি হয়ে এলে।
সদ্য পরিণীতা তুমি, “গয়না কি সোনার ?”
তারা তো অবাক চোখে তোমাকেই দেখে।
“তবে কি বেড়াতে এলে? জয়েন করোনি ?”
তিন-চার মাইলের মধ্যে লোকালয় নেই,
এখানে তো দিনে দুপুরেও কত কিছু ঘটে যেতে পারে!
#
সদ্য পাওয়া চাকরি আর নতুন সংসার,
মাঝখানে তুমি একা, চোখে লাল-মাটির শূন্যতা।
সঙ্গে যে যুবক, সে তো এখনও ততটা চেনা নয়, ক্রমে ক্রমে হবে।
বুকে যে ঝর্নার ধ্বনি, আপাতত শুধু তুমি একা শুনতে পাবে…
গল্পের বাড়ি
গল্পের ভিতরে যাব,
বহুক্ষণ বারান্দায় দাঁড়িয়ে রয়েছি।
বর্ণনার ফাঁক দিয়ে ভিতরে তাকাই,
ভিতরে চরিত্রদের ছেঁড়া ছেঁড়া কথা কানে আসে।
নিজেদের নিয়ে তারা এতই মশগুল,
কাহিনি যে ক্লাইম্যাক্সে পৌঁছে গেছে, খেয়াল করে না।
আমি গলা তুলে ডাকি, বারবার করাঘাত করি,
প্রত্যুত্তরে কারও কোনও সাড়াই পাই না,
যেন কোনও ভূতের বাড়ির সামনে আছি।
অথচ আমাকে যদি গল্পের ভিতরে যেতে দিত, আমি জানি,
কাহিনির গতিবিধি অন্য কোনও দিকে মোড় নিত।
তবে কি এবারে পুরো দরজাটা ভেঙে দিতে হবে?
বাড়ির গল্প
বাড়িটি গল্পের মতো,
গঠনের বর্ণনা দিতে গেলে
শরদিন্দুর ঐতিহাসিক কাহিনির কথা মনে হবে।
খিলানের কারুকার্য ঠিক যেন কমলকুমার।
তার মধ্যে ফ্যাতাড়ুর মতো একদল দেহাতি মানুষ
শ্বাস-প্রশ্বাসের মতো স্বাভাবিক ভাবে বাস করে,
দেশোয়ালি কলতানে ভরে রাখে বাড়ির হৃদয়।
তাদের আতিথেয়তা এত আন্তরিক, মনেই হবে না,
গল্পের লেখক নিজে সেখানে থাকেন না,
তাঁর বাসা দূরবর্তী শহরের ফ্ল্যাটে।
