আজ ১১ আগষ্ট কবি ও সম্পাদক অরবিন্দ চক্রবর্তীর শুভ জন্মতিথি। ইরাবতী পরিবার তাঁকে জানায় শুভেচ্ছা ও নিরন্তর শুভকামনা।
নামের মাংস
উট দৌড়ের আয়োজন নিয়ে সেজেগুজে বসে আছেন
কয়েকজন ঠা্ণ্ডা মাথার বুলডোজার।
সকালফোটা বন্দরের পাশে নাকউঁচু দুর্গ করে
আলগোছে আয়ু খুঁটছে জিপসি ক্লাউন,
পরিখায় ঝরে পড়ছে ইতিহাসবাহিত সেই নামের পালক।
ধূলিসংরক্ষণ বিভাগ একযোগে দাবি তুলছে,
ডানার আয়তন গুঁড়িয়ে দেয়া হোক
মুদ্রার মাংস পচে গলে ধসে যাক।
মেহরোগী শুধু হেরেমশালা খুলে
নিয়তিবাচক ফুর্তি করুক মধুমদ বিষয়ক ধারণাধামে।
চোখ
ফুল দেখা চোখও লাশ দেখে, নিজের।
এরপর মুর্দা পালক আয়না পাশে রেখে স্মৃতির রং মোছে।
বন্ধুকে বহন করতে গেলে শব পিছলে যায়, এগিয়ে আসে হাটবাজারের পা।
প্রসঙ্গত শিমুল পরিবারের কাছে প্রশ্ন থাকে সবার
লালের নামে যে রং আগুন ধারণ করে
তা কি মৃত্যুঘটিত কোনো সংবাদমাধ্যম থেকে আপন করে আনা সুবর্ণরেখা?
ব্যবহারিক
চোখ দেখেছিল, আমার সিঁড়ি কার বন্দীশ করতে করতে উপরে উঠে যায়
এদিকে আমি আলোর শরীর নিয়ে নদীর ভরসায় মোম গেড়ে বসে থাকি।
উঁচুত্যকা আশকারা দেয়, কানকথায় মুকুট ছুঁয়ে আসতে বলে।
রাবণ সম্প্রদায় জানে না, আমি সমতলকে কথা দিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা ঘাটোয়াল
কথার সঙ্গে কথা বলি। হৃদয় ভাণ্ডকে বোঝাই এ আমার আনন্দলোক,
নাচুকের ঘুঙুর থেকে একটি পালক ছিটকে গেলে সে দায় তোমার করতালির।
মুক্তি
উপগলির শিরায় কিলবিল করছে চিৎকার
সম্ভবত মুক্তি চেয়ে এগোচ্ছে কেউ
এদের জন্যেই লঙ্গরখানায় বরাদ্দ হচ্ছে আগামীর অংশবিশেষ।
যারা পথ খুঁজছে, সবার প্রতিপক্ষ আলো
একদিন এরা আমাকে টেক্কা দিতে গিয়ে
খুব যত্নে ঢুকে যাবে ন্যাকড়াপল্লির বেপথু হাটবাজারে।
আমাদের চোখে-মুখে ঘটবে ইশারা, যা আতশবাজির আঁতলামিতে দুষ্ট
আর আমরা ভাবব, ছেলেবেলা কীভাবে মাত হল ক্যাঙারুর লেজে রেসলিং করে করে…
সাহস
তাস খেলা বাদ দিয়ে যারা যুদ্ধ করেন
জনৈক দার্শনিক তাদের পরামর্শ দিলেন,
আস্ত জীবন নিয়ে বাঁচতে চাইলে
জুয়া খেল, জুয়া খেললে আয়ু বেড়ে যায়।
পরমাত্মাকে ঘোড়ার পিঠে চড়িয়ে লাগাম দিলাম ছেড়ে
মজা হলো বেশ, বাতাসকে দিলাম প্রাণ
জীবনের সাহস দেখে ঘোড়া তো আমার ছুট…
সুলতানার ঘোড়া এসে চম্পট―দেখা দেয় আয়নায়
আস্তাবলে কেউ থাকে না
থাকে শুধু হরতনের উল্লাস ও আফিমখোরের হাপিত্যেস।
কুস্তিজীবন
কুস্তিখেলার পাশে দাঁড়ানো উত্তেজনা থেকে লেখা হয় একজন মাসল-ম্যানের জীবন
এত জল এত রক্ত কোনটাকে একাকার ঘাম বলা হবে বুঝে ওঠার আগে ঝরে যায় উল্লাস।
সহায় দস্তানা লুটিয়ে করে ফোঁসফাস। চোখ ছিটকে পড়ে পিংপং বলের ছুটন্তি নিয়ে।
তখন পৃথিবীর মানুষ হয়ে বোঝা যায়, তুমি কোনো এক হত্যা-জগতের রাহুত- আধখাওয়া ফলের
আবেদন দেখেছ, অথচ বুঝতে চাইছ না ফুলের মতো সম্ভাবনাগুলোও ফোটাতে পারে তারাকথা।
সান্ধ্যভাষা
তারা দেখতে বসলে আকাশের চাঁদ মেনকার ভূমিকায় যায়
চোখের পরকীয়ায় যায় দেউলের দৃশ্যঅভাজন।
এ কেমন মুরারি তুমি, পাশে থাকতেই মন ঘর-বেঘর করে।
গবেষণায় যায় এর-ওর পুকুরঘরে।
আনন্দের ভরসায় হাতের কাছে তখন হাত খুঁজি
না পেয়ে বুকপটকা ছুড়ে দিই গতির সুতোয়।
নিমেষেই পুরাতীর্থে ছড়াতে থাকে আমাদের প্রণয়প্রবাহ।
এভাবে তোমার বাঘ ঘনিয়ে আসে
ধ্যানবিন্দু দোলে শরমিনদাবাগে-
জানপাখির বাবা-মা, আপনারা জানেন না কেন
মেঘ এলে পায়ে ঘুঙুর মেখে নাচতে লাগে ময়ূরের কনসার্ট
আমি তখন লিবিডোগামী কয়েকজন বিশ্বামিত্রের সান্ধ্যভাষা হই।
প্রাণচিত্র, চুমুবন্দনা
১.
মালভূমি আর মরুভূমির মধ্যে চুমুর সম্পর্ক আছে কী? থাকলে আকাশ জালটা মিত্রবাচক ভাববেন না কেন? আজ যারা স্রোতের বিশেষ্য টুকে নিয়ে নামকরণ করেছেন বাদলদিন আর সহনামের সঙ্গ প্রতিলিপি করে ছাতাযাপনের ঋতুকে ডাকছেন বর্ষা! এমন গর্ব অথবা উৎসবের নিধানপত্রে সমান রোদ লেখা হলো।
২.
আপনার আশ্রয়ের নিচে ভাষা প্রকাশের স্বাধীনতা দেননি যেহেতু; চলুন, তনূদ্ভূত মহিমায় যাওয়া যাক। কয়েকছত্র কৃষ্ণরাধা হোক। পরমের তুঙ্গে উঠে বিকাশ মুদ্রা ছেপে স্থিরচিত্র করে উড়িয়ে দিই সাহস, টগবগে ঘুড়ি। সমুদ্রেও বেড়ে যাবে প্রাণসকলের জীবনমান, আয়ু। সবার যোগমাধ্যম হবে তুমি-আমি, আমি-তুমি।
আয়না। মুখ। তরমুজ।
দুর্দান্ত দুপুরের কিনারে একটা মানুষ রিভিউ করছে পাখি। কাউকে পর্যাপ্ত পেতে না পারার গল্প শোনাচ্ছি সিনে-আহত, তোমাকে। এই মুহূর্তে যন্ত্রণার বাবাকে করতলে দেখতে পৈশাচিক ইচ্ছে আমার। কসাই থেকে ছিনিয়ে আনা হৃদ্খ- ধরিয়ে দেওয়া হলো অতিরঞ্জন বরাবর। আয়না ধরা হোক মুখ অব্দি। কোনো যৌন চলবে না।
ফল্গুনীসূচক যাই মনে ধরুন, উড়ে যাওয়াকে বলি, মানুষের দিকে নয়, তাকাও জলের দিকে। অভিধানে ডোডো হয়ে যাওয়া একটি অক্ষর সায়ন্তনী মেজাজে বুকজুড়ে চাহিদা করছে উপাখ্যান। জিভ চালাচ্ছি আমি, তুমি ফালি করছ নির্ভরতা। ধ্যানী ঝুমঝুম যেকোনো প্রাণীর মতো মুখ মুখস্থ করছে আয়নায়। ফরসা হচ্ছে আমাদের সকল নিঝুম।
যতিচিহ্ন বা দেহমন কাবাডি
এখন
প্রচারণার প্রসঙ্গ এলে গুপ্ত পাখার কাঠামো মনে পড়বে তোমার। প্রত্যন্ত হয়ে আসে এমন জায়মান কোনো প্রবাহবাসরে ফুটে উঠবার কথা নয়। তবু, ভাবো, জাহাজ নিভে যাচ্ছে। তুমি প্রচ- ডুবুরি। বলক কেবল ঢেউয়ে। অথচ, অপর ডানায় ট্যাটু আঁকা দেখছিলে অবিচল। কেউ বলল হ্যাঁ যে, তুমি পুষ্পিত ট্যাটন, জবেদা খাতায় প্রখ্যাত হাবলা।
এবার
উরুধ্বনি ব্যবহার হলো কোনো কানাগলিতে। তুমি কলোনির সন্তান। দিনকে দিন ধূলি আর বাইক উড়াও। গোল দেখলে সুডৌল বলার বেকসুর সাহস রাখো। মাথায় ভোগাস মেখে স্ট্যাম্প-ব্যাট-বল-গ্লাভস হাতে যাচ্ছিলে হকিস্টিকে। দেহ ও মনে ছিল কাবাডি কাবাডি যতিচিহ্ন।
ফলে
সংস্কারপন্থি এক গানের খাতা হরদম বলল : মানুষ খসে গেলে ঝুলে থাকে অন্তরায়, অবরোহীতে। প্রবীণতম জলাশয়ের কানে ফেলে তার ব্যক্ত ললিপপ। ঈশপ, ঈশপ নামে ডাকে সেই ঢ্যান্ঢনকে। এসবের বাইরে যারা বিবাহমঙ্গলে দাঁড়ায় প্রজাপতির দোহাই নিয়ে। নৃবিজ্ঞান পাঠের অনুরোধ রইল সবার সমীপে।
কবি,সম্পাদক