উজ্জ্বল পান্ডা’র দুটি কবিতা
অনিকেত
অচেনা পাখির খোঁজে কেটেছে জীবন।
প্রতিটি পথের বাঁকে
প্রতিটি বিকেল জুড়ে
ফেলে আসা গ্রাম থেকে দূরে।
সন্ধ্যের মফস্বলের রাস্তাঘাট
আধো অন্ধকারে আজও চুপ।
ঝুপড়ি বস্তির গা ঘেসে
একটি দুটি সতর্ক কুকুরের চোখে
কৌতুহল দেখে
আমরা হেঁটেছি, আমরা হেসেছি, আমরা ভুলেছি
ঘর তুই ফেলে গেলি কবে!
সেই কবে থেকে পায়ের তলায় তোর সরষে রাখা!
চোখের তারায় তোর আকাশের নীল…
এ শহরে শীত নেমে এলে
সকালের চায়ের ধোঁয়ায়
পথ চেয়ে বসে থাকে আজও কিছু চোখ।
অনিকেত, ঘরবাড়ি হারানো জীবন
অচেনা পাখির খোঁজে কাটা এ জীবন।
বৃষ্টিতে
বৃষ্টিতে ঝাপসা জানলার কাচ
আবছায়া শেষ দুপুরের মৃদু আলোর বাইরে
একটা পিছুটানের পৃথিবী জেগে আছে।
বৃষ্টিতে আপাদমস্তক ভিজে
স্কুল থেকে ফিরছে যারা,
উটকো মেঘের হঠাৎ গানে
ঘরের মধ্যে এক হাঁটু জল দেখে
ক্লান্ত শরীর টেনে তুলছে যারা,
জমি ভেসে যাওয়ার আশঙ্কায়
চুপ করে ঠায় বসে ভাবছে যারা,
নদী উপচে গ্রামের সীমানায় এসে পৌঁছচ্ছে
বানভাসি জল।
এসবই ফেলে আসা বৃষ্টির অলীক স্মৃতি।
সেসব নিয়ে আলোচনা করার দিনও গেছে বয়ে।
হাপুস ভিজছে প্রতিটি গাছ
সামনের রাস্তায় কুকুর ডোবানো জল।
সারা দুপুর সেদিকে চেয়ে বেলা পড়ে আসে
ছোট্ট শিশুর।
অন্ধকারে অবিরাম বৃষ্টির শব্দ।
বৃষ্টিতে ঝাপসা জানলার কাচ
আবছায়া শেষ দুপুরের মৃদু আলোর বাইরে
একটা পিছুটানের পৃথিবী জেগে আছে।

কবি, অনুবাদক ও প্রাবন্ধিক
মেদিনীপুর শহরের বাসিন্দা উজ্জ্বল পান্ডা বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্য নিয়ে পড়াশোনা করার পর আধুনিক ইংরেজি কবিতা নিয়ে গবেষণা করেন। বর্তমানে ওয়েষ্ট বেঙ্গল এডুকেশন সার্ভিস এর অধীনে একটি সরকারি কলেজে অধ্যাপনার কাজে যুক্ত। বেশ কিছু কবিতা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন গবেষণাধর্মী প্রবন্ধ দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জার্নাল ও বইতে প্রকাশিত।