[উৎসর্গ কবি বিনয় মজুমদার ]
নদীর সামনে দাঁড়িয়ে প্রশ্ন করলাম –
এই নদী ওই পাহাড়ের মালিক কে?
নিরন্তর ঢেউয়ের আনাগোনা – স্তব্ধ চরাচর
অকস্মাৎ ঘাড়ের পিছনে তুমি
দূর বোকা মেয়ে, ‘পাহাড় ও নদীর মালিক সরকার’
তারপরেই সুতীব্র হাসি – বলতো কী নেই অথচ তার মালিক আছে-
ভাবনার ভীরুপথে ঢোকার আগেই বললে- আকাশ।
পরমুহূর্তেই নদীর দিকে তোমার মুখ
সব মাছই জলে থাকে – বুঝলে মেয়ে!
সবচেয়ে বোকা প্রাণী মাছ। ঠিক তোমার মত।
নিরুত্তর আমি। তোমার স্থির চোখ।ঠোঁটে বিষাদ। নদীতে ছায়া।
ছায়ার উপর শাপলা।
শাপলার চাষ এখনো জগতে শুরু হয়নি।আসলে শাপলা চাষ করতে হয়না।
তারপর হঠাৎই উচ্ছ্বসিত–জানিস মেয়ে পশ্চিমবঙ্গে শাপলা ফুলে বিল সাদা হয়ে যায়।
শাপলার ফুল জলের উপরিভাগে ফোটে।
নদীতে শাপলা।জ্যোৎস্না মাখা শাপলা–মায়া মাখা নদী
দেখব বলে এগোতেই,শাপলার শোলার আত্মা আছে বলে তুমি চলে গেলে,
চলে গেলে শিউলির বনে- শিউলি ফুল সব এক রকমের ।শিউলি ফুলের বোঁটা থেকে রঙ হয়।
যেন আমি বিজ্ঞানের ছাত্রী।তুমি মাস্টারমশাই।
নাকের উপর কালো ফ্রেমের মোটা চশমা।চশমার ফাঁক দিয়ে তোমার বিজ্ঞান।
উত্তর গোলার্ধে যখন শিউলিফুল তখন দক্ষিন গোলার্ধে শিমুল ফুল।
শিউলি থেকে শিমুল- শরৎ থেকে বসন্ত …
আমি ঘাসের উপর।মাথায় অনন্ত আকাশ।সামনে দিগন্ত নদী
তুমি বলে যাচ্ছ–দুর্বা ঘাসে ফল হয়না।দুর্বা ঘাসে ফুল হয়না।
ঘাসও বিক্রি হয়। ঘাসের ও আত্মা আছে ,পূর্ণজন্ম আছে।
ঘাসও বিক্রি হয়।
আমি আত্মা জানিনা।পূর্ণজন্ম জানিনা।
শুধু দেখি নদী–আর আদি অন্তহীন আকাশ
ক্রমশ জোনাক জ্বলা রাত নামে। নিঃসঙ্গ নদীর জলে শাপলা ।আকাশে ভরা চাঁদ।
ঝিঁ ঝিঁ পোকার মত বিড়বিড় করে কেবল তুমি বলে যাও –
শিউলি ফুলের জীবন মাত্র একরাত
মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরলে তবেই অমর হওয়া যায়-
জোনাকি পোকাই প্রকৃত জ্যোতির্ময়।
![বিতস্তা ঘোষাল](https://irabotee.com/wp-content/uploads/2019/05/IMG_20190529_160333-1-150x150.jpg)
কবি,কথাসাহিত্যিক,সম্পাদক ও প্রকাশক