| 20 এপ্রিল 2024
Categories
ক্রিকেট খবরিয়া খেলাধুলা

ফিরে দেখা: নানা বিতর্ক-রেকর্ডের ২০০৩ বিশ্বকাপ

আনুমানিক পঠনকাল: 3 মিনিট

জিম্বাবুয়েতে গণতন্ত্র আদায়ের দাবিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, ভারতীয় খেলোয়াড়দের পৃষ্ঠপোষকতার অভাব এবং অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্নের মাদক নেয়ার অভিযোগে নিষেধ হওয়া এমন নানা বিতর্কের মধ্য দিয়ে শুরু হয় ২০০৩ বিশ্বকাপ। যেখানে প্রথমবারের মত কোন সহযোগী দেশ হিসেবে অংশ নিয়ে সোজা সেমিফাইনালে ওঠে কেনিয়া। এ আসরেই প্রথম ওয়ানডে ফরম্যাটে সর্বোচ্চ ৫০০ উইকেট শিকারী হিসেবে রেকর্ড গড়েন পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম। এ আসরে প্রথম কোন দেশ হিসেবে তৃতীয়বারের মত বিশ্বকাপ ট্রফি নিজেদের করে নেয় অস্ট্রেলিয়া।


 

ভারতীয় ক্রিকেটারদের পৃষ্ঠপোষক নিয়ে ঝামেলা ও অস্ট্রেলিয়ান লেগ স্পিনার শেন ওয়ার্নের মাদক নেয়ার অভিযোগে নিষিদ্ধ হওয়ার মত নানা বিতর্ককে সামনে রেখে মাঠে গড়ায় ২০০৩ বিশ্বকাপ। যার মাসকট করা হয় সাদা কালো ডোরাকাটার জেব্রা।

সাউথ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে এবং কেনিয়ায় যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২০০৩ বিশ্বকাপ। এটি ছিল আইসিসির অষ্টম বিশ্বকাপ আসর। টুর্নামেন্টের শুরুতেই ১৯৯৯ বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হারের প্রতিশোধ নেয় অস্ট্রেলিয়া। শুরু থেকেই প্রত্যেকটি ম্যাচ জমে উঠেছিল তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ২০০৩ বিশ্বকাপের আগে কখনোই ১৪ দলের কোনো টুর্নামেন্ট আয়োজন করেনি আইসিসি।

গ্রুপ পর্ব থেকে ফাইনাল পর্যন্ত ৫৪টি ম্যাচ আয়োজিত হয়েছিল ২০০৩ বিশ্বকাপে। টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণ করা ১৪টি দলকে ভাগ করা হয়েছিল দুইটি গ্রুপে। দুই গ্রুপের পয়েন্ট টেবিলের শীর্ষ ৩টি দল সুযোগ পেয়েছিল সুপার সিক্সে খেলার। সাউথ আফ্রিকা গ্রুপ পর্বেই ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ১ রানে হেরে যাওয়ায় স্বাগতিক দর্শকদের কাছে ২০০৩ বিশ্বকাপ পরিণত হয় হতাশার গল্পে।

দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে, এবং কেনিয়া এই তিনটি দেশ যৌথভাবে আয়োজন করে এই বিশ্বকাপ। যেখানে পুরো আসরে অনুষ্ঠিত হয় মোট ৫৪টি ম্যাচ। ১০টি পূর্ণ সদস্য দল ছাড়াও, সহযোগী দেশ হিসেবে কেনিয়া, কানাডা, নামিবিয়া ও নেদারল্যান্ডস অংশ নেয় এই আসরে। যেখানে প্রথমবারের মত অভিষেক হয় নামিবিয়ার। আর এ নামিবিয়া’র বিপক্ষে এক ম্যাচে বিশ্বকাপের সেরা বোলিং ১৫ রানে ৭ উইকেট নেন অজি পেসার গ্লেন ম্যাকগ্রাথ।
১৯৯৯ বিশ্বকাপের ফরম্যাটেই অনুষ্ঠিত হয় ২০০৩ বিশ্বকাপ। গ্রুপ পর্বের লড়াইয়ে বাদ পড়ে সেবার অঘটনের খাতায় নাম লেখায় পাকিস্তান, দক্ষিণ আফ্রিকা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও ইংল্যান্ডের মত দেশ। রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে না খেলায় সুপার সিক্স থেকে বাদ পড়ে ইংল্যান্ড। তবে, প্রথম কোন টেস্ট না খেলা দেশ হিসেবে সুপার সিক্স পর্বের গণ্ডি পেরিয়ে সেমিফাইনালে উঠে চমক দেখায় কেনিয়া। সেবারই পূর্ণ সদস্য দেশ হওয়া সত্বেও কানাডা ও কেনিয়ার মত দেশের কাছে হেরে গ্রুপ পর্ব থেকে বিদায় নেয় বাংলাদেশ।
বলতে গেলে পুরো আসরে দারুণভাবে ব্যর্থ হয় টাইগাররা। গ্রুপ পর্বে কানাডা ও কেনিয়াসহ কোনো ম্যাচেই জয়ের দেখা পায়নি খালেদ মাসুদ পাইলটের দল।
আসরে পোর্ট এলিজাবেথে প্রথম সেমিফাইনালের লড়াইয়ে অস্ট্রেলিয়াকে নিজেদের শক্ত বোলিংয়ে দিশেহারা করে ফেলে শ্রীলঙ্কা। তবে ৩৯ ওভার শেষে বৃষ্টি বিঘ্নিত ম্যাচে বৃষ্টি আইনে ৪৮ রানে ম্যাচ জিতে ফাইনালে ওঠে অস্ট্রেলিয়া।
ডারবানে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে টস জিতে সৌরভ গাঙ্গুলির ১১১ রানে ভর করে ২৭০ রান করে ভারত। পরে ১৭৯ রানেই গুটিয়ে যায় কেনিয়া। ফলে, ৯১ রানের জয় নিয়ে ফাইনালে পা রাখে ভারত।
আর জোহানেসবার্গের মাঠে গড়ায় ২০০৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল ম্যাচ। টস হেরে শুরুতে ব্যাট করে অধিনায়ক রিকি পন্টিংয়ের ১৪০ রানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ৩৫৯ রানের বড় স্কোর পায় টিম অস্ট্রেলিয়া। জবাবে, ব্যাট করতে নামা ভারতকে ২৩৪ রানেই বেধে ফেলে অজি বোলাররা। ফলে ১২৫ রানের বিশাল জয় নিয়ে তৃতীয়বারের মত বিশ্বকাপের ট্রফি ঘরে তোলে অজিরা।
তবে শিরোপা না জিতলেও এক আসরে সর্বোচ্চ ৬৭৩ রান করে টুর্নামেন্ট সেরা হয়েছিলেন ভারতের কিংবদন্তি ক্রিকেটার শচীন টেন্ডুলকার।
আর সেবারই প্রথমবারের মত কোন সহযোগী দেশ হিসেবে সেমিফাইনালে পা রাখে কেনিয়া।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত