ইরাবতী উৎসব সংখ্যা গল্প: চুপকথা । বিপুল দাস
`পুরা সান্নাটা থা। পুরে কি পুরে মহাল্লামে কোঈ আওয়াজ নহি থি।
উসকি বাদ ?
অচানক কঁহিসে রোশনি লহরায়ি। হমনে সোচা কি বিজলি গিরি। ফির মালুম পঢ়া কি উয়ো জিপগাড়িকা হেডলাইট।
জানি, থানা থেকে এসেছিল। কালুর দোকানের পেছনে গিয়ে সব মাল সিজ করে নিয়েছে। বিস্কুটের বয়াম, চায়ের কেটলি, কালুর ক্যাশবাক্স – সব বরবাদ করে দিয়েছে।
তুই থাম প্রকাশ। এসব মহল্লার সবাই জানে। সন্ধেবেলা বাজারের মাঝখানে ওরা নিতাইমাস্টারকে কুপিয়ে চলে গেল। বাজারে একটা মাছিও ছিল না। আমরা কালুর দোকানের পেছনে বসেছিলাম। সামনে দোকানের ঝাপ বন্ধ ছিল। পুলিশের জিপ তো পেছনের গলি দিয়ে ঢুকল। বাকিটা রামুকে বলতে দে। পয়সা খরচ করে বেল-এ ছাড়িয়ে এনেছি। পুরো হিস্ট্রি শুনতে দে ভালো করে। ফির ক্যা হুয়া ?
ফির … ফির
ঝুমকা গিরা রে
বাঞ্চোত, বললাম না চুপ কর। রামুকে বলতে দে। দু’পাত্তর খেয়েই মাতোয়ালা। আগে বাঢ় রামু।
তোরা তো বাটার গলি দিয়ে মিত্তালদের কারখানার পেছনে ভেগে গেলি। আমি শালা … আমিও পারতাম, লেকিন মেরা জুতা
জাপানি ?
ফের ! এক সেকেন্ড চুপ করে থাকতে পারিস না ? জুতোর কথা কী বলছিলিস রামু ?
চোখের উপ্রে লাইট পড়ল। ফির যখন লাইট বুজল, লাগল কি বিলকুল আন্ধা হয়ে গেছি। তখন কমলির কথা মনে পড়ল। কমলি ভি আমাকে কভি কভি বলত আমি নাকি আন্ধা।
কমলির কোনও খোঁজ পেয়েছিস ?
ফলপট্টির ভোলাবাবুর সঙ্গে ভেগে গেছে। আখুন জামসেদপুরে আছে।
ভোলাবাবু তো প্রত্যেক বার পুজোর আগে মহল্লা থেকে একটা করে বউ তুলে নিয়ে যায়। ভোলাবাবু ফিরে আসে, কিন্তু বউটা লা-পাতা হয়ে যায়।
পুজোয় চাই নতুন বউ
প্রকাশ, থাম। তা কমলি তোকে আন্ধা বলত কেন ?
আওর ভি বলত, গালি দিত।
হূঁ, মনে আছে। একদিন তুই বলেছিলিস, বিলাতি খাওয়া হয়েছিল সেদিন – তোর নাকি কী সব পব্লেম আছে। উয়ো সাপওয়ালা দওয়াই-এর কথা পুছ করেছিলি।
ইয়েশ, কভি কভি
মেরে দিল মে …
প্রকাশ, বাড়ি যা। আর একটুও খাবি না। এক ফোঁটা পেটে পড়লেই গুলজার ভর করে।
মজরুহ সুলতানপুরি, সাহির লুধিয়ানভি, শৈলেন্দ্র, কায়ফি আজমি …
ব্যস, এই নে, দুটো বাদাম খা।
আমাকে আর একটা হাফ দে না, প্লিজ, জাভেদ আখতার …
হ্যাঁ রামু, কভি কভি, কী হয় বল
এই শরীরটা যেন শীতকালের সাপের মত … অ্যায়সা লাগতা হ্যায়
প্রকাশ, চুপ। হ্যাঁ রামু, বল, শীতকালের সাপের মত
কমলি বহোত কোশিশ করত, লেকিন … একদিন সোচলম কি সুসাইড দিব। ফির ডর লাগল।
আরে ও রকম মাঝে মাঝে সবারই হয়। তুই ঝুটমুট ওসব ভাবছিস। কিন্তু রামু, একটা জিনিস আমরা বুঝতে পারছি না, আজকাল ডেইলি রাত্তিরে তুই ভ্যানওয়ালাদের বস্তিতে গিয়ে মেয়েছেলে টানাটানি করছিস। ভয় দেখাচ্ছিস। আমরা তোকে গাড্ দিয়ে রাখি বলে ওরা কিছু বলে না। না হলে মেরে পাট পাট করে দিত। বেল-এ আছিস, এখন আবার থানাপুলিশের ঝামেলা হলে কিন্তু মুশকিলে পড়ে যাবি। নুরুলদা আমাকে ডেকে তোকে সাবধান করে দিতে বলেছে।
সহি বাত। লেকিন … সেইদিন থানায় এমন গালি দিল, পিঠে লাথ মারল, কমলিকে নিয়ে বহোত গন্ধা বাত করল, ফির পুছ করল কি মহল্লামে মাওবাদী কওন হ্যায়। ফির বলল কি পিছে মোটা লাঠি ঘুসায় দিবে। বহোত মারল।
ইস্, ঠিক আছে, প্যান্ট পরে নে। তুই কী বললি ?
বাত করনেকা ফুরসত কাঁহা। তাজ্জব কি বাত, লাথ মারলে বুঝলাম কি বডি হিট হয়ে যাচ্ছে। গালি দিলে মালুম পঢ়ে কি কঁহি কুছ আওয়াজ, য্যায়সা … ফঁ স্ স্, ফির কমলিকে রেন্ডি বললে ইতনা গরমি, ইতনা গরমি …
উসকি বাদ ?
হমনে জোরসে চিল্লায়া … এ কমলি, আ যা
তুঝকো পুকারে মেরা প্যার, আ যা ।। দীপু, তুই আমাকে মারলি ! দোস্ত দোস্ত না রাহা, ঠিক আছে, আর কথা বলব না আমি।
এ কমলি, আ যা। দেখ তো মেরা করিশ্মা। শালা, হম কন্ট্রোল নেহি কর পা রাহা থা। তখন আমার এইখানে, ঠিক কানের নীচে একজন খুব জোরে ঘুসা মারল। আমার মাথার ভিত্রে ঘুমতে লাগল। লেকিন আহিস্তা আহিস্তা উয়ো এক নাগরাজ বন রাহা থা। ভুখা, হাজারো সাল কি ভুখ।
মনে হয় মার খেয়ে অজ্ঞান হয়ে এসব দুঃস্বপ্ন দেখেছিস। পুলিশের মার খেয়ে যদি এসব অসুখ সেরে যেত, তবে দওয়াই বিক্কিরি বন্ধ হয়ে যাবে।
জানি না, লেকিন শাম ঢলতেহি, যখন কোনও হেডলাইট আমার চোখে এসে পড়ে, শরীরে যেন আগ জ্বলে ওঠে। আগুনটা তলপেট হয়ে আরও নীচে নেমে গেলে আমি আর থাকতে পারি না। উয়ো টিভিওয়ালা সাপের মত … আঃ দীপু, টর্চ বন্ধ কর। চোখে বড় লাগে। এখন কেন আমাকে জাগাতে চাইছিস। এখন তো অনেক রাত। বুজা দে, শামা বুজা দে দীপু।
ওঠ, চল আমার সঙ্গে।
কোথায় ? বৃষ্টি, বারিশ হচ্ছে তো।
ইয়ে রাত ভিগি ভিগি … মান্না ডে-লতাজি, ফিলিম চোরি চোরি
চল, ভোলাবাবুদের সঙ্গে দেখা করার এই তো সময়।
জন্ম শিলিগুড়িতে। সেখানেই বড় হয়ে ওঠা, লেখাপড়া, চাকরি। নদী, পাহাড়, ডুয়ার্সের অরণ্যঘেরা শহরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, জনজাতির বৈচিত্র্যময় সংস্কৃতি তাঁকে চিরকাল মুগ্ধ করেছে। মূলত সেখান থেকেই তাঁর লেখার উপাদান সংগৃহীত। উপন্যাস, ছোটগল্প ছাড়াও লিখেছেন রম্যরচনা, শিশু-কিশোরদের জন্য লেখা। রয়েছে একটি কবিতা সংকলনও। তাঁর প্রথম সাড়াজাগানো গল্প ‘অ্যান্টিবায়োটিক’ প্রকাশিত হয় অধুনালুপ্ত ‘পাহাড়তলি’ পত্রিকায়। প্রথম উপন্যাস ‘লালবল’ প্রকাশিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সুধী পাঠকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। তাঁর লেখা লিটল ম্যাগাজিন এবং বাণিজ্যিক পত্রিকায় সমানভাবে আদৃত। প্রকাশিত উপন্যাসের সংখ্যা ষোলোটি, রয়েছে ন’টি ছোটগল্প সংকলন, দশটি কিশোর উপন্যাস। প্রকাশিত গল্পের সংখ্যা তিন শতাধিক।
বাহ!চমৎকার লেখা।জোরালো ভাষা।
হীরক সেনগুপ্ত