| 2 সেপ্টেম্বর 2024
Categories
এই দিনে গদ্য সাহিত্য

তিনটি গদ্য

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

আজ ১২ মে কবি, গদ্যকার ঋষি সৌরকের শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।


নেমন্তন্ন

এক্স গার্লফ্রেন্ডের ফোন। কেমন আছো- কি করছো- এখনো কি একা নাকি… এইসব গৌরচন্দ্রিকার আড়ালে আসল কথাটা হল, ” বাড়িতে কেউ নেই, আসবে?”

ইচ্ছে করেই রতন আর কোনও সম্পর্কে জড়ায় নি। প্রতিমার জন্যও যে অপেক্ষা করে বসে আছে, একেবারেই না। কিন্তু আজকের ফোনটা ঠিক সারপ্রাইজ না, কিরম একটা অদ্ভুত রকম ছিল… যাইহোক সম্পর্কটা না টিকলেও কিছু চাহিদা এখনো অব্যাহত আছে, বোঝাই যাচ্ছে… রতন জিজ্ঞেস করলো, “কখন?”

রাত তখন পৌনে দশটা হবে, নেমন্তন্ন সেরে রতন বেরিয়ে এলো। প্রতিমাদের জরাগ্রস্ত বাড়িটা যেন আরোও জীর্ণ হয়ে উঠছে দিন দিন। অথচ এই পুরানো পুরানো গন্ধটারই বারবার প্রেমে পড়ে যায় রতন। আজ সেই গন্ধটা অচেতনের হারানো গলি থেকে আচমকাই উঠে এসে স্নায়ুতে আছাড় মারছিলো। নিজের স্বভাবসংগী হিরো সাইকেল টা নিয়ে আস্তে আস্তে চলতে শুরু করল রতন, মাথার ভেতর এখনো সেই গন্ধটা মৌতাতের মত মিশে আছে। অনেকদিন পর পুরানো বাড়িতে ফিরে এলে যেমন লাগে, আজ প্রতিমাকে আদর করার সময়ও সেরকম লাগছিলো। এত বড় শহরেও যে এত প্রাচীন একটা গলি থাকত পারে, রতন ঠিক আজো বিশ্বাস করতে পারে না। যেন এই শহর বহু দিন আসে না তার কাছে… প্রতিমার সাথে বিছানায় বন্ধুত্বমূলক ক্রীড়াশেষে রতন তার কপালে চুমু খেতে ভোলেনি। ঠিক যেভাবে প্রতিমা শিখিয়েছিল, রতন অনেক কিছুই ভোলেনি। শুধুমাত্র প্রতিমার সংস্পর্শে এলেই সেগুলো যেন প্রকট হয়ে ওঠে। এভাবেই রতনের ভেতর ভীষণ গভীরে কোথাও প্রতিমা আজো চাপা পড়ে আছে… এসব ভাবতে ভাবতে বড় রাস্তায় প্রায় উঠে এসেছিলো রতন, প্রতিমাদের ঐতিহ্যবাহী চারচাকা টি ঠিক সেই ব্রাহ্মমুহূর্তেই গলিতে প্রবেশ করছিলো। হেডলাইটের জোরালো আলোয় কেউ দেখে ফেলবে বলে, গলির মধ্যে একটা অন্ধকার জায়গা দেখে একটু খানি থমকে দাঁড়ালো রতন।

কিন্তু যা দেখলো, শিরদাঁড়া বেয়ে একটা ঠাণ্ডা সাপ যেন ক্ষিপ্রগতিতে চলে গেল বলে বোধ হল। রতন দেখল, তারই সামনে দিয়ে ঐতিহ্যবাহী চারচাকা বেরিয়ে যাচছে, প্রতিমার মা আর বাবা বসে আছে পেছনের সিটে, আর গাড়িতে যিনি ড্রাইভিং করছেন, তিনি আর কেউ নন স্বয়ং প্রতিমা নিজেই…

ঠিক এইসময় ঘাড়ের কাছে কার যেন একটা শ্বাস অনুভব করলো রতন, আর খুব একটা ভুল না হলে তার গন্ধটা সেই পুরনো বাড়িটার মত।

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

ব্রূহাহা

দীপঙ্কর দত্ত র সাথে আমার পরিচয় শূন্যকালের থ্রু দিয়ে। তার কবিতার সাথে আলাপ তারও অনেক অনেক পরে। শূন্যকালে বিভিন্ন কবির কবিতার ইলাস্ট্রেশনে তিনি যে ছবিগুলি ব্যবহার করতেন তা আমাকে হতবাক করে দিত। মুখোমুখি আলাপ হবার আগে আমি ভেবেছিলাম দীপঙ্কর দত্ত একজন লম্বা-চওড়া কাউবয় টাইপ কেও। মাথায় লম্বা লম্বা চুল। মুখে-গালে অজস্র ক্ষতচিহ্ন। প্রতিটার সাথে এক বা একাধিক গল্প জুড়ে আছে। সেইসব স্মৃতির নক্সা বহন করে বেড়াচ্ছে তার মুখ। যে লোকটার মুখে এত ক্ষতচিহ্ন থাকতে পারে, না জানি তার শরীরে ও মনে কত ক্ষত সুপ্ত আছে। আর এখানেই দীপঙ্কর দত্ত র রহস্য আমাকে হাতছানি দিত। মনে হত উনি একজন শিকারী, রেবেল…  একদিন হঠাত শিকারে বেরিয়ে দীর্ঘদিন বাড়ি ফেরেন না। অপেক্ষারত মানুষেরা অপেক্ষা করা ছেড়ে ঘুমিয়ে পড়েন। আর ঠিক সেইসময় এক নিশুতি হিমেল রাতে সে ফিরে আসে…সাথে  সহস্র শিকারের গল্প

আমাদের প্রথম দেখা হল কলকাতা বইমেলা ২০১৫. আমি নিরাশ হয়েছিলাম। আদ্যোপান্ত দোহারা চেহারার একজন মধ্যবিত্ত মানুষ। মাথায় নির্লিপ্ত টাক, পোশাক-আশাকেও অতি নির্লিপ্ততা। বুক পকেটে পেন আর কাঁধে কবিঝুলি… দীপঙ্কর দত্তকে আমার যাবতীয় ফ্যাণ্টাসির সেখানেই ইতি হবে ভেবেছিলাম… কিন্তু, মানুষ মরে যায়, ফ্যাণ্টাসি মরে না! শূন্যকালে দীপঙ্কর দত্তের ইলাস্ট্রেশন আমাকে খুন করত নিয়মিত। একজন  আগাগোড়া সামান্য চেহারার মানুষ কিভাবে নিজের মধ্যে এমন শিকারী পুষে রাখেন ভাবলে শিউরে উঠতাম, রোমাঞ্চিত হতাম। যে মানুষটাকে ভাগ্য-ভবিতব্যের তোয়াক্কা না করা একটা বোহেমিয়ান র‍্যাপসডি ভেবেছিলাম জানতে পারলাম সে নাকি শেয়ার বাজারের তিলক কাটা ব্রোকার এবং জ্যোতিষচর্চা তার হবি ও প্যাশন। আমাকে এই ছুপা রুস্তম দ্বৈতসত্তা অভিভূত করত। এ যেন ছলে-বলে-কৌশলে মন্ত্রপুত: কোনও শেকলে বেঁধে রাখা বন্য নরখাদক, যাকে এক মহাচতুর শিকারী এক আদিম যাদুবিদ্যায় চিরন্তন বশীভূত করেছে।

দীপঙ্কর দত্ত সেইসব শিকারীর একজন,যারা নিজেকেই শিকার করে অজস্রবার। আর এই অমায়িক মৈথুনের পারম্পর্যে তিনি বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন তথাকথিত লৌকিকতা থেকে,  বীতস্পৃহ হয়ে যান আয়োজনের গুরুগম্ভীর আওয়াজে, সৃষ্টির কলরোল থেকে যোজন দূরে নিজের পশুটার পরিচর্যা করে যান দিবারাত্র,  তার সাথে খেলেন, ঘুমান, খান আর মাঝে মাঝে শেকল খুলে দেন। 

অতিসুলভ পোয়েটিক লাইসেন্স পাওয়া কবিদের স্বভাবসিদ্ধ ভিড় তাই দীপঙ্কর দত্তকে গ্রাস করতে পারে না, ইনফ্যাক্ট ছুতেই পারে না। নিজেকে সহজাত অচ্ছুত বানিয়ে তিনি তাবু ফেলেন নিজের সন্ন্যাসে। টিপটপ কবিদের সাজানো গোছানো জগতে তাই তিনি এলিয়েন কবি। কবি তথা ভদ্রলোকেদের লোকদেখানো সংসার তার নয়। বাথরুম টা যেখানে হবার কথা কিম্বা বেডরুম টা যেখানে অথবা ডাইনিং – এসবের রুটম্যাপ রোজ যেন বদলে যায় দীপঙ্কর এর! সে কখনো বাথরুমে ঘুমিয়ে পড়ে, ডাইনিং এ হিসি করে ফ্যালে আবার বেডরুমে ট্রেকিং করে…এতটাই অগোছালো তার যাপন, যা আজকের সদাবাহার কাব্যললনায় ফোকাসিত কবিদের খুতখুতে করে তোলে। যে দীপঙ্কর বাস্তব চৌহদ্দিতে এতখানি সাদামাটা -একাকী-অগোছালো কবিতা তার কাছে সেই হারানো পথ যা কেবল নিরুদ্দেশে যায়।  নিজের পশুটার সাথে গ্র‍্যাভিটিতে ভবঘুরে সাঁতার কাটে। তার প্রচ্ছন্ন চেয়ে থাকাগুলি পাথুরে ভাবনার স্পর্শে হয়ে ওঠে প্রকট বিকৃত ইনফিডেল

আমরা তাই যারা অপেক্ষা করতে করতে আবার ঘুমিয়ে পড়ছি, তাদের বলে রাখি, খবরদার, যেকোনও হিমেল নিশুতি রাতে আপনাদের কবিতার স্বপ্নে বা স্বপ্নের কবিতায় দরজা নক করতে পারে একটি ধূসর আওয়াজ “ব্রূহাহা”… খবরদার!

আমি বড় হয়ে তরুণ কবি হবো

আকৃতিতে একটু বড়ো আর প্রকৃতিতে একটু লালের দিকের জিনিস যে বাঙালি র পছন্দে আজো মনোপলি করে চলেছে তা এখন অক্ষরে অক্ষরে পরীক্ষিত। প্রভূত চাট না খেলে টকটকে বস্তু যথাক্রমে টক – তেঁতো এবং ছিবড়ে হয়ে ওঠে না,তাও এখন প্রমাণিত। 

কবি বসেছিলেন ল্যাপটপ খুলে। ভীষণ চিন্তিত। ভাবছিলেন টাইপ করবেন, “হাউ টু লঞ্চ আ রকেট!” চিন্তিত, কারণ এতদিন অবধি উনি একটিও কবিতা লিখে উঠতে পারেন নি। তাই ভুল করে টাইপ করে ফেললেন, “হাউ টু মাস্টারবেট… ” কবি খুব নরম প্রকৃতির। কলাবিভাগে অধ্যাপনা করেন। সুন্দরী মেয়ে দেখলে ছলছল করে ওঠে চোখ। দিনকয়েক আগে এক কবিতাসভায় তিনি হঠাতই জানতে পারলেন, দু:সংবাদটি – আজ অবধি কবি নাকি একটিও কবিতা লিখে উঠতে পারেন নি। এইরকম অশ্লীল এবং নোংরা প্ররোচনার সম্মুখীন হয়েও কবি অত্যন্ত নম্র ও ভদ্রভাবে সেই অমোঘ পালটা প্রশ্নটি করে ফেলেছিলেন, “তালে? কবিতা কাকে বলে?” 

কিছু অসভ্য কমবয়সী ছেলে পেছন দিকের চেয়ারগুলো থেকে চিৎকার করে উঠেছিলো, “আপনি বলতে পারবেন কলা কাকে বলে? ওতে বিচী থাকলেও দেখা যায় না কেন?” 

এইসব… এইসব অসভ্য ছেলেপিলেদের জন্যই কবিরা আজকাল কবিতা লেখাই ছেড়ে দিয়েছেন।

সেই থেকে কবি খুব অপমান বোধ করছেন। শরীরে কোথাও চোটফোট লাগলে লোকজনের জেনার‍্যালি মায়ের কথা মনে পড়ে, কিন্তু সেই ঘটনার পর থেকেই কবির কণ্টিনিউয়াসলি বাবার মুখটা খুব মনে পড়ছে। আসলে কবির প্রেস্টিজে লেগেছিল। কবি তখন নেহাতই ছোট। ক্লাস সেভেন-এইট হবে। আত্মীয়স্বজন বিশেষ করে কবির মায়ের মা দিদিমা প্রায়শই কবিকে প্রেসার দেন এই বলে যে কবির বাবা একজন কত বড়ো মাপের কবি, আর কবি সেখানে ক্লাস এইটে পড়েও কিছু লিখতে পারেন না। এইকথা বারবার শুনে কবির মনে একবার জিদ চেপে গেল। একবার কালিপূজার দেয়াল ম্যাগাজিন এর জন্য পাড়ার ছেলেমেয়েদের কাছ থেকে কবিতা চাওয়া হল। সম্পাদক কবির বাবা। দেয়াল ম্যাগাজিনের নাম “সবুজ বিপ্লব” 

তো একের পর এক দিন যায়, কবির বাবার কাছে ঝেঁটিয়ে কবিতা জমা পড়তে থাকে। যত দিন এগুতে লাগলো কবিতার সংখ্যা বাড়তে লাগলো। শেষকালে কালিপূজার একহপ্তা আগে পরিসংখ্যানে দেখা গেল, পাড়ার গুটিকয় ছেলেমেয়ে যাদের রোলনম্বর স্কুলে ৫০ এর পরে তারা বাদে মোটামুটি সকলেই স্বরচিত কবিতা জমা দিয়ে ফেলেছে “সবুজ বিপ্লব” এর জন্য! আর ঠিক এই জিনিসটারই ভয় পাচ্ছিলেন কবি, স্কুলে রোল নম্বর ৫০ না হলেও, শত মাথা খাটিয়েও এক কলম কবিতা লিখতে পারেন নি তিনি। অবশেষে কালিপূজার দুচারদিন আগে যখন ছলোছলো চোখে কবির মআআ, কবির মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “বাবা! তুই কিছু দিবি না?” 

কবি আর নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারলেন না। কিন্তু আবেগ তো পশু, মানুষ, উদ্ভিদ মাত্র সকলেরই থাকে – তাই বলে সেটা প্রকাশ করার ক্ষমতাটাই আসল। কবি বরাবর নিজের মধ্যে সেটার অভাব অনুভব করতেন। কিন্তু মায়ের এহেন অনুরোধে আদাজল খেয়ে লেগে পড়লেন কবি, অনেক কষ্টফষ্টো করে কালিপূজার আগের দিন যখন কবিতাবাছাই প্রায় শেষ তখন একটি কবিতা জমা দিলেন। সম্পাদক বাবা তখন কোন এক লোকাল বিতর্কসভার আমন্ত্রিত বিচারক হয়ে গেছেন। তাই সহসম্পাদক মেজদার হাত দিয়ে কবির সেই বহুকষ্টের কবিতাটি সিলেক্ট হয়ে গেল

কিন্তু সমস্যা হল কালিপূজার পরে পরে। পাড়ার বেশকিছু বয়োজ্যেষ্ঠ মানুষ বাবাকে কমপ্লেন করলেন কবির কবিতার সাথে কবিগুরুর দু-চারটি কবিতার হুবহু মিল তারা পেয়েছেন। পুরোটা না মিললেও প্রায় অনেকটাই ডিটো টোকা। কবির মনে আছে, ভাইফোঁটা র আগের দিনের রাতে বাবা সেদিন খুব মেরেছিলো… রদ্দা মারতে মারতে বলেছিলো,”বাকি কবিতাটা কার টোকা বল? নাহলে আজই মেরে ফেলবো অসভ্য ছেলে, নিজে লিখতে পারবি না লিখবি না, তাবলে লোকের টুকবি? তাও যার তার হলে হয় কবিগুরুর কবিতা? ছি! ছি! “

সেই যে সেদিন থেকে কবি বাবার কাছে আপাদমস্তক ধোলাই খেলেন, পাড়ার লোকে বাড়ির বাইরে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে মজা দেখলেন, এবং কবির প্রেস্টিজ চুপসে এইটুকু হয়ে গেল… তারপর প্রায় ৫-৬ বছর কবিতার সাথে কোনও সম্পর্কই ছিল না তার। এমনকি কাছে-পিঠে কোথাও “কবিতা” বলে কোনও বস্তু আছে শুনলে, গু এড়িয়ে চলার মত করে সন্তর্পনে কবি এড়িয়ে যেতেন। 

বাধ সাধলো কলেজের সেকণ্ড ইয়ারে। বেংগোলি ডিপার্টমেণ্ট এর একটি দুধে আলতা তরুণীকে কবির ব্যাপক মনে ধরলো। আকৃতিতে একটু বড়ো আর প্রকৃতিতে একটু লালের দিকের বিষয় হলে ঐ বয়সে সবারই একটু ঝোঁক থাকে আরে কি… কলেজের প্রায় সব ডিপার্টমেন্টের ছেলেরাই অ্যাডাল্ট হর্মোন এ ডুব দিয়ে লেগে পড়লো তরুণীর পেছনে। কবি মুখচোরা… কবি সরল… হলেও সাবধানী। কলেজের বাঘা বাঘা হনুদিগকে চতুরতার সাথে পাশ কাটিয়ে ফাঁকা গোলে বল ঢোকাতে যাবেন কি যাবেন না… বাধ সাধল মেয়েটির নাম… কবিতা মাণ্ডি

আমার পদবী-সেন্সিটিভ পাঠকেরা এটা মনে করবেন না, যে এস-সি এস-টি নিয়ে কবির খুব একটা ছুতমার্গ ছিলো ; তিনি কবি তিনি উদার – কিন্তু ৬ বছর পরে কবিতা (বেংগোলি ডিপার্টমেণ্ট, রোল নাম্বার ১৩) যে এইইভাবে তার জীবনে ফিরে আসবে তা তিনি স্বপ্নেও কল্পনা করেন নি। যেন পিতৃদত্ত অভিশাপ এবং সঞ্জয় দত্ত ভিলেন হলেও নায়িকার পিসি… একটা কিম্ভূত কিমাকার জ্যামিতিক আকৃতিকে কোনমতে ঢোক গিলে কবিতাকে ভালোবাসার শুরু করেন কবি…কিন্তু তার প্রকৃত কবিজীবনের সূত্রপাত তারও বছর তিনেক পরে। 

বেংগোলি ডিপার্টমেণ্ট এরই HOD র একমাত্র ছেলে হেনরি পট্টনায়েক, স্বভাবে খুব ক্ষুধার্ত এবং বড়লোক বাবার অকালকুষ্মাণ্ড ছেলে। পারে না, তবু মিল দিয়ে কবিতা লেখে…

স্বপ্ন নাকি কল্পনা
তবে ব্যাপারখানা অল্পনা
কুচো কুচো জল্পনা

ইত্যাদি

বাবার ক্ষমতা থাকলে এবং ছেলের বুদ্ধি না থেকে স্রেফ ইন্দি থাকলে যা হয়- দাপুটে। গ্যাংবাজ। যা লেখে, লোকজন তাতেই বগোল তুলে হাততালি দেয়। তোষামোদকারীরা আবার হেনরি না বলে ডাকে হাংরি – তাতে একটু সেক্সি লাগে। তো সেই ছেলে একবার পরীক্ষায় “বাংলাসাহিত্যের ইতিহাসে বংকিমচন্দ্রের অবদান” লিখতে গিয়ে কি লিখবে খুঁজে পেলো না। সামনের ছেলেটির কাছ থেকে কেবলমাত্র “কপালকুন্তলা” জাতীয় কিছু একটা শুনে সেটা নিয়েই ফেনাতে আরম্ভ করলো। যা লিখলো, সারমর্ম এই: 

বংকিমচন্দ্র নাকি ল্যাপটপে কপালকুন্তলা লিখছিলেন। প্রায় শেষই হয়ে এসেছিলো, মাঝখানে হঠাৎ তাকে একবার বড় বাথরুম যেতে হল। 

Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com

মন্তব্য করুন

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না। * চিহ্নিত বিষয়গুলো আবশ্যক।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত