আজ ১ জুলাই কবি, সম্পাদক আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়ের জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার কবিকে জানায় শুভেচ্ছা ও শুভকামনা।
ইরাবতীর পাঠকদের জন্য এই শুভদিনে কবি আকাশ গঙ্গোপাধ্যায়ের কিছু কবিতা রইলো।
অপকেন্দ্রিক
১
যে মেয়েটি কেবল মুখ দেখে নুনের কৌটো এগিয়ে দিতে পারে খাবার টেবিলে, তাকে বেশ কাছ থেকে দেখেছি আমি।
তার সুখ-দুঃখ-ক্ষোভ-বিরক্তি সবকিছুই। না-পাওয়ার সংসারে অভাবের সদব্যবহার জানে সে মেয়েটি। কেমনরকম ভালো লেগে যায় তাই। ও গান ভালোবাসে, আমি ভালবাসি নিজেকে, মাঝে মধ্যে দামি সাবান কিনি, নতুন জামা, আর কেউ ভালো গান পাঠালে এগিয়ে দিই ওর দিকে। বদলে ও নুনের কৌটো এগিয়ে দেয়, বিষম খেলে ছিপি খুলে দেয় বোতলের…
২
দাদুর কাঠের আলমারির লকারের দিকে আঙুল তুলে জিজ্ঞাসা করলেই মা বলত ওখানে ঝগড়াঝাটি থাকে বড়দের। এরপর অনেকবার সেই চাবির খোপে চোখ দিয়ে দেখেছি কিছুই দেখা যায় না অন্ধকার ছাড়া। আমি জানতাম ঝগড়াঝাটি মায়ের কান্না আর বাবার সান্ত্বনার মতো দেখতে, তবু ইচ্ছা করত চোখে দেখি একবার। দরজার পিছনে মোজার ব্যাগে থাকত সে চাবি, যেমন থাকে আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত ঘরে, ছোটোদের নাগালের চেয়ে একটু উঁচুতে।
মা ভাবেনি একদিন হাতে পেয়ে যাব ব্যাগ, খুলে ফেলব লকার। তারপর বড়দের ঝগড়ায় আর কোনোদিন আটকে রাখা যাবে না ঘরে। চোখে এক বিপুল জিজ্ঞাসা নিয়ে সে এসে দাঁড়িয়েছে দরজায়…
লকার জুড়ে শুধুই অন্ধকার, কোনো এক কিশোরীর গানের খাতা ঘুমিয়ে রয়েছে এককোণে।
ফ্লেমিং-এর ডানহাত
এক লাইন হেঁটে যাওয়ার মধ্যে বুড়ো আঙুলের অভিমুখে উড়ে গেল আপনার মাছরাঙা। আপনি সমকোণে অনামিকা বরাবর সাঁতার কাটলেন। মধ্যমা বরাবর তৈরি হলো চৌম্বকক্ষেত্র। এরপর ডাঙায় উঠে সমস্ত নুন সমুদ্রে ফেলে দিলেন। দরজার কাছে এগিয়ে এলেন ডাক্তারবাবু। উনি চিন্তিত। হাঁটবার ওষুধ দিলে আপনি সাঁতার কেটে বসছেন, সাঁতরাবার ওষুধ দিলে উড়ে যাচ্ছে মাছরাঙা।