Categories
ভাসাবো দোঁহারে: নীল বলে জানি । সেবন্তী ঘোষ
আনুমানিক পঠনকাল: < 1 মিনিট 
নীল জল ঠেলে উঠছি
শ্যামের রঙ যেন গা ময়
ধুলেও উঠবে না এত গাঢ়
চাইছো যখন রং ধরুক
বিষণ্ণ বিকেল অবধি নীলাভ হোক
পাটে বসা সূর্যেও ছিটে নীল
এত সহজে কি সে বিদায় নেবে বল?
বললে, বিদায়।
কাল থেকে নীল গোলাপ নয়,
বদলে অপরাজিতা,
সেই তো ঘুরে ফিরে চাইছো একই রং ,
সমুদ্র একই, যাতে ডুবে যেতে সাধ,
ভেসে উঠতে আর কে চায়?
যখন জানোই ভাটার জল
এমনি দূরে চলে যাবে।
যে দিকে তাকাও
দেখো অপেক্ষার রং নীল
জামায় গুলে দিলে
তুমি লজ্জা রঙিন ।
এ ঘোর বরফ প্রাতে
হিমেল হাওয়ার সন্তাপে
নীলাকাশে মজে গেলে
বাহানার মতো কণ্ঠে নিয়ে নীল
নির্বীষ, কালশিটে ফোটে ভোররাতে।
রাত এলে ছবির মতো জেগে থাকো
ঘন, চুঁইয়ে পড়া মন্ত্র মুগ্ধ যেন মধু
নির্মোক ছেড়ে বিষণ্ণতার,
সাপ যেন নীল নির্জনে সঙ্গীহীন,
ক্রীড়া বিভঙ্গে মাতে নিজের ছায়ায়।
অরণ্যের গন্ধে ওড়ে শার্ট
তুমি ছিন্ন বোতামের মতো
মন হারিয়েছো ফের ঘন বনে।
তবুও পরোয়াহীন, পাতা উড়ে যাক।
কে চায় লেখা নাম শিস পেনসিলে?
মুহুর্তে মুছে যাওয়া, এই পরিণাম?
জামানত জব্দ হওয়া তক
বৃথা বাক্য, বৃথা হা হুতাশ
দু’দিন বৈ তো নয়,
ফের ডানা গুটিসুটি ,
ফিরে যাবে চুপচাপ যে যার সভায়।

জন্ম শিলিগুড়িতে। পড়াশুনো শান্তিনিকেতনে। স্নাতকোত্তর শেষ করে শিক্ষিকার জীবন। কবিতার জন্য পেয়েছেন কৃত্তিবাস পুরস্কার (২০০৪) এবং বাংলা আকাদেমির অনিতা-সুনীলকুমার বসু পুরস্কার (২০১১)। সাহিত্য একাডেমির আমন্ত্রণে ২০১১ সালে কানাডার ভ্যাঙ্কুভার ও অটোয়ায় ব্রিটিশ কলম্বিয়া ইউনিভার্সিটি, সাইমন ফ্রেজার ইউনিভার্সিটিতে কবিতা, গল্প পাঠ ও সেমিনারে যোগ দিয়েছেন। ঢাকা ও ভুবনেশ্বর সার্ক ফেস্টিভ্যালেও আমন্ত্রিত ছিলেন তিনি। পেয়েছেন মানবসম্পদ উন্নয়ন বিভাগের সিনিয়র ফেলোশিপ। তাঁর কাব্যগ্রন্থের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ‘ফুল ও সুগন্ধ’, ‘ফুর্তি ও বিষাদ কাব্য’, ‘দিল দরিয়া’, ‘গালিবের বউ যা বলতে পারে’, ‘কলোনি আমার’ ইত্যাদি। এছাড়াও যশইয়াঞ্জন পিয়াসীর নেপালি কবিতার বই ‘শান্তি সন্দেহ’-র অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে সাহিত্য একাডেমি থেকে।