প্রাচীন পুরাণ অনেক অনেক মৃত্যু নেমেছে বাজারে কাছাকাছি এসেও কেউ কেউ ছুঁয়ে যাচ্ছে অনেকেই প্রেমে পড়ছে অনেকেই পড়বো পড়বো করছে এবার আমার বউ নিয়ন্ত্রণ, আমাকে সাবধান করেছে আমি বউকে গোপন রেখেই চলে যাচ্ছি বারে বারে কত সিংহাসন ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে মিউজিয়ামে মিউজিয়ামে সিংহদের গর্জন ইতিহাস সাজিয়ে রাখছে একে একে মলিন পতাকারা উড়তে উড়তে অদৃশ্যের দিকে উড়ে যাচ্ছে সবাই ঈশ্বর বিশ্বাসের কাছে দীক্ষা নিয়ে মাঝে মাঝে ঢোল বাজাচ্ছি সবাই বাজাচ্ছে তাই আমিও তাদের মতো বিভ্রান্ত আরও এক বাজনদার স্মৃতিরা মৃত কাক হয়ে উঠোন আগলায় উঠোনে ক্ষুন্নিবৃত্তি রাঙা চোখের ইশারা রাজ্যজুড়ে শোকাঞ্জলি তবুও আনন্দ মঞ্চ ঘিরে জড়ো হয়েছে প্রজারা কুশীলব গান গেয়ে শোনাচ্ছে তাদের.... কুমির খাল কাটিয়া কুমির আনিয়াছি কুমির এখন ধীরে ধীরে বাড়িতেছে প্রথম প্রথম কুমির হাঁস-মুরগি খাইত তারপর গরু-ছাগল খাইতে লাগিল এখন মানুষও খাইতে শুরু করিয়াছে নিজেরই পোষা কুমিরকে নিজেই ভয় পাইতেছি আমাকে খাইবে, আমার সংসারও খাইবে গিন্নিকে বারণ করি: অমন আলতা পরা পা দেখাইয়া নূপুরের ধ্বনি তুলিয়া সূর্যাস্তকালে তুমি জল তুলিও না! অমন নিশি রাতে তুমি কদম্ব তলায় যাইও না! সাঁতার দিতে দিতে এপার হইতে ওপার হইও না! কুমির কৃষ্ণ সাজিয়া কদম্বের ডালে বসিয়া থাকিবে। কুমির মাঝি হইয়া নৌকা পারাপার করিবে। কুমির কখনও কখনও নৌকা হইয়া জলেও ভাসিবে। কুমির বড় হইতেছে কুমির রহস্যময় হইতেছে কুমির জলে ও ডাঙায় কত লীলা করিতেছে কখনও লেজ তুলিয়া হা করিয়া ছুটিতেছে কখনও মরার মতো ঘুমের ভান করিতেছে সব আবেগই এখন কুমিরে আকৃষ্ট হইয়াছে কুমির যে এযুগেরই রাজপুত্র নির্বাচনে জিতিয়া তাহার প্রমাণও করিয়াছে..... বাঁশি খুব ভালো বাঁশি বাজাচ্ছ আমার বিশ্রাম ঘুমিয়ে নিচ্ছে এই জ্যোৎস্নায় আমিও জেগে জেগে পার করছি রাত সকালেই সূর্য আসবে শিশির কণাদের ঝিকিমিকি পাঠশালা বসাবে আমি আর আনন্দ যেতে যেতে সব কথা হারিয়ে ফেলব রাস্তায় আমাদের কি সংসার হবে? বসন্তের খোলা জানালায় কয়েক টুকরো আতঙ্ক হাসতে হাসতেই খুন করে দেবে সময় আমরা চুপচাপ সময়ের আস্তাবলে ঢুকে যাব প্রতিটি রক্তাক্ত মুখ আয়না দেখাবে না সুরের লহরী মন ছুঁতে এসেও ছুঁতে পারবে না সব প্রেমের লাশ কাল্পনিক শ্রদ্ধা এসে নিয়ে যাবে আমরা নিজেদের বার্ধক্যের কাছে বাঁশির তারিফ করব শুধু মোহ মোহ কিছুতেই যাচ্ছে না বিছানা পাল্টানো হল মুখে শরবত দেওয়া হল ফেরেশতারা অপেক্ষা করছে সবাই তোমার বাক্সের চাবি কোথায় রেখেছ? শুনতে পাচ্ছ না মনে হয়! তোমার হাতের আংটিটা কি খুলে নেব? শুনতে পাচ্ছ না মনে হয়! কাউকে দেখার ইচ্ছা আছে আর? এবার সম্মতি পাওয়া গেল, কিন্তু কাকে? বোঝা গেল না ঠিক;নতুন বাড়িটার ইঙ্গিত! টলোমলো চোখে ঝাপসা দেখছি এখন আর একবার ধুপকাঠি জ্বালালাম। মেয়ে বৃষ্টি, এদিকে এসো— জামাই মেঘ, এদিকে এসো— নাতি তরি, এদিকে এসো— আজ সব মোহের জানালা-দরজা খোলা আজ সব বিষাদকে গান শেখাবে পাখি আজ সব বাঁধনকে আলগা করবে হৃদয় আজ সব চোখকে আড়াল করবে সময়ের প্রাচীর আত্মহত্যার লাইন আমরা সবাই আত্মহত্যার লাইনে দাঁড়িয়ে আছি একটা একটা দিন, একটা একটা রাত আমাদের অপেক্ষার দিন, অপেক্ষার রাত আমরা বিবাহ করছি, আমরা বিবাহ বিচ্ছেদ করছি আমরা গৃহপ্রবেশ করছি, আমরা গৃহত্যাগ করছি কোন পথে গেলে আমরা আত্মহত্যার দেখা পাব? কেহই পথ চিনি না ঠিক শুধু এলোমেলো, বিভ্রান্ত, ব্যাকুল পথিক ছুটছি অথবা হাঁটছি, হাঁটছি অথবা ছুটছি তারপর? তারপর? নিজেকে ক্লান্ত লাগছে খুব নিজেকে বিষণ্ণ লাগছে খুব স্মৃতির সব অঙ্গুরিগুলি খুলে খুলে ফেলে দিচ্ছি ছুঁড়ে মহিমান্বিত মুহূর্তগুলি এক একটি কলঙ্কিত সাপ তাদের ছোবল খেতে খেতে পার করছি বিষদগ্ধ জীবন

জন্ম: ২৮ জানুয়ারি ১৯৬৭, বীরভূম জেলার রামপুরহাট ব্লকের পানিসাইল গ্রামে ।পিতা ও মাতার নাম :জিকির খান ও নওরাতুন । বাংলা ভাষা ও সাহিত্য নিয়ে পড়াশুনো । প্রেমেন্দ্র মিত্রের কবিতায় পি এইচ ডি। বর্তমানে শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘কোথায় পা রাখি’(১৯৯৪)। কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থ : বৃত্তের ভেতরে জল, জ্যোৎস্নায় সারারাত খেলে হিরণ্য মাছেরা, উন্মাদ বিকেলের জংশন, স্তব্ধতার ভেতর এক নিরুত্তর হাসি, নির্ঘুমের হ্রস্ব ধ্বনি, আকাঙ্ক্ষার ঘরের জানালা, সভ্যতা কাঁপে এক বিস্ময়ের জ্বরে, সর্বনাশের ডায়েরি ইত্যাদি ।পুরস্কার পেয়েছেন :কবিরুল ইসলাম স্মৃতি পুরস্কার, দৌড় সাহিত্য পুরস্কার, নতুনগতি সাহিত্য পুরস্কার ইত্যাদি ।
ঠিকানা :
রামরামপুর (শান্তিপাড়া),
ডাকঘর রামপুরহাট,
জেলা বীরভূম,
পিন কোড ৭৩১২২৪,
পশ্চিমবঙ্গ, ভারত ।
ফোন ৯৩৩২৯৯১২৫০