আজ কবি,সম্পাদক বিশ্বরূপ দে সরকারের জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা আর নিরন্তর শুভকামনা। ২০১৫ সালে বাক এ প্রকাশিত কবিতাগুলো ইরাবতীর পাঠকদের জন্য পুনঃপ্রকাশ করা হল।
আয়না বাগান
পাগল করবে জানি হো হো করবে
সম্পর্ক টপকে গেলে গাছে গাছে ঈর্ষা ফুটবে
আলতো হরিণ তলে চিবুকের বাড়ি
কথা মেরামত করে করে তবেই সুপ্রভাত
কিংবদন্তী, গল্পের ভেতর যথারীতি
আপেল গাছের অপমান ছাপা হবে
আঙুল দিয়ে বানানো আরও একটা শরৎকাল
চিকন হাই তুলবে
তার কোন গ্রামার থাকবে না…
পেনসিলের সাদা সমাস
জবাকুসুম মানে পূবদিক
পশ্চিম ভিজে যাওয়া ঘুম
আকুলি বিকুলির হৃৎপিণ্ড
হাওয়া নেই, সঁপে দেওয়া জল
চিবিয়ে নামছে মিউজিয়াম
একা থাকা জলসেচ
বুঝিয়ে সুঝিয়ে সমুদ্রখাত
ওভারিতে
চক, ডাস্টার ও মাফলার
৪৫০ কোটি বছর পর আবার সেই নাভিপথ
ব্রহ্মাণ্ড বেয়ে বেয়ে উঠছে
গন্ধ বাহক পিঁপড়ে, ছেলেমেয়ে
যেন সহজ গমন
যেন চুম্বন দিতে যাচ্ছে নক্ষত্রে
পায়ে পায়ে কালো ঘৃণা
একলক্ষ বছরের আলজিভ
চোখের নিচে যুদ্ধরূপ, কোমরের মাতৃ রূপ নিয়ে
হিমবাহ থেকে শতক পেরিয়ে, হাড়মাংস পেরিয়ে
চুল্লির ভেতর ঢুকে আবার খণ্ড খণ্ড বৈষ্ণব
টুকরো টুকরো শাক্ত, একদলা হজরত বেরিয়ে আবার…
আধপোড়া বাবার মাংস, নদীতে ভাসিয়ে
অকর্মণ্য পুত্রের হাত তবেই রেজিস্ট্রি হচ্ছে
অনিদ্রার গাছে গাছে
চণ্ডাশোক, বিলি করা শাণিত অপ্রেম
স্নেহ হারিয়ে, ঘুণাক্ষর হারিয়ে
প্রতিটি রোমকূপে চৈত্র কণা
যদি একটা তালপাখা হত
যদি কেউ পূর্ণ বর্ষাকাল
মালকোষে ভিজে যেত হাড়মাস
প্রচুর তুমি যা শেখাবে
গত শতাব্দীর মনে পড়া মেয়েমানুষ
হে বৈকুণ্ঠ, হে আগুনে ঝলসানো কাঠবেড়ালি
লাফানোর রাস্তা বাতলাও
বলো তত্ত্বকথা, কত ডেসিবেলে নদী বাজলে
এই টিফিন কেরিয়ার ভরে দেবে
ক্ষীরের বিদ্যুৎ আর ছানার নিউরোন
কবিতা চিনবে না…
ননসেন্স
হাঁসের গা কোনো মামুলি সন্ধ্যে নয়
যে জিজ্ঞাসা গড়িয়ে নামবে
হতে পারে জল, টান একটা স্ফূর্তি
শীতবোধ নিরীহ দুঃখে কাঁপে …
দু একবার উপত্যকাও আগ্রহ রেখেছে
অণ্ডকোষ পৃথিবীতে বর্ষাকাল ভালোবাসে
বেঁচে থাকা মানে তবে রতি, তবে কুসুম বনের এলিজি
অনিদ্রা ভিজে গেলে কী লাভ বলো
ঝড় থেমে গেলে…
সুন্দরের বিক্ষোভ তাহলে ট্যাবলেট নির্ভর
দ্যাখো বেসিনের ওপর আজ ঝুঁকে আছে
আমাদের নেশা, কুলকুচিগুলি…
দূরত্ব
শান্ত বিকেলের নাম উপনিষদ
বিশেষ করে বেদনা পরিচালিত
আচরণ ও মনোভঙ্গির নাম সাইকোপ্যাথ…
আমাদের আছে অভিযানের বাঁদিক
আর ডানদিকের অনুমোদন…
কম-বেশি হয়না এমন অনুভূতি ও মনখারাপ
সন্ধের একটু পরে বাড়ি ফেরে…
পার্টি অফিসের পাশেই কোল্ড স্টোরেজ, বিউটি পার্লার
ওর কাছেই রক্ষিত বাড়ির বড় মেয়ে…
বস্তুত পৌঁছে যাওয়া মানে একধরণের নিঃস্ব নালিশ
যা এই মফঃস্বল থেকে ২ কিলোমিটার দূরে…
শ্যুটিং
অথবা তুমি সেই মর্মের ঝিলিমিলি
যত্নে লাগানো আন্দোলন
নোংরা উদ্বেগের টুকরো… ক্ষয়ে যাওয়া আফশোস
স্মৃতির গন্ধের ভেতর…
বুকের অতি কাছে ফসফরাস
বুকের অতি কাছে ইনসিওরেন্স
রাস্তাঘাট ক্রমশ ফাঁকা
কেবল ফার্মেসির সামনে ক্রিয়াপদের অপেক্ষা
আঙুলেরা ভিড়ে যাচ্ছে অস্টিও প্ররোচনায়…
ফাঁকা মাঠে গুলির আওয়াজ, কালশিটে পড়া রাত্রি ২টা
চাঁদ ঢেলে দেবে ফর্সা শরীর
নদী পেরিয়ে আজ পাখির শব্দ শুনতে যাবো…
বর্ষাদেশীয় ভ্রমণ
এখানে, জুলাইয়ের এক সন্ধ্যার
স্টেশনের কাছে নিঃসঙ্গ ৪১
চাকরিবাকরিহীন, কর্মসূচিহীন…
কতরকমের সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়া শহর
বাচ্চা আসছে না বলে আমিষ না খাওয়া মাদুলির হাত
কেবল একটা নিঃশ্বাসের জন্য
হুডখোলা নদীর কাছে কাকুতিমিনতি মধ্যরাত
মাঠের ওপর দিয়ে ছুটে যাওয়া বৃষ্টির অনুশীলন
২৫ বছর আগে প্রথমবার মনে পড়ছে
এখনো ঠিক হলনা বুধবারের রাত্রি কী করব
চাঁদ চুঁইয়ে নামলে আমার নেশা হয়ে যাবে
অবসাদ বেড়ে যাবে, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাবে
হাসপাতাল, হাসপাতাল বলে ভালোবাসবো কাকে
ঘরসংসার, কোলের কাছে ঘেঁষে থাকা পুপুল
আদর আদর তোমার কোনো ওষুধ নেই রজনী
.