উৎসব সংখ্যা: পাপড়ি গঙ্গোপাধ্যায়’র কবিতা
খেলনাবাটি
এক
সোনালি খেলাঘর পেতেছি দোলনায়
অথচ নেই বাঁধ
পুতুলে নেই হাত
বাটির রান্নারা কুহকে চমকায়।
রঙীন কৌতুকে এ ঘোর দোলনা
ঠেলার কথকতা সেও কি ভান না?
অথচ দোলনাটি বড় আকাশপ্রিয়
নামতে চায় না সে।
আকাশে বিদ্যুত
আকাশে খুব সুখ?
পুতুল হাতে নেই
দড়ির বাঁধ কই?
ভাতের গন্ধটা বড়ই মোহময়।
রঙীন দোলনাটি বেঁধেছি খেলনায়।
দুই
তাহলে রইল সেই কথা
খুলব বন্ধ দরজা
ঢুকতে দেব বসন্তের হাওয়ার সঙ্গে
ফুটপাথের কান্নাও।
আওড়াব কিংবদন্তী।
সমস্ত সকাল বিকেল চলে গেল
ভর সন্ধ্যেয় শুধু
তারাগুলো সম্বল আকাশের।
কিন্তু বাতাসে কত রকম গন্ধ।
তুমি চিনিয়ে দিতে পারতে।
তোমার না-আসা জন্ম দেয়
কত হতে পারত স্বপ্নের ।
অথচ অগাধ গভীর রাত্রে
শুধু তোমার বাণীগুলি
ফুটে ওঠে যান্ত্রিক জানলায়।
দরজায় কিছুই পৌঁছয় না।
না সাপ না বিলাস।
তিন
এ জীবন সাতবর্ণ জিভের আস্বাদ
এ জীবন আজ্ঞাবহ তাসের ফুলঝুরি
আমি কি শেখাই সব?
আমি বুঝি মালকিন নই?
কে যেন দরজায় ভিক্ষে চায়।
জানলা দিয়ে বলে দিই,যাও
ওই দিকে সূর্য আছে, খোঁজো।
কর্পূরের মত যত গৌরবর্ণ নির্যাস
উবে উবে যায় যেন উবু দশ কুড়ি।
সেজেছি, সাজাই তবু মনোহর ক্রীড়া
ভঙ্গ হয়ে যায় সঙ্গদোষে।
দক্ষিণ কলকাতার মধ্যবিত্ত পাড়ায় একান্নবর্তী পরিবারে জন্ম ও বড় হয়ে ওঠা। বিজ্ঞানের ছাত্রী হলেও সাহিত্যে আগ্রহ অতি অল্প বয়স থেকে।দায়িত্বপূর্ণ পদে চাকরি। নয়ের দশকের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে কবিতাকে পাকাপাকি ভাবে আপন করে নেওয়া। তৃতীয় কাব্যগ্রন্থ “এক-দুপুর ভ্রমণ ” এর জন্য কৃত্তিবাস পুরস্কার প্রাপ্তি। কবিতার পাশাপাশি গল্প ও মুক্ত গদ্যও প্রকাশিত হয়েছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠিত পত্র পত্রিকায়। এই বছর প্রকাশিত হয়েছে প্রথম গল্প সংকলন।