চার বছর পর আবারও শুরু হতে যাচ্ছে ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর বিশ্বকাপ ক্রিকেট। ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিলের (আইসিসি) দ্বাদশতম এ আসর বসছে ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসে। ৩০ মে লন্ডনের ওভালে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও দক্ষিণ আফ্রিকার মধ্যকার ম্যাচ দিয়ে পর্দা উঠবে ২০১৯ বিশ্বকাপের। ৩০ মে থেকে শুরু হওয়া এ বিশ্বকাপ ১৪ জুলাই পর্যন্ত চলবে।
এ পর্যন্ত আইসিসি ১১টি বিশ্বকাপের আয়োজন করেছে। তার মধ্যে অস্ট্রেলিয়া ক্রিকেট বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ পাঁচবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। এছাড়াও তারা বিশ্বকাপে দুইবার রানার্সআপ হয়।
১৯৭৫ বিশ্বকাপে ক্লাইভ লয়েড
ইংল্যান্ডে ১৯৭৫ সালের ৭ জুন শুরু হয় প্রথম বিশ্বকাপ। ৬০ ওভারের ম্যাচ হত সেইসময়। ভাগ নেওয়া ৮ টি দলের সবারই জার্সির রঙ ছিল সাদা এবং খেলা হত লাল কোকাবুরা বলে।
৮ টি দল ছিল অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, শ্রীলঙ্কা ও পূর্ব আফ্রিকা।
লর্ডসে অনুষ্ঠিত ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ১৭ রানে হারিয়ে কাপ জেতে ক্লাইভ লয়েডের ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
১৯৭৯ বিশ্বকাপ জিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজ
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) কর্তৃক বিশ্বকাপ ক্রিকেটের দ্বিতীয়বারের মতো আয়োজিত প্রতিযোগিতা। ১৯৭৯ সালের ৯-২৩ জুন ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিটি দল ৬০ ওভারব্যাপী ইনিংসে অংশ নেয়। এতে ৮টি দেশের জাতীয় ক্রিকেট দল অংশগ্রহণ করে।
১৯৭৯ সালের ২৩ জুন লন্ডনের লর্ডসে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনালে গত আসরের ন্যায় আবারও ওয়েস্ট ইন্ডিজ অংশগ্রহণ করে। এতে স্বাগতিক ইংল্যান্ডকে ৯২ রানের ব্যবধানে পরাজিত করে ওয়েস্ট ইন্ডিজেরঅধিনায়ক ক্লাইভ লয়েড প্রুডেন্সিয়াল ট্রফি উত্তোলন করেন। এ বিশ্বকাপে কোনো ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয়নি।
১৯৮৩ বিশ্বকাপ জিতে কপিল দেব
বিশ্বকাপটি বেশ নাটকীয়তায় পরিপূর্ণ ছিল। ভারত এবং জিম্বাবুয়ের ন্যায় দেশগুলো ঐ সময় তেমন ভালো খেলেনি। কিন্তু বিশ্বকাপে তারা যথাক্রমে ওয়েস্ট ইন্ডিজ এবং অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে সকলকে আশ্চর্যান্বিত করেছিল।
১৯৮৩ সালের ২৫ জুন লন্ডন নগরীর লর্ডসে ফাইনালে অনুষ্ঠিত হয়। ফাইনালে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ৪৩ রানে হারিয়ে প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে ভারত। ভারতের অধিনায়ক কপিল দেব প্রুডেন্সিয়াল ট্রফি লাভ করেন। তবে ১৯৮৩ সালের বিশ্বকাপে কোনো ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট পুরস্কারের ব্যবস্থা রাখা হয় নাই।
১৯৮৭ বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া
প্রথমবার ইংল্যান্ডের বাইরে বসল বিশ্বকাপের আসর। দায়িত্বে ছিল ভারত ও পাকিস্তান। সেবার ৬০ ওভার থেকে কমে ওভার সংখ্যা ৫০ করে দেওয়া হয়। ফাইনালে ইংল্যান্ডকে ৭ রানে হারিয়ে ট্রফি জেতে অস্ট্রেলিয়া।
১৯৯২ বিশ্বকাপ জিতে ইমরান খান
আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল পরিচালিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের এটি ৫ম আসর। প্রতিযোগিতাটি ওই বছরের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৫ মার্চ পর্যন্ত অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডে যৌথভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
১৯৯২ সালের বিশ্বকাপে তৎকালীন সময়ে টেস্ট ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী ৭টি দলের মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা দলটি ছিল নবাগত। বিশ্বকাপের একমাস পর ২২ বছর পর প্রথম টেস্ট খেলার জন্য ওয়েস্ট ইন্ডিজ গমন করে এবং ১৯৯২ সালের পর জিম্বাবুয়ে তাদের প্রথম টেস্টে অংশ নেয়।
১৯৯২ সালের ২৫ মার্চ মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। প্রথমবারের মতো দিন/রাতে অনুষ্ঠিত ও তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় ইমরান খানের অধিনায়কত্বে পাকিস্তান ক্রিকেট দল ২২ রানের ব্যবধানে ইংল্যান্ড ক্রিকেট দলকে পরাভূত করে। এর ফলে দলটি প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপ ট্রফি নিজেদের করে নেয়।
পাকিস্তানের ওয়াসিম আকরাম ম্যান অব দ্য ম্যাচ ও নিউজিল্যান্ডের মার্টিন ক্রো প্লেয়ার অব দ্য টুর্নামেন্টের পুরস্কার লাভ করেন।
১৯৯৬ বিশ্বকাপ হাতে রণতুঙ্গা
ফের একবার ভারতীয় উপমহাদেশে বসে বিশ্বকাপের আসর। লাহোরে অনুষ্ঠিত ফাইনালে অস্ট্রেলিয়াকে ৭ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবার কাপ জেতে অর্জুনা রণতুঙ্গার শ্রীলঙ্কা।
১৯৯৯ বিশ্বকাপ হাতে স্টিভ ওয়া
ইংল্যান্ডে অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তানকে মাত্র ১৩২ রানে অলআউট করে দেয় স্টিভ ওয়ার অস্ট্রেলিয়া। এরপর মাত্র ২ উইকেট হারিয়ে ২০ ওভারেই ম্যাচ পকেটে পুরে নেয় অজিরা।
২০০৩ বিশ্বকাপ জিতে রিকি পন্টিং
২০০৭ বিশ্বকাপজয়ী অস্ট্রেলিয়া দল
ক্যারিবিয়ান রাষ্ট্রে বসে বিশ্বকাপের আসর। গ্রুপ পর্যায়েই বিদায় নেয় রাহুল দ্রাবিড়ের ভারত। বিশ্বকাপের মাঝেই হোটেলে রহস্যজনক মৃত্যু হয় পাকিস্তানের কোচ বব উলমারের।
ফাইনালে শ্রীলঙ্কাকে ৫৩ রানে হারিয়ে কাপ জেতে অস্ট্রেলিয়া।
২০১১ বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দল
এটি আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপের ১০ম প্রতিযোগিতা। বিশ্বকাপ অনুষ্ঠিত হয় ফেব্রুয়ারি ও ২ এপ্রিল, ২০১১-এর মধ্যে।উদ্বোধনী খেলাটি অনুষ্ঠিত হয়েছে বাংলাদেশ বনাম ভারতের মধ্যে ঢাকায় ১৯ ফেব্রুয়ারি শের-ই-বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়াম, মিরপুর, ঢাকায়। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে প্রথম ম্যাচটি খেলা হয়।
ভারত, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশে এই বিশ্বকাপ আয়োজিত হয়েছিল। এই বিশ্বকাপেই বাংলাদেশ প্রথমবারের মতো আয়োজক দেশ হওয়ার সুযোগ পায়। বিশ্বকাপের সব ম্যাচই একদিনের আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের। চৌদ্দটি জাতীয় ক্রিকেট দল এই টুর্নামেন্টে অংশ নেয়।
২ এপ্রিল মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ফাইনালে মুখোমুখি হয় ভারত ও শ্রীলঙ্কা। শ্রীলঙ্কাকে ৬ উইকেটে পরাজিত করে ভারত জয়ী হয়। এটি ভারতের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ জয়।
ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১৫ আইসিসি কর্তৃক পরিচালিত ক্রিকেট বিশ্বকাপ প্রতিযোগিতার একাদশ আসর। ১৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২৯ মার্চ, ২০১৫ তারিখ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এই বিশ্বকাপ অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ড যৌথভাবে আয়োজন করে।
২০১৫ সালের ২৯ মার্চ অস্ট্রেলিয়ার মেলবোর্নে অবস্থিত মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে ফাইনাল অনুষ্ঠিত হয়। খেলায় স্বাগতিক অস্ট্রেলিয়া দলের বিপক্ষে সহঃস্বাগতিক নিউজিল্যান্ড দল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। খেলায় অস্ট্রলিয়া ৭ উইকেটে বিজয়ী হয় ও উপর্যুপরি পঞ্চমবারের মতো বিশ্বকাপ জয় করে।
.