| 6 অক্টোবর 2024
Categories
শারদ অর্ঘ্য ২০২৩

শারদ অর্ঘ্য কবিতা: রজত সান্যাল’র কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 3 মিনিট

অপূর্ণ প্রেম 

অনেক ভাবি যে আমার প্রেম অপূর্ণ রয়ে গিয়েছে

আগের মুহূর্তে মনে হয় অপূর্ণ কোথায়

হয়তো এই যে একটা নিঃসঙ্গতা

অপূর্ণ থাকা

তোমার না থাকা আমার সঙ্গে

আমার প্রেমের পূর্ণতা

কারণ তোমাকে যদি পেয়ে যাই

তাহলে আমার প্রেমের পরিকল্পনাই

বদলে যাবে

আবার আমি কবে ভাববো যে

আমার  প্রেমের চাহিদা মিটে গিয়েছে

কিন্তু এখন তুমি আমার সঙ্গে সব সময় আছো

একেবারে মিশে ,সব মুহূর্তে, একাত্ম ভাবে

আমি তোমার সঙ্গেই বেঁচে আছি

তোমার মধ্যেই নিঃস্বাস নিচ্ছি

যেখানেই যাই না কেন

তুমি আছো প্রতি মুহূর্তে

এখন আমার এই পূর্ন প্রেমের নেশা হয়ে গিয়েছে।

কবিতা লিখবো বলে

একটা কবিতা লিখবো বলে

শব্দ কিছু গম্ভীর হয়ে যায়

ভাবতে ভাবতে শব্দ কোথায় হারিয়ে যায়

লেখার একটা ভাব আসে।

মনে হয় জেদ

মনের মধ্যে উথাল

নিঃশাস নিতে কষ্ট

এরমধ্যে শব্দ মনের ভেতরে যুদ্ধ করতে থাকে

মনে হয় একটা গরম হাওয়া

খেলার ছলে

মন  চঞ্চল, সাদা চম্পা ফুল,অথবা লাল গোলাপ

কিছু লাইন হলুদ

রাগের সুর মালাহার

কনকনে ঠান্ডার রাত

শিশিরে ভেজা ঘাস, রঙ্গিন প্রজাপতির উড়ে যাওয়া

নদীতে সাদা হাঁসের জোড়া, অনেক রঙের মাছ

প্রেমের ইচ্ছে, একটা কাঁটার মত লেগে থাকা ক্ষত

হটাৎ হৃদয়  এ স্মৃতির আলোড়ন

যেন পুরো দেশলাই কাঠি গুলো জলে যাবে

কোথাও অনেক ভস্ম, জ্বলে পুড়ে শেষ

তখনই একটু রোদুর , আর পরে এক ফালি চাঁদ

সব আছে রাখা আমার এই আঁচলে

আর আছে উদীয়মান তারকা, মনে হয় নিজের

নাম রেখে  দিয়েছে

অনেক ইচ্ছে একটা কবিতা লিখবো বলে

কিছু নিজের স্বার্থ, বেদনা ভরে নিলাম

এবার নিজের জন্য লিখবো।

 রোদ্দুরের মধ্যে

জন্মদিনের রোদুরের মধ্যে

কোথায় আছে পূর্ব দিকে

এক  উঁচু মহান গৌরবান্বিত রক্তের ব্যাংক

যেখান থেকে প্রতিদিন সকালে

আমি বিনা লিখে বা স্বাক্ষর করে

নিয়ে নি এই রোদ্দুর কে

এই রোদ্দুর প্রতিদিন  আমার খাতা থেকে

বেরিয়ে  চলে আসে আমার জীবনে

আমার অনেক দূঃখ আছে

হাজার হাজার মানুষের ছবি

অনেক চেহারার

হাজার হাজার দুঃখ

যার সঙ্গে রোদ্দুরের কোনো সম্পর্ক নেই

কিন্তু নিজের দুঃখের মধ্যে

আমি এক রাজা বা বাদশাহর মতো থাকি

ওর জন্যই,

ওর জন্যই পঞ্চাশ বছর কেটে গেল

আজ ও আমার হাত কিছু ছুঁতে ছুঁতে

ব্যাকুল হয়, ইচ্ছে করে 

আমার পা আজ ও

কোথাও যাওয়ার জন্য অস্থির থাকে

সত্যি আমার পঞ্চাশ বছর হয়েছে

কিন্তু এখনো আমি এই পৃথিবীতে

হাঁটতে শিখছি

 

জীবন শোকের মত

আমার জীবন এক শোকের মত

বা গাছের পাতা দিয়ে তৈরী পাত্রের মত

শালপাতা দিয়ে তৈরী পাতার একটা পাত্র

এটা দিয়েই আমার জন্মের সময় থেকে

একটু একটু রোদ্দুর  পড়তে থাকে

আমি এই রোদুর পান করতে থাকি

যতই আমি পান করি

ততটাই আমার শালপাতার ঠোঙা টা ভরে যায়

ঠোঙা ত আছে

কেউ একদিন উঠিয়ে ফেলে দেবে বাইরে

আবার আমি ওটাকে উঠিয়ে নিজের হাতে নেব

মনে হবে আমি রোদ্দুরের থেকেও অনেক বেশি

সম্মানিত এই পৃথিবীতে

যে জীবনের

ওকে প্রত্যেক বিকেলে

আমি ওকে রেখে নি আমার জীবনে

যেটা ওই সূর্যের , রোদুরের

আমি ওটাকে ফিরিয়ে দি

সূর্য কে রোদ্দুর কে

যেগুলো সব এক

আমার চাওয়া আর পাওয়া

আমার সমস্ত চেষ্টা

শুধু এইটুকু  আছে

বেচেঁ থাকুক রোদুর

আর এই শালপাতার ঠোঙা ।

ঈশ্বরের কাছে 

গ্রহণ যোগাযোগের আর্দ্রতায়

প্রস্ফুটিত থাকে উপস্থাপনা

গোলাপের ফুল

প্রিয়তমের সহজ পছন্দ

প্রেমের একটা  সুবাস বা সুগন্ধ প্রবাহিত

ওটা  এক শ্রদ্ধা হয়ে ওঠে

যে ঈশ্বর

হৃদয়ের ঋতু তে

গভীর মাধুর্য

বাহ্যিক নীরবতায় যোগেশ্বর

স্রোত জুড়ে আছে

হয়তো সূর্যের রশ্মি ওই দিকে পড়ে

প্রতিটি কম্পন প্রকাশিত হয়

গতির একাধিক ব্যাখ্যা

মন থাকলে ডুবে যায়

তপস্যা যেখানে খুব বড় কথা

শুধু ঈশ্বরকে মানুষ বলেই জানো

মানুষ কে ঈশ্বর

তার সাথে সাথে হাঁটা বা যাওয়া

সে অঞ্জলির জলের মতো দূরে নয়

স্থির মানসিকতা

নিজের মধ্যে দেবত্ব

জানলে  তো জান এরমধ্যে কোনও

জটিলতা নেই

সময় প্রচন্ড বা ভয়ংকর দাহ্য

শুধুমাত্র অন্তর্নিহিত শীতলতা আমাদের রক্ষা করবে

এখন চোখের জল মুছে দাও

নীরব শব্দে  যোগ দেহের নির্মাণে স্থির

আশীর্বাদের জন্য কৃতজ্ঞ হও

ভাব এমনি বৃত্তাকার

ঘুরে ফিরে নিজের কাছে ফিরে আসে

নিজের  দায়বদ্ধতা কে কাছে রাখো

রাখো কান্ত নির্মল অনিকেত

জীবনের সৌন্দর্য কে দেখো ,জাগো

বলে ওটো নিজের মনে

মুক্ত মনে বলো

শুধু তোমার মধ্যে নয়

নিজের ভিতরে

প্রেমে,প্রণয়াসক্ত ….

ভক্তিতে…

শক্তিতে…

                         

বলো না নদী

নদী

তোমার কি কখনো মনে করো পাহাড়ের কোলে

সেই পাথরগুলো, শিলাগুলো,গুহা,

যে তীরে প্রবাহিত হয়েছে

তার স্মৃতি কি কখনো ম্লান হয়?

উপত্যকার ঐ মোড়

যারা তোমার মনোভাব কে পরিবর্তন করেছে

যার মোড়ে তুমি ছেড়ে এসেছিলে

সব চিন্তাহীনতা

যে বিন্দুতে মুষ্টির তারা ছেড়ে গিয়েছে

তোমাকে কি ওই মোড় থেকে  ডাকবে চিন্তাহীনতা

কখনও  কি ওই শব্দ শুনুতে পেরেছো

তীরে সেই ঘন গাছ

যারা ছুরিকাঘাত করেছে

হৃদয়ের অলিখিত চিঠি

একদম শান্ত মাইল

রাস্তার মধ্যে কিছু পাথর দ্বারা আটকে

এটা সম্ভবত এখন চলে গেছে

এই  অকথ্য কি কখনও তোমাকে তাড়িত করে?

পথে কিছু দিতে থাকে , কিছু নিতে থাকে

তোমার সব সময় সব জায়গায় ছিল

রাস্তা বন্ধ করে দিলে ও নতুন রাস্তা তৈরি হয়

তবে বলো নদী

ছেড়ে এসেছো তোমার  চিহ্ন যেখানে

যাকে ছেড়ে এসেছো তার স্পর্শ কি

তোমার অন্তরে এখনও  রয়ে গিয়েছে

নদী তোমার না মোড়া 

একটা শিক্ষা বাড়তে থাকার

কেউ তোমাকে বলে না

তুমি ফিরে তাকাওনি কেন?

তোমার  চলে যাওয়ার জন্য কোন ও গ্লানি নেই

তবুও বলো না নদী

তোমার কি অতীত  এখনও মনে পড়ে

তোমাকেও কষ্ট দেয়

আদি কি কখনো তোমাকে ডেকেছে!

ফিরে আসার আশা নেই

কি কখনও ব্যাথা আছে তোমার বুকের মধ্যে।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত