Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,World Poetry Day

তৌহিদুল ইসলামের তিনটি কবিতা

Reading Time: 2 minutes
সভ্য করো নয়তো ধ্বংস করো প্রভু
ফিলিস্তিনি নিষ্পাপ শিশুদের বাঁচার আকুতি, বাবাকে বীভৎসভাবে জালিমদের হাতে খুন হতে দেখার শোকার্ত আর্তনাদ, মা হারানোয় করুণ রোনাজারি হয়তো তোমার আরশে পৌঁছে গেছে।
পৈশাচিক আনন্দে মসজিদে প্রার্থনারত নিরস্ত্র ফিলিস্তিদেরকে নির্বিচারে হত্যা! হয়তো সবার মতো তোমার কাছেও ক্ষমার অযোগ্য মনে হয়েছে।
কাঠমোল্লাদের নিষ্ঠুর অনাচারে কুরআন পাগল ধর্মভীরু জুয়েলকেও জ্যান্ত পুড়িয়ে মরতে হলো ধর্ম অবমাননার মিথ্যা অভিযোগে!
লালমনিরহাটে জুয়েলের গায়ে জ্বলন্ত
সেই লেলিহান অগ্নিশিখা হয়তো ঘাতকদের ছারখার করে দিতে তোমার অনুমতি চাচ্ছে বার বার। 
রোহিঙ্গাদেরকে শুধু বাস্তুহারা করেই ক্ষান্ত হয়নি, স্বৈরশাসকের নির্মমতার তাণ্ডবে প্রাণভয়ে সহায়-সম্বল ছেড়ে নাফ নদী সাঁতরে দেশত্যাগে বাধ্য হয়েছে তারা! 
যারা পৈতৃক ভিটাটুকু আঁকরে ধরে বাঁচতে চেয়েছিল তাদের ওপর নির্বিচারে গোলাবর্ষণ কিংবা তাদেরকে জ্যান্ত পুড়িয়ে মারার নারকীয় পৈশাচিকতায় হয়তো তুমিও রুষ্ট !
ক্ষমতা দখল কিংবা কুক্ষিগত রাখতে রক্তের হোলিখেলায় মেতেছি বহুবার!
তুমি হয়তো ভাবছ, এদের দৌরাত্ম্য কত আর?
আমাদের পাষণ্ডতা তোমাকে বর্ণনা করা বৃথা;
সিরিয়ার সেই ছোট্ট শিশু আলাইনা, সে নিশ্চয় তোমাকে সব বলে দিয়েছে!
বলে দিয়েছে আমাদের বর্বরতার কথা, আমাদের নৃশংস হত্যাযজ্ঞের কথা, ধর্মের নামে চরম অধর্ম চর্চার কথা! 
তুমি হয়তো জেনে গেছ আমাদের আদালত গুলোতে এখন আদল খুঁজে পাওয়া কত মুশকিল! ….  আদালতের রায় এখন কতটা লুটেরাদের পকেটের উপর নির্ভরশীল!
ধর্মের লেবাসে জঙ্গিবাদ
ধর্মের মুখোশ পরে অধর্ম-অনাচার তুমি হয়তো আর দেখতে চাচ্ছ না।
আমরা নিষ্ঠুরতার সীমা লঙ্ঘন করে ফেলেছি,
পেশিশক্তির দাপটে গুড়িয়ে দিয়েছি বাবরি মসজিদ! 
পৃথিবীর ভূস্বর্গ কাশ্মীরকে বানিয়েছি নরকখণ্ড।
ফেলানী-নুসরাত-তনু-তৃষাদের ক্রমাগত আহাজারিতে ভারি ঐ আসমান
অভিশপ্ত অসুর নিধনে এবার নেমে আসো হে সর্বশক্তিমান।
এভাবে আর কত?
আমাদের ক্ষমা করো প্রভু, সভ্য করো;
নয়তো ধ্বংস করো।
স্বপ্নবিভ্রাট
অনঘ মনে অধ্যেষেণু তারে,
কে তুমি হে অনন্যা?
প্রত্যাভিবাদনে সে শুধুই হাসলো! 
আমি সেই মনোবিধবংসী হাসিটা চিনলুম না।
মাঝরাতে ঘুমের ঘোরেও সেই দৃষ্টরজার দুঃসাধ্য দর্শন।
যেন স্বপ্নলোক থেকে এক্ষুণি বেরুলো স্বর্গঅপ্সরা,
আমার সাদামাটা খাটটি সাঁজলো ফুল শয্যা, 
অপ্সরা ডানা মেলে জড়ালো আমাকে বাহু বন্ধনে,
কামনার আগ্রাসী তাণ্ডবে সে আমার ওষ্ঠ চুম্বিল!
কপোল আর কপালে আঁকলো ঠোঁটের উষ্ণ স্পর্শানুভূতি। 
ক্রমশ আমিও মোহিনীর ঈন্দ্রজালে আবিষ্ট হচ্ছিলুম।
হঠাৎ কী যেন শব্দে নিদ্রা পালালো
মুহূর্তেই সে আর নেই!
আমি উঠে বসলুম; কিন্তু সে গেল কোথায়?
কই দরজাটাওতো বন্ধই আছে, অন্যসব যেমন ছিল তেমনি।
এইতো এখানেই প্রথম বসেছিল সে,
এই সোফাই তো ন্যুব্জ হয়েছিল
ওর নিটোল নিতম্বের ভারে।
সেই নাম মৃত্যুঞ্জয়ী
মহাশূন্যের শূন্যতা গ্রাস করে একসময় মহাবিশ্বের মায়া ছাড়ে জীবন।
সকল প্রাণ; রথী-মহারথী-কবি
মৃত্যুর ছোবলে নিমেষেই ছবি!
মৃত্যু অনিবার্য; মৃত্যুই জীবনের চূড়ান্ত পরিণতি,
কেবল জীবন যাঁর পুণ্যকর্মময়, মানব-সেবাব্রতী
অমর সেই প্রাণ, সেই নাম মৃত্যুঞ্জয়ী।

0 thoughts on “তৌহিদুল ইসলামের তিনটি কবিতা

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>