| 20 এপ্রিল 2024
Categories
খবরিয়া

বাবার বিপক্ষে গিয়ে জর্জ ফ্লয়েড খুনের প্রতিবাদে সামিল ট্রাম্প-কন্যা টিফানি

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

আফ্রিকান-আমেরিকান জর্জ ফ্লয়েডের মৃত্যুতে (George Floyd Death) আমেরিকা জুড়ে চলছে বিক্ষোভ। সেই প্রতিবাদের বহ্নিশিখা পৌঁছে গিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের পরিবারের অন্দরে। মার্কিন মুলুকে যুগ যুগ ধরে চলা বর্ণবৈষম্য়ের বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ছোট মেয়ে টিফানি ট্রাম্প (Tiffany Trump)। চলতি আন্দোলনের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন তিনি। শুধু টিফানি নন, বিক্ষোভকারীদের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন তাঁর মা ডোনাল্ড ট্রাম্পের দ্বিতীয় স্ত্রী মার্লা ম্যাপলসও।

ট্যুইটার ও ইনস্টাগ্রামে একটি কালো স্ক্রিনের ছবি শেয়ার করেছেন টিফানি। হেলেন কেলার লিখেছিলেন, ‘একা একা আমরা সামান্য কিছু অর্জন করতে পারি; ঐক্যবদ্ধভাবে অনেক কিছু অর্জন করতে পারি।’ নিজের পোস্টোর সঙ্গে হেলেন কেলারের এই উক্তি উদ্ধৃত করেছেন ট্রাম্প-কন্যা। এছাড়া #blackoutTuesday এবং #justiceforgeorgefloyd হ্যাশট্যাগও দিয়েছেন তিনি। চলতি বর্ণবিদ্বেষ বিরোধী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে এই হ্যাশট্যাগগুলি সোশ্যাল মিডিয়ায় জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। হোয়াইট হাউজের বাইরে বিক্ষোভকারীদের উপরে পুলিশি হামলার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এই পোস্ট করেন ২৬ বছর বয়সী জর্জটাউন ল’স্কুলের প্রাক্তনী টিফানি।

ট্রাম্প যখন সেনা নামিয়ে বিক্ষোভ প্রশমনে আক্রমণাত্মক ভূমিকায় তখন তাঁর কন্যা টিফানির এই অবস্থান নিঃসন্দেহে অস্বস্তি বাড়িয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের।

কে এই টিফানি?

ট্রাম্পের তিনটি বিয়ে। তাঁর পাঁচ সন্তান হলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র, ইভাঙ্কা, এরিক, টিফানি ও বারোন ট্রাম্প। টিফানি হলেন ট্রাম্পের দ্বিতীয় স্ত্রী মারলা ম্যাপলসের কন্যা। ১৯৯৩ সালে ম্পের সঙ্গে বিয়ে হয় মারলার। তিনি একজন মডেল ও অভিনেত্রী ছিলেন। ১৯৯৩ সালের ১৩ অক্টোবর টিফানির জন্ম। জুয়েলরি ব্র্যান্ড টিফানির নাম অনুসারে তাঁর নামকরণ করা হয়। ক্যালিফোর্নিয়ায় বড় হয়ে উঠেছেন। তাঁর বাবা-মায়ের বিয়ে টেঁকে ৬ বছর। ১৯৯৯ সালে তাঁদের বিবাহবিচ্ছেদ হয়। এরপরই মেলানিয়াকে বিয়ে করেন ট্রাম্প। মেলানিয়া আর ট্রাম্পের ছেলে ব্যারন।

রাজনীতি থেকে দূরে থাকেন টিফানি

আমেরিকান রাজনীতির ধারপাশ ঘেঁষেন না টিফানি। সেই কারণেই খুব কমই তাঁকে ট্রাম্পে ও হোয়াইট হাউসের আশপাশে দেখা যায়। আইন নিয়ে কেরিয়ার শুরু করতে চেয়েছিলেন ট্রাম্প-কন্যা। রাজনীতি ও তাঁর বাবার ব্যবসায় তাঁর মন ছিল না কোনওদিনই। গান ভালোবাসেন। গানকে পেশা হিসেবে নেওয়ারও চেষ্টা করেছেন একসময়। তবে শেষমেষ পড়াশোনাতেই মন দেন। পশুপ্রেমী হিসেবেও তাঁর একটা পরিচিতি আছে। ভাই ও ইভাঙ্কার সঙ্গেও তাঁকে বিশেষ দেখা যায় না।

সোশ্যাল মিডিয়ায় সক্রিয়

সোশ্যাল মিডিয়া ইনস্টাগ্রামে খুবই সক্রিয় টিফানি। সেখানে নিজের নানা ছবি ও আপডেট শেয়ার করেন তিনি। তাঁর গোটা পরিবারের ছবিও পোস্ট করেন। এ ছাড়াও বাবারও অনেক ছবি পোস্ট করতে দেখা যায় তাঁকে।

বাবার বিপক্ষে গিয়ে জর্জ ফ্লয়েড খুনের প্রতিবাদে সামিল ট্রাম্প-কন্যা টিফানি

গত ২৫ মে চেক জালিয়াতির অভিযোগে, মিনিয়াপলিসে জর্জ ফ্লয়েড নামে এক কৃষ্ণাঙ্গ ব্য়ক্তিকে রাস্তায় ফেলে নৃশংস অত্যাচার চালায় পুলিশ। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে বলে বার বার আরজি জানালেও, হাঁটু দিয়ে তাঁর গলা চেপে বসে থাকেন ডেরেক শওভিন। জর্জের পিঠের উপর চাপ দিয়ে বসে থাকেন আরও দুই পুলিশকর্মী। তার জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বছর ৪৬-এর জর্জ ফ্লয়েডের। সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়ে এই ঘটনার ভিডিয়ো। তারপর থেকেই বিক্ষোভের আগুনে জ্বলছে আমেরিকা। কৃষ্ণাঙ্গ হত্যার প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন অগুনতি মানুষ।

অনেকের মতেই, ১৯৬৮ সালে মার্টিন লুথার কিংয়ের মৃত্যুর পর এই ধরনের বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ দেখেনি আমেরিকা। করোনাভাইরাসের তোয়াক্কা না করেই, লকডাউন ভেঙে রাস্তায় নেমেছেন বহু মানুষ। কৃষ্ণাঙ্গদের উপর পুলিশি জুলুম নিয়ে আমেরিকায় বরাবরই বিতর্ক ছিল। তবে ফ্লয়েডের মৃত্যুর জেরে সেই বিতর্কই আরও তীব্র হয়েছে। আর সেই বিতর্ককে আরও উসকে দিয়েছে টিফানির অবস্থান।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত