গত পর্বের পরে…
৯
খবরের কাগজে ছোট করে দেওয়া ছিল খবরটা।
আন্তর্জাতিক খবরের পাতায়।
ইন্টারপোল অব্ধি হই চই চলছে কিন্তু কোন অপরাধী ধরা পড়েনি, বা চুরি যাওয়া ঐতিহাসিক বহুমূল্য নিদর্শনটির
ও কোন হদিস এখনো পর্যন্ত কোন সংস্থা দিতে পারেনি। তবে দেশি-বিদেশি সব গোয়েন্দা পুলিশ কাস্টমস
তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখছে। সক্রিয় তদন্ত চলছে।
ভাল করে খবরটা পড়ে চশমাটা সেন্টার টেবিলে খুলে রাখল পারমিতা। এই ওর একটা বদ অভ্যেস। থেকে থেকে
চশমা খুলে রাখা। বকে বকে কর্তা আর দুই ছেলে ক্লান্ত।
বললেই বলে, গরম লাগছিল ত। বা; বরং চোখে চশমা থাকলেই ঝাপসা লাগে, হ্যাঁ, সত্যি।
ছেলেরা মাথা নাড়তে থাকে, মম, চশমার কাঁচে নোংরা হাতের ছাপ, মোছ না কেন, উফ?
খুব কিন্তু কিন্তু মুখ করে পারমিতা পড়ে নেয় চশমাটা, কিন্তু একটু পরেই কোথাও খুলে রেখে দেয় ফের।
তার ফলে খানিক বাদেই ; এইরে চশমা কোথায় গেল বলে তোলপাড় হতে থাকে সারা বাড়ি।
বাড়ির বাকি তিন সদস্যেরই ছোটবেলা থেকে চশমা পড়ার অভ্যেস। তাই চশমা চোখেই থাকে। তারা ভেবে পায়না
চল্লিশের পর চশমা পড়তে বাধ্য হওয়াটা কারো এত অস্বস্তিকর মনে হয় কেন।
পারমিতা চশমা খুলে লম্বা নিশ্বাস নিয়ে পুনমের দিকে তাকায়।
” পুনম, কি করতে চাইছিস। আমরা পুলিশ নই। দেশে বিদেশে ঘরবাড়ি ফেলে দৌড়ে বেড়াতে পারব না,
ক্রিমিনালদের সংগে লড়তেও যেতে পারব না। তবে ? ”
” উও হ্যয় না, তেরে অফিসার ভাইয়া, লিগাল সেল কা ? আরে তোর মাসিতুতো ভাই, অক্ষর বাবু। পুছ না উসে।
ক্যা জানতে হ্যয় ইস কি বারে মে। পুছ তে কোই দোষ ত নেই না ? ”
হেসে ফেলে পারমিতা।
” না বাবু, তোমার পুছখানা বড্ড বেশি নাচাচ্ছ, এইটাই তোমার দোষ —”
” ক্যা? ”
” ক্যা নয় পুনম রানি, আমার মুন্ডু। জানিস দা গ্রেট টেগোর তোর সম্বন্ধে কি বলেছেন?
.. সকল তর্ক হেলায় তুচ্ছ করে
পুচ্ছটি তোর উচ্চে তুলে নাচা….. ”
পুনম ভুরু কুঁচকে ফেলে এবার, ” পুচ্ছ ইয়ানি টেইল ? না না আই ওয়াজ আস্কিং…. ”
পারমিতা হাসতে হাসতে লাল করে ফেলে মুখ।
” হ্যাঁ হ্যাঁ বাবা, বুঝেছি। ইয়ানি তুমি বলিতে চাও পঞ্জাব নন্দিন। ”
১০
শেষমেশ ফোন করেই ফেলেছিল পারমিতা।
মাসতুতো ভাই অক্ষর গুপ্ত, দু মিনিট চুপ করে থেকে ফোনের ওপার থেকে ফিরে জিজ্ঞেস করে,
” মিতুদিদি তুই এ খবর নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছিস কেন রে? “
তারপর হোয়াটসঅ্যাপে কিছু ছবি পাঠিয়ে বলে. “ এখুনি দেখেই ডিলিট করে দে।
না দাঁড়া আমিই করে দিচ্ছি সব দিক থেকে। ”
পারমিতা যে চুপচাপ সংগে সংগে স্ক্রিনশট নিয়ে নিয়েছে সে বিষয়ে আর উচ্চবাচ্য করে না।
ক্রমশ…
আইনগত পরিচয়, সোনালি মুখোপাধ্যায় ভট্টাচার্য । পেশায় চিকিৎসক। সপ্তর্ষি প্রকাশন থেকে,”প”, “৫০শে প্রেম” ও “স্টেথোস্কোপ এর পান্ডুলিপি ১ ও ২, ভাষা নগর পুরস্কারে সম্মানিত ২০১৬য়। কাগজের ঠোঙা প্রকাশনের ২০১৭, কবিতার বই ঃ পরমেশ্বরী। ২০১৮ য় ছোটদের গল্পের বই ” রঙ পেন্সিল ও রহস্যের গল্প ” । অণুগল্পের জনপ্রিয় বই ঃ সোনালিনামা ২০১৯ প্রকাশিত রহস্য উপন্যাস, হাভেলি আর ল্যাপটপের গল্প আর গল্পের বই ঃ নানান রকম প্রেমের গল্প । ২০২১এ উপন্যাস : মাধব রাইয়ের গুপ্তধন। ২০২২,গোয়েন্দা গল্প, পুনপুন চরিত। ২০২৩, অলৌকিক গল্পের বইরা: হঠাৎ যদি, এবং আলোর গল্প ও অন্ধকারের গল্প ।
২০২৪ : বই : টেক্কা দোক্কা তেক্কা রহস্য, ৬ প্রেমে ছক্কা।
এছাড়া বিভিন্ন আন্তর্জাল ও মুদ্রিত পত্রিকায় ও প্রকাশিত হচ্ছে সোনালির লেখারা।