| 2 সেপ্টেম্বর 2024
Categories
গল্প সাহিত্য

একটি দোলের গল্প

আনুমানিক পঠনকাল: < 1 মিনিট

#
আয়নার সামনে এসে দাঁড়ালো ঋজু। ভেসে উঠলো সে আয়নার ভেতরে। বাইরের ঋজু আর ভেতরের ঋজু–দুজনের কথা হল। এভাবেই কথা হয় ওদের।
— আজ তো দোল। রং খেলা। কতকাল রং খেল না জানো? বললে আয়নার ভেতরের ঋজু।
–হুম দশ বছর।
–সেই যে শ্রেয়ার সাথে শেষবার…
–হুম।
–দোলের আগের দিন শ্রেয়া এসেছিল। তোমাকে যে পাগলের মত ভালোবাসতো! তুমি ওকে হলুদ আর সবুজ আবির মাখিয়ে ছিলে? আরো কীসব করেছিলে…
হাসি ফুটে উঠলো বাইরের ঋজুর ঠোঁটে। কী আর করেছিলাম! জড়িয়ে ধরেছিলাম। ঠোঁটে ঠোঁট। ও আমাকে ভূত করে দিয়েছিল আবিরে।
–আর কিছু করোনি?
–করেছিলাম। ঐ একটু মাথা ফাটা রঙ আবিরের ভিতর লুকিয়ে রেখেছিলাম।
–হুম। সেইটেই তো বলছি। তারপর…
–তারপর? তার পর…তার বছর তিনেক পর শ্রেয়া চলে গেল।
একথা বলতেই চোখে জল এল বাইরের ঋজুর।
ভেতরের ঋজু স্বাভাবিক। শক্ত। বললে,সকলকেই তো একদিন চলে যেতে হয়। কেউ আগে যায়,কেউ বা পিছে। ও চলে গেছে বলে আর রং খেলবে না এটা কোনো কাজের কথা নয়। জীবন রঙিন ,কারও জন্য কিছু থেমে থাকে না।
বাইরের ঋজু যেন তাকিয়ে থাকে উদাস। ভোর হল। বাইরে সকাল নেমেছে। পাখি ডাকছে।
ভেতরের ঋজু আবার বললে, এভাবে আর কতদিন চলবে? টেবিলে এসব কী…
হা হা করে হেসে উঠলো বাইরের ঋজু ।বললে ,জীবন–যা বাঁচিয়ে রেখেছে আমায়।
এই যে দেখছ কাচের অ্যাসট্রে ,এটা কার দেওয়া জানো?
–জানি। শ্রেয়ার দেওয়া তোমাকে শেষ উপহার।
আবার হেসে উঠল বাইরের ঋজু। ঘর কেঁপে উঠল সেই হাসির গমকে। হয়ত আয়নাটাও। তারপর হাতের চিরুনিটা ছুঁড়ে মারল ভিতরের ঋজুর দিকে। সে তবু ঠায় দাঁড়িয়ে থাকল নির্লজ্জের মত আয়নার ভিতরে।

 

 

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত