| 7 ফেব্রুয়ারি 2025
Categories
উৎসব সংখ্যা ১৪৩১

উৎসব সংখ্যা: পূজা মৈত্র’র কবিতা

আনুমানিক পঠনকাল: 2 মিনিট
০৬/০৯/১৭
 
 
“আবার এসো” আমি বেরোবার আগে
মৃদু কন্ঠে বলেছিলেন কাকিমা
ঘাড় হেলাতেই দেখি,সোদপুরের ফ্ল্যাটে তখন 
সকালের মায়াবি আলো খেলা করছে
 
অপরাজিতার বিয়েতে আসবো কথা দিয়েও
আসতে পারিনি আকাশ ভাঙা বৃষ্টি
আরো কয়েকবার আসবো ভেবেও
আসা হয়ে ওঠেনি তবে কাকিমার শরীরের খবর
নিয়েছি নিয়মিত
 
এবার এলাম যখন ঘরটা একই রকম আছে
কমপ্লেক্সের বাইরের ওষুধের দোকান,দারোয়ান
এমনকি ফ্ল্যাটের দেওয়ালে ঝোলা দিশা আইয়ের ক্যালেন্ডার ঠিক একই ভাবে হাওয়ায় উড়ছে
 
তবে ঘরের ওষুধের বাক্স,পায়ের ক্রেপ ব্যান্ডেজ
এসবের সাথে ক্যালেন্ডারটার প্রয়োজনও
আজ কাকিমার নেই
আবার আসাটা অনেক সময় ঠিক আসা হয়ে ওঠেনা
 
 
 
 
 
 
একান্ত বৃষ্টি যাপন
                          
 
মনের মধ্যে বন্দী আছে পাখি
বৃষ্টি নামে ডেকেছিলাম যাকে
এখনো যখন একলা ঘরে থাকি
বুকের ভিতর অঝোর বৃষ্টি নামে
 
ভালোবাসার ভণিতা ছিল কিছু
কিছুটা ছিল অনুরাগের ভুল
ভুলগুলো সব বরফ জমে গিয়ে
নদী ভাঙ্গে হৃদয়পাড়ের কুল
 
ছেড়ে যাকে দিতেই হবে জানি
বৃথা স্বপ্ন বুনি তাকেই নিয়ে
তাকেই আবার বৃত্ত মাঝে টানি
পেতে চাই তাকে সব হারিয়ে
 
ডানা মেলে উড়েই গেছে পাখি
অন্য ডাল সবুজে গেছে ছেয়ে
বৃষ্টি তবু আজো নেমে আসে
চাওয়া পাওয়ার হিসাব মুছে দিয়ে
 
 
 
 
 
 
শুভ্রাংশু,তার বউ আর কবিতা সন্তানেরা
                                                        
 
শুভ্রাংশু তুমি কবিতা চেন না
কবিতা অবশ্য না চিনলেও হয়
রাস্তায় হেঁটে গেলে যেকটি কুকুর মেলে বর্ষায়
কবির সংখ্যা গাণিতিক হিসাবে তার থেকে একটি বেশি হয়
এমন সরল হিসাব শিখে গেলে
কবিতা চিনতে লাগে না কারো
 
অবশ্য আমিও চিনিনা অনেক কিছুই
হাড়ি,কড়াই,বটি আর খুন্তিরা সব
সিলেবাসের বাইরেই পড়ে থাকে বেবাক
তুমি-ই তখন হাত পুড়িয়ে রান্না কর
আর বন্ধুরা বলে-ভাগ্য করে বউ পেয়েছিলি মাইরি!
সেকথা আমি গায়ে মাখিনা
তার থেকে চট করে বসে পড়ি লেখার টেবিলে
আর একটি নতুন কবিতা লিখব বলে
 
কবিতারা বীজ হয়,চারা হয়,শিকড় মেলতে থাকে
আমার সারা শরীর দিয়ে
কবিতা্দের মা হয়ে যাই আমি প্রতিরাতে
তুমি চাইলেও এতগুলি সন্তান দিতে পারতে না আমায়
জানোই আমার মা হবার বাতিক আছে
আমার সারা গায়ে লেগে থাকে ধূপের গন্ধ
যেমনটি হয় সমস্ত সাধিকার
আর তুমি পূজার ছলে সরে যাও নীরবে
 
শুভ্রাংশু কী করছে আজ? কেমন আছে?
প্রশ্ন করে পাঠকেরা
তখন-ই প্রসববেদনা উঠে জন্ম নেয় আর একটা কবিতা
তাদের বাবা তাদের গায়ে হাত বুলায় না কখনো
তবুও জন্মায় তারা যেমনটি জন্মেছিলেন
এক মেষপালক দুই সহস্রাব্দ আগে
 
তাদের খোঁজে যখন রাজার দূত আসে
আমার একান্ত পুরুষ বিরক্ত অধিকারবোধে বলে- 
আজ কবিতা জন্মাবে না
 
শুভ্রাংশুর বউ আজ ভারী অসুস্থ।
 
 
 
 
 
 
সন্ধান
 
 
তোমাকে খুঁজে ফেরা
অসংখ্য অকবিতার ভিড়ে
আঙুল দিয়ে চিনে
কবিতা পাওয়ার মতো
 
তাই যতবার খুঁজি
কিছু আবর্জনার সাথে
পাই ছাই
পেয়েও ফস্কাই
প্রতিবার নতুন করে
 
তবু খুঁজে যাই 
দুর্লভ তোমায়
না পেলেও বলি 
ভাল থাকো
 
 
 
 
 
দুই লাইনের ৫টা কবিতা
 
 
সক্ষমের প্রাপ্য আটকানো
অক্ষমের ভ্রান্তিবিলাস 
 
নক্ষত্রেরা ঝরে যায় বলে
উপগ্রহ হতে চাওয়া বোকামি
 
গ্রহনীয় বলেই সমস্ত কষ্ট
বুক পেতে নেবার বিধান নেই
 
তুমি সরলরেখা বলেই
ভাগ্য আমাকে সমান্তরালে রেখেছে
 
নিরুদ্দিষ্টের সন্ধানে লেখা চিঠিরা
বন্দরে গিয়ে গন্তব্য ভুলে যায়
 
 
 
 
 
 
error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত