ঢাকের বাদ্য না বাজলেও শরতের আকাশে সাদা মেঘের ভেলা, শুভ্র কাশফুল কিংবা ভোরে ফোটা শিউলি জানান দিচ্ছে পূজো আসছে।
ফ্যাশন হাউসগুলোতেও তাই শুরু হয়ে গেছে নতুন পোশাকের তোড়জোড়। পোশাক তৈরি ও বিপণন প্রতিষ্ঠানগুলো বরাবরের মতোই পুজো সামনে রেখে বিশেষ রং ও নকশা নিয়ে হাজির। এর সঙ্গে জুড়ি হিসেবে আছে রকমারি গয়না ও প্রিয়জনকে দেওয়ার জন্য বাহারি সব উপহার থেকে শুরু করে অন্দরসজ্জার নানা উপকরণ।
পূজোর বাজারে বর্ণিল পোশাকের মেলায় কোন হাউজ কী কী রেখেছেন তাদের আয়োজনে, কেমন হবে সেসবের নকশা, রঙ, কাটিং এসব জানার আগ্রহ তো রয়েই যায় তাই না? চলুন তবে জেনে নিই এবারের পূজোয় আয়োজনে রাপূর্না’স বুটিক হাউজের সাত-সতেরো। ৩৩ এ সাউথ সিঁথির মোড়ে রাপূর্না’স বুটিক হাউজ গড়ে ওঠার পেছনের গল্পটা একটু ভিন্ন। পরিবারের সঙ্গে বিষ্ণুপুর বেড়াতে গিয়ে বালুচরি তাঁতিদের দুঃখ দেখে তেত্রিশটা শাড়ি কিনে নিয়ে এলে কাকা খানিকটা রাগ নিয়েই বলেছিলেন, এগুলো এখন বিক্রি করো। কাকার সেই কথায় জীবনের মোড় ঘুরে গিয়েছিল যার তিনি বিপাশা ঘোষাল।
বালুচরি শাড়ি বোনা তাঁতিদের আশির্বাদ এবং মায়াঘেরা শাড়ি নিয়েই খুলেছিলেন রাপূর্ণা’স বুটিক হাউজ। সেই থেকে হাঁটি হাঁটি পা পা করে সুনাম ও সাফল্যের সাথে দীর্ঘদিন ধরে এগিয়ে চলা রাপূর্না’স বুটিকের কর্ণধার বিপাশা ঘোষাল জানালেন এবারের পূজার আয়োজন নিয়ে।
তিনি জানান, পূজো মানেই একরাশ আনন্দ আর সেই আনন্দের প্রতিচ্ছবিই যেন ভাসে কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী, স্বামী-স্ত্রী থেকে শুরু করে সবার শাড়ি, পাঞ্জাবি, সালোয়ার কামিজসহ যেকোন নতুন বসনের কাট-ছাঁট নকশার বাহারে। সময়ের হাওয়ায় ওড়ে পরিবর্তনের সুর, গায়ে লাগে আধুনিকতার ছোঁয়া। তাই রাপূর্নার পূজার পোশাকে আধুনিকতার সঙ্গে বাঙালিয়ানার মিশেলে যোগ হয়েছে সমকালীন নান্দনিক সব নকশা।
সব বয়সী নারী পুরুষের জন্য রয়েছে বর্ণিল শাড়ি পাঞ্জাবি, বাহারি রঙ নকশার সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, লং কামিজ, টপস, পালাজ্জো,পাঞ্জাবি, পায়জামা। পুজোর আভিজাত্য ও গরম আবহাওয়ায় আরামের কথা মাথায় রেখেই এসব পোশাকের কাপড় হিসেবে বেছে নেয়া হয়েছে, সিল্ক, রেয়ন, সার্টিন, শিফন, লিলেন, কটন ও ভয়েল। এসব কাপড়ে স্থান পেয়েছে ফ্লোরাল মোটিফ, মিরর ওয়ার্ক, এমব্রয়ডারি ও ঐতিহ্যবাহী সিলোটির নকশা। যে শাড়ির জন্যে রাপূর্না বুটিকের জন্ম সেই বুটিক হাউজে পূজায় বালুচরি শাড়ি তো থাকবেই সঙ্গে থাকছে হ্যান্ডেলুম, হ্যান্ড পেইন্ট সিল্ক, কাঁথা স্টিচ, গুজরাটি স্টিচ, তসর সিল্কের শাড়িও।
বিপাশা ঘোষাল আরো জানান, রাপূর্ণা’স এবছর পূজায় গাঢ় রঙের ওপর বেশি জোর দিয়েছে কেননা এইবার পুজোতে কমলা, সবুজ, লাল এই রকম গাঢ় রঙগুলোই বেশি চলবে বলে ধারণা করছেন। এ বছর প্রথম থেকেই চান্দেরি হ্যান্ডলুম সিল্ক সব থেকে বেশি চলছে। পূজায় চান্দেরি হ্যান্ডলুম সিল্কের অনেক রকম কালেকশান থাকছে। এ বছর আমরা বিশেষ নজর দিয়েছি কাপল সেটগুলোর প্রতি। আমার মনে হয় এ বছর পূজায় কাপল সেটগুলোর চাহিদা থাকবে সবচেয়ে বেশি। তাছাড়া কুর্তি, প্লাজো সেট, ওড়না সমেত সালোয়ার কুর্তা ও পা পর্যন্ত গাউন ধরনের কুর্তি বেশি ভালো চলবে। আর মেয়েদের শাড়ি, কুর্তির জুড়ি হিসেবে রাপূর্নায় গহনা তো আছেই। পূজা ভাবনার সাথে মিল রেখে বয়স্ক, তরুণীরা সবাই আজকাল যেমন গহনা পছন্দ করেন এই হাউজের সংগ্রহে পোশাকের রঙের সাথে মিলিয়ে হালকা ভারী সেসব রকমের গহনাই আছে। তবে পূজার কথা মাথায় রেখে জার্মান সিলভার এর গয়না, স্টোন, কাপড়, বিডসের গয়নার দিকে বেশি নজর দিয়েছে বলেও জানান বিপাশা ঘোষাল। । এছাড়া কিছু গহনার নকশায় আঁকা হয়েছে দূর্গার মুখ,দূর্গার পরিবার, পেঁচা, ওঁ ইত্যাদি।
চারপাশে সাজ সাজ রবে শুরু হয়ে গিয়েছে পূজার কেনাকাটার ধুম। রাপূর্নার পোশাক কিংবা গহনা কিনতে পারবেন স্বশরীরে হাজির হতে পারেন ৩৩ এ সাউথ সিঁথির মোড়ে বিপাশা ঘোষালের দোকানে কিংবা কিনতে পারেন রাপূর্নার অনলাইন পেজ থেকেই।
আর দরদাম? শাড়ি ১৫০০ থেকে ১২৫০০, কুর্তি শুরু ৪০০ থেকে, কুর্তি প্লাজ্জো সেট ৭৫০ থেকে, গহনা ৩০ টাকা থেকে। দেশের ভেতর অনলাইন ডেলিভারী একদম ফ্রি আর দেশের বাইরের ডেলিভারী সেও আপনার হাতের নাগালেই। যেকোন সময়, যে কোন দেশ থেকেই কিনতে পারবেন রাপূর্নার যেকোন পসরা। তবে আর দেরী কেন? বেড়িয়ে পড়ুন পুজোর কেনাকাটায়।
রাপূর্না’সর ওয়েবসাইট www.rapurnas.com
যোগাযোগ: রাপূর্না’স বুটিক হাউজ
৩৩ এ সাউথ সিঁথির মোড়, কলকাতা
মোবাইল: 9830289732
পোশাক সৌজন্য: রাপূর্না’স
মডেল: লিচ্ছবী, ঈশিকা, তিয়াস