| 1 সেপ্টেম্বর 2024
Categories
গদ্য সাহিত্য

গদ্য: একটা পোর্টেবল ল্যাপটপের গল্প  । সৌরভ  দত্ত

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট

বিলিরুবিন ভরা সেন্ট্রিমেন্টাল প্যারাগ্রাফ–বজ্রাহত শোরের খোঁয়াড় থেকে ফুসলিয়ে আনা কবিদের–অথবা কবির মুখোশ–stylo joyes–কাফকান এম্প্রোভাইজ থিঙ্ক্যার্স–কৌশিক সরকারের মিনিয়েচার ল্যাঙ্গুয়েজ–সপ্তসর্গে দেরিদার সাথে শুয়ে এসেছে বহুবার–লেজ গুটিয়ে থাকা মেনিমুখো বিকেলের–গুগল ডকস –না ওয়ার্ড ফাইল –না কালার নোট –না হ্যাজাড নটিফিকেশন–আমি তো একটা পোর্টেবল ল্যাপটপমাত্র– তুমি যেভাবে খুশি আমাকে পড়তে পার–আমার ভালোবাসার অন্তিমশ্বাস পর্যন্ত  আয়ু– অক্ষরলতার মতো জড়িয়ে ধরবে তোমাকে–তারপর একটার পর একটা পেজ ব্রাউজ করতে করতে–গোধূলির কোলে মাথা রেখে হারিয়ে যাবে প্রগলভ সূর্য–আমার আণ্ডারগ্রাউন্ড সিগনিফিকেন্টগুলো…হারিয়ে যাবে গোপন চুম্বন স্তর–সিনেম্যাটিক জানালা–হয়ত আমাকে পেন ড্রাইভে পুরে তুমি দিয়ে দেবে কোনো প্রেসের মালিককে–ক্রমশ এইসব দ্ব্যর্থক প্রশ্নচিহ্নগুলি–ফুটে ওঠে ল্যাপটপের কোণে–তোমার স্পর্শতার নড়বড়ে হাত–লিঙ্গের এদিক থেকে ওদিক ঘুরছে–ভীষণ অস্থির করছে আমাকে–সন্ধে নেমে আসে–ডানা ছিঁড়ে উড়ে যায় শালিখ–তোমার উবুচুবু চুল–যেন এইমাত্র গাড়ি চাপা দিয়ে গেল আমাকে–সিঁড়ি দিয়ে নেমে এসে দেখি–অন্ধকারের মধ্যে শুয়ে আছে সন্তানের ছায়া–ভালোবাসার আশ্লেষ কি গভীর !মনোরম–গিলে খায় ধাতব শরীর–পৃথিবীটা কত দূরে রাখা কলোসিয়াম–খামোশ সব নক্ষত্রেরা–জরায়ুর ব্যথা নিয়ে কাতরাচ্ছে–পুরো ক্যানথারিসের শিশি উল্টে দিয়েও সেরে ওঠেনি মায়াবী আলোপথ–কিছু মুহূর্ত জীবনে বড্ড মেকি হয়–সবটাই দেখনদারি–সবটাই তামাশা–দৃষ্টিপ্রদীপ খুলে রেখে চলে গ্যাছো তুমি–বিভাজিকাহীন নদীর মতো –ধূ-ধূ চরে গোপন আঁচড়ের দাগ–কিছু জলজ ঝিনুক–ভ্রান্তিঘর–বিদ্রুপের সংসার–একটা সপাটে থাপ্পড় কষিয়ে দিচ্ছে চোয়ালে–তুমি যেন রাতের ফানুস–আরোরা–চিলেকোঠা জুড়ে থাকা পেঁচাদের ডাক–অদ্ভুত বিয়োগবিহার–মেঘের ডানা পরে উড়ে যাও জোনাকির গাছে–গ্রাম-সড়ক টপকে আড়ষ্ঠ বিচ্ছেদের গান–বাজে –বেজে ওঠে–জ্বলে ওঠে–চোখে– চোখ রাখে পুরু শ্যাওলার আচ্ছাদন–আমি খুঁজি মাউসের ক্লিক–হ্যাক্ পাসওয়ার্ড –জেসিকা–মালকোভা–দোদুল্যমান স্যাডসিন–মেয়েটি সারারাত পড়েছিল ওরহান পামুক–মশারির ভিতর–সংগমের পর–সংগমের আগে–উকুন বেচেছি অনেক–গোলাপি দুধের আনলায় জামা হয়ে ঝুলেছি অনেক– অনেকবার–গুস্তাফি মাফ করো হুজুর –চিঠিগুলো ভিজে গেছে–যতদিন–ততদিন–চেয়েছি তোমায়–নির্জন–ভার্জিন– লন্ঠনের কাঁচে–তাকিয়ে থেকেছি হাড়জিরজিরে নারকেল বাগানের দিকে–সেইসব মাথুরের রাগ–ঐশ্বরিক মৈথুনপয়ার–আঁকাবাঁকা ঝরণার জল হয়ে–ভোরের আলেয়া হয়ে নেমেছিল–প্রেম তো সিগারেটের টান–পোড়া ফিল্টারে টান দিয়েই যাচ্ছি –টান দিয়েছি যাচ্ছি–সুন্দরী জ্যোৎস্নায়–আর্গাজমের কাতরতা–টেলিগ্রাম অ্যাপসে–পাঠিয়ে দিচ্ছি বন্ধুকে–বোকা মানুষ –ফাঁকা মানুষও নিজস্ব প্যাটার্নে স্বপ্ন দেখে–স্বপ্ন একটা ট্রামের মতো ধীর লয়ে চলনশীল –জীবনানন্দের রক্তমাংস ছিঁড়ে ছিঁড়ে ঘষটাতে ঘষটাতে চলে যায় বহুদূর–মৃত্যুর মহড়া এঁকে–সারভাইভ করে

 

জীবনকে–ক্রোম্যাটোফোরের অধস্থিত হাইড্রেগারিয়ান সিম্বোলিক–এ জীবন তুমি কোথাও পাওনি–এ জীবন মি টু- র ভয়ার্ত কন্ঠস্বর–চেতনার বিপন্ন স্যানেটোরিয়াম–উড়োপোকাদের সাথে বেশি বেশি রাত জেগে থাকা–হাস্যকর রাত–লিখিয়ে নিচ্ছে হতকুচ্ছিত লেখা–পায়খানার ময়লা সাদা প্যান–মারমোসেট বাঁদরের মতো দাঁত কিড়মিড় করছে–আমি তোমার পোর্টেবল ল্যাপটপ–হয়ত তুমি আমার–হেঁচকি ওঠা নগ্নভাষা–যৌনতার খুব কাছাকাছি আভরণহীন চিত হয়ে শুয়ে থাকা–আত্মহননের দড়ি–রুটিতে চোবানো বিফ ভুনা–সংকেতধ্বনির দিকে–লক্ষ্য প্রতিশ্রুতির প্রান্তে– আমার হেজে যাওয়া ‘কালি ও কলম’–দোয়াতের মধ্যে গাঢ় তন্দ্রায় ডুবে থাকা–প্রেগন্যান্ট নীলাভ দেহ–ঠিকঠাক কমিউনিকেট করছে না–একটা এগজাজারেশন–আমি আম্ফানের বাতিল ল্যাম্পপোস্ট–যেখানে ঠ্যাং তুলে রোজ মুতে যায় ঘেয়ো কুকুর–ভূতের বেগার খাটিয়ে নেয়–শঠ মুশেয়ারাগুলো–আশ্চর্য বারুদহাওয়া–আমার পিছনে কি ঘটছে দেখতে পাই না আমি–360 সেই ডিগ্রি ডিভিলিয়ার্স শটস–শুধু পোড়া ঘ্রাণ ভেসে আসে–ভেসে আসে লাজরক্ত,মৃতমাছের পচনশরীর–লেখাও কখনো ক্যান্সারের মতো পচে যায়–তখন বাদ দিতে হয় একটা ঠ্যাং–দাহ্য ইন্দ্রিয়–এক ঠ্যাং এ–ক্র্যাচ নিয়ে তুমিই একাই হাঁটবে মাইলের পর মাইল–সে যাত্রায় কেউ নেই–না মা–না বাবা-না প্রেম-প্রীতি-ভালবাসা–সম্পর্ক–হেরে যাওয়া পরম বিজয় একজন লেখকের কাছে–তার বিশ্বাস–তার পদক্ষেপের কাছে–আসলে প্রতিটি হারই নতুন সন্দর্শন তৈরি করে–কারণ নির্দিষ্ট সময়ের পর এই সেপটিমাইটিস থেকে শিকড় মেলে –ক্যান্সারটা পচিয়ে দেয় সদ্য জন্মানো লেখাজোখাগুলো–তাই তৎক্ষণাৎ তাকে বাদ দিয়ে দেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ–হাঁটতে হাঁটতে পিছনে হাঁটবে ঘন ছায়ানীড়–তুমি ঢুকে যাবে,আমি ঢুকে যাব তার গর্তে–হাঁটতেই থাকব–আত্মসংঘাতের সাথে–ধোঁয়াটে যৌন আস্ফালনগুলো–সিফিলিস,গণরিয়া হয়ে থেকে যাবে সেখানে–রোম কূপে জমবে হলুদ সিমনের মতো চটচটে–কবিতার ডায়াগ্রাম–এইসব ভাবতে ভাবতে–তুমি ঘরে ঢুকে ভেঙচি কেটে চলে গেলে–কাঁচা কাঁচা রক্ত–ল্যাপটপের স্ক্রিনে আছড়ে পড়ছে–আবছা তোমার মুখ–যা বিশ্বাস করি তাই

 

লিখি–নষ্টগদ্য,ভ্রষ্টলিল্প–মেটামরফোসিস–তুমি আধখানা চাঁদের মতো খেয়ে নিচ্ছ আমার খুচরো দিনরাত–বেলিড্যান্সে রীতিমতো হ্যালুসিনেট করছো–তোমার জিভ,স্তন,গুম্ফাযোনি–সব তো চলমান পঙক্তি–ধাতু নির্যাসে ডোবানো সেইসব ফ্রন্টলাইন–ওয়েবম্যাগের ডোমেইন কিনে–তরুণ কবি স্বপ্ন সাজাচ্ছে দু-হাতে–ঠাণ্ডা হিমেল হাওয়া–কেউ পোড়োবাড়ির খড়খড়ির কাঁচ খুলে–আমাদের দেখছে–আলট্রা ইমাজিনেটিভ ওয়ারের মুখোমুখি আমরা প্রত্যেকেই–তুমি আমি ক্যাসিনোয় হারা পার্টি–জীবনানন্দ,মানিক,কমলকুমার–মৃত্যুচেতনা যেখানে শ্লাঘাতীত প্যারাডক্স হয়ে ওঠে–ক্রল করলেই বেরিয়ে আসছে কবিদের ফসিল –গ্রাণ্ডমস্তি–জবরদস্তি–ভাঙা মদের গ্লাস–হুল্লোড়বাজি–ছেঁড়া ছেঁড়া ক্যাম্পফায়ারের অগ্নিশিখা–পরস্ত্রীকে ভোগ করা–বেশ্যাবাড়ির নিশুত চাঁদ কবুতর সেজে–কবিতা পড়ছে,কবিতা মরছে–কবিতা ঝরছে–রেসকোর্সের মাঠে কুয়াশার মতো–তুমি দুঃসাহসিক ভাবে চেয়ে আছো আমার দিকে–ল্যাপটপের স্ক্রিনে ফেটে চুরমার হয়ে যাচ্ছে–আমার টু লাইনস– ‘নাইটফলস’ কবিতা।

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত