| 20 এপ্রিল 2024
Categories
জীবন যাপন

মোবাইলেও ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকতে পারে করোনা

আনুমানিক পঠনকাল: 4 মিনিট
এই করোনার কালবেলায় স্মার্টফোন খুবই জরুরি। কিন্তু তাজ্জব করার মতো বিষয় হল, স্মার্টফোন বা যে কোনও মোবাইল ফোনের ভিতরেও ঘাপটি মেরে লুকিয়ে থাকতে পারে মারণ ভাইরাস করোনা। সারাদিন স্মার্টফোন নিয়ে খুটখুট করছেন। রাস্তাঘাটে, যত্রতত্র ব্যবহার করছেন সাধের ফোনটি। এমএস সার্জেন ডাক্তার কে সুরেশ বলছেন, “স্মার্টফোনের ভিতরে ভরপুর জীবাণু থাকে, যাদের দ্বারা সংক্রমণ খুবই দ্রুত হতে পারে। কারণ প্রতি মুহূর্তেই আমরা ফোনে হাত দিই, কানে ফোন রেখেই কথা বলি। স্মার্টফোনের অন্দরে কমপক্ষে ২ ঘণ্টা থেকে ৯ দিন অবধি বেঁচে থাকতে পারে যে কোনও জীবাণু।” তাই এই ভয়ংকর সময়ে অত্যন্ত জরুরি স্মার্টফোন পরিষ্কার করা। কী করে করবেন, জানুন।

টেক বিশেষজ্ঞরা কী বলছেন?

ei samay

সারাদিনে নিজের হাত বারংবারই পরিষ্কার করছেন। সোশ্যাল ডিসট্যন্সিংও মেনে চলেছেন। ঠিকই করছেন। করোনার কালবেলায় নিজেকে সুরক্ষিত রাখার এগুলিই মোক্ষম দাওয়াই। কিন্তু মনে রাখতে হবে, যখন মোবাইলে কারও সঙ্গে বাক্যালাপ করছেন, নিজের অজান্তেই তখন কিন্তু সবথেকে বেশি ভাইরাস ছড়িয়ে দিচ্ছেন আপনিই। ঠিক এমনটাই বলছেন টেক এক্সপার্ট রাজীব মাখনি। তাঁর কথায়, “কাছাকাছি বা সামনাসামনি কারও সঙ্গে কথা বলার থেকেও বেশি পরিমাণে ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে মোবাইল ফোনে কথা বলার সময়ে।”

​বিজ্ঞানী এবং গবেষকদের কী মতামত?

ei samay

স্টেইনলেস স্টিল এবং প্লাস্টিকের যে কোনও তলে কমপক্ষে দুই থেকে তিন দিন জ্যান্ত অবস্থায় থাকতে পারে করোনাভাইরাস। এই কথা বিজ্ঞানীরা আগেই রিসার্চ করে জানিয়েছেন। অর্থাৎ আপনার স্মার্টফোনেও যে বেশ কিছু দিন এই ভাইরাস থাকতে পারে– সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই। এমনই আবহে দ্য সেন্টার্স ফর ডিসিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের তরফে বলা হচ্ছে, ‘হাই-টাচ’ সারফেস নিয়ম করে হাত ধোয়ার মতোই বারংবার পরিষ্কার করতে হবে। যেমন স্মার্টফোন বা যে কোনও মোবাইল হ্যান্ডসেট, কিবোর্ডস, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট ইত্যাদি নিত্যনৈমিত্তিক প্রয়োজনীয় সব গ্যাজেটই পরিষ্কার রাখতে হবে সবসময়।

স্মার্টফোন স্যানিটাইজ করার সঠিক পদ্ধতি –

ei samay

ডাক্তার সুরেশের কথায়, “৭০ শতাংশ আইসোপ্রোপিল অ্যালকোহল রয়েছে, এমন কিছু দিয়েই স্মার্টফোন বা যে কোনও গ্যাজেটস আপনি ব্যবহার করছেন প্রতিনিয়ত, সেগুলি পরিষ্কার করা যায়।” অন্যদিকে ডাক্তার কেকে আগরওয়াল বলছেন, “তিন বার নিয়ম করে স্মার্টফোন বা অন্যান্য গ্যাজেটস পরিষ্কার করতে হবে। যদিও তা অ্যালকোহল দিয়ে করা খুবই খরচ সাপেক্ষ। সে ক্ষেত্রে এক লিটার জলের মধ্যে ১০ গ্রাম ব্লিচিং পাওডার ফেলে দিয়ে, একটি কাপড় সেই মিশ্রণে ভিজিয়ে নিয়ে তা দিয়ে সাফ করতে হবে স্মার্টফোন।”

ফোন স্যানিটাইজ করার আগে যে বিষয়গুলো মাথায় রাখা জরুরি –

ei samay

সঠিক নিয়ম না মেনে স্মার্টফোন পরিষ্কার করতে গেলে আবার হিতের বিপরীত হতে পারে। কারণ এই COVID-19 সংক্রমণকালে মোবাইল ফোন অত্যন্ত জরুরি। মাথায় রাখতে হবে, এমন ভাবে স্মার্টফোন পরিষ্কার করতে হবে, যাতে আখেরে ফোনটার কোনও ক্ষতি না হয়। কী ভাবে?

  • পরিষ্কার করার কোনও মিশ্রণ সরাসরি স্মার্টফোনে স্প্রে করা যাবে না।
  • গ্যাজেটস সাফ করার কোনও মিশ্রণে চুবিয়ে রাখা যাবে না স্মার্টফোন।
  • কখনও কোনও ড্রায়ার বা বায়ুপ্রেষক (Compressed-air devices) অর্থাৎ যা দিয়ে সচরাচর কিবোর্ড পরিষ্কার করা হয়, তা দিয়ে কিন্তু স্মার্টফোন কখনই সাফ করা চলবে না।
  • কোনও প্রকারেই স্মার্টফোন ঘষা চলবে না। এমনকী ঘষে তুলে ফেলা যায় এমন কোনও মেটিরিয়াল ব্যবহার করা চলবে না।
  • পরিষ্কার করার সময়ে স্মার্টফোনটি বন্ধ করে দিন।
  • আর ফোন সাফাইয়ের সময়ে নিশ্চিত করুন, যাতে কোনও প্রকারের তার অর্থাৎ চার্জিংয়ের বা ডেটা কেবল বা হেডফোন যেন স্মার্টফোনে না গোঁজা থাকে।
স্মার্টফোন পরিষ্কারের অন্যান্য উপায় –

ei samay

খুব নরম কোনও কাপড় দিয়েই পরিষ্কার করতে হবে স্মার্টফোন। হতে পারে তা কোনও সুতির কাপড়। আবার মাইক্রোফাইবার কাপড়, যা দিয়ে সচরাচর ক্যামেরার লেন্স থেকে শুরু করে আপনার চশমা বা রোদচশমা পরিষ্কার করে থাকেন, তা দিয়েও মুছতে পারেন স্মার্টফোন। Google-এর তরফে আগেই বলা হয়েছে যে, সাবান জলে ওই কাপড় ভিজিয়ে নিয়ে তা দিয়ে স্মার্টফোন পরিষ্কার করা যেতে পারে। তবে মাথায় রাখতে হবে, ওই তরল যেন কোনওভাবে ফোনের অন্দরে না প্রবেশ করে। টেলিকমিউনিকেশন সংস্থা AT&T-এর তরফে বলা হচ্ছে যে, ফোন পরিষ্কারের ক্ষেত্রে কাজে আসতে পারে পেপার টাওয়েলও।

বিনামূল্যে ফোন স্যানিটাইজিং পরিষেবা –

ei samay

হ্যাঁ এই করোনার সংক্রমণ কালে ফোন স্যানিটাইজ করার ঝক্কি অনেক। তাই Samsung, বিশ্বের সর্ববৃহৎ মোবাইল প্রস্তুতকারক সংস্থা বিনামূল্যেই গ্রাহকদের জন্য ফোন স্যানিটাইজ করার সুবিধা দিচ্ছে। Samsung স্টোর এবং সার্ভিস সেন্টারগুলিতে মূলত এই সুবিধা পাওয়া যাচ্ছে। এমনকী পরবর্তীতে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যেখানে Samsung স্টোর এবং সার্ভিস সেন্টার রয়েছে– সেই সব জায়গায় গ্রাহকদের এই সুবিধা দিতে চলেছে Samsung। আর Samsung-এর এই পরিষেবার দেখাদেখি অন্য আরও সংস্থাই তাঁদের গ্রাহকদের এই পরিষেবা দেবে বলেও জানা গিয়েছে।

​মোবাইল বা যে কোনও গ্যাজেট সাফ করা জরুরি কেন –

ei samay

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত