| 16 এপ্রিল 2024
Categories
খবরিয়া

মিয়ানমারে আজও বিক্ষোভ রাজধানীতে পুলিশ মারমুখী

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থানের বিরুদ্ধে তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন দেশটির হাজারো মানুষ। বৌদ্ধভিক্ষুরাও এদিনের বিক্ষোভে যোগ দেন। রাজধানীতে পুলিশ মারমুখী হয়ে ওঠে। তারা বিক্ষোভকারীদের ওপর জলকামান ব্যবহার করে। বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

আজ সোমবার দেশটির বৃহত্তম শহর ইয়াঙ্গুনসহ অন্যান্য শহর-নগরের রাস্তায় নেমেছেন হাজারো বিক্ষোভকারী। এই নিয়ে তাঁরা টানা তৃতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করছেন।

বিক্ষোভকারীরা সেনাশাসনের অবসানের পাশাপাশি দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চিসহ রাজনৈতিক নেতাদের মুক্তি দাবি করছেন।

বিক্ষোভে অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা নানা ব্যানার ও প্ল্যাকার্ড বহন করছেন। এসব ব্যানার-প্ল্যাকার্ড লেখা রয়েছে ‘আমাদের নেতাদের মুক্তি দাও’, ‘আমাদের ভোটারদের সম্মান দেখাও’, ‘গণতন্ত্র রক্ষা করো’, ‘সেনা অভ্যুত্থান প্রত্যাখ্যান করো’, ‘স্বৈরতন্ত্রকে “না” বলো’ প্রভৃতি।

বিক্ষোভ অংশ নেওয়া ব্যক্তিরা সেনাশাসনের বিরুদ্ধে নানা স্লোগান দিচ্ছেন। তাঁরা সু চিসহ অন্য নেতাদের মুক্তি চেয়েও স্লোগান দিচ্ছেন।

বিক্ষোভে ছাত্র, শিক্ষক, চিকিৎসকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নিচ্ছেন।
বিক্ষোভের উদ্যোক্তারা সেনাশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ দেখাতে জনসাধারণকে দলে দলে রাজপথে নেমে আসার আহ্বান জানাচ্ছেন।

এক আন্দোলনকারী জনতার উদ্দেশে বলেছেন, ‘ইয়াঙ্গুনের সব প্রান্ত থেকে রাস্তায় নামুন। শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভে অংশ নিন। জনগণের সঙ্গে বিক্ষোভে যোগ দিন।’

ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা

ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় বিক্ষোভকারীরা ছবি: এএফপি


মিয়ানমারের অধিকাংশ স্থানেই শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ হচ্ছে। তবে রাজধানী নেপিডো থেকে পুলিশের মারমুখী আচরণের খবর এসেছে। সেখানে বিক্ষোভকারীদের লক্ষ্য করে জলকামান দিয়ে পানি ছোড়ে পুলিশ। পুলিশের এই পদক্ষেপে কয়েকজন বিক্ষোভকারী আহত হয়েছেন। পুলিশের এমন তৎপরতা সত্ত্বেও বিক্ষোভ চালিয়ে যান আন্দোলনকারীরা।

সেনাশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে বিক্ষোভের পাশাপাশি দেশটিতে অসহযোগের ডাক দিচ্ছেন আন্দোলনকারীরা। অসহযোগের প্রতি সমর্থন দিন দিন জোরালো হচ্ছে।
প্রথমে অসহযোগ শুরু করেন চিকিৎসকেরা। পরে শিক্ষকসহ অন্য পেশাজীবী ও সরকারি কর্মচারীরা এ অসহযোগে যোগ দিচ্ছেন।

সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের উদ্দেশে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘সোমবার থেকে কাজে যোগ না দেওয়ার জন্য আমরা সরকারের সব কর্মীদের প্রতি অনুরোধ জানাই।’
আন্দোলন পরিস্থিতি নিয়ে মিয়ানমারবিষয়ক জাতিসংঘের বিশেষ দূত টমাস অ্যান্ড্রুজ এক টুইটে বলেছেন, দেশজুড়ে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়েছে। সেনাশাসনের বিরুদ্ধে ও আটক রাজনীতিকদের মুক্তির দাবিতে মিয়ানমার জেগে উঠেছে।

গতকাল রোববার মিয়ানমারে লাখো মানুষ বিক্ষোভ করেন। দেশটির বিভিন্ন শহর-নগরের সড়কগুলো জনসমুদ্রে পরিণত হয়। ২০০৭ সালের পর এমন বিক্ষোভ আর দেখেনি দেশটির মানুষ।

১ ফেব্রুয়ারি ভোরে মিয়ানমারে সেনা অভ্যুত্থান হয়। সেনাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের নেতৃত্বাধীন সেনাবাহিনী দেশটির নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে। সামরিক বাহিনী দেশটিতে এক বছরের জন্য জরুরি অবস্থা জারি করেছে। একই সঙ্গে তারা দেশটির স্টেট কাউন্সেলর অং সান সু চি, প্রেসিডেন্ট উইন মিন্টসহ রাজনীতিক নেতাদের আটক-গ্রেপ্তার করেছে।

সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মিয়ানমারে বিক্ষোভ দানা বাঁধে। বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে দেশটির সেনাবাহিনী ফেসবুক ও টুইটারের পর ইন্টারনেট বন্ধ করে দেয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশটির মানুষ সেনাশাসনের বিরুদ্ধে রাজপথে নেমে আসেন।

এদিকে, মিয়ানমারের কর্তৃপক্ষ ইন্টারনেটের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স। দেশটিতে গতকালই ইন্টারনেট আংশিক সচল হয়।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত