ইন্দ্রদীপ ভট্টাচার্য
অনুবাদ : জিললুর রহমান
বিপ্লব, মানবতার প্রতি গভীর প্রতিশ্রুতি, রাও-এর সাহিত্যিক কর্মযজ্ঞের মধ্যে নিয়ত চলমান——যা ক্রমাগত সরকারকে নিরলসভাবে বিদ্রূপ করার চেষ্টা করে এসেছে।
জিহ্বা যখন কম্পমান হয়,
স্বর বায়ুকে ছাড়িয়ে নেয়, এবং
সঙ্গীত যুদ্ধক্ষেত্রে ক্ষেপণাস্ত্রে পরিণত হয়
শত্রু ভয় করে কবিকে;
তাকে কারারুদ্ধ করে, এবং
ঘাড়ের চারপাশে ফাঁস আঁটসাঁট করে বাঁধে
তবে, এরমধ্যেই, কবি তাঁর লেখার ভেতর দিয়ে
জনগণের মধ্যে প্রশ্বাস নেয়…
অশীতিপর কবি, সাহিত্য সমালোচক, অধিকারকর্মী, একাডেমিশিয়ান, জন বুদ্ধিজীবী এবং মাওবাদী আদর্শবাদী ভারভারা রাও তাঁর অনুগামীদের কাছে ভিভি হিসাবে পরিচিত অত্যন্ত প্রিয় ব্যক্তি। তাঁর ‘দ্য বার্ড’ বা পক্ষী শীর্ষক কবিতায় এই পংক্তিগুলো লিখেছিলেন ‘ভভিশ্যত্তু চিত্রপটম’ (‘ভবিষ্যতের প্রতিকৃতি’) নামে একটি সংকলনে ১৯৮৬ সালে।
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সদ্য নবীন প্রভাষক থাকাকালীন নকশালবাড়ি আন্দোলনের মাধ্যমে তাঁর মধ্যে যে বিপ্লবের আগুন জ্বলছিল, তা ছয় দশক ধরে অবিরত রয়ে গিয়েছে এবং সে ছাই ছড়িয়ে ছিটিয়ে প্রসারিত হয়ে পড়েছে, আগুন জ্বলছে যা নব্য-উদারপন্থার, পুরোপুরি পুড়িয়ে দিতে পারে– দমন, বর্ণবাদ এবং ধর্মীয় মতবাদ। এতে অবাক হওয়ার কিছু নেই যে একটি রাষ্ট্র যা ফ্যাসিবাদের প্রতি স্পষ্টভাবে স্নেহ প্রদর্শন করে এবং সকল প্রকার মতবিরোধকে দূরে সরিয়ে দিতে চায়, তাকে শত্রু মনে করে এবং তাকে কারাগারে ফেলে রাখে। বিপ্লব ও মানবতার প্রতি গভীর প্রতিশ্রুতি ভারভারা রাও’র সাহিত্যিক কর্মকাণ্ডের প্রায় ১৫ টি খণ্ডে রয়েছে কবিতা, চিঠিপত্রসমূহ, অনুবাদগুলি (যার মধ্যে কেনিয়ার প্রখ্যাত লেখক নাগুগি ওয়া থিওঙ্গোর লেখাও অন্তর্ভুক্ত) এবং সাহিত্যিক সমালোচনা। তিনি বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভারতীয় কবি, এই দাবি প্রায় সব বড় ভারতীয় ভাষায় তাঁর রচনার অনুবাদ দ্বারা সমর্থিত।
তিনি সাহিত্য ও চারুকলায় সমান শক্তিশালী মার্কসবাদী সমালোচক। তাঁর কবিতা তাঁর আজীবন রাজনৈতিক সক্রিয়তা থেকে উদ্ভূত এবং তাঁর রাজনীতি এবং কাব্যিকতা একেবারে খাঁটি ও মর্মভেদী উপায়ে একে অপরের পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।
১৯৮০ এর দশকের মাঝামাঝি সময়ে, ভারভারার বিরুদ্ধে পুলিশ অফিসারকে হত্যা করার জন্য এবং এই কাজের জন্য বিস্ফোরক সরবরাহের জন্য নকশালদের সাথে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে অভিযুক্ত করা হয়েছিল। ওয়ারঙ্গল কারাগারে বসে তিনি লিখেছেন:
আমি বিস্ফোরক সরবরাহ করিনি
এমনকি সে বিষয়ে কোনো ধারণাও দিইনি
সে তুমিই, যে বুটের লোহার মুড়ি দিয়ে পদদলিত করেছো।
উইঢিবির বা পিঁপড়ের পাহাড়ের উপরে
আর মথিত ধরণী পৃষ্ঠ থেকে জন্ম নেয় প্রতিশোধের গান।
সে তুমিই, যে মৌচাকে লাঠির আঘাত করেছো
বিক্ষিপ্ত মৌমাছির গুঞ্জরণ
তোমার হৃদয়ে বিস্ফোরিত হয়
ভিভির বিরুদ্ধে অভিযোগ কখনও প্রমাণিত হয়নি। স্ক্রোল ইন্ডিয়া জানিয়েছে যে ১৯৭৩ থেকে ২০১৮ সালের মধ্যে ভারভারা রাও’র বিরুদ্ধে মাওবাদী বিদ্রোহে তাঁর ভূমিকা সম্পর্কিত প্রায় ২৫ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তার একটিও আদালতে প্রমাণিত হয়নি। ২৮ শে আগস্ট, ২০১৮, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার ভূমিকার জন্য অভিযুক্ত করে তাকে হায়দরাবাদের বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।
তাকে গ্রেপ্তারের সময় পুলিশ কর্মকর্তাগণ তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞেস করেছিলেন কেন তাঁর বাড়িতে এতগুলি বই রয়েছে, বিশেষত মার্কস এবং মাওয়ের উপর এবং কেন আম্বেদকরের ছবি ছিল, কিন্তু দেবতার নয়। তাঁর ভাগ্নি বর্ষা গন্ডিকোটা নেলুটলা বোস্টন রিভিউ’তে এক প্রবন্ধে লিখেছেন যে, “নরেন্দ্র মোদীর প্রশাসনের লক্ষ্য ছিল আমার মামার মতো লোকদের চুপ করিয়ে রাখা… ভারত সরকারের কাছে, তিনি একজন বিদ্রোহী এবং হুমকি, “জাতীয়তা বিরোধী”।
ওসমানিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তেলুগু সাহিত্যে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পরে রাও সাহিত্যি মিত্রুলু (সাহিত্যের বন্ধুরা) নামে একটি সাহিত্য গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, যা ১৯৬৬ সালে শ্রজানা নামে একটি জার্নাল বের করতে শুরু করে। একই সময়ে, তিনি তেলেগু সাহিত্যের দৃশ্যে আসার ঘোষণা দেন মূলত ফ্রি-ভার্স বা মুক্ত পদের শ্লোকে লেখা দুটি কবিতার সংকলনের মাধ্যমে : ১৯৬৮ সালে চালি নেগল্লু (‘ক্যাম্প ফায়ারস’) এবং ১৯৭০ সালে জীবনাদি (‘দি পালস’)। শ্রজানা একটি ত্রৈমাসিক পত্রিকা হিসাবে শুরু হয়েছিল, তবে এর প্রচুর জনপ্রিয়তা ভিভি’কে মাসিক প্রকাশের জন্য উৎসাহিত করেছিল ১৯৭০ সাল থেকে এবং তিনি সামাজিক ন্যায়বিচার সম্পর্কিত লেখাগুলি অন্তর্ভুক্ত করেন। প্রথম ইস্যু থেকে এটি নির্বাককে একটি কন্ঠস্বর দিয়েছে। ভিভি ১৯৯০ সাল পর্যন্ত শ্রজনার সাথে জড়িত ছিলেন। দীর্ঘ ও বারবার কারাবাসের সময় তাঁর স্ত্রী হেমলতা পত্রিকাটি সম্পাদনা করেছিলেন। একই সময়ে যখন ভিভি প্রথম ১৯৭৩ সালে ড্র্যাকোনীয় এমআইএসএ আইনের আওতায় গ্রেপ্তার হয়েছিলেন, তখন জার্নালের বেশ কয়েকটি সংখ্যা নিষিদ্ধ হতে শুরু করে। WEBZINE RAIOT.IN -কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ভিভি বলেছিলেন, “এই সময়ে (১৯৭২-৭৪) শ্রজানার ছয়টি সংখ্যা রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ১৯৭৪ সালের মে মাসে রেল ধর্মঘটের সময় শ্রজানা একটি রেলকর্মীর লেখা “কারাগার কি রেল চালাতে পারে” শীর্ষক একটি কবিতা প্রকাশ করেছিলেন এবং একই শিরোনামে একটি সম্পাদকীয় রচনা করেছিলেন। এটি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। “যদিও ভিভি’র কবিতার পিছনে ক্ষোভ এবং প্রতিরোধ শক্তি চালিত হয়েছে, তারপরও তাঁর কবিতা কখনোই চিৎকারসর্বস্ব হয়ে ওঠেনি। আদর্শের প্রতি তাঁর অকৃত্রিম প্রতিশ্রুতি, তাঁর গভীর প্রবণতা, তাঁর অভ্যাস-প্রবণতা, বিদ্রূপ এবং রূপকের অবিরত ব্যবহারের জন্য তিনি সবসময় উৎকলিত হবেন। অনেক পাঠক তাঁর কবিতার মধ্যে রোম্যান্টিক স্ট্রেন-ও খুঁজে পেয়েছেন বলে মনে করেন। এটি স্বচ্ছন্দে বলা যায় যে, কারাগারে থাকাকালীন ভারভারা রাওয়ের চেয়ে বেশি লিখেছেন, এমন কোনো ভারতীয় কবি নেই। ১৯৭৩ সালে তার প্রথম কারাবাসের সময়, তিনি লিখেছিলেন:—
এটি কারাগার কণ্ঠস্বর এবং পায়ের জন্য
কিন্তু হাত তার লেখা থামায়নি
হৃৎপিণ্ড কম্পন করেনি বন্ধ
স্বপ্ন এখনও আলোর দিগন্তে পৌঁছে যায়
এই নির্জন অন্ধকার থেকে ভ্রমণে বেরোয়…
ভিভি’র কবিতার খণ্ডগুলোর মধ্যে ভভিষ্যথু চিত্রাপটম (‘ভবিষ্যতের প্রতিকৃতি’, ১৯৮৬) এবং মুক্তকান্তম (‘ফ্রি ভয়েস’, ১৯৯০) খণ্ড-দুটি সর্বাধিক উদযাপিত / পঠিত গ্রন্থ হয়ে উঠেছে। এনটিআর শাসনামলে পুলিশের নৃশংসতা, সরকারের জনবিরোধী নীতি, বিচার বহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং অন্ধ্র প্রদেশের প্রান্তিক জনগণের বিষয়গুলি এই খণ্ডগুলির পুনরাবৃত্তিশীল বিষয়বস্তু।
‘কসাই’ (১৯৮৬) খণ্ডটি পুলিশ হেফাজতে সাধারণ নাগরিক নির্যাতনের নিন্দাধ্বনি, একেবারে সরাসরি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়। ১৯৮৫ সালের ১৫ ই মে একজন মুসলিম কসাই পুরো জনগণের দৃষ্টিভঙ্গিতে কলেজের এক ছাত্রকে হত্যা করতে সরাসরি দেখেছিল, কারণ তিনি পুলিশ এনকাউন্টার গুলির প্রতিবাদে দোকানদারদের তাদের শাটার নামিয়ে দিতে বলছিলেন। কবিতায় কসাই বলেছেন,
“আমিও প্রাণ নিই
তবে কখনই বিদ্বেষের সাথে নয়
আমি মাংস বিক্রয় করি কিন্তু
আমি কখনও নিজেকে বিক্রি করিনি “
সবচেয়ে মারাত্মক ও কঠিন আঘাতকারী কবিতা হলো একই ভলিউমের ‘ডান্স অব লিবার্টি’ কবিতাটি, যেখানে ভিভি বসন্তের রূপকের সাথে ব্যঞ্জনা সৃষ্টি করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বসন্ত নাগেশ্বর রাও ঘোষণা করেছিলেন যে রাজ্য জয়যুক্ত হয়েছে স্বাধীনতা ও শান্তিতে। আশ্চর্য হবার কিছুই নেই যে, সংগ্রহটি নিষিদ্ধ হয়েছিলো।
মুক্তকান্তমের গানের কথাগুলি ভি ভি রচিত সবচেয়ে সেরা কয়েকটি। ‘আপনি যা বলুন সব পরে’ তে তিনি লেখার কাজটিকে একটি অন্তহীন আন্দোলন হিসাবে দেখেন:
“আমার জন্যে
লেখার দৃশ্য,
শব্দের শৃঙ্খলগুলো পেঁচিয়ে দেওয়া,
পৃথিবীর প্রান্তগুলো থেকে,
এক অন্তহীন আন্দোলন।
লেখালেখিতেও
পীড়ন ও নিষ্পেষণ শব্দকে প্রভাবিত করে,
পুনরাবৃত্তি করে চলে আন্ত-অ্যানিমেশনের বুননে।
বাধ্য করে পুনঃলিঙ্গায়নকে
শব্দ
মানুষের সারির মতোন,
আন্দোলনের স্ফীত ঊর্মি ”
শব্দগুলি ‘ভিভি’র নিজস্ব কাব্যিক দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে আলোচনা করে; কীভাবে তিনি তাঁর প্রজ্ঞার কাছ থেকে জাগ্রত শব্দগুলিকে জাগ্রত করেন এবং তারপরে সেগুলি আকাশে উড়ে যায়:
“আমাকে আবারও বলতে শিখতে হবে
আমাদের লোকদের সাথে
কথা বলতে এবং শুনতে;
আমাকে অবশ্যই শব্দটি আঁকতে হবে
এবং এটি মেনে চলতে হবে ।
শব্দের সাথে বিশ্বাসঘাতকতার পরে
মানুষের উত্তরাধিকার তবে কী?”
১৯৭০ সালে নকশালবাড়ির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ভিভি বিপ্লব রচইতলা সংঘ (বিরসাম) বা বিপ্লবী লেখক সংঘ প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, লেখক কুটুম্ব রাও, নাট্যকার রচককোণ্ডা বিশ্বনাথ শাস্ত্রী, কবি ও ঐতিহাসিক কে. রমনা রেড্ডি, জ্বলামুখী, নিখিলেশ্বর, নাগনা নুনি এবং চেরাবন্দ রাজু (দিগম্বর কবি হিসাবে পরিচিত) এবং আরও কয়েকজন। অর্ধ শতাব্দী ধরে এটি দক্ষিণ ভারতে দলিত সাহিত্য আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছে। এর আধিকারিক সাময়িকী অরুণযতারা তরুণদের, বিশেষত দলিত লেখকদের পক্ষে বিশাল আধা-সামন্ত সাম্রাজ্য কেন্দ্র এবং তার সামগ্রিক ব্যবস্থার প্রতিরোধের রেকর্ড করার জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ভিভি হিসাবে কবি ভারভারা রাও এমন একটি স্থান তৈরি করেছেন যেখানে দুয়ার উন্মুক্ত করে দিয়েছিলেন নিঃশব্দ করে দেওয়া কসাইয়ের শব্দগুলিকে উচ্চারণ করার। তেমনি করেই একজন রেলওয়ে কর্মী, আদিবাসী, ভূমিহীন কৃষক এমনকি একটি এনকাউন্টারের শিকারের কথাও তাঁর কন্ঠ ও সম্পাদনায় উচ্চারিত হয়। ভিভি সম্পাদক হিসেবে ১৯৭০ এবং ৮০ এর দশকে মুসলিম এবং দলিত লেখক এবং মহিলাদের জন্য সাহিত্যের পাদপীঠ উন্মুক্ত করেছিলেন। বিরসামের পাবলিশিং সেল এই লেখকদের প্রায় ১০০ টি বই বের করেছে, যেগুলিতে দণ্ডকারণ্য আন্দোলন, অপারেশন গ্রিন হান্ট বা আদিবাসী পুরুষদের হেফাজতে মৃত্যুর মতো বিষয়ে ছোট গল্প এবং কবিতা রয়েছে। এর মধ্যে অনেকগুলি কাজ ইংরেজী অন্যান্য ভারতীয় ভাষায় অনুবাদ করা হয়েছে। ২০১০ সালে, ভারতের পেঙ্গুইন ‘বন্দীর কল্পনাশক্তি: কারাগার থেকে চিঠিপত্র’ শিরোনামে ভিভি’র চিঠিগুলির একটি সংগ্রহ প্রকাশ করেছিল। এর ভূমিকাতে লেখক বলেছেন “বইটির টুকরোগুলি হ’ল সেই নোটগুলি যা জেলের নিঃসঙ্গতায় লিখিত হয়েছে”। নির্জনতা এবং কারাবাসের অন্বেষণ এই গ্রন্থে বর্ণিত চিঠিগুলির কেন্দ্রীয় বিষয়বস্তু, ভিভি’র মধ্য দিয়ে দেখা গেছে যে বিশ্বের বড় বা ছোট কোনও কারাগার কোনও কবির কল্পনাশক্তিকে বন্দী করে রাখতে পারে না।
ভিভি-র অন্যান্য প্রধান গদ্য রচনার মধ্যে তাঁর পিএইচডি থিসিসের শিরোনাম হচ্ছে ‘তেলেঙ্গানার মুক্তি সংগ্রাম এবং তেলুগু উপন্যাস —— সমাজ ও সাহিত্যের মধ্যে একটি পাঠের আন্তঃসংযোগ’। এটি তেলুগু কথাসাহিত্যে মার্কসবাদী সাহিত্যতত্ত্বের প্রভাব সম্পর্কে এখন পর্যন্ত সর্বাধিক পরিচিত সমালোচিত কাজ। এটি সাহিত্য সমালোচক সি.ভি. সুব্বারাও, কে বালাগোপাল, এন. ভেনুগোপাল রাও এবং কে. শ্রীনিবাস-এর মত অনুসারে তেলুগুতে সাহিত্য সমালোচনার একটি ঐতিহ্য সৃষ্টি করেছে। ভিভি’র কবিতা——যা তৃতীয় বিশ্বের বাস্তবতা সবচেয়ে অবসন্ন, নৃশংস দারিদ্র্য এবং শোষণমুক্ত বিশ্বের জন্য তার দৃষ্টিভঙ্গি রেকর্ড করেছে——তার জীবনের চেয়েও বৃহত্তর জীবনকে ধরে রেখেছে অর্ধ শতাব্দী ধরে। বিপ্লবী মানবতাবাদের প্রতি তাঁর প্রতিশ্রুতি বাস্তব এবং গুরুত্ববহ। পরবর্তী সরকারসমূহ, তাঁর রাজ্যে এবং কেন্দ্রে উভয়ই, কবির এই সংকল্প, এই প্রতিশ্রুতিকে ঠাট্টা করার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা করেছেন। কবি ভারভারা রাও ৮০ছোঁয়া বয়সে এবং কোভিড-১৯ সহ একাধিক রোগে ভুগছেন, তিনি এই রাষ্ট্রের এক নম্বর শত্রু হিসাবে চিহ্নিত রয়েছেন। তিনি যেন জনগণের জন্যে আরও শ্বাস টানতে পারেন! বিপ্লব দীর্ঘজীবী হোক! দীর্ঘজীবী হোক ভিভি!
সূত্র : The wire.in
নিবাস: চট্টগ্রাম।
কবিতাই প্রধান বিচরণ।তবে নন্দনতাত্ত্বিক প্রবন্ধ, নিবন্ধ, ভ্রমণগদ্য এবং অনুবাদকর্মেলিপ্ত।
কবিতার বই:
অন্যমন্ত্র(লিরিক১৯৯৫),
শাদা অন্ধকার(লিরিক২০১০),
ডায়োজিনিসের হারিকেন(ভিন্নচোখ২০১৮)
দীর্ঘ কবিতার পুস্তিকা:
শতখণ্ড(বাঙময়২০১৭)
আত্মজার প্রতি(বাঙময়২০১৭)
প্রবন্ধ/নিবন্ধ:
উত্তর আধুনিকতা: এ সবুজ করুণ ডাঙায়(লিরিক২০০১, পরিবর্ধিত২য়সংস্করণ: খড়িমাটি২০১৯)
অমৃত কথা(লিরিক২০১০)
অনুবাদ:
আধুনিকোত্তরবাদের নন্দনতত্ত্ব: কয়েকটি অনুবাদ(লিরিক২০১০)
নাজিম হিকমতের রুবাইয়াৎ(বাতিঘর২০১৮)
এমিলি ডিকিনসনের কবিতা(চৈতন্য২০১৮)