আমাকে আমার প্রভুর জন্য পবিত্র থাকতে দাও
. সূর্যসংবেদনে বজ্রে
. আমাকে উত্কীর্ণ কোরো না. হে জ্ঞানী পিতৃকুল,
. তোমাদের আভূমি প্রণাম
. কন্যাকে ত্যাগ করো অন্ধকারে।
তোমাদের ঘৃণাঞ্জন আমার অঙ্গলেপ, বিস্মৃতি তমস্বান উত্তরীয়
. ধিক্ কারে রাত্রিস্তোম সংকলিত হোক।. সেখানে
আমার প্রভুর জন্য আমাকে পবিত্র থাকতে দাও।.
![Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com](https://irabotee.com/wp-content/uploads/2020/05/line-art21-150x150.jpg)
আমাকে আবৃত্ত করো
আমি মৃত্যুতে আছি
আমাকে ডাকো
. আকাশে
. ঐশ্বর্যে
. জীবনে।
আমি গুহাহিত
আমাকে নাও
. প্রান্তরে
. প্রসারে
. মোচনে।
আমি অন্ধ
আমাকে সূর্যসনাথ করো
আমি অচল
. পবনপদবী দাও
অনন্বিত
. আমাকে সমগ্রে রাখো।
প্রশ্ন ও পরিত্যাগ থেকে
আমাকে পরাবৃত্ত করো
. উত্তরে অঙ্গীকারে
আমাকে পরাবৃত্ত করো
. অঙ্গীকারে।
.
হিমঘরের মাছ
একদিন রাতে
পদ্মানদী চুরি হয়ে গেল।
তার সঙ্গে
গোয়ালন্দ ঢাকা মেল
তারপাশা খাল নৌকো
বিকেল বিকেল বাড়ি—
সব চুরি গেল।
তখন ভেবেছি বুঝি বাঁচব না
তারপর কতদিন ধরে
ধীরে ধীরে চুরি হল
স্বপ্ন স্মৃতি প্রাণ।
দিব্য বেঁচে আছি
.
বিশ্বের সমস্যাপূরণের ভার
তোকে দেওয়া হয়নি, পুঁটি।
ভারতবর্ষ বোমা বানাবে কিনা
আমেরিকা ভিয়েতনাম ছাড়বে কবে
অটোমেশনের বিরুদ্ধে গণস্বাক্ষর জরুরি—
এ সব ভাবনা তোর নয়।
বিকেলে গা ধুয়ে তুই খোঁপা বাঁধ
লক্ষ্মীবিলাস তেল দিয়ে,
মাসির দেওয়া পার্ল পাউডার
মুখে আলতো করে মাখ
কাগজ পোড়ানো ঝুরো টিপ পর কপালে
সন্ধ্যামালতীর থোকা গুঁজে দে খোঁপায়
বর্ষায় ঘন সবুজশাড়ি
তোকে মানায় ভালো।পুঁটি, তোর এ বয়সে
প্যাঁচামুখ সইতে পারি নে—
এ কি তোর বাড়াবাড়ি নয়
উল্ ফ্-এর তুই কী বুঝিস
পিকিং পার্জ-এ তোর এসে যায় কী।তুই তোর ঘর গুছিয়ে নে
প্রদীপের সলতে পাকা
মনে রাখিস পুঁটি
এই তোকে ছেলে মানুষ করতে হবে
ধিঙ্গিপনা তোকে কি সাজে, ছি।.
![Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com](https://irabotee.com/wp-content/uploads/2020/05/line-art12-150x150.png)
আমি মরে গেলে চলে যাবে ভালোবাসা।
পৃথিবী স্বাধীন হবে যেমন স্বাধীন
বিধবা পতিতা কিংবা নারীচ্যুত গোঁয়ার পুরুষ।
যেমন মাতৃত্ব নিয়ে মাতামাতি হয়েছে অঢেল
যেমন সঙ্গম আজ হয়ে গেছে কেবলই সন্ত্রাস
ঠিক তেমনি ঢলাঢলি ভালোবাসা নিয়ে—
. সংসারে ছড়ায় নোংরা হাওয়া।
ভালোবাসা ভালোবাসা চতুষ্পদে হাঁটে
শহরের ঘরে পথে গ্রামে গঞ্জে মাঠে
হাঁটে, বসে, ব’সে যায়, জমে।
পৃথিবী এখন ক্লান্ত, আমি তার চোখ
. বহুদিন ধরে দেখে গেছি
আমি মরে যাব ভালোবাসা সঙ্গে যাবে
আর বর দিয়ে যাব— ভুবন ঈশ্বরী,
. এইবার মুক্তগ্রহ হও।.
![Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com](https://irabotee.com/wp-content/uploads/2020/04/line-art-10-150x150.png)
সুখ
পোষাকি সুখেরা সব জীর্ণ হয়ে এল কালক্রমে।
সেসব সতেজ সুতো
অহংকারী রঙের আধার
সন্মত আঙুলে ওই ঋদ্ধিমান নক্ষত্র শরীর
আহা দেখ পরাস্ত, শয়ান।
পোষাকের সুখ, নাকি সুখের পোশাক বলব?
না কি দৃষ্টিভ্রমে
অন্য কোনো ত্রি-আয়তনিক নাম
শরীর লুকিয়ে ফেলে ঢুকে গেছে জীর্ণ এ পোশাকে?
যা-ই বলো নাম তবু প্রগাঢ় সুতোর পাট এখন শিথিল
স্মৃতির তোরঙ্গে তাই, এর নির্বাসন। আনো
নতুন সুতোর সংজ্ঞা, ফিটফাট সুখ, খোলা রঙ
এখন যা সয়।
রকমারি সুখ, ভারি সুখ,
সুখ তীব্র, হালকা বা নিটোল—
শোনো না, সূর্যাস্ত হলে অন্তরীক্ষে ফেরিঅলা হাঁকে ?
![Irabotee.com,irabotee,sounak dutta,ইরাবতী.কম,copy righted by irabotee.com](https://irabotee.com/wp-content/uploads/2020/04/line-art-10-150x150.png)
কলকাতার করকমলে
তোমাকে আমার কিছু দিতে ইচ্ছে হয়।
বর্ষার ঝাঁজালো পদ্মা কিংবা তীব্র আড়িয়ল খাঁ
দুষ্প্রাপ্য সোনার বর্ণ লক্ষ্মীদিঘা ধান
বিশাল বটের পৃষ্ঠে শুদ্ধ সূর্যোদয়
দুয়াল্লির মঠ, বিলে মাছের ভেসাল
লক্ষ লক্ষ ঘাসফুল, কালো কাক, নীলকন্ঠ পাখি
আকাশ মাটির জোড়ে দিগন্তের সবুজ বলয়
সন্ধ্যার নৈঃশব্দ্য, রাতে পুঞ্জ অহংকার
কিংবা চৈত্রে কৌমারহরণ চাঁদ আর
ব্রাহ্ম মুহূর্তের শীতলতা।
কলকাতা,
তোমাকে আত্মীয় ভেবে
এসব সঞ্চয় থেকে কিছু উপহার
এ সময়ে দিতে ইচ্ছে হয়।
.
ভেঙে যায় অনন্ত বাদাম
ফেটে যায় বাদামের খোলা
নির্ভুল অঙ্গুষ্ঠ ওঠে নামে
তর্জনীর বৃত্তাকার কঠিন শরীরে গেঁথে যায়
অদৃশ্য অপেক্ষমাণ জোড়চিহ্ন ঘিরে।
দু’ আঙুলে নিম্নমুখী তীব্র চাপ, নাকি ক্রোধ ?
মস্তিষ্ক মন্থন করে নেমে আসে প্রান্তিক পেশীতে
রূদ্ধশ্বাস ভূপ্রকৃতি—ফেটে পড়ে নির্বাক বাদাম।
হাত, নাকি প্রাচীন এটিলা?
পাঁচটি স্তম্ভের মত দুর্বিনীত শিলা
ফুলের পাপড়ির ছলে ভুলেও কখনও
চন্দন করে নি নষ্ট, পরায় নি কোন রক্তটিকা,
ভঙ্গিতে নাশের মুদ্রা—কয়েকটি আঙুল
প্রসিদ্ধ গঙ্গার তীরে ভেঙে যায় অনন্ত বাদাম।
নীলবড়ি
‘নারী বা প্রকৃতি বলো, কিছুই কিছু না।
তার চেয়ে এক সন্ধ্যা দু-একটি মনের মতো বন্ধু পেলে
প্রাণ খুলে আড্ডা দেওয়া গেলে
সমস্ত অসুখ সেরে যায়
মন ভালো থাকে,
বিদ্যুত্গতিতে লেখা হয়
পর পর সাতটি কবিতা—‘
এপ্রিল সন্ধ্যার ঘোরে একজন বললেন
এবং কথার ভান্ড খালি হলে তিনি দিব্য প্রস্থান করলেন।
আমি চুপ করে হাঁটি
মাথায় ঘুরপাক খায় সরল কথাটি—
সমস্ত অসুখ সেরে যায়
সমস্ত অসুখ,
মাথায় ক্রমশ জটা ধরে
শান্তি নষ্ট হয়—
বন্ধুর সান্নিধ্য পেলে সমস্ত অসুখ সেরে যায়
বন্ধু তবু এখনও নিঃঝুম।
‘মিথ্যে কথা, বন্ধু কেউ নেই’—
একবার চেঁচিয়ে উঠি এবং তারপর
নীলবড়ি, ঠান্ডা জল, বাধ্যতামূলক মাপা ঘুম।
.
আয়ুষ্মতী পুত্রবতী
তোবড়ানো এলুমিনিয়ম বাটি
তেলচিটে লাঠি পাশে রেখে
ফুটপাথে শুয়ে আছে মা।
মুখে ফুটে আছে সংখ্যাহীন বলী
নিজস্ব পথের মাইলস্টোন।
ওর ছেলে কী করে, কজন,
ওয়াগন ব্রেকার কিংবা বেশ্যার দালাল
কিংবা খঞ্জ, যথার্থ ভিখিরি
ফুটপাথে শুয়ে আছে মা
নির্মলহৃদয়তুল্য যে কোনো আশ্রয় তার প্রয়োজন ছিল
নাকি প্রত্যাখান
করে শুয়ে আছে, বেঁচে আছে
শুধুমাত্র বাঁচার ইচ্ছায়
আয়ুষ্মতী পুত্রবতী মা।
![ইরাবতী ডেস্ক](https://irabotee.com/wp-content/uploads/2021/12/irabotee-cover-e1640636602578-150x150.jpg)