| 4 মার্চ 2025
Categories
উৎসব সংখ্যা ১৪৩১

উৎসব সংখ্যা: বল্লরী সেন’র কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: < 1 মিনিট

নিম গেরস্থি

শহরের আধুলি খুঁজতে গিয়ে উঠে এল বৃষ্টিমুখর একটা চা-সরাই
-কিছু লিখবো না এই শর্তে
ফেরার। মাঠ আর জারুলের শাখায় সড়কপথ
ক্রমশ আচ্ছন্ন
সরাইয়ের সামনে সোনাঝুরির হলুদ ঝাঁপি
জলজ পানকৌড়ির তীব্র ওড়াউড়িতে
কাক দম্পতির বাসা গড়ায় প্রবল উৎকন্ঠা চুপ করিয়ে রাখে। তখন বুলবুল গিয়ে বসে টেবিলের ওপর। মানুষের অতি প্রচেষ্টাকে হারিয়ে হাত বাড়িয়ে দেয় পাতার সংসার। ভাবি রসাতলে যাব।
মেঘলা গ্রীষ্মবেলায় শান্তিনিকেতন, মন্দারমনি, দীঘাদার্জিলিং সব ফেলে, এখানে ফার্স্ট ফ্লাশ। চায়ের পেয়ালায় হঠাৎ যেন চলে গেছি বহু ক্রোশ পেরিয়ে …
টেবিলে এসে গেল গ্রিল্ড্ ফিশ, ম্যাশ্ড পোট্যাটো জড়ানো এই তো কাছেই অন্যদেশের মনকে ভুল বোঝানো।
“ওড্ টু অন্যদেশ” প্রকল্পে একদিকে নদী আর এদিকে আমরা। জানলার শিক
বেয়ে চামড়ার তলায় পারদের অটো- ইমিউন ছন্দে কী যেন নাড়া খায়! মনে হয় গঙ্গা নয়, ঐ বিরাট তরঙ্গপ্রপাতে আমি বহু জন্ম এভাবেই শুশুক বা মরামানুষের হাড়ের মতো কৃশ ও সরু এক ঘাসডিঙিতে মাঝিলীন বেপথু একা চলে এসেছি সাত সমুদ্র পার। জাহাজের ডেক ধরে
বৃষ্টি নামল
সমস্ত ঝাঁঝ সয়ে রাত্রিময় তারা
নদীর কানায় কত নামের জোনাকি
দিগন্ত কাঁপানো একরাতের সওয়ালে জ্বলে- জ্বলে

হেঁশেলে বাসনের পিঠে তার নাম পড়ে থাকে

 

 

ক্রোধগুচ্ছ

মহাগৌরী জাগ্রত হও ! চণ্ডমুণ্ড রক্তবীজ দাহ ।
তৃতীয় নয়ন হতে ক্রমোৎকর্ষে উন্নীত আরোহ॥
মণ্ডলে অবয়বে ধীযুক্ত করো তুমি দেবী ।
আগুন ছুটিয়ে দাও , বধ্যভূমি স্নিগ্ধ হোক ॥

শিকারে প্লীহার মতো গোল চাঁদ কালিকাবরণ
শিরার ভেতর পোড়ে ছাই, অস্ত্র ঝনঝনায় রণ
মাতাল মোহিনী। কৃষ্ণ আরাধনা তীব্র এ যজ্ঞ
আগমনীবৃন্দ, দোলায় এসেছো যদি মাটিবিশ্ব
চৌচির হোক!



দুই

অসুর তাণ্ডবে তুমি স্বর্গ মর্ত্য পাতাল পেরোলে।

কুমারীরূপে বধ করলে তাকে, অসুরদেহ পড়িল ভূতলে।
গহনা, তিলক ও মুকুট—- যুদ্ধে এলোচুলে রুদ্রাণী॥
সাজলে তুমি হে সিন্ধুসুতা! গহন অরণ্যে নাদ।
মোচন করো স্বার্থ,গ্লানি—ত্রিলোক বিষাদ॥

আভূমি নিবিড় হল হোমরাত্রি, আজ এখানেই শেষ।
রাবণ বধের পর পৃথিবী মালিন্যহীন, ফিরে যাবি তুই॥
মা মেনকার কান্নাভেজা গুমরে ওঠা কত না অভ্যেস।
ফুরিয়ে যায় ; হস্তিরথে চলে যাচ্ছে মেয়ে॥

 

 

 

 

 

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত