ধারাবাহিক উপন্যাস: অগ্নিশিখা (পর্ব-৭) । দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
নদীর ধারে বীথির বেশ খানিকটা সময় কাটে। সংসারের কাজ মিটে যেতে সে মাঝে মাঝে চলে আসে নদীর ঘাটে। বেলা অবেলায় চেনা অচেনা জন আসে। বীথি যখন স্বামীগৃহ থেকে ফিরে এসেছিল তখন একটু কানাকানি হয়েছিল। বাবাকে দুচার কথা শুনতে হয়েছিল। তা একটু চাপা পড়ে গেছে।
স্বামীর গৃহ থেকে সে ফিরেছে অনেকদিন। কি কারণে সে ফিরেছে তাও কারুকে বলে নি। কারুর কাছে সে নিজের জন্য কোনো দাবিদাওয়ার কথাও বলতে যায় নি।
বীথি মন্দির দেখাশুনো করে। বাকি সময় সে নিজের মতো একা একাই কাটিয়ে দেয়। নদীর ঘাটে চেনাজানা কেউ এলে একটু-আধটু গল্প হয়। সে গল্পে কি থাকে কি থাকে না তা বোঝা মুস্কিল। কারণ সে বিশেষ কথা বলে না। শুধু শোনে।
তার নিজের কথা কিছু নেই। অনেকদিন আগেই সে তা চাপা দিয়ে রেখেছে। তাকে সে বাইরে আনতে চায় না। তারাদি, মালতিদি , বাসন্তিদি তাদের সঙ্গে যখন দেখা হয় তখন কত কথাই সে জেনে যায়।
নদীপাড়টুকু ছাড়া বড়জোর মন্দির ছাড়া আর সে পারতপক্ষে গাঁয়ের ভেতরে যায় না। শুধু কোনোদিন কোথাও কীর্তন হলে বীথি গান শুনতে চায়।বাবার মারফতই সে জেনে যায় বারোয়ারীতলায় কীর্তনের খবর। তারাদিরাও সেসময়ে জুটে যায়। কিন্তু তা তো মাসে এক আধবার। বাকি সময় সে নিজের জায়গাতেই মজে থাকে।
সে দুপুরে বেরোল। তাদের বাড়ির পেছনদিকেই ঘন জঙ্গল। মধ্যে দিয়ে যেতে যেতে একটা পথ তৈরী হয়েছে। এই পথ পেরিয়ে জঙ্গল শেষ হলে নদীর ঘাট।
তার আগে সে কিছুক্ষন জঙ্গলটার মধ্যে সময় কাটায়। ভেতরে একটা ফাঁকা মতো জায়গা আছে। সেটাই তার বসার জায়গা। কোনকোনদিন এই স্থানে ব্রজও আসে। আগে কল্যাণও বেশ কয়েকবার এসেছে। এখন সে বড় হয়েছে। আসতে চায় না। তাছাড়া সে শুনেছে তার সঙ্গে বেশী মেলামেশা অনন্তদেব পছন্দ করেন না। সেদিন তিনি নিজে এসে দেখার পর সমস্যা বেড়েছে। ব্রজ তার বাড়িতে যায় না। তবে এই জায়গায় সে আসে। সে ওকে এখানে আসতেও বারণ করেছে। কিন্তু ও শুনতে চায় না।
ফাঁকা জায়গাটায় এখন বীথি এসে বসল।
এক এক দেড় বছর এখানে থাকতে থাকতে তার একটা বিশ্বাস জন্মে গেছে এ জায়গাটা তার। এখানে অন্য কেউ প্রবেশ করবে না। জঙ্গল হলেও জঙ্গলের এ প্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে যাবার পথ আছে। দৈবাৎ একজন দুজন এ পথ দিয়ে যায়। কেউ কেউ আসে কাঠকুঠো কুড়াতে। সে তাড়িয়ে দেয় তাদের।
সেরকমই একজন লোক অনেকদিন আগে হঠাৎ এখানে এসেছিল। সেও কাঠকুঠো কুড়াতে এসেছিল। সে তাকে দেখে তাড়াতে উদ্যত হয়েছিল। সেই লোকটা তাকে কাতরস্বরে বলেছিল, ‘দিদি। মাপ কর। আমি কাঠকুঠো তুলতে আসি নি।আমি গাছগাছড়া নিতে এসেছি’
‘মানে”
লোকটা বুঝিয়েছিল তার কাজ কবিরাজের জন্য ঔষধি গাছপত্র যোগাড় করা। কিন্তু এখন গাছ কমে গেছে। তাই সে দুরে দুরে আসছে। বীথি ওর কথা শুনে মাথা নেড়েছিল। লোকটার কথায় সায় দিয়েছিল। সে শুনেছে ব্রিজটা যখন ছিল না তখন সে জায়গা অরন্যবেষ্টিত ছিল। সেটার নাম ছিল বেহুলাবন।
আরো পড়ুন: অগ্নিশিখা (পর্ব-৬) । দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায়
বীথি বেহুলাবনের গল্প শুনেছে। এই নদী দিয়েই নাকি বেহুলা লখীন্দর কে নিয়ে গেছিল। সে এখানে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিয়েছিল।ওইজন্য জায়গাটার নাম বেহুলাবন। বীথি অনেকবারই স্বপ্ন দেখেছে ডিঙ্গি নৌকা করে লখীন্দরকে নিয়ে যাচ্ছে বেহুলা। বেহুলা কি এ পথ দিয়ে ফেরে নি? নাকি সে এখান দিয়ে চলে গেছে বা এখনও সে চলে যাচ্ছে? সে কোনো কোনোদিন নদীর ঘাটে বসে সেসব কথা ভাবে। সে কথার কোনো মানে নেই। এ কথার উত্তরও মিলবে না। শুধু বুকের ভেতর কেউ যেন একটুকরো মায়া বুলিয়ে দিয়ে যায়। এর বেশি কিছু নয়।
মায়া বড় গণ্ডগোলের জিনিষ। বাইরে রুক্ষ মেজাজ দেখালে কি হবে ওই লোকটার জন্য তার হঠাৎ মায়া করেছিল। খালি গাঁ। শক্তপোক্ত চেহারা। শুধু মাটির দিকে চোখ তার। রামবাবুর বাগানে অল্পকিছু গাছ শনাক্ত করে লোকটা তাকে দেখিয়েছিল। সে গাছগুলোর নাম বলেছিল। তার গুণ বলেছিল। সে লোকটাকে বলেছে ‘কোনো ভয় নেই। তোমার যখন যা লাগবে নিয়ে যেও।‘ লোকটি আসে। কখনো তার সঙ্গে দেখা হলে গাছের গল্প করে।
ফাঁকা জায়গা ছেড়ে বীথি ঘাটে এল। সে যা ভেবেছে তাই। তারাদি বসে আছে। বাসনকোসন ধোয়া হয়ে গেছে। গায়ে একটু ঠান্ডা বাতাস লাগাতে এসেছে। সে জানে তারাদি অন্য কারণে আসে। তাকে ও বলেছে। শোনার পর বীথি চমকে উঠেছিল। ওর দিকে তাকিয়ে বলেছিল ‘ কি বলছ তারাদি?’
‘কেন? আমার কি ভাল করে বাঁচতে ইচ্ছে করে না?’
তারাদি কেন সবারই তা ইচ্ছে করে। তার বুকের কানায় বুদ্দবুদের মতো অহোরাত্র কামনা ঘুরে যায়।কতকিছু ইচ্ছা তার হয় সেকথা কাকে বলবে সে? তারাদি দু;খী মানুষ। পাড়াঘরে তাকে কেউ পছন্দ করে না। তা বলে ভিনদেশী কোন বনিকের সঙ্গে ও চলে যাবে শুনে বীথির বুক ভয়ে কেঁপে উঠেছিল।
এই ঘাটে একসময় অনেক লোক পারাপার করত।তারা কেউ এখানে রাত্রিবাস করত। কিছুদিন থাকত। তেমনই কেউ একজন বছর দশেক আগে এসেছিল। তারাদি তাকে মন দিয়ে ফেলেছিল। সে কথা দিয়ে গেছে আসবে। তারাদি বলে ‘ তাকে যদি দেখতিস । খুব সুন্দর রে!”
সে জিজ্ঞেস করেছিল ‘ সে কোন দেশের লোক গো?’
‘আমি কি তাই জানি? এ ভাষায় কোন কথা বলে না তো।“
‘তাহলে তোমাকে পছন্দ বুঝলে কি করে?’
তারাদি মাথা নাড়িয়ে বলেছিল ‘ ও বোঝা যায়। আমার কাছে জল চাইল। কত কথা বলল। ‘
‘ভয় লাগে নি তোমার?’
‘ভয় লাগবে কেন? ঘাটে নেমে সে মানুষ হাঁপাচ্ছিল। ঘেমেনেয়ে একশা। খুব মায়া ধরল আমার। জল এনে দিলাম। বাড়িতে মুড়ি ছিল দিলাম।‘
‘তারপর?’
‘ এ গাঁয়ে মাস দুয়েক ছিল। মিলের কাছে একটা ঘরে বাস করত। আসা যাওয়ায় দেখা হত। ইশারায় কত কথা বলত। যাবার সময় বলে গেছে ফিরলে আমাকে নিয়ে যাবে!’
‘তুমি যাবে?’
‘যাব না কেন? এখানে আমার কে আছে?’
তারাদির কেউ নেই। সে বড় অভাগা। ছোটবেলায় মা-বাপ দুজনই মরে গেছে। তারপর গ্রামে এরওর কাছে চেয়েচিন্তে খেয়ে এটা সেটা কাজ করে দিন কাটায়। ওইরকম করে মানুষ হওয়াতেই তারাদির মেজাজ খিটখিটে। রুক্ষ। লোকজন তাকে একটু ভয় পায়।
ওর কথা শুনে তার মন দু;খে ভরে গেছিল। সত্যিই তো তারাদির কেউ নেই। ওই লোকটা যদি আসত বেশ হয়। কিন্তু এতবছর যখন আসে নি। সে লোক কি আর আসবে? সে বোধহয় ভুলে গেছে। কোথাও আলাদা সংসার পেতেছে। তবু সে কথা তারাদিকে বলে নি। ও দুঃখ পাবে। ভেবে যদি ও সুখ পায় সে তা কাড়তে পারবে না।
বীথি ঘাটের এক দিকে বসল। নদীর উপর প্রথমেই চোখে পড়ল ব্রিজটার দিকে। নরম রোদের আলোয় ঝকঝক করছে ব্রিজটা। দেখতে ভারি চমৎকার। বড় বড় থামের মাথায় তিনটে আধখানা চাঁদের ঠুকরো। কে যে এমন সুন্দর নকশা বানিয়েছে ভেবে সে অবাক হয়ে যায়। বিলেতের রাণীর জন্য নাকি এই ব্রিজটা উপহার। রাণী কি এসেছিল এদেশে? দেখে গেছে ব্রিজটা? সে জানে না। রাণী দেখুক না দেখুক বীথির মনে হয় ব্রিজটা তারও।
তারাদি পা ছড়িয়ে বসে আছে। বয়সের ছাপ পড়ে গেছে চোখেমুখে। নয় নয় করে কম বয়স তার হয় নি। সারা শরীরে কাজ করার চিহ্ন। সে নদীর জলের দিকে তাকিয়ে বলল ‘ আজ চুপ কেন তারাদি?’ শরীর খারাপ?
তারাদি একবার ফোঁত করে নিঃশ্বাস ফেলে বলল’ উহু! শরীর খারাপ নয়। মাথাটা রাগে টইট্মবুর হয়ে আছে তাই।‘
তারা্দির মাথা মাঝেমাঝেই রাগে ঝলসে ওঠে। তা নতুন নয়। সে জানে আর শোনে। আড়ালে তাকে নিয়েও যে দু-এক কথা বলে ও বলে না তা নয়। সে বলল ‘ কেন? কি হয়েছে’?
‘বলিস না আর! শিখা আজ কত কথা শোনাল।‘
বীথি তাকাল। শিখা মানে কানাইকাকার বউ। সেবার কল্যাণ প্রসাদ নিয়ে যাবার পর নিরুপমা আসে নি। কিন্তু শিখা এসে তাকে সে দুচার-কথা শুনিয়ে দিয়েছিল। সে কথা মনে পড়লে খারাপ লাগে তার। বছরখানেক হয়ে গেল তবু তা ভুলে যেতে পারে না। সেদিনই তো ব্রজ ফিরে এসেছিল। তারপর থেকে সে কেমন যেন হয়ে গেছে। ব্রজকে সে না পারে এড়াতে না পারে কাছে ডাকতে। ব্রজ তার কাছে একটা চুম্বকের মতো।ওর আকর্ষণ সে এড়াতে পারে না। ব্রজ তাকে কতবার ডেকেছে। জঙ্গলে বসে থাকলে ব্রজ কলেজ না গিয়ে বসে থেকেছে। সে ওকে সরাতে পারে নি। সে নিজেও জানে না সে কি চায়! ব্রজ কতদিন ওকে ডেকেছে। সে সাড়া দেয় নি।
সে ব্রজকে বারবার বলে ‘ তুমি এসো না আর।‘
ব্রজ বলে ‘ কেন আসব না কেন?’
‘আমার ভয় করে।’
‘কিসের ভয়?’
‘কেউ যদি দেখে ফ্যালে আমাদের?”
ব্রজ বলে ‘ কে আসবে?’ এই জঙ্গলে কেউ আসবে না।‘
‘তবু কেউ যদি ঠাকুরমশাইকে বলে দেয়? বলে তুমি কলেজ না গিয়ে আমার সঙ্গে বসে গল্প কর। সেদিন তো বারণ করে দিয়ে গেলেন। আবার যদি জানতে পারেন আমরা এখানে আসি ‘
ব্রজ এই একটা জায়গাতেই ভয় পায়। ও চুপ করে যায়। ও মাথা নিচু করে চলে যায়। সে চুপ করে দ্যাখে ব্রজ চলে যাচ্ছে। তার ভেতর অদ্ভুত একটা কষ্ট পাক খায়। ব্রজ আবার আসবে সে জানে।
তারাদি বলল ‘ কি রে? শুনলি?’
বীথি মনটা আবার ফিরিয়ে আনল। ব্রজের কথা সে ভাববে না। সে শুধু বারবার তাকে ডাক দিয়েছে। তার যে ইচ্ছে হয় নি তা নয়। কিন্তু বেশিদুর সে ভাবতে পারে নি। কিছুদুর পরেই তার মনে হয়েছে অনন্তদেবের আশ্রয় তার চিরকালের জন্য নষ্ট হয়ে যাবে। এমন সুন্দর , নির্বিঘ্ন আশ্রয় সে কোথায় পাবে? সে বলল ‘ হু’
তারাদি বলল ‘ কোথায় শুনছিস? শুধু তো মাথা নাড়ছিস। তোদের কারুকেই আর ভাল্লাগে না’
সে শশব্যস্ত হয়ে বলল ‘ওমন কথা বল না। দিদি। শিখাদির মুখ বড় খারাপ। তুমি কিছু মনে কর না।‘
‘হু। তবে হৃদয়ের বউটা বেশ। ওরা আলাদা থাকে। তবু শিখা তো ওকে খাটিয়ে খাটিয়ে মারে। তবু মেয়ের সাড় নেই।‘
‘তাই?’
‘হ্যা রে। বেশ বউটা। দয়ামায়া আছে’
তার সঙ্গে নিরুপমার আর দু-একবার দেখা হয়েছে। মন্দিরে এসে পুজো দিয়ে গেছে। সে অবশ্য সেবারের পর বিশেষ কথা বলে নি। তবে ওর প্রসাদের থালা খুব সতর্কে খেয়াল করে সে। আবার যদি কিছু কমবেশি কিছু একটা হয় তাহলে শিখা এসে উজিয়ে ঝগড়া করবে। সে বলল ‘ ভাল তো’
তারাদি বলল ‘ ভাল তো ভাল। কিন্তু হৃদয়ের স্বভাবচরিত্র তো ভাল নয়। কত না কাণ্ড ঘটিয়েছে বল দেখি”
বীথি মাথা ঘামাল না। আর শুনতে ইচ্ছে করছে না এসব বৃত্তান্ত। নিজের মনের মধ্যে বরং একটা অস্থিরতা সে টের পাচ্ছে। ব্রজকে সে কিছুতেই ভুলতে পারছে না।
কেন যে ব্রজ ফিরে এল!পানিহাটির লোকটাকে ছেড়ে দিয়ে সে এখানে ভালই আছে। পালিয়ে আসার কারণ কারুকেই সে বলে নি। বলবেও না। ব্রজ একবার জিজ্ঞেস করেছিল।
সে বলে নি। সে অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে ছিল।
ব্রজ জিজ্ঞেস করেছিল ‘ স্বামী কি মারত?’
সে মাথা নেড়েছিল।
ব্রজ জিজ্ঞেস করেছিল’ তাহলে?’
সে উত্তর দেয় নি। ব্রজ তার দিকে চেয়েছিল। তারপর ও নিজে থেকেই বলেছিল ‘ থাক’।
তারাদির বসার সময় নেই। তাছাড়া একটু ঠান্ডা হাওয়াও লাগছে। মিলের ভোঁও পড়েছে দুবার। এখানে বসে অনেকদূরের কারখানার উঁচানো চুল্লী দেখা যায়। আকাশ পানে উঠে গেছে মাস্তুলের মতো চুল্লী।
একটু পরেই দুচারজন মানুষ ফিরবে। দুএকজন ওপার থেকেও মিলে কাজ করতে আসে। বীথিরা আর বসে না। ফেরার পথ ধরে।
তারাদি যায় রাস্তা ধরে।সে ঢুকবে জঙ্গলে। সরু পথ ধরে সে ফিরবে নিজের ঘরে। দু একটা কথা বলতে বলতে তারাদি এগোতে শুরু করল। তখনই সে দেখল উল্টোদিক থেকে একদল লোক আসছে। এরা কি মিলে কাজ করে? ভ্রু-কুঁচকে সে ভাবে ! দুর থেকে স্পষ্ট বোঝা যায় না।
লোকগুলো খানিকটা এগিয়ে আসতে সে দেখতে পেল ব্রজকে। ওর সঙ্গে আরো অনেক লোকজন। রতন, মনোজকে চিনতে পারল। বাকিরা অচেনা। এখন বিকেলে ওরা হয়ত দল বেঁধে নদীর হাওয়া খেতে এসেছে।
কিন্তু তাকে অবাক করে দিয়ে ব্রজ নদীর দিকে এল না। সে যেদিকে ফিরবে সেই জঙ্গলের পথে ঢুকে পড়ল। তারাদির দিকে তাকিয়ে সে আর সময় নষ্ট করল না। সে চিন্তার মধ্যে পড়ে গেল। ব্রজ এদের নিয়ে জঙ্গলে ঢুকল কেন? উদ্দেশ্যই বা কি? তার যেন মনে হল ব্রজ অনধিকার চর্চা করছে। এ জায়গাটা তো নিরবিচ্ছিন্নভাবে তার। ও কেন অন্যদের সেখানে নিয়ে যাবে!
ব্রজরা সরু পথ দিয়ে ভেতরে ঢুকে গেছে। বীথিও যতদুর সম্ভব দ্রুত পা চালাল। তাকে জানতে হবে ওরা সব জায়গা থাকতে হঠাৎ এখানে এল কেন?

দেড় দশক ধরে সাহিত্যচর্চা করছেন। পেশা শিক্ষকতা। নিয়মিত বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় লেখেন। ‘কাঠবেড়ালি’ নামে প্রথম গল্প প্রকাশিত হয় আনন্দবাজার পত্রিকার রবিবাসরীয়তে। তাঁর উল্লেখযোগ্য উপন্যাস : ‘চার অঙ্গ’, ‘তিথির মেয়ে’, গল্পগ্রন্থ : ‘গল্প পঁচিশ’, ‘পুরনো ব্রিজ ও অন্যান্য গল্প’। ‘দেশ’ পত্রিকায় ‘বীজমন্ত্র’ নামে একটি ধারাবাহিক উপন্যাস লিখেছেন।