বালুকণা রায়
আমি বালুকণা রায়, কানে সফেনের দুল
বিবাহবিচ্ছিন্ন আকাশ ও মেরুর মেয়ে,সূর্যতপা…ওপারে আমার বোন নারকেলবীথি, দুজনের মাঝে কত ট্রলারপুরুষ..নৌকোর কানকোরা এসে
শ্বাস ফেলে নিভৃতবেলায়
আমি বালুকণা রায় …
ঢেউয়ের মাংসগুলি আমার প্রেমিক
আমাদের দোটানার মাঝে প্রচ্ছন্ন বিলিন সাঁকো, ভেজানো পায়ের পাতা..
শেষ ভূখণ্ডে যেখানে উপকূলরেখা
পুরোনো পৃথিবীর শ্যাওলায় মোড়া গল্পের জেটি….বিগলিত গ্লেসিয়ার….
এসো হে অভিন্নটুকু
নৌকোদের ঘুম পাড়িয়ে এসো
এসো রাতকথা,নীচুঃস্বর দেহের প্রোটিন
এসো উড়ন্ত মরাল, লৌহ ও আকরিক …
ভেসে ভেসে এসে যদি
তারা প্রাণ ফিরে পায়
আমি দিকচিহ্নহীনা
বালুকণা রায় …
ব্লু হিল নাইট সুপার
বাঁক পেরোলেই এসে
গায়ে কাঁটা দেবে উমকিয়াঙের শীত
গভীর চুনের খাঁদ ও নিজেকে সরিয়ে
পথ করে দেবে অটোনমাস জয়ন্তীয়া হিল
একথা পাখিরা জানেনা
বাতাসে আর্দ্রতার পূর্বাভাস ছাড়াই
তারা উড়ে যেতে পারে
ফাঁদ পেতে আছে
যেখানে তোমার ফ্লু…
একথা পাখিরা জানেনা
শয়ন
বিগত জন্মের দিকে পাশ ফিরে শুই
ঘুম ঘুম বিবাহের আসবাব, রাত শেষ হলে
যেরকম শুয়ে পড়া রীতি ….গানের দরদ ঠেলে উপচে ওঠে জাহাজের শব
ইহজন্মে লবনাক্ত জেটি
পাশ ফিরে আমিও রয়েছি তাঁর নৈঋতে
ঘুমের পোশাকগুলি দেয়ালে ঝোলানো
উপক্রমনিকা লেখা, নাচের ভঙ্গিমা ছেড়ে
যেরকম কাত হয়ে পড়ে আছে
কাঠের স্থপতি …
নন্দন
কত সহজেই আমি এঁকে ফেলি গ্রাম
নদীর সাকিন, উৎকীর্ণ শ্যাওলা পুকুর
হিন্দু মুসলমান
কত সহজেই আমি মিটিয়ে ফেলেছি পাটাতন, নৌকোর গলুইয়ের ঘাম
ফুঁটিয়ে তুলেছি পেস্টেলে আকাশ ও মাটির
চোরাটান…
এত সব এঁকে ফেলা শেষে
কাকে একা ফেলে চলে যাচ্ছে
ঘুম ঘুম তুলি,ইরেজারে ঘসে তুলে ফেলা
ঘাস,পাখিদের চাষজমি,ফলিডল
এতো সাদামাটা
কত সহজেই মেনে নিচ্ছে রঙ,হতবাক চৌকো টেবিল!
২৭ অক্টোবর,১৯৬৫
জন্মস্থান-
মনুভ্যালি চা বাগান, কৈলাসহর, ত্রিপুরা।
শিক্ষা-
কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর। ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে এমএ।
পেশা-
তথ্য আধিকারিক (ত্রিপুরা সরকার)।
প্রকাশিত কবিতাগ্রন্থ –
উনকথন , খন্ড পাড়ায় জলবার্ষিকী , ধর্মগোধূলী, নিরিবিলি সেন্ট আইটেমস, শ্রেষ্ঠ কবিতা, বিকেলের হার্টক্রেন