| 29 মার্চ 2024
Categories
ইতিহাস কোথায় কি দেশ ভ্রমণ

ইতিহাস আর রূপকথা যেখানে হাত ধরাধরি করে চলে

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

।।সাহানা চক্রবর্তী।।

হাতে যদি চার-পাঁচ দিনের ছুটি থাকে, আর থাকে ইতিহাসের প্রতি টান, তা হলে অনায়াসেই ঘুরে আসা যেতে পারে মধ্যপ্রদেশের সব চেয়ে আকর্ষণীয় শহর গ্বালিয়রে। কলকাতা থেকে প্রায় ২৪ ঘণ্টা, আর রাজধানী দিল্লি থেকে মাত্র ৫ ঘণ্টার দূরত্ব অতিক্রম করলেই পৌঁছে যাওয়া যায় প্রাচীনকালের গোপাদ্রি তথা মধ্যপ্রদেশের গ্বালিয়র শহরে।

ইতিহাস আর রূপকথা যেখানে হাত ধরাধরি করে চলে, সেই হল গ্বালিয়র (গোয়ালিয়র)। বিশ্বাস আর বিশ্বাসঘাতকতা, ভালোবাসা আর হিংস্রতা, হিন্দু-মুসলিম স্থাপত্যের সঙ্গে চৈনিক স্থাপত্য শিল্প যেখানে মিলেমিশে এক হয়ে গিয়েছে, সেই হল গ্বালিয়র। এই শহর দেশকে দিয়েছে তানসেন, বৈজু বাওরা থেকে হকির জাদুকর ধ্যানচাঁদকে। এই শহর দেখেছে ঔরঙ্গজেবের হিংস্রতা, দেখেছে মানসিং তোমরের ভালোবাসা। দেখেছে ঝাঁসির রানির দেশপ্রেম, সয়েছে সিপাহি বিদ্রোহের আঘাত। এখান থেকেই দেশের ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে প্রথম জেহাদ ঘোষণা করেছিলেন ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাঈ। প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের সাক্ষী এই শহরেই পাওয়া গিয়েছে পৃথিবীর প্রথম শূন্যের নিদর্শন।

প্রাচীন কালে এই শহরের নাম ছিল গোপাদ্রি বা গোপগিরি। দ্বিতীয় শতকে এখানে নাগবংশ রাজত্ব করত। তাদের রাজধানী ছিল বিদিশা। যদিও পরে ভীমনাগ তাঁর রাজধানী স্থানান্তরিত করেন পদ্মাবতীতে। গুপ্তবংশের রাজা সমুদ্রগুপ্তের হাতে নাগ-শাসনের অবসান ঘটে। মধ্য যুগে মহম্মদ ঘোরীর হাতে আক্রান্ত হয় এই শহর। পরবর্তীকালে দাস বংশের শাসনকালে ইলতুৎমিসের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয় এখানে। অতঃপর হিন্দু তোমর বংশের হাত ঘুরে পানীপতের (পানিপথ) প্রথম যুদ্ধের পর এই শহর বাবর তথা মুঘলদের অধীনে আসে। বাবর তাঁর আত্মজীবনীতে গোয়ালিয়র দুর্গকে ‘ভারতের দুর্গগুলির মধ্যে নেকলেসের মুক্ত’ বলে বর্ণনা করেছিলেন।



জৈন তীর্থঙ্করদের মূর্তি।


বাস্তবিকই, এই শহরের মূল আকর্ষণ দুর্গ। শহরের মধ্যেই প্রায় তিন বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে দাঁড়িয়ে। দুর্গে প্রবেশপথের দু’ধারে চোখে পড়বে পাহাড়ের গায়ে খোদিত জৈন তীর্থঙ্করদের মূর্তি। এদের বয়স পাঁচশো থেকে তেরোশো বছর। এগুলির মধ্যে সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য জৈনগুরু আদিনাথের ৫৮ ফুট উঁচু দণ্ডায়মান মূর্তিটি। প্রায় ৩৫ ফুট উঁচু পদ্মাসনা আরও একটি মূর্তি নজর কাড়ে। দুর্গে ঢোকার গোপাচল পাহাড়ের গায়ে বিভিন্ন আকারের জৈন স্থাপত্য-মূর্তি পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করবেই। মূর্তিগুলির অধিকাংশই ‍১৩৪১ থেকে ১৪৭৯ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে রাজা দুঙ্গর সিং ও তোমররাজ কীর্তি সিংহের আমলে খোদিত বলে জানা যায়। তবে এগুলির মধ্যে পারশনাথের ৪২ ফুট উঁচু মূর্তিটি অবাক করে। ১৫২৭ সালে মুঘলসম্রাট বাবরের আক্রমণকালে এই জৈন স্থাপত্যগুলি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, যার নিদর্শন আজও বিদ্যমান।

এ বার মূল দুর্গ। কবে দুর্গ তৈরি হয়েছিল, সঠিক জানা যায় না, জানা যায় না নির্মাণকারী রাজার নামও। জনশ্রুতি, খ্রিস্টীয় তৃতীয় শতকে সুরজ সেন নামে এক রাজা এই দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। গ্বালিপা নামে এক সাধু এক পবিত্র পুকুরের জল ছিটিয়ে দিয়ে তাঁর কুষ্ঠরোগ সারিয়েছিলেন। সেই কথা মনে রেখে কৃতজ্ঞ রাজা দুর্গটি নির্মাণ করেন। পুকুরটি দুর্গের মধ্যেই। রাজাকে ‌‘পাল’(রক্ষক) উপাধিতে ভূষিত করেন সাধু । আর বলেন, যত দিন তাঁরা এই উপাধি ব্যবহার করবেন, তত দিন পর্যন্ত এই দুর্গ তাঁদের পরিবারের দখলে থাকবে। সত্য সত্যই সুরজ সেন পালের ৮৩ জন উত্তরাধিকারী এই দুর্গে রাজত্ব করেন। কিন্তু ৮৪তম বংশধর তেজকরণের আমলে এই দুর্গ ওই পরিবারের হাতছাড়া হয়।

দুর্গের নির্মাণকাল নিয়ে যতই বিতর্ক থাকুক, খ্রিস্টীয় ষষ্ঠ শতকের আগেই যে এটি নির্মিত হয়েছিল, বিভিন্ন প্রমাণ থেকে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। গজনীর সুলতান মামুদ চার দিন এই দুর্গ অধিকার করে রেখেছিলেন। কুতুবউদ্দিন আইবক, ইলতুৎমিসের হাত ঘুরে ১৩৯৮ সালে এই দুর্গের মালিকানা যায় তোমর রাজবংশের হাতে। এই তোমর রাজবংশের শাসনকালকেই বলা হয় গ্বালিয়রের স্বর্ণযুগ। এই বংশের সব চেয়ে উল্লেখযোগ্য রাজা মানসিং তোমর। তাঁর আমলেই এই দুর্গে সাতটি নতুন নির্মাণকাজ সম্পন্ন হয়। কিন্তু শীঘ্রই সিকান্দার লোদির চোখ পড়ে এই দুর্গ। অবশেষে ইব্রাহিম লোদির হাতে মানসিং নিহত হন। এর পর দুর্গের দখল নেন বাবর। মুঘলদের থেকে দুর্গের মালিকানা ছিনিয়ে নেন শেরশাহ। কিন্তু আকবর ফের দুর্গের দখলদারি পুনরুদ্ধার করেন। সেই থেকেই এই দুর্গ হয়ে যায় মুঘলদের কারাগার। ঔরঙ্গজেব তাঁর ভাই মুরাদকে নেশাগ্রস্ত করে এখানেই বন্দি করে রেখেছিলেন। পরে এখানেই তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়।



মানমন্দির প্রাসাদ।


দুর্গে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গেই পর্যটকদের নজর কাড়ে মানমন্দির প্রাসাদ, আর তার মীনাকারি। ১৮৫৭-য় সিপাহি বিদ্রোহের সময় অনেকটাই ক্ষতিগ্রস্ত হয় মানমন্দির, যদিও পরে তা পুনর্নিমিত হয়। কিন্তু প্রাচীন গঠনশৈলীর সঙ্গে পুনর্নিমিত অংশের ফারাকটা অতি বড়ো আনাড়ির চোখেও ধরা পড়ে।

ডান দিকে হাতি পোল গেট। এক সময় ওই দরজা দিয়েই চলাচল করত রাজকীয় হস্তিবাহিনী। বাঁ দিকে মিউজিয়াম। দুর্গ থেকে দেখা যায় গোটা শহরটাকে। দুর্গের ওপর থেকেই কিছুটা দূরে দেখা যায় তানসেনের সমাধিস্থল।

দুর্গের মূল অংশ দু’টি — মানমন্দির এবং গুজারি মহল। প্রিয় রানি মৃগনয়নীর জন্য গুজারি মহল নির্মাণ করিয়েছিলেন রাজা মানসিং। তবে মূল আকর্ষণ কিন্তু মানমন্দিরই। বাইরে-ভেতরে অপূর্ব স্থাপত্য, ভারতীয় শিল্পকলার সঙ্গে চৈনিক স্থাপত্যশিল্পের অপূর্ব সংমিশ্রণ সত্যিই দেখার মতো। এখানে রানিদের দোলনা-ঘরে রয়েছে প্রাচীন টেলিফোনিক ব্যবস্থার নিদর্শনও। ওপর থেকে নেমে এসেছে একটি পাইপ। পুরোটাই ‘কনসিলড’। সেটিতে কান রাখলে স্পষ্ট শোনা যায় ওপর থেকে পাঠানো কোনো বার্তা। আর চমকে যাওয়ার মতো ঘটনা হল, এই দোলনা-ঘরেই বন্দি ছিলেন মুরাদ আর এখানেই তাঁকে ফাঁসি দেওয়া হয়। গোটা মানমন্দিরের জৌলুসের মধ্যে এই ঘরটিতেই যেন কোথাও একটা হাহাকার ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।

অবাক করে সে যুগের নির্মাণশৈলীতে ভেন্টিলেশন ব্যবস্থা। গোটা মানমন্দির জুড়ে আলো এবং বায়ু চলাচলের অভিনব ব্যবস্থা বিস্ময় জাগায়।



সাস বহু মন্দির।


মানমন্দির থেকে বেরিয়ে দুর্গের চত্বরের মধ্যেই আরও কয়েকটি প্রাচীন নিদর্শন দেখার পালা। প্রতিহাররাজ মিহিরভোজের আমলে তৈরি তেলি কা মন্দির, গরুড়স্তম্ভ, রাণা ভীম সিংহের ছত্রী ইত্যাদি। আর সাস-বহু মন্দিরের অপূর্ব কারুকাজের জন্য একে গ্বালিয়রের ‘দিলওয়ারা মন্দির’ বলাই যায়। এ ছাড়া রয়েছে কর্ণ মহল, বিক্রম মহল ইত্যাদি। দুর্গের মধ্যেই রয়েছে গুরুদ্বার দাতা বন্দি ছোর। মুঘল বাদশাহ জাহাঙ্গীরের নির্দেশে যেখানে ষষ্ঠ শিখগুরু হরগোবিন্দ সিংকে বন্দি রাখা হয়েছিল, সেখানেই নির্মিত এই গুরুদ্বারটি। আমরা জানি, শূন্যের আবিষ্কর্তা ভারতীয়রাই। দুর্গের এককোণে চতুর্ভুজ মন্দিরে রয়েছে পৃথিবীর প্রাচীনতম শূন্যের নিদর্শন।



জয়বিলাস প্রাসাদ।


এ বার জয়বিলাস প্যালেস। পাশ্চাত্য স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত এই প্রাসাদ নির্মাণের দায়িত্বে ছিলেন স্যার মাইকেল ফিলোস। নির্মিত হয় রাজা জয়াজিরাও সিন্ধিয়ার আমলে। এখানে রয়েছে আধুনিক গ্বালিয়রের রূপকার মাধবরাও সিন্ধিয়ার নামে গোটা একটি গ্যালারি। রয়েছে সিন্ধিয়া পরিবারের ব্যবহৃত নানা জিনিসপত্র। তবে এর মূল আকর্ষণ হল ১০০ X ৫০ X ৪১ ফুট উঁচু দরবার হলটি। আর সাড়ে ১২ মিটার লম্বা সাড়ে তিন টন ওজনের দু’টি ঝাড়লণ্ঠন। শোনা যায়, এই দু’টি ঝাড়লণ্ঠনই হল বিশ্বের সব থেকে বড়ো ঝাড়লণ্ঠন। আর রয়েছে এক কার্পেট, যা বুনতে নাকি লেগে গিয়েছিল ১২ বছর।



রানি লক্ষ্মীবাঈয়ের স্ট্যাচু।


আরও একটি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থল হল ঝাঁসির রানি লক্ষ্মীবাইয়ের সমাধিস্থল। এই শহরেই ব্রিটিশদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে করতে প্রাণ দিয়েছিলেন লক্ষ্মীবাই। কিংবদন্তি বলে, সিন্ধিয়াদের বিশ্বাসঘাতকতার জন্যই ঝাঁসির রানির বীরত্ব হেরে গিয়েছিল ব্রিটিশদের কাছে। তারা ইচ্ছাকৃত ভাবেই একটি দুর্বল ঘোড়া সরবরাহ করেছিল রানিকে, যাতে তিনি সহজেই ব্রিটিশদের হাতে বন্দি হয়ে যান। ফুলবাগ এলাকায় অত্যন্ত অনাড়ম্বরভাবে রক্ষিত এই মহীয়সী রানির সমাধি। রেলস্টেশন থেকে এক কিলোমিটারের মধ্যেই অবস্থিত এই সমাধিস্থল। সেখানে প্রস্তর ফলকের ওপর লেখা, ‘‘জ্যোতি জ্বালাই আজাদি কি/দে কর কে কুরবানি/যুগ যুগ তক ইতিহাস কহেগা/তেরি শৌর্য কি কহানি।’’ ২৪ ঘণ্টা জ্বলছে ‘অমরজ্যোতি’, ঝাঁসির রানির অমর বীরত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে।

এই শহর হল দেশের একাধিক নামজাদা শিল্পীর জন্মস্থান। তাঁদেরই একজন হাফিজ আলি খান। তাঁর পৈতৃক বাড়িতে সরোদ ঘর (সংগীত মিউজিয়াম) অবশ্যই দেখবেন। প্রাচীন বাদ্যযন্ত্রের প্রভূত সংগ্রহ রয়েছে এখানে।

কেনাকাটা

কেনাকাটার জন্য যেতে হবে পটঙ্কর বাজার। এখানে রয়েছে ট্র্যাডিশনাল মাহেশ্বরী এবং চান্দেরী শাড়ির সম্ভার। এ ছাড়াও, এখানকার ওয়াল হ্যাঙ্গিং, হাতে বোনা কার্পেট, ধাতুর তৈরি নানা হস্তশিল্প, চামড়ার পোশাক, আর গোয়ালিয়র শ্যুটিং-শার্টিং তো অত্যন্ত বিখ্যাত।

খাবার

এখানকার নোনতা খাবার অত্যন্ত বিখ্যাত। গজক, নিমকি, গুড়ের বিভিন্ন রকমারি খাবার, বিভিন্ন রকমের চাট অবশ্যই খেয়ে দেখবেন।



তানসেনের সমাধি।


উৎসব

আকবরের অত্যন্ত প্রিয় সভাসদ তানসেনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রতি বছর ডিসেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত হয় তানসেন সংগীত সমারোহ। তানসেনের সমাধিস্থলে চার দিন ধরে চলা এই অনুষ্ঠানে দেশের প্রতিটি রাজ্য থেকে নামজাদা শিল্পীরা হাজির হন। কাজেই ডিসেম্বর মাসে এলে এই অনুষ্ঠানে দেখতে ভুলবেন না। আগে থেকে ইন্টারনেটে অনুষ্ঠানের দিন দেখে যাত্রা করলে বাড়তি পাওনা হিসেবে দেশের বেশ কয়েক জন নামজাদা শিল্পীর অনুষ্ঠান সামনে থেকে দেখার অভিজ্ঞতা হয়ে যেতে পারে।

কী ভাবে যাবেন

রাজধানী দিল্লি থেকে গ্বালিয়রের দূরত্ব ৩৪৩ কিলোমিটার, ট্রেনে পাঁচ-ছ’ ঘণ্টা। ভোর থেকে রাত পর্যন্ত দিল্লি থেকে অজস্র ট্রেন। আর হাওড়া থেকে গ্বালিয়রের দূরত্ব ১২৮৫ কিলোমিটার। চম্বল এক্সপ্রেসে লাগে প্রায় ২৪ ঘণ্টা। ১২১৭৫ চম্বল এক্সপ্রেস ছাড়ে মঙ্গল, বুধ, ও রবি এবং ১২১৭৭ চম্বল এক্সপ্রেস শুক্রবারে। সপ্তাহে চার দিনই বিকেল ৫টা ৪৫ মিনিটে হাওড়া থেকে ছাড়ে।

কোথায় থাকবেন

এখানে সব রকম পর্যটকদের জন্যই হোটেল রয়েছে। বাজেট হোটেল থেকে পাঁচতারা হোটেল সবই রয়েছে। এ সব হোটেলের সন্ধান পাবেন makemytrip, goibibo, trivago, cleartrip, holidayiq ইত্যাদি ওয়েবসাইট থেকে। আগে থেকে বুক করে রাখলে অনেক হোটেল কর্তৃপক্ষই স্টেশনে গাড়ি পাঠিয়ে দেন।

এ ছাড়াও এমপি পর্যটনের ‘তানসেন রেসিডেন্সি’ও রয়েছে। অনলাইন বুকিং www.mptourism.com

কৃতজ্ঞতাঃ ভ্রমণ অনলাইন

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত