আসন্ন ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য দল ঘোষণার পর্ব ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় মঞ্চে খেলার স্বপ্ন সব ক্রিকেটারেরই থাকে। সেরা প্লেয়ারদের নিয়েই স্কোয়াড সাজানোর চেষ্টা করেন নির্বাচকরা। তবে নানান কারণে কেউ কেউ বাদ পড়েন। কখনো টিম কম্বিনেশন, কখনো সাম্প্রতিক ফর্ম কিংবা কন্ডিশনের কারণেও অনেককে বাদ পড়তে হয়। এবারের বিশ্বকাপে বিভিন্ন দেশের এমন বাদ পড়া খেলোয়াড়দের দিয়ে একটি একাদশ গঠন করেছে আইসিসি। ইরাবতী ও একটি একাদশ গড়েছে।
ইরাবতীর চোখে বাদ পড়াদের একাদশঃ
মোহাম্মদ রিজওয়ান
এই উইকেটরক্ষক পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন ৩২টি ওডিআই ম্যাচ। ৩৩.৫৭ গড়ে করেছেন ৭০০ রান। ঘরোয়া লিগে ব্যাট হাতে আলো ছড়িয়ে, দীর্ঘ দুই বছর পর দলে ফেরেন অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৫ ম্যাচের ওডিআই সিরিজে। দলে ফিরেই সিরিজে তুলে নিয়েছেন দুটি সেঞ্চুরি। এমন ফর্ম করে এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান হয়েতো মনে স্বপ্ন এঁকেছেন বিশ্বকাপ স্কোয়াডে তার নামটি থাকবে। বিশ্বকাপ দলে জায়গা পাওয়ার মতোই তার ফর্ম ছিল; কিন্তু দল ঘোষণার পর রিজওয়ানের নামটি স্কোয়াডে পাওয়া যায়নি।
ঋষভ পান্ত
ভারতের সম্ভাবনাময়ী এক উইকেটরক্ষক ও ব্যাটসম্যান। জাতীয় দল, ঘরোয়া লিগ, ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগে (আইপিএল) সব ফরম্যাটে রানের ফুলঝুড়ি ছোটানোর পরও দলে জায়গা হয়নি তার। ধারণা করা হয়েছিল মিডল অর্ডারে ব্যাটিং ও অতিরিক্ত উইকেট রক্ষক হিসেবে দলে জায়গা হবে তার। অভিজ্ঞতার বিচারে এগিয়ে থেকে পান্তের স্থানটি দখল করেন আরেক উইকেটরক্ষক দিনেশ কার্তিক।
আম্বতি রায়ডু
দুই বছর পর ২০১৮ সালে দলে ফেরেন রায়ডু। দলে ফেরার পর সময় কেটেছে স্বপ্নের মতোই। দুই বছর পর দলে ফিরে পেলেন একটি সেঞ্চুরি, চারটি অর্ধশতক এবং দুটি ইনিংস খেলেন ৪০ এর উপরে। সব ম্যাচেই রান পেয়েছেন; কিন্তু সতীর্থ ব্যাটসম্যান বিজয় শঙ্কারের কাছে হারাতে হয়েছে তার বিশ্বকাপের জায়গাটি।
দিনেশ চান্দিমাল
শ্রীলঙ্কার বর্তমান সময়ের সেরা ব্যাটসম্যান চান্দিমাল। ১৪৬টি ওডিআই ম্যাচ খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে তার। ২০১৮ সালে চান্দিমাল প্রতিম্যাচে ৪২.৫৭ গড়ে রান করেছেন। দলের সবচেয়ে সফল ব্যাটসম্যানের জায়গা হয়নি বিশ্বকাপ স্কোয়াডে।
আসিফ আলি
পাকিস্তান দলে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে হার্ড হিটার ব্যাটসম্যান আসিফ। পাকিস্তানের হয়ে খেলেছেন ১১টি ওডিআই। ডেথ ওভারে আসিফ অনেক দ্রুত রান তুলতে পারেন, বিগ শর্ট খেলতে পারদর্শী। ফিল্ডিংয়েও অনেক শক্তিশালী ভূমিকা রাখেন আসিফ। সম্প্রতি শেষ হওয়া পাকিস্তান প্রিমিয়ার লিগে (পিএসএল) ২০১৯ মৌসুমে সবচেয়ে বেশি ছক্কা মেরে রেকর্ড গড়েন আসিফ। কিন্তু দুর্ভাগ্য এমন পারফরম্যান্স করেও দলে জায়গা মিলেনি তার।
কাইরন পোলার্ড
ওয়েস্ট ইন্ডিজের পোশাক গায়ে সর্বশেষ ২০১৬ সালে মাঠে নামেন। সম্প্রতি আইপিলে ১০ ম্যাচে দুইশতাধিক রান ইতোমধ্যে করেছেন। ভালো একজন বিগ হিটার এবং ফিনিশার। এরপরও দলে যায়গা পাননি তিন।
জোফরা আর্চার
গত কয়েক বছর ধরে বিশ্বের সেরা টি-টোয়েন্টি লিগুলোতে পেস বলের জাদু দেখিয়ে আসছেন। ইংল্যান্ডের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে প্রাথমিক ২৩ দলে রাখলেও পরে ১৫ সদস্যের স্কোয়াডে জায়াগ পাননি এই বোলার। আইপিএল ২০১৯ মৌসুমেও দারুণ ছন্দে রয়েছেন আর্চার। তবে ইংল্যান্ড ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচকমণ্ডলি জানিয়েছেন, মে মাসে পাকিস্তান ও আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে সিরিজে আর্চারকে রাখা হয়ছে। যদি ভালো পারফর্ম করতে পারে তবে দলে নেয়ার ব্যাপারে বিবেচনা করা হবে।
মোহাম্মদ আমির
পাকিস্তান ছাড়াও সারা বিশ্বেই ক্রিকেটপ্রেমীদের কাছে আমিরের জনপ্রিয়তা অনেক বেশি। এই পেসারকে পাকিস্তানের বিশ্বকাপ দলে না রাখায়, সাবেক কিংবদন্তীসহ ক্রিকেটপ্রেমীরাও আমিরকে দলে রাখার অনুরোধ জানায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। আমির ২০১৭ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জয়ে পাকিস্তানের হয়ে বড় ভূমিকা রাখেন; কিন্তু সম্প্রতি এই বোলার একদমই ফর্মে নেই। সর্বশেষ ১৪ ম্যাচে মাত্র পাঁচটি উইকেট শিকার করতে পেরেছেন। এতেই তার কাপল পুড়ল। তবে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড জানিয়েছে, বিশ্বকাপের আগে ইংল্যান্ড সিরিজে ভালো ফর্ম করতে পারলে আমিরকে দলে সুযোগ দেয়ার অপশন খোলা রয়েছে।
আকিলা ধনাঞ্জয়া
২০১৮ মৌসুমে ১৫ ইনিংসে ২৮ উইকেট শিকার করেন এই অফ স্পিনার। এমন ফর্ম দিয়েও শ্রীলঙ্কার ১৫ সদস্যের দলে জায়গা হয়নি।
সুনীল নারাইন
২৭ রানে ৬ উইকেট তার সেরা ওডিআই ফিগার। ৫৬টি ওডিআই খেলে ঝুলিতে আছে ৮৩ উইকেট এই ডানহাতি অফব্রেক বোলারের। এমন বোলারের জায়গা হয়নি দলে।
রেজা হেনরিকস
দক্ষিণ আফ্রিকার ক্রিকেট ইতিহাসে তৃতীয় ব্যাটসম্যান হিসেবে অভিষেক ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করেছিলেন রেজা হেনরিকস।