মিচেল স্টার্কের কাছে হারলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ

Reading Time: 3 minutes

 

 

৩০ বলে দরকার ৩৮ রান, হাতে ৪ উইকেট। টি-টোয়েন্টির এই যুগে যা ডাল-ভাত। ক্রিজে পঞ্চাশ রান নিয়ে আছেন অধিনায়ক জেসন হোল্ডার, তার ওপর দলটির নাম ওয়েস্ট ইন্ডিজ, যাদের সবাই বলতে গেলে হার্ডহিটার; কিন্তু এই জায়গা থেকেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ ম্যাচ হেরে গেছে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে। বৃহস্পতিবার ট্রেন্ট ব্রিজে ২৮৯ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ১৫ রানে হেরেছে ক্যারিবীয়রা। অজি বোলার মিচেল স্টার্কের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ের কাছেই মূলত হেরে গেছে দলটি।

৪৬তম ওভারে মাত্র ১ রান দিয়ে ক্রিজে থাকা দুই ব্যাটসম্যান জেসন হোল্ডার আর কার্লোস ব্রাথওয়েটকে তুলে নেন মিচেল স্টার্ক। এখানেই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। স্টয়নিসের পরের ওভার থেকে কটরেল আর অ্যাশলে নার্স মিলে নিতে পেরেছেন মাত্র ৩ রান। পরের ওভারে আবার কটরেলকে বোল্ড করে ৫ উইকেট পূর্ণ করেন স্টার্ক। এরপর এই ম্যাচে বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা। শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ২৭৩ রান করতে পেরেছে তারা।

উদ্বোধনী জুটি ব্যর্থ হলেও রান তাড়া করতে নেমে এই ম্যাচে শাই হোপ (৬৮), নিকোলাস পুরান(৪০) আর জেসন হোল্ডারের ব্যাটে লড়াই জমিয়ে তোলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তাড়া হেরে গেছে একের পর এক উইকেট হারিয়ে। দুর্দান্ত বোলিং করেছেন মিচেল স্টার্ক। ৫ উইকেট নিতে খরচ করতে হয়েছে ৪৬ রান।

তবে তার বাইরেও এই ম্যাচে আলোচনায় ছিলো বাজে আম্পায়ারিং। ক্রিস গেইল দুই দফা আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিও নিয়ে বেঁচে গেছেন। তৃতীয়বার অবশ্য রিভিও নিয়েও বাঁচতে পারেননি।

যে বলে গেইল আউট হয়েছেন তার আগের বলটি স্পষ্ট নো বল থাকলেও আম্পায়র নো ডাকেননি। রিপ্লেতে দেখা গেছে সেটি নো বল ছিলো। সেটি নো বল ডাকা হলে পরের বলটি যেটিতে গেইল এলবিডব্লিউ হয়েছে সেটি হতো ফ্রি হিটের বল, তাই গেইলের আউট হওয়ার কোন সুযোগই থাকতো না। জেসন হোল্ডারও একবার রিভিও নিয়ে আম্পায়ারের সিদ্ধান্তকে ভুল প্রমাণিত করেছেন।

এই ম্যাচে আগে ব্যাট করে ২৮৮ রান তোলে অজিরা। একটা সময় মনে হচ্ছিল, অস্ট্রেলিয়া দেড়শোও করতে পারবে না। অথচ সেই দলটিই গড়েছে ২৮৮ রানের বড় সংগ্রহ। স্টিভেন স্মিথের দায়িত্বশীল ব্যাটিং আর নাথান কল্টার নাইলের অবিশ্বাস্য তাণ্ডবের পর এক ওভার বাকি থাকতে অলআউট হয়েছে অজিরা। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই ক্যারিবীয় বোলিং তোপে রীতিমত কোণঠাসা হয়ে পড়েছিল অস্ট্রেলিয়া। ইনিংসের তৃতীয় ওভারে প্রথম উইকেট হারায় দলটি।

ওসানে থমাসের বলে উইকেটরক্ষক শাই হোপের ক্যাচ হয়ে ফেরেন ওপেনার অ্যারন ফিঞ্চ (৬)। এরপর আরেক ওপেনার ডেভিড ওয়ার্নারকেও (৩) হারিয়ে বসে অস্ট্রেলিয়া। উসমান খাজা দেখেশুনেই খেলছিলেন। কিন্তু আন্দ্রে রাসেলের বলে উইকেটের পেছনে শাই হোপের দুর্দান্ত এক ক্যাচ হন তিনি (১৩)। এরপর গ্লেন ম্যাক্সওয়েল ফেরেন নিজের ভুলে। নিজের দ্বিতীয় বলেই শেলডন কট্রেলকে পুল করে বসেন মারকুটে এই ব্যাটসম্যান।

রানের খাতা খোলার আগেই শর্ট বলের ফাঁদে ধরা পড়েন ম্যাক্সওয়েল। পুলটা ব্যাটের কানায় লেগে ভেসে যায় বাতাসে, শাই হোপের সেটা গ্লাভসবন্দী করতে একদমই কষ্ট হয়নি। ৭.৪ ওভারেই ৩৮ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে তখন রীতিমত ধুঁকছে অস্ট্রেলিয়া।

এরপর স্মিথের সঙ্গে ৪১ রানের একটি জুটি গড়ে জেসন হোল্ডারের শিকার হয়ে ফেরেন মার্কাস স্টয়নিস (১)। ৭৯ রানে ৫ উইকেট হারায় অস্ট্রেলিয়া। সেখান থেকে দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় দলটি, ফেরে লড়াইয়ে। দলের এমন কঠিন মুহূর্তে হাল ধরেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক স্টিভ স্মিথ। তার দায়িত্বশীল ব্যাটিং এবং শেষ দিকে নাথান কোল্টার নাইলের ব্যাটিং ঝড়ে শেষ পর্যন্ত ৪৯ ওভারে ২৮৮/১০ রান তুলতে সক্ষম হয় অস্ট্রেলিয়া।

দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৯২ রান করেন নাইল। তার ইনিংসটি ৬০ বলে ৮টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো। ইনিংসের শেষ দিকে বাউন্ডারি হাঁকাতে গিয়ে আউট হন তিনি। এছাড়া ১০৩ বলে ৭টি চারের সাহায্যে ৭৩ রান করেন স্মিথ। ৫৫ বলে ৪৫ রান করেন অ্যালেক্স কেরি।

যে লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাবেক অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ। ষষ্ঠ উইকেটে অ্যালেক্স কারের সঙ্গে ৬৮ আর সপ্তম উইকেটে নাথান কল্টার নাইলের সঙ্গে ১০২ রানের বড় দুটি জুটি গড়ে দলকে দারুণভাবে ম্যাচে ফিরিয়েছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত থমাসের শিকার হন স্মিথ, ১০৩ বলে ৭ বাউন্ডারিতে করেন ৭৩ রান। পরের কাজটা একাই সেরেছেন নাথান কল্টার নাইল। ৬০ বলে ৮ চার আর ৪ ছক্কায় ৯২ রানের অবিশ্বাস্য এক ইনিংস খেলেন লোয়ার অর্ডার এই ব্যাটসম্যান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন ওসানে থমাস, আন্দ্রে রাসেল আর শেলডন কট্রেল।

 

 

 

 

 

.

 

 

 

Leave a Reply

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

You may use these HTML tags and attributes:

<a href="" title=""> <abbr title=""> <acronym title=""> <b> <blockquote cite=""> <cite> <code> <del datetime=""> <em> <i> <q cite=""> <s> <strike> <strong>