ভাসাবো দোঁহারে: তিনটি ভালবাসার কবিতা । রঙ্গীত মিত্র
বুলবুলি
বুলবুলি পাখিটা রোজ আসে মুড়ি খেতে
সাদা বেড়ালটা সিঁড়ি মেপে নেয় সকালে।
এই লেপ, এই বিছানা,এই জানলা
যতই খারাপ লাগুক
ভীষণ আপন লাগে।
জেল পেন থেকে আমার হাতে রামধনু লেগে যায়
নদী শুকিয়ে এখানে জেগে উঠছে উন্নয়ন।
কলাগাছের সুপ্রাচীন বাগান থেকে
পরীরা ক্রিপ্টো কারেন্সি নিয়ে খেলে বেড়ায়।
আমাদের সেই ভোরের সমুদ্র সৈকতে জেলি-ফিসের রেখে যাওয়া নিঃশ্বাস
গেলাসের মদে আটকে থাকা সূর্যোদয়
হাতে হাত ধরে জল ছুঁয়ে যায় তোমার পায়ের ছাপ
সমস্ত সুরে তোমাকেই শুনতে চায়।
সব ইকুয়েশন আর ইকুলিব্রিয়াম পেরিয়ে
অসম্ভবকে সম্ভব করে, শীতকাল পুঁটলি নিয়ে চলে যায়।
তোমার ঠোঁটের মতো ভোরবেলা, আমার প্রশ্রয়
আরো গভীর থেকে আকরিক তুলে আনে।
সমস্ত নারী পেরিয়ে তোমার চুলের স্রোত
শান্তি, প্রেম, আশ্রয় পেয়ে যাওয়া বাউণ্ডুলে
এক সঙ্গে থাকার শপথ নেবার পরও,
এই শহর ছেড়ে যেতে, তার মন চায় না।
বীজ পুঁতে দিয়েছি অসমান জমিতে
আকরিক হীরে দেখে চেনা যেমন যায় না।
একসময় যেমন জল থেকে গাছ উঠে এসেছিলো
আমাদের স্থলে।
আমাদের ভবিষ্যৎ জলে ভেসে গেছে
শ্যাওলার মতো মধ্যবিত্ত এই পরিবার, অফিসের জগত।
জানলা খুলে দিলে প্রতিবেশী উঁকি মারে।
মানব – জন্ম
শিয়ালের ফ্যামিলিতে হরিণের মতো মানুষ হচ্ছি।
অপছন্দের অন্ধকার আমার বিরক্ত করে
ভাগ্যে পেরেক গাঁথা।
আমার নাম ধরে নিশি ডাকে ;
অনেকবার মৃত্যুর কাছে গিয়েও মরতে পারিনি
হারের মধ্যে পেয়েছি জয়ের চাবি।
হঠাৎ-ই অমৃতের সন্ধান পেয়ে যাওয়ায়
কচ আর দেবযানী পড়তে পড়তে
মিথ থেকে মানুষ হয়ে গেছি।
ঈশ্বরের এই মানব-জন্মে, তোমাকে স্বাগত।

শূন্য দশকের কবি তিনি। লিটল ম্যাগাজিনেই বেশি লিখেন। কৃত্তিবাস, কবিসম্মেলন, ভাষানগর, বৃষ্টিদিন, আদরের নৌকা, কৌরব, যাপনচিত্রসহ নানা লিটলম্যাগে। তাঁর প্রকাশিত বই ‘রুমালে বিয়ারের গন্ধ’ (অভিযান পাবলিসার্স)।