ফ্লিম রিভিউ: অভিনয়ের দাপটেই বর্ষসেরা ছবি ৮৩
ছবি- ৮৩
পরিচালক- কবীর খান
অভিনেতা-অভিনেত্রী- রণবীর সিং, দীপিকা পাড়ুকোন, জিভা, সাহিল খাট্টর, চিরাগ পাতিল প্রমুখ
গল্প- ১৯৮৩ সালটি ভারতের ইতিহাসে এক গর্বের বছর, প্রথম ভারতে কাপ নিয়ে আসার স্বপ্নয়ুগের ক্রিকেট দুনিয়ার সফর আরও একবার পর্দায়, কীভাবে মানুষের বিশ্বাস জয় করে, সকলের আস্থা বজায় রেখে অসম্ভব শব্দটিকে উপেক্ষা করে দেশের বুকে কপিল দেব ও তাঁর টিম প্রথম বিশ্বকাপ জয় করেছিল, সেই গল্পই ছবির পর্দায় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তুলে ধরা হল ৮৩ ছবিতে, এক কথায় বলতে গেলে এ যেন এক জীবন্ত অধ্যায়ের রি-টেক।
অভিনয়- ছবির মূল কেন্দেরই রয়েছে অভিনয়। ছবির পোস্টার মুক্তি থেকে শুরু করে কেবল একটাই নাম সকলের মুখে মুখে ফিরেছিল, তা হল কপিল দেব লুকে রণবীর সিং। যেমন লুক, ঠিক তাঁর তেমনই অভিনয়ের ধাঁর, দাপটের সঙ্গে একের পর এক দৃশ্যে যেভাবে তিনি কপিল দেবের ভূমিকায় নিজেকে ফুঁটিয়ে তুলেছেন, কয়েক মুহূর্তের জন্য হলেও ভূলে যেতে হয়, চরিত্রটি খোদ কপিল দেব নয়। কেবল তিনি নন, বরং গোটা টিমের সকলকে ঠিক যেভাবে নিজ নিজ চরিত্র ফুঁটিয়ে তুলেছেন এই ছবিতে, তা এক কথায় প্রশংসার দাবিদার।
চিত্রনাট্য- চিত্রনাট্যের ক্ষেত্রে সবার আগে যা বলতে হয়, তা হল রিসার্চ, ভিষণ রকমাবে বিস্তারিত রিসার্চেরল ফল ছবি ৮৩, তা পরতে-পরতে পরিচালক প্রমাণ করেছে ছবিতে। প্রতিটা গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতই ব্যবহার করা হয়েছে আসল ছবি। যা প্রমাণ করে যে কতটা যত্নের সঙ্গে এই ছবিকে বোনা হয়েছে। পাশাপাশি আরও এক গুরুত্বপূর্ণ দিক হল ছবির মূল লক্ষ্য। ছবির শুরুতে দেখানো হয় পাসপোর্ট তৈরি করা হচ্ছে, যা থেকে দর্শকের সঙ্গে প্রতিটা চরিত্রে পরিচিতি ঘটে। এরপরই শোনা যায় সমালোচনা, তা প্রমাণ করে এই ছবি কেবল কাপ জয়ের নয়, বরং সম্মান জয়ের গল্পই তুলে ধরবে।
সিনেমাটোগ্রাফি- সিনেমাটোগ্রাফি ঠিক কেমন, তা প্রমাণ করে ছবিটি নিজেই। কারণ এই ছবির সঙ্গে জড়িয়ে থাকা প্রতিটা ফ্রেম ঠিক কতটা পার্ফেক্ট, তা বোঝানোর জন্যই একাধিক জায়গাতে ব্যবহার করা হয়েছে আসল ছবি, যা এক কথায় চমকে দেখে দর্শকদের।
পরিচালনা- পরিচালনা নিয়ে যদি বলতে হয়, তবে এই ছবিতে এক পার্ফেক্ট ব্যালন্স পাবে দর্শকেরা। যদি কেউ ভেবে থাকে খেলা নিয়ে ছবি, নাও ভালো লাগতে পারে, তবে তাঁদের জন্য রয়েছে টানটান উত্তেজনা, আগেব আর ফ্লিমি ড্রামা, ঠিক একইভাবে ব্যালন্স করে রাখা হয়েছে খেলার কিছু বিশেষ বিশেষ সিক্যুয়েন্স। যা দর্শকের মনোরঞ্জন করতে ও মনোসংযোগ বজায় রাখতে সক্ষম। এক কথায় বলতে গেলে এই ছবি দেখলে কোনও দিক থেকেই দর্শকদের মনে হবে না পয়সা নষ্ট, বরং তার বিনিময় অনেকটা প্রাপ্তি।
সমালোচনা- বছরের সেরা ছবি বললে এই ছবিকে খুব ভূল বলা হবে না। কারণ একটাই, এই ছবি ঘিরে জড়িয়ে থাকা একাধিক চমক, যা সাধারণত একটি সিনেমা থেকে দর্শকেরা আসা করে থাকে, তা সবটাই মিলবে। আবেগ ঢালতে গিয়ে ছবিকে অতিরঞ্জিত করে তোলা, বা ইতিহাসের পাতায় ভেসে কেবলই খেলার জগতের ছবি তুলে ধরা নয়, বরং এক যুদ্ধ, কঠিন লড়াই জেতার স্বপ্ন ও বাস্তবের ছবি তুলে ধরেছে এই সিনেমা। যা এক কথায় বলতে গেলে দর্শকদের বেশ ভালো লাগে।