উৎসব সংখ্যা অসমীয়া অনুবাদ গল্প: হাড় । অরূপা কলিতা পটঙ্গিয়া
রূপসী গ্রামের বীণাবাদক বর্গীরাম গায়েনকে কে যেন হত্যা করে মাঠের মাঝখানে ফেলে রেখে গেছে। গতকাল মধ্যরাতের ঘটনা। অথচ তার মৃত্যুজনিত চীৎকার কারো কানে পৌঁছায়নি। শেয়ালের হুক্কাহুয়া ধ্বনির মাঝে কখন মিলিয়ে গেছে তার কণ্ঠস্বর। কেউ বিছানায় ধড়ফড় করে উঠে বসেনি তার করুণ আর্তনাদে। কেউ তার শোকার্ত আত্মীয়স্বজনকে সাত্বনা দেওয়ার জন্য এগিয়ে আসেনি। কারোও দীর্ঘশ্বাসে ভারি হয়ে ওঠেনি বায়ুমণ্ডল। অথচ এমন নয় যে বর্গীরামকে কেউ চিনত না। এই রূপসী গ্রামে সে ছিল সকলের প্রিয়। তবু তার লাশ রক্তের নদীতে মুখ থুবড়ে পড়ে রইল দীর্ঘক্ষণ। কুপিয়ে খন্ড খন্ড করা হাতের পাশে অনাদরে পড়ে থাকল তার সব সময়ের সঙ্গী বীণাটি।
রক্তাক্ত লাশের চারপাশে এখন ভনভন করছে মাছি। জিভটা বেরিয়ে এসেছে এক হাত। এই জিভ থেকেই একদিন সুর সৃষ্টি হত। এই খণ্ড বিখন্ড হাত থেকেই সে সুরের তরঙ্গ তৈরি করত।গায়েন পড়ে আছে। কোন ভারি জিনিস দিয়ে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছে তার। খুলি থেকে বেরিয়ে এসেছে মগজের জলীয় তরল। এই মেধা, এই সুর এই শিল্প কিছুই পৃথিবী থেকে নিয়ে যেতে পারল না বর্গীরাম গায়েন।
কারো সাতে পাঁচে থাকা তার ধাতে ছিল না। সবাই তাকে পছন্দ করত। পছন্দ করত দুটি কারণে এক তার সুর ছিল মন কাড়া। দুই লোকটা ছিল স্পষ্টবাদী, সোজা কথাকে সহজভাবে বলত। হালকা হলুদ রঙের পাঞ্জাবীর সাথে লম্বা চওড়া চেহারার হাসিমুখ বর্গীরাম ছিল রূপসী গ্রামের সূর্য। আজ সূর্যের অভাবে মেঘলা হয়ে আছে চারপাশ।
বিন্দুমাত্র আলোক সংকেত নেই কোথাও।চারদিকে গুঞ্জন- কামরূপে তিনশো জন মানুষ মরেছে, ওটা তিনশো নয় হাজারও হতে পারে। শিবসাগরে বাঙালিদের ঘরে আগুন লাগানো হয়েছে। ওদের বস্তি জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে যাচ্ছে। তেজপুরে অসমিয়াদের উপর নেমে আসছে আক্রমণ।দুলিয়াজানে রক্তগঙ্গা বইছে।সবই যে সত্য এমন নয়। আবার সবই যে মিথ্যে তাও নয়। সত্যের সাথে গুজব মিলেমিশে একাকার হয়ে আছে।
বর্গীরামের হত্যাকান্ড মানুষের মনের আকাশটাকে কালো করে দিয়েছে। মাঝরাতে খুন করে ফেলে যাওয়া বর্গীরামের লাশ প্রথম দেখতে পায় গুনারাম পণ্ডিত। সে ভোর রাতে বাঁধ বসতে যাওয়ার পথে মাঠে এই লাশ দেখে চমকে উঠে ও সবাইকে খবর দেয়। বাতাসের গতিতে উড়তে থাকে মৃত্যুসংবাদ। মৃত্যু এই গাঁয়ে কোন নতুন ঘটনা নয়। অনেক মানুষের অকাল মৃত্যু দেখেছে এখানকার মানুষ। বৃদ্ধ মৌজদারের বর্ণাঢ্য মৃত্যুর পাশে দীনমজুর রমার ক্যানসারে তিল তিল করে করে মৃত্যু দেখছে এলাকার মানুষ। দেখেছে হরিচরণের সাথে বিয়ের পিঁড়িতে বসতে না পারা রানুর গাছের ডালে দড়ি বেঁধে ঝুলে পড়া মৃত্যু। এসব অকালমৃত্যু দুদিন ঢেউ তুলে তিনদিনের দিন নিজেই মরে যায়।
গায়েনের শরীরটা পচতে শুরু করেছে। একটু একটু করে গন্ধ ছড়িয়ে যাচ্ছে বাতাসে।এখন রূপসী গাঁয়ের হাওয়ায় ভাসছে পচা অংশত পচা মানুষের গন্ধ।কেউ কেউ বলতে শুরু করেছে বর্গীরাম গায়েনকে খুন করেছে কিছু বাংলাদেশী গুণ্ডা।তাদের চলাফেরা দুএকজন নিজের চোখে দেখেছে। দেখেছে বসন্ত গোয়ালাকে। রিফিউজি ক্যাম্পে সপরিবারে এসে একটা তালপাতার ঘর বানিয়ে একটা গোরু থেকে শুরু করে দশটা গরু করল, দুখ বিকতে শুরু করল। এসব বৃত্তান্ত সবার মুখস্ত। তার শরীর শুঁকলে গোবরের গন্ধ ভেসে আসে এখনও। দেখেছে রামরতনকে এক ছটাক জমি না পেয়ে জলা জমি ভতিয়ে ঘর তুলেছে। সরস্বতী মা কে দেখেছে স্বামীকে হারিয়ে দুটো কোলের বাচ্চা নিয়ে তার কী নাজেহাল অবস্থা। এরা সবাই তো অত্যাচার শিকার। এদের সবার শরীরেই নিপীড়নের চিহ্ন জ্বলজ্বল করে জ্বলছে। এরা কেন বর্গীরামকে খুন করবে? বর্গীরাম তো এদের শ্রেণীশত্রু নয়? ওরাও তো ভাঙা রাস্তায় হাঁটতে হাঁটতে বর্গীরামের বীণার তালে তালে নেচে উঠেছিল- ও মাঝিরে, জীবন তুমায় শিখায় কত খেলা…
গন্ধ আরও ঘনীভূত হচ্ছে। এর মধ্যেই ওরা দেখল কারা বাংলা বস্তিতে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে। কুঁড়েঘরগুলি জ্বলছে দাউ দাউ করে। বসন্ত গোয়ালার গরুগুলো হাম্বা হাম্বা চীৎকার করতে করতে পালিয়ে যাচ্ছে বনের দিকে। আগুনের ধোঁয়ার সাথে ছড়িয়ে পড়ছে অগ্নিদগ্ধ মানুষের আর্তরব। কেউ যেন চেঁচিয়ে চেঁচিয়ে বলছে – বর্গীরামের মৃত্যুর বদলা নেওয়া হয়েছে, বেশ হয়েছে।
লাশ পচছে আরও। ভয়ঙ্কর দুর্গন্ধে ঘরে থাকাও এখন দায়। নীল রঙের পচা লাশের মধ্যে সুপুরুষ বর্গীরামের চিহ্নটুকুও আর পাওয়া যাবে না।আকাশের নীলিমার সাথে এই নীল রঙ মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে। এখন শোনা যাচ্ছে অন্যকথা, মুসলমানেরা নাকি চক্রান্ত করে খুন করেছে গায়েনকে। গ্রামের পুকুরে তাই ভাসছে গোরুর হাড়। মসজিদে কারা ফেলে দিয়ে এসেছে মরা কচ্ছপ। দুবেলা খেটে যাদের খেতে হয় সেই মেহনতী মানুষগুলি এখন রাগে অন্ধ। ঘর জ্বলছে মুসলিম বস্তিতে। আবদুল্লার পাঁচ বছরের ছেলেটার গলাকাটা লাশ পাওয়া গেছে খেতের ধারে। অথচ বর্গীরাম কখনও একটা ছুরিও হাতে তুলে নেয়নি। সে বীণায় সুর তুলত- আল্লা তুমি সব মানুষের পিতা, সবার মুখে জোগাও দুটি ভাত।
এখানেই থেমে থাকল না। কে রটিয়ে দিল, বাঙালিরা হচ্ছে দুনিয়ার সবচেয়ে খতরনাক জীব। তারা ছাড়া বর্গীরাম গায়েনকে আর কেউই হত্যা করতে পারে না। পরদিন সুধীর মিত্রের ঘরে আগুন লাগল। মিত্র বাড়ির সবাই রাস্তায় দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে কাঁদছিল। কেউ তাদের পাশে এসে দাঁড়াল না। অথচ বর্গীরাম তো বীণা বাজিয়ে সুর তুলত- জাত ধর্ম নাইরে বাবা নাই। বিপদ দিনে আমরা আছি মায়ের পেটের ভাই।
পোকা ধরা ডেডবডি থেকে গলিত মাংস খসে পড়তে লাগল। পচা মাংসের লোভে ভনভন করছে হাজার হাজার মাছি।কিলবিল করছে কৃমিকীটেরা। উপরে শকুন উড়ছে। তার ছায়ায় ঢেকে গেছে রূপসী গ্রাম। এই গ্রামের দখল নিয়েছে কাক শকুন আর চিলেরা। একটাও মানুষ নেই এখানে। আছে হিন্দু মুসলমান অসমীয়া আর বাঙালী। বেড়ে চলছে হিংসার দাউদাউ আগুন। ভালোবাসার যে সুর আকাশ বাতাস ভাসিয়ে দিত তা এখন আর শোনা যায় না। শোনা যায় কেবল গালিগালাজ আর হিংস্র চীৎকার। এই অশান্ত পরিবেশকে শান্ত করতে গ্রামে এল একদল শান্তিরক্ষক পুলিশ, আকাশ কাঁপিয়ে হাজির হল মিলিটারি ট্রাক।
গ্রাম এখন শুনশান। রাস্তার দখল নিয়েছে ভারি বুটের আওয়াজ। মিলিটারি লাঠির ঘায়ে বাঙালি অসমিয়া মুসলমান সবারই রক্ত ঝরছে প্রতিদিন। এই রক্তের কোন ভেদ নেই। সব মানুষের রক্ত আর চোখের জল মিলেমিশে নদী হয়ে গেল। এখন আর হিন্দু নেই, মুসলিম নেই, অসমীয়া বাঙালি নেই। সবাই নিপীড়িত মানুষ। এখন আর কোন মাংসই অবশিষ্ট নেই গায়েনের মরা শরীরে। পোকা, কৃমি, কীট মাছিরা চলে গেছে। চিল ও শকুনের সাথে বিদায় নিয়েছে মিলিটারি রুট মার্চ। মাঠে এখন আর দুর্গন্ধ নেই। শুধু পড়ে আছে গায়েনের শরীরের কয়েকটা হাড়। এই হাড়ে বাতাস পাক খায়। আশ্চর্য শব্দ হয়। সবাই বলে- গায়েন আবার বীণা বাজাচ্ছে মাঠে। এখন সবই শুনশান।গাছের পাতারাও চুপ করে গেছে। শুধু গভীর রাতে এক দীর্ঘশ্বাস সারা মাঠ জুড়ে বেজে ওঠে।
একদিন সকালে সবাই খুব অবাক চোখে চেয়ে দেখল অনেক মানুষ এসে হাজির হয়েছে মাঠে।ওরা গ্রামের মানুষের জন্য চিড়া দই কেরোসিন পুরনো কাপড়ের পোটলা নিয়ে এসেছে। আরও কত বাহারি জিনিস। রূপসী গাঁয়ের লোকেরা এসব সাত জন্মে দেখেনি। বর্গীরাম গায়ের ছবি তোলার জন্য কাঁধে ক্যামেরা ঝুলিয়ে হাজির হয়েছে চিত্র সাংবাদিকরা। রূপসী গাঁয়ের অগ্নিদগ্ধ পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে এসেছেন নেতা মন্ত্রী এম এল এ। বিভিন্ন এন জি ও শিশু ও মহিলাদের জন্য এনেছে রঙবাহারি জিনিস। ওরা সবাই গায়েনের কঙ্কালের গায়ে ফুলের মালা পরাল। ফুল দিয়ে মুড়ে দেওয়া হল চারপাশ।ধুপ ধূনা আর সুসজ্জিত মানুষের গায়ের গন্ধে সতেজ হয়ে উঠল জায়গাটা।গাঁয়ের লোকজনের সাথে কথা বলে নিজেদের জনদরদী ভাবমূর্তি তুলে ধরার আপ্রাণ চেষ্টা করতে লাগল কেউ কেউ।
বর্গীরামের কঙ্কালকে ঘিরে পরব লেগে গেল শহুরে লোকজনের। ভিড় হই হট্টগোলে কান পাতাই দায়। গায়েনের হাড়গোড় ঢেকে দেওয়া হল ফুল দিয়ে। ইতিমধ্যে গরীব মানুষদের দু চারটে ভাঙা ঘর মেরামতও করা হল।কিন্তু রূপসী গাঁয়ের মানুষদের কাছে ঘেঁষতে দেওয়া হল না কিছুতেই। ফুলে ফুলে আড়াল হয়ে থাকা গায়েনের মুখ থেকে সুস্পষ্ট গোঙানির আওয়াজ পেল কেউ কেউ। রাতের আঁধারে সে যেন প্রাণ ভয়ে চিৎকার করছে। কারা ওর গলা টিপে ধরেছে।
ফুলের উপর নতুন ফুলের আস্তরণ পড়ে আর পুরোনো ফুলগুলি পচে যায়। এই পচনের তাড়সে মাছি আসে। ভন ভন করে চারপাশে। মানুষের বুকে ধুকপুকানির তুফান বয়। বৈশাখের আকাশ বৃষ্টি নিয়ে আসে দু এক পশলা। পচা গন্ধ ঢেকে দিতে মাটির সোঁদা গন্ধ আসে।
একদিন গাঁয়ের লোকেরা লক্ষ্য করল শহরের একদল লোক বলা নেই কওয়া নেই গায়েনের কঙ্কাল ট্রাকে তুলে শহরে নিয়ে যেতে চাইছে। সেখানে মর্যাদার সাথে দাহ করা হবে। তাকে দেওয়া হবে শহীদের সম্মান। সেখানে মূর্তি বসবে তার। বর্গীরাম গায়েনের নামে রাখা হবে রাস্তার নাম। শহরের ধনী ব্যবসায়ীরা হাজার হাজার টাকা চাঁদা তুলে স্মৃতিরক্ষা কমিটি তৈরি করেছে। কঙ্কালটাকে ট্রাকে তুলতে তুলতে ওরা চিৎকার করছিল- বর্গীরাম গায়েন অমর রহে। গায়েন তোমায় ভুলিনি, ভুলবো না।
ঠিক তখনই বৈশাখের আগুন ঝরা বাতাস নিয়ে এল বরদৈশিলা, এই কালবৈশাখীর তান্ডব গায়েনের হাড়ের ভেতর ঢুকে , তার ফুসফুসের গলিত কোষ থেকে সুর বার করে আনছে। অথচ গায়েনের শরীরে কোন স্পন্দন নেই। বরদৈশিলার তের জোড়া পায়ের উন্মত্ত আওয়াজ মিশে যাচ্ছে সুরের সাথে।
কঙ্কাল চলে যাচ্ছে শহরের দিকে। এই সুর হারিয়ে যাবে গাঁ গঞ্জ মাটি থেকে। কারা খেত খামারের সুর ছিনিয়ে নিয়ে চলে যাচ্ছে বাজারের দিকে। কঙ্কালটা ট্রাকের উপর তুলে ধরেছে পাজামা পাঞ্জাবী পরা ঝাঁকড়া চুলের একটি ছেলে। ছেলেটি কাঁদছে। ওর সাথে তাল মিলিয়ে সবাই কাঁদছে। এই কান্না অভিনয়। গাঁয়ের মেঠো রাস্তাটুকু পেরিয়ে গেলেই ওরা আবার হেসে উঠবে।
বলরাম কাছাড়ি ছেলে, ভীষণ একগুঁয়ে আর রাগী। সে অনেকক্ষণ ধরে তামাসা দেখছিল। এবার উঠে দাঁড়াল। তার টানটান ঋজু শরীর থেকে ঠিকরে বেরুচ্ছে তেজ।কী একটা বলতে গিয়ে রাগে তার ভাষা হারিয়ে গেল। সুবীর মিত্র অনেককিছু বলব ভেবে বাড়ি থেকে এসেছিল। কিছুই বলতে পারল না সে। উথলে ওঠা আবেগে সে হাউমাউ করে কেঁদে ফেলল। শুধু রহিম মিয়াঁ তাঁর হাড় সর্বস্ব আঙুলগুলো মেলে ধরে বলল- খবরদার। আমরা কিছুতেই শহরে নিয়ে যেতে দেব না।
রহিমের আঙুল আর গায়েনের কঙ্কালের আঙুলে কোন ফারাক নেই। শুধু চারপাশের গাছপালা ঘাস পাথরের বুক থেকে গর্জে উঠল প্রতিধ্বনিত আওয়াজ- দেব না, দেব না, দেব না।
শহরের দিকে ফিরে গেল শূন্য ট্রাক। কঙ্কাল কাঁধে তুলে রূপসী গাঁয়ের মানুষেরা হেঁটে যেত লাগল শ্মশানের দিকে।
এখন সেই শ্মশানে বাজছে মৃত্যুর সুর, স্বজন বিয়োগের সুর।
অসমের সুপরিচিত লেখিকা অরূপা কলিতা পটঙ্গিয়ার জন্ম ১৯৫৬ সালে অসমের গোলাঘাটে। গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর এবং পি এইচ ডি। পেশায় টাংলা কলেজের অধ্যাপিকা ছিলেন। ২০১৬ সালে বিভাগীয় প্রধান পদে থাকাকালীন তিনি অবসর গ্রহণ করেন। উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ- মৃগনাভি, অয়নান্ত, মিলেনিয়ামের স্বপ্ন, মরুভূমিতে মেনকা এবং অন্যান্য, রাঙামাটির পাহাড়টি, ফেলানি ও অন্যান্য প্রভৃতি উপন্যাস ছাড়াও লিখেছেন মরিয়ম অস্টিন অথবা হীরা বড়ুয়া গল্পগ্রন্থ। এই গল্পগ্রন্থের জন্য তিনি ২০১৪ সালে তিনি সাহিত্য আকাদেমি পুরস্কার পান। এছাড়াও দেবকীর দিন গল্পের জন্য পেয়েছেন কথা পুরস্কার। ভারতীয় ভাষা পরিষদ পুরস্কার, প্রবীণা শইকিয়া পুরস্কার, অসম ভ্যালি লিটারেরী পুরস্কারে সম্মানিত এই সাহিত্যিকের গ্রন্থ ইংরেজি হিন্দি এবং ভারতের অধিকাংশ প্রাদেশিক ভাষায় অনুদিত হয়েছে। তাঁর লেখায় উঠে আসে অসমের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি। মধ্য ও নিম্নবর্গীয় মানুষের ক্ষতচিহ্ন, নারীর দ্রোহ ও প্রতিবাদ তাঁর সাহিত্যচিন্তাকে আলোকিত করেছে।

কবি, কথাসাহিত্যিক ও অনুবাদক
জন্ম ১৯৭২, পুরুলিয়ায়। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে স্নাতকোত্তর। দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশনে কর্মরত। প্রকাশিত গ্রন্থ এক ডজন। পেয়েছেন ত্রিবৃত্ত পুরস্কার মালীবুড়ো সন্মান সহ বেশ কিছু পুরস্কার ও সন্মাননা। কেতকী পত্রিকার সম্পাদনার সাথে যুক্ত।