দুনীতিকে অবারিত করার পুরো ব্যবস্থা বহাল আছে বাজেটে: সাকী
প্রস্তাবিত বাজেটে লুটপাট ও দুর্নীতির আয়োজন বহাল আছে এবং দুর্যোগ মোকাবিলার কোনো সক্ষমতা এতে নেই বলে মন্তব্য করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি।
শনিবার (১৩ জুন) ২০২০-২০২১ অর্থবছরের বাজেট প্রতিক্রিয়া জানাতে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে গণসংহতি আন্দোলন।
অনলাইনে অনুষ্ঠিত ওই সংবাদ সম্মেলনে গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কার্যালয় থেকে যুক্ত হয়ে সভাপতিত্ব করেন দলের প্রধান সমন্বয়কারী জননেতা জোনায়েদ সাকি।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন দলের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী সমন্বয়কারী আবুল হাসান রুবেল। সংবাদ সম্মেলনে অংশ নেন কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য ফিরোজ আহমেদ, হাসান মারুফ রুমী, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য জুলহাসনাইন বাবু।
সংবাদ সম্মেলনে জোনায়েদ সাকি বলেন, সরকার ঘোষিত বাজেটে দুর্যোগ মোকাবিলার কোনো সক্ষমতা নেই, জনগণ হতাশ, ক্ষুব্ধ। জনগণের প্রতি সরকারের কোনো অঙ্গীকার নেই। সরকারের লক্ষ্য কিছু গোষ্ঠীর প্রতি।
তিনি বলেন, দুনীতিকে আরো অবারিত করার পুরো ব্যবস্থা বহাল আছে এই বাজেটে। জনসেবার খাতগুলো পুরোপুরি আমলাতন্ত্র নির্ভর, জনগণের সেবার প্রতি ন্যূনতম মনোযোগ নেই। এই বাজেটে তার পরিবর্তনের কোনো দিকনির্দেশনা নেই। সরকার আসলে এই মহাদুর্যোগ ও সংকটে নিপতিত জনগণের জীবনের কল্যাণের বিষয় ভাবারই সামর্থ্য রাখে না।
জোনায়েদ সাকি বলেন, সারা দুনিয়ায় অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মন্দামুখী। বাংলাদেশেও বিনিয়োগ ও ভোগ নিম্নমুখী, রফতানি কমছে, রেমিট্যান্স প্রবাহও কমে যাবে।
সেক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি করতে হবে। প্রয়োজনে এই বাজেটের আকার বৃদ্ধি করা যেতে পারতো। অন্ততপক্ষে এই মহামারির ভয়াবহতা থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাস্থ্য খাতকে ঢেলে সাজানোর জন্য বাজেটে যে গুরুত্ব দেয়ার দরকার ছিলো তার কোনা নমুনা প্রস্তাবিত বাজেটে দেখা গেল না।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশে স্বাস্থ্য খাত মুখ থুবরে পড়েছে। মহামারি মোকাবিলায় এখন জরুরি ভিত্তিতে দরকার পিসিআর ল্যাবে প্রতিদিন অন্তত পক্ষে ৫০ হাজার টেস্ট করার সক্ষমতা। একইসাথে গণস্বাস্থ্যের কিট অনুমোদন দিয়ে গণহারে অ্যান্টিবডি টেস্টের ব্যবস্থা করা। অ্যান্টিবডি টেস্ট করলে অনেকেই ঝুঁকিমুক্ত—এটা নিশ্চিত হয়ে কাজে যেতে পারতেন।
পুরো স্বাস্থ্য ব্যবস্থা দুর্নীতিতে নিমজ্জিত হয়ে আছে মন্তব্য করে জোনায়েদ সাকি আরও বলেন, এই করোনাকালেও চলছে দুর্নীতির মহোৎসব। এইসবের প্রতিকারের কোনো নীতি ও পরিকল্পনা ও নির্দেশনা বাজেটে নেই। দেশের মানুষের স্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে কমপক্ষে বাজেটের ২০ ভাগ স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ দিতে হবে এবং প্রয়োজনীয় নীতি বদলাতে হবে।
জোনায়েদ সাকি বলেন, বাজেটে সামাজিক সুরক্ষা নীতিকে সৃজনশীলভাবে ঢেলে সাজানো দরকার, যাতে সংকটাপন্ন দরিদ্র মানুষ এবং নতুন করে দরিদ্র হয়ে যাওয়া এবং জাতি, ধর্ম ও লিঙ্গীয় ভিত্তিতে সকল প্রান্তিক মানুষেরা এই রাষ্ট্রীয় সহযোগিতা নিশ্চিতভাবে পান। বিনা সুদে কৃষককে ঋণ দেয়া দরকার। কৃষক যেন তার উৎপাদিত ফসলের ন্যায্য দাম পায় তার ব্যবস্থা করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্য নেতৃবৃন্দ বলেন, এই বাজেটে রাষ্ট্র ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে চুরি দুর্নীতির যে আয়োজন আছে তার সবকিছুই একইভাবে বহাল আছে। জ্বালানি খাতে রেন্টাল-কুইক রেন্টালকে বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি চার্জ দেয়া, মেগা প্রজেক্টের লাগামহীন ব্যয়ের জবাবদিহিতার ন্যূনতম জায়গা না রাখা, ব্যাংক-শেয়ার বাজার লোপাটকারীদের রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা, মাথাভারী প্রশাসন ও সরকারি কর্মকর্তাদের পেছনে অপচয়মূলক ব্যয় অব্যাহত আছে সমানভাবে।
বিশ্বের সর্বশেষ খবর, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, সাক্ষাৎকার, ভিডিও, অডিও এবং ফিচারের জন্যে ইরাবতী নিউজ ডেস্ক। খেলাধুলা, বিনোদন, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য সহ নানা বিষয়ে ফিচার ও বিশ্লেষণ।