Categories
বীথি রহমানের কবিতা
আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
দহন
তাকে বড়ো মনে পড়ে অকারণ
অকাল প্রেমে খুন হয়েছিল সে-কোন্ এক ছায়াহীন দুপুরে
দাঁড়কাক কেঁদেছিল না জানি কতোটা ব্যথায়
পাষাণ প্রাচীরে তবু ঘেরা ছিল মন
আজ কেন তাকে মনে পড়ে অকারণ!
.
আষাঢ়ের সন্ধ্যায় বুক ভিজে গ্লানিতে
ঘাতক হৃদয়ে লাগা রক্তের দাগ-ফুলকি উড়ে বাতাসে
রক্তের রঙে তাকে রাঙিয়েছি
ঘৃণার চাদরে ঢেকেছি সে আধেক মৃত ঘাস
আজ কেন তাকে ভেবে থেমে যায় শ্বাস!
.
অনেক ভেসেছে সে শুষ্ক বিষাদ নদীতে
তারপর কোন্ ক্ষণে ডুবে গেছে চুপচাপ- রাতের ডুমুরের বেশে
পাইনি তাকে আর শ্রাবণের জোছনায়
মেঘ হয়ে ভেসে গেছে বরুণে
আজ কেন সেই-ই আসে সরেজমিন স্বপনে!
তৃষ্ণা
খুব করে চাই ভালোবাসাটা আসুক
চোরাবালিতে ডুবে যাওয়া নিমগ্ন আবেগ
চোখের কার্নিশে জমা তীব্র প্রেম
বুকের ভাজে ভাজে পড়া যত ভারি আস্তরণ
সব ধুয়েমুছে কেউ তুমুল করে আসুক।
.
রক্তের কণায় মিশে থাকা অবিশ্বাস
ঠোঁটের লালে ঝুলে থাকা ঘৃণার চাবুক
লোভী কোনো হাত সে লালে আঙুল রাখুক
অবসাদে ঢাকা স্বপ্নকাতর চোখে চোখ রেখে
কেউ একজন ভীষণ রকম কাছে টানুক।
.
অব্যক্ত আঁধার ভালোবাসা প্রেমহীন নারী
অনন্তকাল পাথরচাপা তৃষিত হৃদয়
তবু কেউ তো বুঝুক, পাথরেও ফোটে ফুল
শতাব্দীর তৃষ্ণা মিটাক জবরদস্তি চুম্বনে
বেপরোয়া ভালোবেসে কেউ হুলুস্থুল কাছে থাকুক।
.
কেন চোরাবালিতে ডুবে আছে তীব্র প্রেম
অবসাদে ঢাকা কেন স্বপ্নকাতর চোখ
শতাব্দীর তৃষ্ণা কেন জমে আছে ঠোঁটের লালে
কেউ তো বুঝুক, কেউ তো জানুক
কী আকুল হয়ে চাইছে এক জোড়া ক্লান্ত চোখ-
খুব, খুব করে ভালোবাসাটা আসুক!
যে কথা হয়নি বলা
আমাদের ব্যবধান সহস্র ফাগুনের, তবু-
বেসামাল ঝড় ওঠে যায় যদি বিনিদ্র প্রহরে
রজঃস্বলা সেই রাতে উন্মনা হৃদয়ে জ্বালাবো ভালোবাসার উনুন
পথে-প্রান্তরে যেখানে যেখানে পড়ে আছে
হেমন্তের মায়া বীজ
সব খুঁজে-ছেঁকে তা দেব বাসন্তী দুপুরে।
ভালোবাসা তো এমনই হয়
নক্ষত্র রাত কেটে যায়, মনে পড়ে না
বসন্ত পঞ্চমী বয়ে যায়, মনে পড়ে না
দখিনা মলয় নাড়া দিয়ে যায়, মনে পড়ে না
অথচ নিতান্তই সাদামাটা কোনো ভোরে
হয়তো ভাঁটফুলের ঝোপে সেদিন বসেছে পাহাড়ি ফড়িঙ
কিংবা কুসুম বিকালে নওল পাতায় ঠোঁট গুঁজা আনমনা বেজোড় শালিক
তেমনই ব্যাকুল কোনো ক্ষণে, অকস্মাৎ বিবক্ষা
হয় আকুল পরাণ
যে কথা হয়নি বলা এতোকাল
সে কথার নিনাদ ওঠে বুকের সামগ্রীতে
কাজল আঁখি ছড়ায়ে তোমার দিকে
সে ক্ষণে মুখ ফুটে বলে দেব ভালবাসি, ভালবাসি!
কবি। বর্তমানে ব্যাংকে কর্মরত, একসময় সাংবাদিকতা করেছেন। ঢাকায় বসবাস, ময়মনসিংহের মেয়ে।
কবিতা গুলো পড়ে অনেক ভালো লাগলো। কবিকে শুভেচ্ছা।