Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,valentine day

ভালোবাসা দিবসের ছোটগল্প: ঢেউ

Reading Time: 6 minutes

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com,valentine dayরাহাতের সঙ্গে কখনো এভাবে দেখা করতে যাবো ভাবিনি। বাড়ি থেকে পালিয়ে বা মিথ্যে বলে কারো সঙ্গে দেখা করতে যাবার বয়স আমার নেই। তাছাড়া এমন সামাজিক পরিবেশেও আমি বসবাস করি না যে নিজের কোনো কাজের জন্য আমাকে কারো কাছে জবাবদিহি করতে হবে।

আমি সামিয়া রহমান। চল্লিশোর্ধ স্বাধীনচেতা-স্বাবলম্বী একজন মানুষ। তবু বাড়ি থেকে বের হবার সময় আনোয়ার যখন জিজ্ঞাসা করছিল, কোথায় যাচ্ছি তখন আমার জিহবা খসে জলজ্যান্ত এক মিথ্যে বেরিয়ে এসেছিল, ‘রিতার বাসায় যাচ্ছি, রিতার ছেলে আরাফের বার্থডে। ঘরোয়াভাবে করবে, শুধু কাছের কয়েকজন বন্ধুকে ডেকেছে। এত জোর করলো যে না করতে পারলাম না। ভেবো না, তাড়াতাড়িই ফিরবো। ডিনারের আগেই চলে আসবো।’

মিথ্যে বলছিলাম বলেই হয়তো, দুশব্দের প্রশ্নের জবাব অত বড় করে দিতে দিতে কপালের টিপটা বেজায়গায় পরে ফেলেছিলাম। আনোয়ার টিপটা ঠিক করে পরাতে পরাতে স্বভাবসুলভ সারল্যে হেসে বলেছে, ‘কপালের এই পাশটাতে একটা কাজলের টিপও পরো, যেন কারো নজর না লাগে।’

কারো নজরে যেন না পড়ি সেটা কি আমিও চাচ্ছিলাম? তাই হয়তো বাসা থেকে বের হবার সময় হিসেবে সন্ধেটাই বেছে নিয়েছিলাম। সন্ধে লাগার আগেই আমি সি.এন.জিতে উঠেছি। ভাড়া নিয়ে তর্কবিতর্ক করার মতো মানসিক স্থিতি ছিল না বলে সি.এন.জি.ওয়ালাকে গন্তব্যস্থান জানিয়ে সোজা চলে এসেছি উপশহরের এই মঠের ধারে। মঠের ঠিক উল্টোদিকে সপুরা সিল্ক মিল। ক্রেতাদের আনাগোনা চলছে। লোক চলাচলের রাস্তা থেকে সরে খানিকটা এগোলেই একটা পুকুর। পুকুরের ধারেই মঠ। মঠটাতে সংস্কার কাজ চলছে। কদিন আগেও লাল ইটের মঠটাতে বেশ একটা নান্দনিকতা ছিল। আজ পরিপাটি পলেস্তরা আর সাদা চুনকামে ঐতিহ্যের স্মারকটি সভ্যতার মেকি চাদর পরেছে। মনটা বিক্ষিপ্ত হয়ে গেল মঠটার অবস্থা দেখে। এটার সামনে আমার আর আনোয়ারের একটা যুগল ছবি আছে।

আনোয়ারের কথা মনে পড়তেই চাপা একটা অস্বস্তি বুকের ভেতরে নড়েচড়ে উঠলো। আনোয়ার পেশায় একজন ব্যাংক কর্মকর্তা। আমরা দুজন সহকর্মী। একসঙ্গে অফিসে যাই, একসঙ্গে ফিরি। দুজনের জীবন ছকে বাঁধা। আমাদের দশ বছরের বিবাহিত জীবনে আমরা দুজন থেকেও এই সংসারে একাকী। আমাদের জীবন এখনও কোনো শিশুর কোলাহলে মুখরিত হয়নি। তাই বলে যে আমরা অসুখী তা কিন্তু না। আমাদের সংসার জুড়ে নীরব সুখের সম্ভার। আমরাও ক্রমশ নীরবতাতেই অভ্যস্ত হয়ে উঠেছি। সেই ছকে বাঁধা অভ্যস্থতায় কোথা থেকে যে আজ রাহাত আমার সামনে এসে দাঁড়ালো! আমাকে ডাকলো! আর আমিও মোহবিষ্টের মতো ওর সঙ্গে দেখা করতে ছুটলাম!  

উপশহরের এই পাশটা অপেক্ষাকৃত নিরিবিলি। লোকচক্ষু থেকে নিজেকে আড়াল করার সব আয়োজন যেন আজ আমি নিজে থেকেই করেছি। সকালে যখন রাহাতের ফোন পেলাম তখন কী জানি কী একটা ওলোটপালোট হলো নিজের ভেতর। জগৎসংসার অর্থহীন হয়ে গেল মুহূর্তেই। ঘড়ির দিকে তাকাতে ভুলে গেলাম, চুলায় থাকা তরকারির কথা ভুলে গেলাম। তরকারির পোড়া গন্ধে আমার হুঁশ ফিরলো। যদিও ঐ মুহূর্তেই তরকারির সঙ্গে সঙ্গে কী যেন এক উত্তাপে আমার সংসারও পুড়ে গেল। যে সংসারের অন্ধমায়া রাহাতকে অস্তিত্বহীন করে দিয়েছিল, সেই সংসারে নিজেকে অস্তিত্বহীন করতে মন চাইল। আর তখন থেকেই ফেলে আসা দিনগুলোকে খুঁজে পেতে হন্যে হয়ে থেকেছি সারাটা দিন।

আমার সব প্রথম কিছুর সাক্ষী প্রিয় ক্যাম্পাসের দিনগুলিতে ফিরতে মন চাচ্ছিল বারবার। ছুটির দিনে আমাকে বারবার আনমনা হতে দেখে আনোয়ার দুএকবার হেসেছে; কোনো প্রশ্ন করেনি। আনোয়ার মানুষটিই এমন। সব মেপে মেপে করে। মেপে হাসে, কথা বলে। আমার ব্যাপারে আগ্রহ দেখায়ও মেপে মেপে, হিসেব করে। আমাকে বেশ থাকতে দেয় নিজের মতো। অহেতুক আগ্রহ নেই, কৌতূহল নেই। কিন্তু রাহাতের সব কিছুতে বড্ড কৌতূহল ছিল। আমাকে এক মুহূর্ত আনমনা দেখলে ও অস্থির করে ফেলতো। বহু বছর পর সেই রাহাত আজ আমার জন্য অপেক্ষা করছে। 

দূর থেকে নিশ্চল রাহাতকে স্থিরচিত্রের মতো লাগছে। এত বছর পর আজো দূর থেকে ওকে দেখেও আমি ঠিক চিনে নিয়েছি। রাহাতকে পিছন থেকে এক ঝলক দেখেই কেমন কিশোরী চপলতায় কেঁপে উঠেছি। রাহাত, আমার জীবনের প্রথম প্রেম! প্রথম শিহরণ! প্রথম গোপন অনুভব! প্রথম চুম্বন! প্রথম কবিতা! সেই রাহাত! সুঠামদেহী, পরিশীলিত রাহাত। তুখোড়, মেধাবী ছেলে! যাকে পাবার জন্য সতের বছর আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের বহু মেয়ে শিক্ষার্থী ব্যাকুল ছিল। অথচ তাকে দখল করে শুধু আমিই ছিলাম। আমার আর রাহাতের একটা দারুণ প্রেমের গল্প ছিল।

দুজনে একসঙ্গে কতদিন যে চারকলার পাশ দিয়ে বধ্যভূমির দিকে হেঁটে গিয়েছি। কোরাসে নেতৃত্ব দিয়ে মাতিয়েছি ডিপার্টমেন্টের সব গানের অনুষ্ঠান, প্যারিস রোডের ধারে বন্ধুদের আড্ডা। কত বিকেলে যে ক্যাম্পাসে ঘাসের ওপরে পাশাপাশি বসে অনর্থক মান-অভিমানে সময় কাটিয়েছি। সন্ধ্যের অপস্রিয়মাণ সূর্যের দিকে তাকিয়ে শরীর ঘেঁষে বসে দুজন দুজনের সান্নিধ্যে নিবিড় উষ্ণতায় বুঁদ হয়েছি। কতকাল যে সেসব স্মৃতিতে ফেরা হয়নি! আজ সেসব যেন পায়ের কাছে হুড়মুড় করে লুটিয়ে পড়ছে। বহু বছর পরে আমি খুব কাছাকাছি রাহাতের নিঃশ্বাসের উত্তাপ টের পাচ্ছি।

হোঁচট খেতে গিয়ে নিজেকে সামলে নিই। রাস্তা পার হতে হবে। এদিক-সেদিকে তাকাতেই দেখি ফিনফিনে কাগজের একটা চৌকো ঘুড়ি চক্কর দিতে দিতে পাশের কড়ই গাছের মাথায় আটকে গেছে। যেন আমার ফেলে আসা স্মৃতি মুখ থুবড়ে পড়েছে। রাহাত আর আমার সম্পর্কের মতো। এভাবেই একদিন আমাদের দুজনের গল্পটা থমকে গিয়েছিল। আর এর পরের গল্পটা বিধাতা লিখেছিল অন্যভাবে। যে গল্পটা ছিল বৃষ্টিপথ ভেঙে আনোয়ারকে সাথে করে পথ চলার গল্প। যে পথে পাতা মাড়ানোর আওয়াজ নেই, পাখির চঞ্চল ডাক নেই, ঝড়ো বাতাসের দমকায় ভাসার সুখ নেই। আছে শুধু নিশ্বাসের সঙ্গে শব্দহীন বোঝাপড়া। সংসারের যুগলজীবনে থেকেও যে গল্পের চরিত্র দুটি তুমুল নিঃসঙ্গ দিনযাপন করে। 

রাহাত পিছু ফিরেছে। আমার বুকের ভেতরের অস্থিরতার বুদবুদে আমি বিহ্বল হয়ে যাই। ওকে দেখেও আমি কথা খুঁজে পাই না। 

‘কীরে কেমন আছিস? তোকে তো সেই আগের মতো লাগছে সামিয়া। কপালে বড় টিপ, প্রসাধনহীন মুখ আর মাড়ভাঙা কচকচে তাঁতের শাড়ি।’

রাহাত আমাকে অবলীলায় আগের মতো তুই তোকারি করলেও এত বছর পর আমার আর তুই ডাক আসে না। আচ্ছা সকালে ফোনে কথা বলার সময় ওকে আমি কী বলে সম্বোধন করেছিলাম, তুই? নাকি তুমি? আমি মনে করতে পারি না।

‘কী ভাবছিস?’

‘ভাবছি, তুমিও আগের মতো আছো। বাইরেরটা দেখে মানুষ বিচার করার অভ্যাস তোমার আজো যায়নি দেখি। বদলাওনি ছিঁটেফোঁটাও।’

রাহাত হাসে সশব্দে। আমাদের দিকে রাস্তার দুএকজন কৌতূহলী মানুষ তাকায়। রাহাতের হাসিতে আমার বুকের ভেতরে এক সমুদ্র ঢেউ আছড়ে পড়ে। ঠিক সতের বছর আগের মতো। কিছুই বদলায়নি আসলে। রাহাতের হাসির শব্দে বুকের ভেতর সেই আদি ঢেউয়ের ভাঙন হচ্ছে। রাহাত আগের মতো ঠোঁটের কোনে রহস্যময় হাসি ঝুলিয়ে ছন্দ আওড়াচ্ছে।

‘বুকজুড়ে অভিমানের ঢেউ, আমি কী তবে আজো তোর কেউ?’

বলতে ইচ্ছে করে, কেন এমন করছো? কেন এমন বলছো? বলতে পারি না। চোখে পানি চলে এসেছে। কিছুতেই কাঁদবো না-পণ করতে করতে এসেছি তবু নিজের ওপরে নিজের নিয়ন্ত্রণ নেই বলে আজ কাজল পরিনি চোখে। রাহাত হয়তো খেয়াল করেনি, আমার চোখে কাজল নেই। আগে খুব খেয়াল করতো। আমি পিছু ফিরি। নিজেকে আড়াল করতে চাইছি তা বুঝে রাহাত হাসে।

‘কান্নার অভ্যাসটা তাহলে আছে এখনো।’

‘কাঁদছি কই? কান্নার কী আছে? যাক, বাদ দাও, সকালে শবনমের কথা বললে না তো। শবনম দেশে ফেরেনি?’

‘অন্য কারো কথা বলবো বলে তো তোকে ডাকিনি।’

রাহাতের কণ্ঠস্বর অন্যরকম শোনায়। হেঁয়ালিভরা আবার সুরটা অচেনা।

‘তবু শুনি। পুরনো বন্ধু-বান্ধবের সাথে দেখা হলে তার পরিবার-পরিজনদের খবর নেয়াটা তো ভদ্রতার মধ্যে পড়ে।’

‘তোর সাথে কি আমার ফর্মাল সম্পর্ক?’

রাহাতকে করা প্রশ্নের পিঠে প্রশ্ন ফেরত পেয়ে খুব অসহায় লাগে। আমি খানিক এগিয়ে পুকুর ঘাটের সিঁড়ির একদম ওপরের ধাপে বসি। রাস্তার উল্টোদিকে সপুরার সামনে গাড়ির সারি। রাস্তায় লোক সমাগম থাকলেও পুকুরের এই পাশটায় আমরা ছাড়া আর কেউ নেই।

‘এতদিন পর দেশে ফিরে কেমন লাগছে?’

‘দেশের আবহাওয়াটা কেমন যেন সহ্য হচ্ছে না। শরীর জ্বলছে। রাজশাহীতে খুব গরম মনে হচ্ছে।’

‘হু, এখানকার আবহাওয়া একটু অন্যরকম। তুমি ভুলে গেছো। গরমের দিনে খুব গরম আর শীতের দিনে খুব ঠান্ডা। গত বছর তো এমন ঠান্ডা পড়েছিল; ভেবেছিলাম তাপমাত্রা না মাইনাসে নেমে যায়।’

আমি একটু থেমে ফের প্রশ্ন করি।

‘লন্ডনের ওয়েদার কেমন?’

‘বিচিত্র। আজব দেশ একটা। কখনো কখনো একই দিনে তিন-চার রকমের আবহাওয়া দেখা যায়। বাদ দে এসব। তুই কেমন আছিস?’

‘ভালো।’

‘এতো সাদামাটা উত্তর! কেমন ভালো?’

‘যদি বলি খুব ভালো তাহলে কি হতাশ হবে?’

রাহাত হাসে, এবার নিঃশব্দে।

‘মিথ্যে বলবো না, হয়তো খুশিই হবো। যদি জানি, আমার মতো তুইও ভালো নেই।’

‘কেন! তুমি ভালো থাকবে না কেন!’

‘তোর অভিশাপে।’

আমি থরথর করে কেঁপে উঠি। যেন নিঃশব্দে আমার বুকের ভেতরের চোরাকুঠুরি খুলে যায়। সেখান থেকে বেরিয়ে আসে হাজার হাজার মিষ্টিখেকো লাল পিঁপড়ে যারা আমার শরীরজুড়ে মিহি দাঁতে কামড় বসায়। কামড়ের যন্ত্রণা সহ্য করতে না পেরে আমি চিৎকার করে বলি, ‘তুমি কী ভেবেছো! আমি দেবযানীর মতো কচকে বিদায় অভিশাপ দিয়েছি? অভিশাপ দেয়া তো তোমারই কাজ। ও আমার ধাতে নেই।’

রাহাত আমাকে চমকে দিয়ে আবৃত্তির ঢঙে বলে, ‘আমি বর দিনু, দেবী, তুমি সুখী হবে। ভুলে যাবে সর্বগ্লানি বিপুল গৌরবে।’

‘হেঁয়ালি রাখো। এখন এত চপলতা স্কলার রাহাতকে মানায় না। আমি উঠবো।’

‘যাবিই তো সামিয়া। আরেকটু বস না।’

রাহাতের গলায় মিনতি। আমি বসে থাকি। আমার পা দুটো যেন মাটিতে গাছের গভীর শেকড়ের মতো গেঁথে যায়। আমরা কেউ কোনো কথা বলছি না। সামনের দিকে অর্থহীন দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি। পুকুরের পানিতে অন্ধকার নেমেছে। এখন রাত আর সন্ধ্যের মাঝামাঝি এক বিমর্ষ সময়। বলার মতো আর কিছু খুঁজে পাই না বলে আমি প্রশ্ন করি, ‘শবনম দেশে ফেরেনি? ও কী করছে এখন?’

‘না। শবনমের পি.এইচ.ডি শেষ হয়নি।’

‘আহ, কেন?’

‘মেয়েটা হবার পরে আর শেষ করতে পারেনি। এই বছর আবার চেষ্টা করবে। আমি ফিরলেই ওদিকে মন দিবে। বাবা মারা যাবার পর এখানকার সম্পত্তিগুলো প্রায় বেহাত হবার দশা তাই সেগুলো বিক্রির জন্য আমাকে আসতেই হলো।’

‘এসেই বুঝি আমাকে মনে পড়লো?’

‘মনে যে থাকে, তাকে কি আর মনে করা লাগে?’

নির্লজ্জের মতো আমার ঠোঁট ফসকে প্রশ্নটা বেরিয়ে যায়, ‘তাহলে ছেড়ে গেলে কেন?’

‘ছেড়ে যাইনি তো, পালিয়েছি।’

‘কেন?’

‘তুই ছিলি সমুদ্র আর আমার পছন্দ ছিল নদী। একদিন মনে হলো সমুদ্রে নিজেকে হারালে খুঁজে পাওয়া যায় না আর নদীতে বাঁধ দেয়া যায়।’

‘তাই পালিয়েছো?’

‘হু। ভুল করেছিলাম। পরে বুঝেছি, জলোচ্ছ্বাসই ভালো ছিল। নদীতে চর পড়ে।’

‘স্বার্থপর! স্কেপিস্ট! সেই একই সনাতন পুরুষ চরিত্র, যে নারীকে বাঁধ দিয়ে আটকে রাখতে চায়!’

‘বল! বল! আরো বল। আরো কঠিন কথা শোনা। আজ তো নিজের পাওনাটুকুই বুঝে নিতে এসেছি।’

আমার কণ্ঠনালী জুড়ে প্রতিহিংসার দহন ছড়িয়ে যায়। সেই উত্তাপ আড়াল করতে হিসহিসিয়ে বলি, ‘আমার আজ তোমাকে কিছুই দেবার নেই রাহাত।’

যাবার জন্য পা বাড়াই। হাঁটতে থাকি, হোঁচটহীন, দিকহীন। রাহাত স্থানুর মতো দাঁড়িয়ে থাকে। পিছন ফিরে দেখি আমি এসে যেমন দেখেছিলাম, ও ঠিক তেমনিভাবে দাঁড়িয়ে আছে। আমি পায়ের গতি বাড়াই। ফেলে আসা পথে দুজনের মধ্যকার দূরত্ব বাড়তে থাকে।

রাহাতকে একলা ফেলে আমি হাঁটি আর আমার বুকের ভেতরে আছড়ে পড়ে অজস্র ঢেউ। সেই ঢেউ গুনতে গুনতে আমি আমার সংসারে ফিরি।

 

 

 

One thought on “ভালোবাসা দিবসের ছোটগল্প: ঢেউ

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>