সমসাময়িক শিল্প এবং শিল্পীদের অন্বেষণ । মনিরা আলম
একুশ শতকের দিকে একটি সৃজনশীলতার যুগের সৃষ্টি হয় এবং শিল্পের উদ্ভাবন দেখা যায় যা শিল্প বিপ্লবের সময় হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। সমসাময়িক শিল্পীদের শিল্পের অভিব্যক্তি প্রকাশ ঘটে ঐতিহ্যগত ধারা বা নিয়ম থেকে মুক্ত হয়ে নতুন নতুন মাধ্যমের পরীক্ষা-নিরীক্ষার মধ্যে এবং সামাজিক নিয়ম ভেঙ্গে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়ে।এক কথায় সমসাময়িক শিল্প একটা প্রাণবন্তর জগতৎ যা পদপ্রদর্শক হয়ে উঠেছে বর্তমান বিশ্বে।
শৈলের বৈচিত্র :
সমসাময়িক শিল্প শৈলী শ্রেণীকরণকে অস্বীকার করে, এক বিশাল শৈলীর আবিষ্কার করে। ঐতিহ্যগত পেন্টিং এবং ভাস্কর্য থেকে বের হয়ে, ডিজিটাল আর্ট, ইনস্টলেশন, পারফরম্যান্স আর্ট, ইন্টারেক্টিভ অভিজ্ঞতা, মিশ্র মিডিয়ার শিল্পকর্ম, বিভিন্ন উপকরণ এবং কৌশল একত্রিত করে দিন দিন বেশ প্রচলিত হয়ে উঠছে বিভিন্ন শিল্প শাখায়।
প্রযুক্তিগত অগ্রগতি :
ডিজিটাল আর্ট, ভার্চুয়াল বাস্তবতায় ভরপুর সমসাময়িক শিল্পজগতে। শিল্পীদের তৈরি প্রদ্ধতিতে ডিজিটাল যুগ এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে।ফলে ডিজিটাল আর্ট, সফটওয়্যার এবং ডিজিটাল সরঞ্জাম এর ব্যবহারের প্রাধান্যতা বাড়ছে। যা ভিজ্যুয়াল এক্সপ্রেশন এর জন্য অভিনব উপায়।ভার্চুয়াল রিয়েলিটি শক্তিকে কাজে লাগিয়ে শিল্পীরা দর্শকদেরকে শিল্পকর্মের দিকে আকর্ষিত করছে এবং পূর্ব কল্পনাতীত উপায়ে ইন্টারঅ্যাক্ট করছে। এই প্রযুক্তিগত অগ্রগতিগুলো শৈল্পিকতাকে এক দিগন্তের দিকে প্রসারিত করছে।
সামাজিক ও রাজনৈতিক মন্তব্য :
অনেক সমসাময়িক শিল্পী তাদের কাজকে সামাজিক ও রাজনৈতিক মত দর্শনের মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করেন।জলবায়ু পরিবর্তন, সামাজিক ন্যায় বিচার, লিঙ্গ সমতা,এবং মানসিক স্বাস্থ্যের মতো বিষয়গুলোকে লক্ষ্য রেখে সমসাময়িক শিল্পীরা তাদের চিন্তার উদ্রেক করে এবং অনুপ্রাণিত হয়ে সব ধরনের পরিবর্তনকে আলিঙ্গন করেন।শক্তিশালী ভিজ্যুয়াল এক্সপ্রেশনের মাধ্যমে শিল্পীরা সামাজিক নিয়মকে রীতিমতো চ্যালেঞ্জ করে চলেছে।
শিল্প এবং স্থায়িত্ব :
পরিবেশের মাধ্যমে শিল্পীরা তাদের সৃজনশীল প্রক্রিয়াগুলোতে টেকসই প্রভাব যুক্ত করছে।যেমন পরিবেশবান্ধব উপকরণ, পুনঃ ব্যবহারযোগ্য বস্তু এবং পরিবেশগত সমস্যা সমাধানকারী শিল্পকর্মগুলি প্রকৃতির সাথে যুক্ত হয়ে পরস্পরের সাথে আত্ম সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখছে। বর্তমান বিশ্বে পরিবেশ সচেতন শিল্পকর্ম গুলি শুধুমাত্র সচেতনতা বাড়ায় না বরং টেকসই জীবন জীবনযাপনকে সমর্থন করে।
প্রভাবশালী সমসাময়িক শিল্পী :
তিনি এমন একজন শিল্পী যিনি রাজনৈতিকভাবে অভিযুক্ত এবং সামাজিকভাবে উত্তেজক শিল্পকর্মের জন্য পরিচিত। ব্যাঙ্কসির শিল্পকর্ম গুলি প্রায়শই বার্তা বহন করে এবং সামাজিক নিয়মকে চ্যালেঞ্জ করে।
ইয়ায়োই কুসমাঃ
তিনি নিম্নজ্জিত স্থাপনা এবং পোলকা ডট মোটিভের জন্য বিখ্যাত। কুসামার কাজে অসীমতা, স্ব-বিলুপ্ত জীবন বৃত্তান্তের থিম লক্ষণীয়।
ওলাফুর ইলিয়াসানঃ
নিম্নগ্ন শিল্পের একজন মাস্টার তিনি। ইলিয়াসিনের বড় আকারের ইনস্টলেশন প্রাকৃতিক উপাদানের সাথে অন্তর্ভুক্ত। এলিয়াসনের শিল্পকর্ম দর্শকদের অর্থপূর্ণ উপায়ে তাদের চারপাশের সাথে সংযুক্ত হইতে উৎসাহিত করে।
জে আরঃ
তিনি বিশ্বকে ক্যানভাস হিসাবে ভাবতেন। তিনি তার বিশাল বিশাল পাবলিক আর্টগুলোতে সামাজিক সমস্যার সাথে কিভাবে মোকাবেলা করতে হয় তা প্রকাশ করেন এবং মানুষের আত্মাকে আবিষ্কারের পথে উন্মোচন করেন।
সমসাময়িক শিল্পীরা কনভেনশনকে চ্যালেঞ্জ করে চলেছে,বিভিন্ন মাধ্যমে এবং পরিবর্তনকে আলিঙ্গন করে।যার ফলে শিল্পকে উপলব্ধি করতে পারে সাধারণ দর্শক বিভিন্ন যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে।২১ শতকের শিল্প বিপ্লব বৈচিত্র প্রসঙ্গিতা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যেখানে বিপ্লবটি ধীর হওয়ার কোন আশঙ্কা থাকে না বরং আরো বেশি যুগান্তকারী,সৃজনশীলতার শৈল্পিক অভিব্যক্তিতে প্রকাশ করে।
চিত্রশিল্পী