ঋণী
অনেকটা পথ পেরিয়ে এসেও
নতুন প্রজন্মের ভোর দেখা বাকী।
দাতা গ্রহীতার অবিরাম দানেও
কিছু কুঁড়ি এখনও অপ্রস্ফুটিত,
মাটি ও ঘাসের উপর পড়া শিশির তাদের কথা শুনতে ব্যর্থ।
অপরিকল্পিত ঝড়ে নুয়ে পড়া বৃক্ষ বিষাদ ভুলে গিয়ে আবার দেখে নতুন ভোর,
সময় রুদ্ধ হওয়া কণ্ঠস্বর
হঠাৎই ভেসে ওঠে বাতাসের তরঙ্গে,
আয়ুর শেষ প্রান্তে নিঃশেষিত শ্বাস
কবিতার স্তবকের কোনো শেষ দেখেনা।
জীবনের শব্দধ্বনির কাছে ঋণ থেকে যায় আমাদের সবার।
মানুষের চোখ
মেধাবী অক্ষরগুলো
পথ হেঁটে যায় পাবকের
ভেতর দিয়ে মুগ্ধতা ছড়িয়ে,
ছন্দময় অন্তরা
পরিবর্তিত হয়ে সঞ্চারীর
আঙ্গুল স্পর্শ করতেই
মহোৎসবের প্রতিধ্বনিতে
জেগে ওঠে বিপুল কাশবন।
সমুদ্রের নয়ন মেঘের মধ্যে
এঁকে দিয়ে যায় বিস্তৃত এক রেখা,
যে রেখাকে লঙ্ঘন করতে
দরকার পড়বে
সেই চেনা অনলের।
সময়কে কেড়ে নিয়ে
চলে যুগের পর যুগ অমৃতসন্তানেরা,
ভাঙ্গা আলপথ প্রতীক্ষায় থাকে, ঘুমহীন জেগে থাকে
একা, মানুষের চোখ।
প্রত্যয়
পুরাতন বছরের সমাপ্তিতে যেন লেগে থাকে সকালের সেই সূর্যমুখী হাসি,
খেতমজুরদের শস্যে ভরা সবুজ মাঠ।
তবুও বিষন্নতার প্রতিবাদ মিছিলে স্তব্ধ শেষ বছরে লেগে থাকে ডিসেম্বরের গভীর উষ্ণতা,
শেষ বিকেলের আলো…
নষ্ট অর্ধপ্রস্ফুটিত কুঁড়ি হয়তো ফিরে আসবে নতুন বছরের কল্পতরু গাছ হয়ে,
হটকারী হাত
আগুন লাগাতে ভীত হয়ে বৃষ্টি মাখবে দু-চোখে।
কারুর প্রেম নির্জনে ঘুরবে
পলাশের বনে
প্রেম বাঁচবে প্রতিবাদে,
শত কুঁড়ি হয়ে অপরাজিতার আলোয় –
যেখানে মৃত্যু হেরে গিয়ে জীবনকে ফের ভালোবাসবে।
কবি পরিচিতি -জন্ম -১৭ই জুন, ১৯৯২। শৈশব কেটেছে দক্ষিণ কলিকাতাতেই। বর্তমান ঠিকানা -ব্যারাকপুর(উত্তর কলিকাতা )। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক। ‘কবি সম্মেলন’,’তত্ত্বমসি’,’উড়িধান’,’কলেজ স্ট্রীট’,’পান্থপিয়াস’,’বিকল্প নির্মাণ’প্রমুখ অসংখ্য লিটল ম্যাগাজিনে লেখা প্রকাশিত হয়েছে।
নেশা -বই পড়া, আঁকা, গান শোনা।