| 6 অক্টোবর 2024
Categories
জীবন যাপন

কোভিড হানার পর খাবারদাবারে কী কী পরিবর্তন আনবেন

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

কোভিড পরবর্তী পৃথিবী আমাদের জীবনধারণের পদ্ধতিতে বদল এনেছে। তবে শুধু জীবনধারণ বদলেছে এমনই নয়, পরিবর্তিত হয়েছে খাওয়ার অভ্যাসও

শুধু স্বাদের কথা ভেবে যেখান যা খুশি খাওয়ার ছিল ভেঙে এ বার খেতে হবে শরীরের প্রতিটি প্রত্যঙ্গের কথা মাথায় রেখে। না হলে শরীরের দুর্বলতার সুযোগ নেবে সংক্রমণ। হৃদযন্ত্র, ফুসফুস, বৃক্ক, মস্তিস্ক, যকৃৎ সহ প্রতিটি অঙ্গেরই খেয়াল রাখতে হবে।  সুগার-প্রেশার-কোলেস্টেরল-ওজন, সবই রাখতে হবে মোটামুটি নিক্তির মাপে। না হলে এদের হাত ধরেও বাড়াবাড়ি করতে পারে কোভিড। আবার যদি গ্যাস-অম্বল-বদহজমের মতো সাধারন সমস্যা থাকে, সে ক্ষেত্রে পুষ্টির অভাব হতে পারে। অপুষ্টির সঙ্গে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার যোগ আছে। 

তাই এই নতুন নিয়মে, নতুন কিছু খাবারকে সঙ্গে নিয়ে প্রতি দিনের ডায়েট সাজাতে হবে।

খাওয়ার নিয়ম

আগে যেমন মাঝে মাঝে বেনিয়ম চলত, এখন সে সব না করাই ভাল। যতটা পারেন নিয়ম মেনে চলুন।

• সকালে উঠে খিদে পাক বা না পাক খেয়ে ফেলতে হবে। খেতে হবে ৩ ঘণ্টা অন্তর, দিনের কোনও খাবার বাদ দেওয়া যাবে না। এক দিন ব্রেকফাস্ট না করলে কিছু হবে না,এমন ভাবনা থেকে বেরিয়ে আসুন। এতে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়ে, ওজনও আয়ত্তে থাকে।

• যত খিদেই পাক, পেট খানিকটা খালি রেখে খান। জলের বোতল সঙ্গে রাখুন। মাঝেমধ্যে চুমুক দিন।

• রাতের খাবার যত হালকা হয় তত ভাল। শুতে যাওয়ার ঘণ্টা দুয়েক আগে খান। খাওয়ার পর একটু পায়চারি করুন।

• ওজন যাতে না বাড়ে সে দিকে খেয়াল রাখুন। তবে ক্র্যাশ ডায়েট করে নয়।

• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারে এমন পুষ্টিকর খাবার বা ভেষজ খান নিয়মিত।

• শান্ত হয়ে বসে, ভাল করে চিবিয়ে, মন দিয়ে খান। একে বলে মাইন্ডফুল ইটিং। এভাবে খেলে হজম ভাল হয়। খাবারের পুষ্টি ভাল ভাবে শোষিত হয় শরীরে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে।

কোনও ভাবেই ব্রেকফাস্ট বাদ নয়।

নতুন খাবার

• সকালে খালিপেটে খান হলুদ দুধ। গরুর দুধে বা আমন্ড দুধে এক চামচ কাঁচা হলুদ বাটা, আধ চামচ দারচিনির গুঁড়ো, সিকি চামচ গোলমরিচের গুঁড়ো মিশিয়ে বানান। সুগার না থাকলে মধু মেশাতে পারেন। এর পর আধঘণ্টা কিছু খাবেন না।  

• সকালে চা-এর বদলে আয়ুর্বেদিক ক্বাথ খেতে পারেন। তুলসি, পিপলি, আদা ও মধু দিয়ে বা তুলসি, আদার সঙ্গে গোলমরিচ, দারচিনি, কিশমিশ, মধু ও লেবুর রস দিয়ে বানাতে পারেন। আধ চামচ গুড়ুচি এক কাপ জলে ফুটিয়ে মধু মিশিয়েও বানানো যায়। নিয়মিত খেলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যেমন বাড়বে, বাড়বে হজমশক্তি। গলাতেও আরাম হবে।

• সকালে এমন খাবার খান যাতে কোনও অস্বাস্থ্যকর উপাদান নেই। গম ও ছোলা শুকনো খোলায় ভেজে তাতে মেশান ওটস ও বার্লি। তার পর মিক্সিতে গুঁড়ো করে দুধ বা জল দিয়ে ফুটিয়ে ফল মিশিয়ে খান। আমন্ড দুধে কাঁচা হলুদ, ওটস ও মধু মিশিয়ে পরিজ বানাতে পারেন।

• দুপুরে ভাতের সঙ্গে কাঁচা হলুদ ও গোলমরিচ বাটা খান। ডাল-সব্জির সঙ্গে খান লেবু। বা খাওয়ার পর কোনও টক ফল খান।

• লেবু দিয়ে ধনেপাতা বা পুদিনার চাটনি বা ১৫ মিলি আমলকির রস খেতে পারেন।

• রান্নায় সব ধরনের মশলা ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে ব্যবহার করুন। যেমন, ধনে, জিরে, হলুদ, গোলমরিচ, আদা, রসুন, মেথি, কালোজিরে।

• ইমিউনিটি বাড়ে এমন একটি মশলা বানিয়ে রাখুন। ৩ চামচ করে জিরে, ধনে, ৬ চামচ মেথি ও এক চামচ গোলমরিচ শুকনো খোলায় ভেজে, গুঁড়ো করে নিন। তাতে মেশান এক চামচ আদার গুঁড়ো, ৬ চামচ হলুদ গুঁড়ো ও সিকি চামচ দারচিনির গুঁড়ো। যে কোনও রান্নায় মেশানোর আগে এক চামচ ঘি অল্প গরম করে তাতে এক চামচ মশলা দিয়ে নেড়ে নিন। ভাত, সেদ্ধ সব্জি, ডাল, স্যুপ সবেতে মেশাতে পারেন।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত