মিষ্টির ইতিহাস
জ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়
ভূপেন বসু অ্যাভিনিউ দিয়ে রাজবল্লভপাড়ার গা-ঘেঁষে অলিগলি দিয়ে একটু গেলেই বাগবাজারের গঙ্গার পাড় ধরে দু-পা হাঁটলেই ভোলা ময়রার স্মৃতি মনে পড়ে যাবে। ভোলা ময়রা এখন অতীত কিন্তু তাঁর ভিয়েনে তৈরি মিষ্টি কিন্তু অতীত নয়। অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির সঙ্গে ভোলা ময়রার কবির লড়াই তো ফিকে হয়ে যায়নি। সেই যে ‘আমি সেই ভোলানাথ নই রে সেই ভোলানাথ নই/ আমি ময়রা ভোলা হরির চ্যালা/ বাগবাজারে রই’। বহুদিন পর বউবাজার দিয়ে সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউতে পড়ার মুখে অ্যান্টনি ফিরিঙ্গির কালীবাড়ি দেখে বাংলার মিষ্টির কথা মনে পড়ে গেল।
বাঙালির জীবনে মিষ্টিমুখ ছাড়া কোনও শুভকাজ হয় না। নতুন বছরেতো নয়ই। বাংলার সেই মিষ্টির আজ জগৎ জোড়া নাম। এমনকী বিদেশিরাও বাংলায় এলে মিষ্টিমুখ না করে যান না। বাংলার বুকে যেদিকেই যাওয়া যাক না কেন, মিষ্টির দোকানের দেখা পাওয়া যাবেই যাবে। এবার সেই সব মানুষদের সঙ্গে আপনাদের পরিচয় করিয়ে দিই—
![](https://i0.wp.com/banglarmamatimanush.com/wp-content/uploads/2020/04/makhanlal_das_and_sons.jpg?ssl=1)
মাখনলাল দাশ অ্যান্ড সন্স
সেটা ১৮৩০-এর কথা। বর্ধমানের খণ্ডঘোষের দুবরাজ গ্রাম থেকে পাথুরিয়াঘাটার হাটে মিষ্টি বিক্রি করতে আসতেন রামচন্দ্র দাস। সাবেক চিৎপুর রোডের উপরে এখন যেখানে ‘নতুন বাজার’, সেই অঞ্চলেই সোমবার আর বৃহস্পতিবারে হাট বসতো। দু-দিন হাটতলার কুঁড়েতে আর সপ্তাহের অন্য দিন উত্তর কলকাতারই আনাচে-কানাচে ঘুরে ঘুরে মিষ্টি বিক্রি করতেন রামচন্দ্র। পুত্র মাধবচন্দ্র বাবার সাথেই মিষ্টি বেচতেন ওই হাটে। তিনি ছিলেন স্বল্পায়ু। অবস্থার পরিবর্তন হলো মাধবচন্দ্রের ছেলে মাখনলালের সময় থেকে। শৈশবে বাবাকে হারিয়ে দাদুর কাছেই মিষ্টি তৈরির শিক্ষা। এখন দোকানের অন্যতম মালিক স্বপন দাস। তখন তৈরি হতো নবাত, বাতাসা, কদমা, তিলুয়া, মণ্ডা জাতীয় মিষ্টি আর ঘিয়ে ভাজা পান্তুয়া জাতীয় মিষ্টি। কাছাকাছি সময়ের মধ্যেই কলকাতার বাজারে এসে গিয়েছেন নবীনচন্দ্র দাস, দ্বারিকচন্দ্র ঘোষ, ভীমচন্দ্র নাগ, গিরিশচন্দ্র দে-র মতো ময়রা-মোদকেরা। এঁরা শুধু মিষ্টির কারিগর বা বিক্রেতা ছিলেন না, ছিলেন মিষ্টান্ন গবেষক। জমিদার আর বেনিয়ান শ্রেণির কল্যাণে কলকাতা তখন ভাসছে ‘বাবু কালচার’-এর জোয়ারে। নব্য বাবুদের রসনার পরিতৃপ্তি ঘটাতে ময়রার পাকশালাতেও চলছে হরেক গবেষণা। ফলে মাখনলাল মণ্ডা জাতীয় মিষ্টির পাশাপাশি সন্দেশ তৈরিতেও মন দিলেন। পাশাপাশি ‘ব্র্যান্ডিং’-এর শর্ত মেনে নিজের নামানুসারে দোকানের নামকরণ করলেন ‘মাখনলাল দাস’। মাখনলালের দোকানে এখন পাওয়া যায় কড়া ও নরম পাকের ‘জলভরা’, ‘মনোহরা’, ‘দেলখোস’ ‘চকোলেট তালশাঁস’, ‘পেস্তা সন্দেশ’। প্রপৌত্র স্বপন দাস বলেন, ‘দাদু-বাবাদের কাছে শুনেছি, মাখনলাল মিষ্টির গুণমানের উপরে খুব জোর দিতেন। আমরাও সেটাকে গুরুত্ব দিই। মানিকতলা, বাগবাজার, বিধাননগরে আমাদের সেল্স কাউন্টার থাকলেও সমস্ত মিষ্টি তৈরি হয় এখানে, আমাদের সামনে।’
![](https://i2.wp.com/banglarmamatimanush.com/wp-content/uploads/2020/04/nabin_chandra_das.jpg?ssl=1)
বাগবাজারের নবীন দাস/রসগোল্লার কলম্বাস
বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের কার্যবিরণী ১৩১৩ (পৃ ১১১)-তে দেখা যায় ‘রসগোল্লার প্রত্নতত্ত্ব বলিয়া রাখি। উহার বয়স ৫০/৬০ বছরের অধিক নহে। কৃত্তিবাসের জন্মস্থান ফুলিয়া গ্রামে রসগোল্লার আসল জন্মভূমি। ওই গ্রামের হারাধন ময়রা রানাঘাটের লাল চৌধুরী মহাশয়ের মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক ছিল। একদিন তাহার শিশুকন্যা কাঁদিতেছিল। তাহাকে সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য উনোনের উপর তৈরি রসে ছেনা ফেলিয়া দেখিল উৎকৃষ্ট এক সামগ্রী তৈয়ার হইয়াছে। পাল চৌধুরী জমিদারেরা উহার নামকরণ করেন রসগোল্লা।’ ঘটনাটি ১৮৪৬-৪৭-এর। সিপাহি বিদ্রোহের তখনও দশ বছর দেরি আছে। কিন্তু এ কাহিনি এখানেই শেষ নয়। অর্থাৎ পরের কাহিনি মধ্য কলকাতার বেনেটোলার সীতারাম ঘোষ স্ট্রিটের দীনু ময়রার পূর্বপুরুষ ব্রজ ময়রা হাইকোর্টের কাছাকাছি দোকানে ১৮৬৬ খ্রিস্টাব্দে প্রথম রসগোল্লা আবিষ্কার করেন। এখন প্রশ্ন, রসগোল্লা সবচেয়ে প্রাচীন? নবীন দাস শ্রষ্টা, হারাধন নাকি ব্রজ ময়রা। ও তর্ক হাজার বছরেও শেষ হবার নয়। এই রসগোল্লার আস্বাদন চাটতে চাটতে এই বিতর্কে আপনারাও যোগ দিতে পারেন। তার আগে আমার জানা রসগোল্লা কীর্তন শোনা যাক। রসগোল্লার লোভে/পাঁচ কড়ি মিত্তির/দিল ঠোঙা শেষ করে/ বড় ভাই পৃথ্বীর।/সইলো না কিছুতেই,/ যকৃতের নিচুতেই/ যন্ত্র বিগড়ে গিয়ে/ব্যামো হল চিত্তির।/ ঠোঙ্গাটিকে বলে, ‘পাঁজি/ ময়রার কারসাজি।’/দাদার উপর রাগে/দাদা বলে, ‘চিত্তির। পটে যে স্মরণসভা/ আপনারি কীর্তির।’—স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ রসগোল্লা নিয়ে খাপ ছাড়াতে লিখে গেছেন একটি পঙ্ক্তি। তার মানে রসগোল্লাতে কবিগুরুও মজেছিলেন দেখা যাচ্ছে।
নবীনচন্দ্র দাসের পূর্বপুরুষরা ছিলেন চিনির ব্যবসায়ী। সে সময়ে আগে রস বড়ো মাটির পাত্রে জ্বাল দিয়ে গুড় তৈরি করা হতো। গুড় থেকে উত্পাদন হতো চিনি, তবে সেই পদ্ধতিটা ছিল আদিম। গুড়কে ‘পাতা’ নামের এক প্রকার শ্যাওলা দিয়ে ঢেকে দেয়া হতো। গুড় বা ঝোলাগুড়ে যেসব লাল বা বাদামি নোংরা থাকত, সেগুলো সরে গিয়ে একসময় বেরিয়ে আসত চিনি। শুদ্ধিকরণের এই পদ্ধতিটি প্রাচীন হলেও চিনির স্বাদ নাকি বর্তমানের চেয়ে অনেক ভালো ছিল। নবীনচন্দ্রের পূর্বপুরুষরা বাংলার চিনির বাজারের একটা বড়ো অংশ নিয়ন্ত্রণ করতেন। ১৮৪৬ সালে নবীনের জন্ম হওয়ার সময় তাঁর পারিবারিক ব্যবসায়ের রমরমা অনেকটাই স্তিমিত। নবীনচন্দ্র জন্মের তিন মাসের মধ্যে পিতাকে হারান। অধিক দুরবস্থার কারণে লেখাপড়া না হওয়ায় তিনি ১৮৬৪ সালে জোড়াসাঁকোতে একটা মিষ্টির দোকান খুললেন। কিন্তু সেই দোকান তেমন চলল না। দু-বছর পর বাগবাজারে একটি পোড়োবাড়িতে নতুন দোকান খুললেন। জিলাপি আর পাঁচমিশলি মিষ্টি বানাতে বানাতে ক্লান্ত নবীনচন্দ্র চাইছিলেন, ছানা দিয়ে এমন একটি রসসিক্ত মিষ্টি বের করবেন, যা সবাইকে চমকে দেবে। একদিন দুপুরে কাজ শেষ; কাজ করতে করতে খেয়ালের বশে ছানার গোল্লাকে চিনির রসে ফেলে ভেজে তুললেন। এভাবেই খেয়ালের বশেই পেয়ে গেলেন রসগোল্লার রেসিপি। কিন্তু তার এই নতুন মিষ্টি জনপ্রিয় হবে কিনা, তা নিয়ে তিনি খুব নিশ্চিন্ত ছিলেন না। তাই অন্য মিষ্টির সঙ্গে এটি বিক্রি করতেন না। নবীনচন্দ্রের ম্যানেজমেন্ট বা মার্কেট সার্ভে সম্পর্কে কোনও ধারণা না থাকলেও সহজাত ব্যবসায়িক বুদ্ধির বলে বুঝতে পেরেছিলেন যে, এই নতুন মিষ্টির বাজার প্রতিক্রিয়া জানা জরুরি। তাই আত্মীয়-বন্ধু ও চেনা-জানাদের দিতেন তাঁদের প্রতিক্রিয়া জানতে। একদিন সকালে নবীনচন্দ্রের বাগবাজারের দোকানের সামনে হাজির হলো ঘোড়ায় টানা জুড়িগাড়ি। গাড়িতে ছিলেন ধনী ব্যবসায়ী ভগবান দাস বাগলা। ভগবান দাসের এক ছেলের খুব জলতেষ্টা পেয়েছিল। নবীনচন্দ্র এগিয়ে এসে তাকে জল দিলেন এবং সঙ্গে একটি রসগোল্লা। ছেলেটি এই নতুন ধরনের মিষ্টি দেখে একটু থমকালেও খেয়ে একেবারে আহ্লাদিত। ছুটে গিয়ে বাবাকে বলল খেয়ে দেখতে। ভগবান দাসও খেয়ে বাক্যহারা। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়স্বজনের জন্য ভগবান দাস কয়েক হাঁড়ি রসগোল্লা কিনে নিলেন। এবং কার্যত ওই দিন থেকেই শুরু হলো রসগোল্লার সাম্রাজ্যবিস্তার।
এই নবীনদাসই কমলকুমার মজুমদারের ছড়ায় স্থান পেয়েছেন এমনিভাবে, ‘বাগবাজারের নবীনচন্দ্র দাস/রসগোল্লার কলম্বাস।’
কে সি দাস—নবীনচন্দ্র দাসের নাতি। নবীনচন্দ্র যে ‘রসগোল্লা’ তৈরি করে তাক লাগিয়েছিলেন, সেই ক্যারিশমাকে বহন করে নিয়ে যাওয়ার যোগ্য উত্তরাধিকার ছিলেন কে সি দাস। তাঁর নামেই তৈরি করেছিলেন মিষ্টির দোকান। যা বাংলার রসগোল্লাকে ‘কে সি দাস’ ব্র্যান্ডে পরিণত করেছে। তবে রসগোল্লার সঙ্গে সঙ্গে কে সি দাসের ‘ছানার পায়েস’ এবং ‘অমৃত কলস’-ও একবার চেখে দেখা যেতে পারে।
![](https://i2.wp.com/banglarmamatimanush.com/wp-content/uploads/2020/04/bhim_chandra_nag.jpg?ssl=1)
ভীম নাগ এক টুকরো ইতিহাস
জুড়িগাড়িটা দোকানের সামনে থমকে দাঁড়াতে দোকানের সবাই বেশ তটস্থ হয়ে উঠলেন। গাড়ি থেকে নেমে এলেন এক সাহেব। সাহেব মিষ্টি খেতে চাইছেন। সকলের মধ্যে ব্যস্ততা। মিষ্টি খেয়ে সাহেব খুশি। এদিক-ওদিক তাকিয়ে বললেন, তোমার দোকানের মিষ্টি এত ভালো কই সময় দেখার জন্য একটা ঘড়ি রাখোনি কেন? ভীম নাগ অপ্রস্তুত হয়ে বললেন, কেনা হয়নি সাহেব। সাহেব বললেন, না সে হয় না, তুমি আমাদের আফিসে কালকে একজনকে পাঠাবে, তোমাকে একটা ঘড়ি দিয়ে দেবো। আফিসের নাম শুনে ভীম নাগের চক্ষু চড়কগাছ, সাহেব বলে কি, উনি কুক এন্ড কেলভির মালিক। আমকা আমতা করে ভীম নাগ বললেন, সাহেব তোমাদের ঘড়িতে ইংরাজিতে লেখা থাকবে, আমার কর্মচারীরা কেউ ইংরাজি পড়তে পারে না। সাহেব বললেন, ঠিক আছে তোমার জন্য বাংলাতেই লিখে দেওয়া হবে। কিন্তু ভীম নাগের মিষ্টির এমনই মাহাত্ম্য, খাস লন্ডন শহর থেকে বাংলা হরফে লেখা ডায়াল তৈরি হয়ে এসেছিল। সে ঘড়ি এখনও বউবাজারের দোকানের দেওয়ালে শোভা বর্ধন করছে এবং দিব্যি সময় দিচ্ছে। ঘড়ির মাঝখানে কুক অ্যান্ড কেলভি-র নামটাও বাংলাতেই লেখা, নীচে লেখা লন্ডন। সাহেবি পেইন্টারের আড়ষ্ট হাতে লেখা বাংলা, কিন্তু আসলে এক টুকরো ইতিহাস।
কলকাতার মিষ্টির মানচিত্র আঁকতে গেলে উত্তর কলকাতার পাল্লা অবশ্যই ভারী হয়ে উঠবে। প্রথমেই যে নামটি মনে আসে, সেটি হলো ভীম চন্দ্র নাগ। কলকাতার ভৌগোলিক পরিচয়ে গঙ্গা নদী যতটা উল্লেখযোগ্য, রসনার পরিচয়ে সেই রকমই ভীম নাগের সন্দেশ ততটাই উল্লেখযোগ্য।
কড়া পাকের সন্দেশের মহারাজ ভীম নাগের সন্দেশ তাঁদের ঐতিহ্য আজও বজায় রেখেছেন। সময়টা ১৮২৬ সাল। হুগলি জেলার জনাই নামের এক গ্রাম থেকে কলকাতার বড়বাজারে একটি ছোট্ট মিষ্টির দোকান খুললেন ময়রা প্রাণচন্দ্র নাগ। তার ছেলে ভীমচন্দ্র নাগ সন্দেশ শিল্পকে নিয়ে গেলেন এক অন্য উচ্চতায়। শোনা যায়, স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায় ভীম নাগের সন্দেশ না খেয়ে রাতে ঘুমোতে যেতেন না। রানি রাসমণির বাড়িতে যে কোনও উৎসবে ভীম নাগের কড়া পাকের সন্দেশ ছিল একটি আবশ্যিক মিষ্টি।
ভীম নাগের সন্দেশের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন জগদীশচন্দ্র বসু, মেঘনাদ সাহা, প্রফুল্লচন্দ্র রায়, ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের মতো ব্যক্তিত্ব। লেডি ক্যানিং তাঁর জন্মদিনে ভীম নাগকে আমন্ত্রণ জানান এমন কিছু মিষ্টি তৈরি করার জন্য। আবদার করেন, যার স্বাদ আগে কেউ কোনওদিন পায়নি। ভীম নাগ সম্মত হন। তারপর তিনি যে বিশেষ ধরনের মিষ্টিটি তৈরি করেছিলেন, তার স্বাদ লেডি ক্যানিংকে ভীষণভাবে মুগ্ধ করেছিল। এরপর আত্মতৃপ্ত লাটসাহেব ভীম নাগকে তুলে দেন দু-হাত ভরা উপহার। সেই থেকেই বাজারে এই বিশেষ ধরনের মিষ্টির নামকরণ লেডি ক্যানিংয়ের নামানুসারে হয় ‘লেডিকেনি’।
![](https://i0.wp.com/banglarmamatimanush.com/wp-content/uploads/2020/04/adhar_chandra_das.jpg?ssl=1)
অধর চন্দ্র দাশ অ্যান্ড সন্স
সরপুরিয়া আর সরভাজার আবিষ্কর্তা কে তা বলা মুশকিল। কৃষ্ণদাস কবিরাজ রচিত চৈতন্যচরিতামৃততে এর উল্লেখ আছে। অদ্বৈত আচার্য নিজেই চৈতন্যদেবকে সরপুরিয়া পাঠাতেন। অন্যদিকে প্রচলিত মতে সরপুরিয়ার সৃষ্টিকর্তা কৃষ্ণনগরের অধরচন্দ্র দাস। মতান্তরে সরপুরিয়ার সৃষ্টিকর্তা তাঁরই পিতা সূর্যকুমার দাস। কথিত আছে যে, তিনি রাতে দরজা বন্ধ করে ছানা, ক্ষীর ও সর দিয়ে তৈরি করতেন সরপুরিয়া ও তাঁর অপর আবিষ্কার সরভাজা। পরের দিন সকালে মাথায় করে নিয়ে ফেরি করতেন। যুবক অধরচন্দ্র তাঁর পিতার কাছে মিষ্টি তৈরি কৌশল শিখে নেন। ১৯০২ সালে নেদের পাড়ায় অর্থাৎ বর্তমান অনন্তহরি মিত্র রোডে প্রতিষ্ঠা করেন মিষ্টির দোকান। দোকানের নাম অধরচন্দ্র দাস। পরবর্তীতে অধরচন্দ্র দাশ অ্যান্ড সন্স। এঁদের সরপুরিয়া আর সরভাজার সুনাম এখন সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। শতাধিক বছরের প্রাচীন এই প্রতিষ্ঠানের মিষ্টির স্বাদ ও গুণগত মান ১১৫ বছর পরেও সমান রয়ে গেছে। এ ছাড়া ক্ষীরপুলি, নিখুতি, শ্রীমতী, রসকদম্ব, রোলক্রিম, কাঁচাগোল্লা, ছানার মুড়কি, ব্যানাক ডায়মন্ড মিষ্টির সঙ্গে মানুষের পরিচিতি ঘটেছে। মিষ্টি তৈরির সময় নজর রাখা হয় যেন কোনভাবেই গুণগত মানের খামতি না ঘটে। অধরচন্দ্র দাশের হাতে তৈরি সরপুরিয়া আর সরভাজা নিয়ে যাত্রা শুরু করলেও তাঁর প্রয়াণের পর জগবন্ধু দাশ সেই সুনাম ধরে রাখেন। পরবর্তীকালে তাঁর পুত্র গৌতম দাশ সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এবং ক্রেতাদের রুচি ও চাহিদার কথা শিরোধার্য করে একই মান বজায় রেখেছেন। একজন সফল ব্যবহারজীবী হয়েও বর্তমান কর্ণধার গৌতম দাশ যেভাবে প্রতিষ্ঠানের সুনাম বজায় রেখেছেন, তা-ও শিক্ষণীয়।
![](https://i2.wp.com/banglarmamatimanush.com/wp-content/uploads/2020/04/chittaranjan_sweets.jpg?ssl=1)
চিত্তরঞ্জন মিষ্টান্ন ভাণ্ডার
১৯০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত চিত্তরঞ্জন মিষ্টান্ন ভাণ্ডার ভাইফোঁটা উপলক্ষে প্রতি বছরই অসাধারণ মিষ্টি বানিয়ে চলেছে। উত্তর কলকাতায় শ্যামবাজার স্ট্রিটের এই প্রতিষ্ঠানের ছানার তৈরি হলুদ রঙের নরম স্পঞ্জের রসগোল্লার তুলনা ভূভারতে মেলা ভার। চিত্তরঞ্জনের শুধু রসগোল্লাই নয় এদের তৈরি মধুপর্কের স্বাদও অতুলনীয়। শতাব্দীপ্রাচীন এই মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের বর্তমান কর্ণধার নিতাইচন্দ্র ঘোষের তত্ত্বাবধানে রমরমিয়ে চলছে। চিত্তরঞ্জনের মালাই চমচম একবার যিনি খেয়েছেন, তিনি আর ভুলতে পারবেন না। এদের তৈরি সুগন্ধী হাল্কা মিষ্টির দই যখন হিমশীতল করে পরিবেশন করা হবে, তখন যে কোনও খাদ্যরসিক আর অন্য কোনও দিকে দৃষ্টি ফেরাতে পারবেন না। ছয় পুরুষ ধরে সুনামের সঙ্গে নানা ধরনের সুস্বাদু মিষ্টির অন্যতম প্রতিষ্ঠান চিত্তরঞ্জন মিষ্টান্ন ভাণ্ডার।
![](https://i2.wp.com/banglarmamatimanush.com/wp-content/uploads/2020/04/balaram_radharaman.jpeg?ssl=1)
রাধারমণ মল্লিক ও বলরাম মল্লিক
১৮৮৫ সাল থেকে মিষ্টির জগতে ভেলকি দেখিয়ে চলেছে বলরামের তৈরি মিষ্টি। এই প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা গণেশচন্দ্র মল্লিক কোন্নগর থেকে উত্তর কলকাতায় এসেছিলেন মিষ্টির দোকানের সামান্য একজন কারিগররূপে। পরবর্তী সময়ে ভবানীপুরে নিজের উদ্ভাবনী শক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে মিষ্টির জগতে নিত্যনতুন মিষ্টির প্রচলন করেন। এই দোকারের মিষ্টির গুণমুগ্ধ ছিলেন স্যার আশুতোষ মুখোপাধ্যায়। পরবর্তীকালে গণেশচন্দ্র মল্লিক নিজের ভাই বলরাম মল্লিক ও পুত্র রাধারমণ মল্লিকের হাতে দায়িত্বভার তুলে দেন। সেই থেকে ভবানীপুরে ভালো মিষ্টি বলতেই সবাই একবাক্যে বলরামের মিষ্টির কথাই বলেন। প্রতি বছর ভাইফোঁটার দিনগুলিতে উপচে পড়া ক্রেতাদের ভিড় তারই সাক্ষ্য বহন করে। ছানার মিষ্টি ছাড়াও ক্ষীরের মিষ্টি তৈরিতেও এদের খুব নামযশ। পাঁচ পুরুষ ধরে মানুষের মুখে ভালো মিষ্টি জুগিয়ে চলেছে এই প্রতিষ্ঠান।
![](https://i0.wp.com/banglarmamatimanush.com/wp-content/uploads/2020/04/nalin_chandra_das.jpg?ssl=1)
নলিনচন্দ্র দাশ অ্যান্ড সন্স
উত্তর কলকাতায় নতুন বাজারে ছানার তৈরি মিষ্টির বিশ্বস্ত প্রতিষ্ঠান নলিনচন্দ্র দাশ অ্যান্ড সন্স। এদের তৈরি কড়া পাক ও অন্যান্য স্বাদের সন্দেশের জুড়ি মেলা ভার। ১৭৫ বছর ধরে মিষ্টির ভুবনে ঐতিহ্যবাহী নলিনচন্দ্র দাশের মিষ্টি মানেই স্বাদে-গন্ধে ভরপুর চকলেট সন্দেশ, গোলাপ ক্রিম, কমলা ক্রিম, আইসক্রিম সন্দেশ, জলভরা তালশাঁস, চপ সন্দেশ, আবার খাবো, প্যাটিস, মনোহরা, কেক সন্দেশ, পেস্তা সন্দেশ, দিলখুশ আর আম, লিচু ও আনারসের স্বাদে ভরা সন্দেশ আর তেমন কোথাও পাবেন না। চার পুরুষ ধরে সন্দেশ দুনিয়া রকমারি স্বাদের প্রচলনের পাশাপাশি কেশর ছানার পায়েস, স্পেশাল চন্দ্রপুলি ও চন্দ্রাণী ক্ষীর এদের বিশেষত্ব। কলকাতার উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম যেখানেই যান না কেন, নলিন-এর মিষ্টির দোকান সেখানেই হাজির। আপনার রসনার তৃপ্তিই নলিনের মূলধন।
![](https://i1.wp.com/banglarmamatimanush.com/wp-content/uploads/2020/04/ganguram-sons.jpg?ssl=1)
গাঙ্গুরাম
গাঙ্গুরাম বারাণসীর এক প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে কলকাতায় এসেছিলেন জীবিকার সন্ধানে। রাজা কমলাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের মিষ্টির দোকানে সামান্য কয়েকটা টাকায় বিনিময়ে তিনি তাঁর রুজির লড়াই শুরু করেন। তখনকার দিনে কমলাপ্রসাদের এই দোকান থেকে বিভিন্ন রাজা ও জমিদারের বাড়িতে মিষ্টি সরবরাহ করা হতো। তাঁরা গাঙ্গুরামের হাতের মিষ্টি খেয়ে প্রশংসা করতেন। স্বাভাবিকভাবেই দোকানের মালিকও একটু একটু করে তাঁর মাইনে বাড়াতে থাকেন। গাঙ্গুরামও সেই টাকা সঞ্চয় করতে থাকেন। এরপর তিনি স্বাধীন ব্যবসার জন্য উদগ্রীব হয়ে ওঠেন। ১৮৮৫ সালে নিজের জমানো টাকায় মানিকতলা রোডে ছোটোখাটো একটি দোকান কিনে শুরু করেন তাঁর মিষ্টি সাম্রাজ্যের জয়যাত্রা।
শতবর্ষ অতিক্রম করেছে গাঙ্গুরাম চৌরাশিয়ার দোকান। গাঙ্গুরামের মূলত খ্যাতির শীর্ষে ওঠে ‘মিষ্টি দই’-র হাত ধরে। গাঙ্গুরাম পরিবারে একটি কথা চালু রয়েছে, ভিখারির ছদ্মবেশে এসে স্বয়ং ‘নারায়ণ’ নাকি একদিন গাঙ্গুরামের হাত থেকে এক ভাঁড় দই খান। এরপর তিনি পরম তৃপ্ত হয়ে তাঁকে আশীর্বাদও করেন। গাঙ্গুরামের মিষ্টি খেয়ে তৃপ্ত হয়েছিলেন ইংলণ্ডের রানি এলিজাবেথ, বুলগেরিয়ার রাষ্ট্রপতি, চু এন লাই-র মতো ব্যক্তিত্ব।
![](https://i1.wp.com/banglarmamatimanush.com/wp-content/uploads/2020/04/sen_mahasay.jpg?ssl=1)
সেন মহাশয়
আশুতোষ সেন। পোশাকি নাম সেন মহাশয়। বাংলার মিষ্টান্ন ব্যবসায় এক সুপ্রতিষ্ঠিত নাম। ১৮৯৭ সালে শখে ফরিয়াপুকুরের কাছে একটা মিষ্টির দোকান করেন। হাওড়া-হুগলি থেকে কয়েক জন কারিগর জোগাড় করে তৈরি করতে থাকেন বিভিন্ন মিষ্টি। তাঁর সেই শখের মিষ্টির দোকানই আজ মহীরূহ রূপ ধারণ করেছে। আজ তিনি মিষ্টি জগতের সম্রাট। নতুন নতুন সংযোজন ঘটালেন মিষ্টির দুনিয়াতে। তাঁর আবিষ্কৃত রাতাবি সন্দেশ মিষ্টির জগতে এখনও অদ্বিতীয় নাম। এ ছাড়া তার গোলাপি পেঁড়া, মালাই চপ, আবার খাবো ইত্যাদি মিষ্টিগুলিও বিশেষ আকর্ষণীয়। দেওঘরের কেশর সন্দেশ ও কেশর কদমও সেন মহাশয়ের দোকানে এসে নতুন আকার ও আকর্ষণীয় স্বাদ নিয়ে বাজার মাত করে ফেলে। সম্প্রতি নতুন সংযোজন পেশোয়ারি সন্দেশ ও কেক সন্দেশও যথেষ্ট নাম করেছে। সেন মহাশয়ের দোকানের ‘আবার খাবো’ মিষ্টি বেশ জনপ্রিয়। এর একটা ইতিহাস আছে। আবার খাবোর স্রষ্টা নবীনচন্দ্র দাস। কথিত আছে যে, একবার কাশিমবাজারের মহারানি স্বর্ণময়ী স্বাদবদলের জন্য নতুন ধরনের মিষ্টি খেতে চেয়েছিলেন। নবীনচন্দ্রের কাছে তার বরাত যায়। নবীনচন্দ্র নতুন এক প্রকারের মিষ্টি তৈরি করেন, যা খেয়ে মহারানি স্বর্ণময়ী বলেছিলেন, ‘আবার খাবো’। সেই থেকে মিষ্টিটা আবার খাবো নামে পরিচিত ও জনপ্রিয় হয়।
বর্ধমানের মিহিদানা ও সীতাভোগ
১৯০৪ সালের ৪ আগস্ট বর্ধমানের রাজা বিজয়চন্দ্রের প্রাসাদে পা রাখবেন তৎকালীর বড়লাট লর্ড কার্জন এবং লেডি কার্জন। তাঁকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য সাজো সাজো রব পড়ে গেল বর্ধমানে। তৈরি হলো তোরণ। নাম দেওয়া হলো কার্জন গেট। অতিথি অপ্যায়নের জন্য চাই একেবারে নতুন ধরনের মিষ্টি। যা খেয়ে লর্ড ও লেডি দুজনেই মোহিত হয়ে যান। ডাক পড়লো রাজদরবারের হালুইকর ভৈরব নাগের। ভৈরব নাগকে রাজা হুকুম করলেন, এমন মিষ্টি তৈরি করো যাতে তুষ্ট হন লর্ড এবং লেডি দুজনেই। ভৈরব নাগ বানালেন সীতাভোগ ও মিহিদানা। সুকুমার সেন অবশ্য বলে গেছেন বানানটি হওয়া উচিত সিতাভোগ, সিতা অর্থে সাদা। আবার সিতা-র মানে মিছরিও হয়, তাই সাদা রঙের মিছরির মতন যে মিষ্টি বর্ধমান রাজবাড়ির হালুইকররা বানালেন, তার নাম হয়ে গেল সিতাভোগ।
ভৈরব নাগের আদিবাড়ি ছিল খণ্ডঘোষের সাঙঘাটগোলা গ্রাম। নাগেরা ছিলেন রাজাদের খাস মিষ্টান্ন প্রস্তুতকারক। রাজাদের আমন্ত্রণে ভৈরবের দাদু শ্রীনাথ নাগ পরিবারের লোকদের নিয়ে সেখান থেকে বর্ধমানে চলে আসেন। শ্রীনাথের ছেলে ক্ষেত্রনাথ নাগ। বর্ধমানের রাজা মহতাব চন্দের আমলে এই ক্ষেত্রনাথ নাগ-ই সীতাভোগ আর মিহিদানা প্রস্তুতির আদিপর্ব সেরেছিলেন। কিন্তু তাঁর সীতাভোগ, মিহিদানা ছিল পান্তুয়া ও বোঁদের আকারে। ভৈরববাবু বানিয়েছিলেন এই দু-টির সূক্ষ্ম রূপ। আজ যে আকারে আমরা সীতাভোগ আর মিহিদানাকে দেখি, তা তাঁরই সৃষ্টি। বর্তমানে এই বিশেষ ধরনের মিষ্টি দুটির প্রধান জোগানদাতা দেশবন্ধু মিষ্টান্ন ভাণ্ডার।
কলকাতার বিখ্যাত মিষ্টি
লবঙ্গলতিকা
যে কোনও অনুষ্ঠান জমিয়ে দিতে পারে এই মিষ্টি। ময়দা, খোয়া, নারকেল, ঘি, কিশমিশ, কাজু, এলাচ, লবঙ্গ টপিং-এ এই মিষ্টি একেবারে লা-জবাব। সুন্দর করে পেস্ট্রির মতো করে মুড়ে এলাচ দিয়ে সিল করে চিনির রসে ডোবানো হয় একে। খেতে একেবারে ইয়াম!
ভাপা দই
এই বিশেষরকম দইটি ইয়োগার্ট এবং কনডেন্স মিল্ক দিয়ে বানানো হয়। ভাপা দই খেতে আরও ভালো লাগে কারণ এতে প্রচুর পেস্তা এবং আমন্ড দেওয়া থাকে। রেফ্রিজারেটরে একদম চিল্ড করে খেলে সবথেকে সেরা স্বাদ পাবেন।
মোহনভোগ
ট্র্যাডিশনাল মিষ্টি প্রেমীদের জন্য আদর্শ এটি। যে কোনও উৎসব অনুষ্ঠানে মুখে পুরতে পারেন মোহনভোগ। বিভিন্ন দোকানে বিভিন্ন আকারে মেলে এই মিষ্টি। খেতে জাস্ট ফাটাফাটি।
মালাই চমচম
অনেকটা স্যান্ডউইচের মতো দেখতে। বাদামি ক্ষীর চমচমের মধ্যের অংশে মালাইয়ের ফিলিং অসাধারণ টেস্ট আনে। এই মিষ্টি ঠান্ডা ঠান্ডা খেতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। কোনও অনুষ্ঠানই এই মিষ্টি ছাড়া সম্পূর্ণ নয়।
নলেন গুড়ের পায়েস
বাঙালির পায়েসের প্রতি প্রেম চিরকালের। মায়ের হাতের হোক বা বউয়ের হাতের। ভোজনরসিকরা সবাই খুব তরিজুত করে খান। তবে শীতকালে নলেন গুড়ের ফ্লেভার পড়লে যেন রোজকার পায়েস অন্য মাত্রা পায়। পাতে পিঁপড়া চলাফেরায় বেশি সময় লাগে না তা বলা বাহুল্য।
পান্তুয়া
বাদামি রঙা এই মিষ্টি বাঙালির ঐতিহ্য বহন করে। বিশেষ বাদামি রংটির জন্য একে ডিপ ফ্রাই করা হয়। শিরায় ডোবানো পান্তুয়া গরম গরম খেতে দারুণ লাগে।
পাটিসাপটা
পিঠে-পুলির পার্বণ তো ভীষণ ফেমাস কলকাতায়। ময়দা বা চালের গুঁড়োয় মোড়া নারকেল বা ক্ষীরের পুর খেলে বার বার খেতে ইচ্ছা হবে। ঠান্ডা হোক বা গরম গরম খেলে হ্যাপি ফিলিং আসতে বাধ্য।
রাজভোগ
রসগোল্লার মামাতো ভাই! জাম্বো সাইজের হলুদ রঙা এই মিষ্টি খেলে জিভে জল আসবেই। ওপরে কেশরের টপিং থাকায় দেখতেও দারুণ লাগে।
দরবেশ
বুন্দি লাড্ডুরই বাংলা ভারসান হলো দরবেশ। অনেক বাঙালি বাড়ির হেঁসেলেই বানানো হয় এই মিষ্টি। দরবেশ খুবই লোভনীয়।
সরভাজা
সরকে ডিপ ফ্রাই করে এই মিষ্টি বানানো হয়। কারিগররা ভীষণ খেটে এই মিষ্টি বানান। আর কথাতেই আছে কষ্ট করলেই কেষ্ট। ফুডিরা এই মিষ্টি একদম মিস করবেন না।
সংগ্রমী মা মাটি মানুষ পত্রিকা ১৪ এপ্রিল ২০১৭ সংখ্যায় প্রকাশিত
![ইরাবতী নিউজ ডেস্ক](https://irabotee.com/wp-content/uploads/2021/12/irabotee-cover-e1640636602578-150x150.jpg)
বিশ্বের সর্বশেষ খবর, প্রতিবেদন, বিশ্লেষণ, সাক্ষাৎকার, ভিডিও, অডিও এবং ফিচারের জন্যে ইরাবতী নিউজ ডেস্ক। খেলাধুলা, বিনোদন, ব্যবসা-বাণিজ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং স্বাস্থ্য সহ নানা বিষয়ে ফিচার ও বিশ্লেষণ।