| 28 মার্চ 2024
Categories
এই দিনে কবিতা সাহিত্য

জয়শীলা গুহ বাগচীর কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

আজ ২৭ ডিসেম্বর কবি জয়শীলা গুহ বাগচীর শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার কবিকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।


বন্দিশ
 
তুমি তো শুধুই হেঁটে যাবে না
পায়ের গোছ খুলে দেবে
অর্থের সামনে
অর্থের বাহুল্য থেকে প্রকাশ ঝরিয়ে
ধুয়ে দেবে ভেপে ওঠা আবেগ
তারপর ইচ্ছেমত পলাশ
তুমিকে আমি
আমিকে তুমি
ওমুকের করজোড়ে আমার স্মৃতি
তমুকের ধাঁধায় আমার সম্ভার
 
একটি বিন্দুতে
নাকি ছড়িয়ে পড়ায়
আমাদের হতচকিত খুলে ফেলে আমরা
আমরা আর কেউ নই
বিস্তারিত দৃষ্টির
অচেতন স্মৃতি আর
নিজেকে ছড়িয়ে ফেলতে থাকা
আমির খেয়াল

সিঁড়ি

চলন্ত সিঁড়িটা কেমন মিথ্যে হয়ে নামছে
উঠতে উঠতে মিনারের নজরানা
নামতে নামতে ভবিষ্য আলুথালু
তবু কেমন পুরনো মেহগনি ছায়া
সিঁড়ি ভরা অকাল মায়া
এক মোহন বিন্দু
শুরু থেকে শেষ তল্লাট
একের এক
জানার করতালি থেকে
অজানার ভাবসন্মিলন
কী অবোধ রাস্তা
কী অবাক কড়ি…কর…
এর চেয়ে করঞ্চা ফুল তুলি চল
সত্যি

 
 
রেস
 
আমার রাঙে রোজ ছপটি এসে পড়ে
গাঢ় খোলস ফেটে নামে
 
অনিয়ম… নিভন্ত চোখ
 
ঘাড় ভাঙে রোজ
নালের ভেতর থেকে
উপড়ে যায় পাখা
নষ্ট গণকযন্ত্রের স্মৃতি
 
মেলায়নি আমিত্বপ্রবণ এলাকা
 
জীবাশ্ম খুঁটে চলি
নখ ভরে ওঠে মৃত দিনের ঘামে
রাস্তার ভার
 
হেঁটে যাওয়ার মুখে নিষেধ রাখে
 
আমি বিধি পিঠে বেঁধে
পেরিয়ে যাই আমাকে
 
 
 
কাগুজে
 
আমার কাছে একএকদিন খবরেরা আসে
দুভাগ বিকেলের দেশে
অপরিপক্ক ঘটনার পোয়াতি বেলায়
সামাজিক ভান জ্বালিয়ে
তারা আসে
আসে আর বলে
সমাজের স্বরলিপির গল্প
জুয়ার ঠোঁটে জীবনের পেশির আঁচ
বদলের নাম সংখ্যা
নাকি পকেট অর্জন…
আমি তার… তাদের এইসব অর্জনকে
পকেটস্থ করি
গলা বিঁধিযে তেজ ভিজিয়ে
ছেঁড়ার গন্ধে পায়েস লিখি

আ হাওয়া

আমার সম্ভাব্য দিনে যদি জ্বলে জ্বলে ওঠে হাতের তালু, কপালের ঘাম… সেই পাওয়া ছিঁড়ে দেবো মেরুন রঙে। ধুয়ে নেবো সব্জির সাদা। তারার বিস্ফার হবে বলে কোটি কোটি উড়ে যাব বৃষ্টির ফুঁয়ে। অন্ধ জাপটে নেবো, প্রতিশোধ বিষ দেবে… ফুলতে ফুলতে অশরীরী গন্ধ হয়ে পাল্টে নেবো। তবু ছোঁব না… আমি পৃথিবী জোড়া রেচন হয়ে যাব।

 

খেলা

নিভে আসছে রাতের গন্ধ
স্তব্ধ ঝিঁঝিঁর পায়ে পরম
হাতের আয়না
সুলুক সুলুক তাকিয়ে আছে
সুর্মা আছে
নিখিল জোড়া নর্মে সেসব
হাতের ওপর গভীর রাখবে
সু হারিয়ে সু ছড়িয়ে
আছে আছে
থাকার বোধে এলিয়ে পড়ছে
চু কিত্ কিত্
কুমীর ডাঙা
এত বেলায়
ভরা বেলায়

 

 

রাইম

শিসের গা বেয়ে
জল ডাক
হাত ধরাধরি হাসে

পাহাড়ি দিনের ভেজা
হালকা গাল
কফি হয়
সরাসরি পাখি জ্বলে ওঠে

রাতময় বিস্তার
ফুলেফেঁপে চুল
ডাকের মাঝখানে
রুমালী সাঁতার
লাল নীল হলুদ সবুজ
ছুঁয়ে দিলে
হংসধ্বনি দোলে
দোলনায় পাহাড় দোলে
ঘুম যায় কিন্ডারগার্টেন

আকস্মিক

এই এক পাক এঁটে থাকা
তর্জনি থেকে ছড়িয়ে পড়ছে পাঠ
মধ্যমা চেঁচিয়ে উঠছে – লোকাল লোকাল
অমনি হেথায় লোকাল বাস গো
চারটে চাকার কী গরজ
চলে আর হাসে
হাসে আর কাঁদে
চলতে চলতে আমাদের
হাঁটু ছড়ে যায়
চুল থেকে খসে পড়ে পালক
আমরা দাঁত হয়ে উঠি
মার্জনা চলে
গা থেকে ব্যাকরণ উঠবে কিনা
আলোচনা চলে
কিছু পরম উজ্জ্বল হাপিত্যেস নিয়ে
আঙুল ছুঁয়ে আমি ছুঁয়ে
বাদল হয় দৃষ্টি

 

 

একা

একা একা বোধেরা
ঝুল বারান্দায় থাকে
গা থেকে খুলে নেয় প্রতিবেশী
পিঁপড়ের গান ফেলে
নিভৃতের ভেতরে সে
ঢেলে দিতে পারে আকাশ
আর জেগে থাকা কে
জড়িয়ে দেয় মেঘ
নির্বোধ হেঁটে চলায় খুঁজে পায়
সারি সারি বৈদুর্য লেন
আমির ভেতর বেছে দেয় কাঁটা
অকারণে কথায় নামে কত অনির্বাণ
কথার ভেতর ঝুল বারান্দার
সিঁড়ি নেমে আসে
রেলিং এ চাঁদ বসে
গল্প করে লুকোনো সিসিফাস

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত