| 27 জানুয়ারি 2025
Categories
অনুবাদ অনুবাদিত গল্প

অনুবাদ: এ্যালকেমিস্ট । পাওলো কোয়েলহো (পর্ব-৩)। সায়মা মনি

আনুমানিক পঠনকাল: 6 মিনিট

পৃষ্ঠা ২১

প্রত্যেকের যেন খুব পরিষ্কার ধারণা আছে অন্যদের কেমন ভাবে তাদের নিজেদের জীবন কাটানো উচিত সেই বিষয়ে, কিন্তু কারো নিজের জীবন কিভাবে কাটানো উচিত সেই বিষয়ে কোন ধারণা নেই।

সে সিদ্ধান্ত নিল তার মেষপাল মাঠের ভেতর দিয়ে আবার অনুসরণ করার আগে, সূর্য আকাশে আরো একটু নিচে ডুব দেয়ার আগে পর্যন্ত অপেক্ষা করবে। এখন থেকে তিনদিন পরে, সে ব্যবসায়ীটির কন্যার সাথে থাকবে।

সে যে বইটি কিনেছিল সেটি পড়তে শুরু করলো।একদম প্রথম পৃষ্ঠায় একটি মৃতের সৎকারের বর্ণনা দেয়া আছে।আর যাদের নাম সেখানে অন্তর্ভুক্ত ছিল, সেগুলো উচ্চারণ করা খুব কঠিন ছিল।যদি সে কখনো একটি বই রচনা করে, সে ভাবল, সে একই সময়ে একজন মানুষকে উপস্থাপন করবে, যাতে একজন পাঠককে স্মৃতিতে অনেকগুলো নাম মনে রাখতে পারা নিয়ে ভয় পেতে না হয়।

অবশেষে যখন সে যা পড়ছে তাতে মনোযোগ দিতে পারলো, সে বইটা আরো পছন্দ করতে শুরু করলো, সৎকারটি একটি তুষারাবৃত দিনে হয়েছিল, আর সে এই ঠান্ডা হয়ে যাওয়ার অনুভূতিকে স্বাগত জানালো।যখন সে আরো পড়ল, একজন বৃদ্ধলোক তার পাশে এসে বসলো আর একটি কথোপকথন শুরু করার চেষ্টা করলো।

‘তারা কি করছে?’ বৃদ্ধ লোকটি প্লাজার লোকজনের দিকে আঙ্গুল তুলে জিজ্ঞেস করল।

 

পৃষ্ঠা ২২

‘কাজ করছে,’ ছেলেটি শুষ্ক কন্ঠে উত্তর করল, এমন দেখাল যেন সে তার পড়ায় মনোযোগ দিতে চাইছে।

আসলে, সে তার মেষপাল ভাগ করার কথা ভাবছিল ব্যবসায়ীর কন্যার সামনে, যাতে মেয়েটি দেখতে পায় যে বালকটি এমন একজন মানুষ যে কঠিন একটা কাজ করার সামর্থ্যও রাখে। সে ইতিমধ্যে দৃশ্যটি কল্পনা করে ফেলেছে বহুবার, প্রতিবার, মেয়েটি আকৃষ্ট হয়ে যায় যখন ব্যাখ্যা করে বোঝায় যে মেষগুলো পেছন থেকে সামনের দিকে ভাগ করতে হবে।তার মেষ ভাগ করার সাথে সম্পর্ক তৈরি করে এমন আরো কিছু ভাল গল্প মনে করার চেস্টা করল। যার বেশরভাগই সে বইয়ে পড়েছে, কিন্তু সে এমনভাবে বলত যেন সেগুলো তার ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতার গল্প।মেয়েটি কখনো পার্থক্য বুঝতে পারতো না, কারন মেয়েটি পড়তে পারে না।

এরই মধ্যে, বৃদ্ধ লোকটি তার সাথে কথা বলার চেষ্টা করে যেতে থাকল। সে বলল যে সে ক্লান্ত আর তৃষ্ণার্ত, আর ছেলটির মদের গ্লাস থেকে এক চুমুক খেতে চাইল। ছেলেটি তাকে তার বোতল থেকে পান করতে বলল, এই আশায় যে বৃদ্ধ লোকটি এবার তাকে একা থাকতে দিবে।

কিন্তু বুড়ো লোকটি কথা বলতে চাইল, আর সে ছেলেটি কি বই পড়ছে তা জানতে চাইল।ছেলেটি অভদ্র হতে প্রলুব্ধ হল, আর অন্য একটা বেঞ্চে গিয়ে বসল, কিন্তু তার বাবা তাকে বড়দেরকে সম্মান করতে শিখিয়েছেন।

 

পৃষ্ঠা ২৩

তাই সে তার বইটা লোকটির দিকে ধরে রাখলো- দুইটি কারনে: প্রথমত সে, নিজে, নিশ্চিত ছিলনা কিভাবে শিরোনামটা উচ্চারণ করতে হবে; আর দ্বিতীয়ত যদি বৃদ্ধ লোকটি পড়তে না পারে, সে হয়তো লজ্জা পাবে আর তার নিজের ইচ্ছায় সে বেঞ্চটা বদলে বসবে।

‘উমম…’ বৃদ্ধ লোকটি বলল, বইটি সব দিক দিয়ে দেখে, যেন একটা অদ্ভুত জিনিস দেখছেন। ‘ এটা একটা গুরুত্বপূর্ণ বই, কিন্তু এটা সত্যিই খুব বিরক্তিকর।’

ছেলেটি হতবাক হয়ে গেল।বৃদ্ধ লোকটি পড়তে পারে, আর তার এই বইটি ইতিমধ্যে পড়া আছে, আর বইটি যদি বিরক্তিকর হয়, বুদ্ধ লোকটি যেহেতু বলল, ছেলেটির এখনও এই বইটি বদলে অন্য একটা বই নেয়ার সময় আছে।

‘এটি একটি বই যা পৃথিবীর অন্যান্য বেশিরভাগ বইয়ে যা আছে সেই একই কথা বলে, বৃদ্ধ লোকটি বলে যেতে থাকল। ‘ এটা মানুষের নিজের ভাগ্য নিজের বেছে নেয়ার অক্ষমতার বিবরণ দেয়। আর এটা শেষ হয় এই বলে যে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিথ্যাকে সবাই বিশ্বাস করে।’

‘পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মিথ্যা কি?’ বালকটি সম্পুর্ন হতবাক হয়ে জিজ্ঞেস করল।

‘এটা হলো এই: যে আমাদের জীবনের একটা নির্দিষ্ট সময়ে এসে আমরা আমাদের উপর ঘটে যাওয়া বিষয়ের ওপর নিয়ন্ত্রন হারাই, আর আমাদের জীবন ভাগ্য দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হতে শুরু করে। সেটাই হলো পৃথিবীর সবচেয়ে মহান মিথ্যা। ‘

 

পৃষ্ঠা ২৪

‘এমনটা কখনও আমার সাথে ঘটেনি,’ বালকটি বলল। ‘তারা আমাকে একজন পাদ্রী বানাতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আমি একজন মেষপালক হব বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।

‘অনেক ভাল,’ বৃদ্ধ লোকটি বললেন। কারন তুমি সত্যিই ভ্রমন করতে পছন্দ কর।’

‘তিনি জানতেন আমি কি ভাবছিলাম,’ বালকটি নিজে নিজে বলছিল। বৃদ্ধ লোকটি এর মধ্যে পাতা উল্টে বই দেখছিল, মনে হচ্ছিল তিনি বইটা মোটেও ফেরত দিতে চাননা।বালকটি খেয়াল করল যে লোকটি অদ্ভুত কাপড় চোপড় পরে ছিল। তাকে দেখতে আরব দেশের লোকের মত দেখায়, যা ওই অঞ্চলের জন্য অস্বাভাবিক নয়।আফ্রিকা কয়েক ঘন্টার দুরত্বে ছিল তারিফা থেকে, যে কাউকে একটি নৌকায় করে শুধু একটি সরু নদী পার হতে হয়।আরবদের প্রায়ই এই শহরে দেখা যায়, কেনাকাটা করতে আর দিনের মধ্যে কয়েকবার তাদের অদ্ভুত প্রার্থনা জপ করতে দেখা যায়।

ছেলেটি জিজ্ঞেস করল, ‘ তুমি কোথা থেকে এসেছ?’
‘অনেক জায়গা থেকে’।
‘কেউ অনেক জায়গা থেকে আসতে পারে না,’ বালকটি বলল।
‘আমি একজন মেষপালক, আর আমি অনেক জায়গা হয়ে এসেছি, তবু আমি একটি জায়গা থেকে এসেছি- একটি শহর যা একটি পুরনো প্রাসাদের পাশে রয়েছে। যেখানে আমি জন্মেছি।’

 

পৃষ্ঠা ২৫

‘ঠিক আছে তাহলে, আমরা এটা বলতে পারি যে আমি সালেম এ জন্মগ্রহণ করেছি।’

বালকটি জানতো না যে সালেম কোথায়, কিন্তু সে তা জিজ্ঞেস করতে চাইলো না, এই ভয়ে যে তাকে অজ্ঞ দেখাবে।সে একটু কিছু সময়ের জন্য প্লাজায় লোকজনের দিকে তাকাল, তারা আসছে আর যাচ্ছে, আর সবাইকে ভীষণ ব্যস্ত দেখাচ্ছে।

‘তো সালেম কেমন?’ সে জিজ্ঞেস করল, কিছু সুত্র পাওয়ার চেষ্টা করছিল।

‘এটা সবসময় যেমন ছিল তেমনই আছে ।’

‘এখনও কোন সুত্র পাওয়া গেল না।তবে সে এটা জানত যে সালেম আন্দালুসিয়ায় কখনও ছিল না।যদি এটা থাকত, সে ইতিমধ্যে এর সম্পর্কে কিছু শুনত!’

‘আর তুমি সালেমে কি কর?’ সে জোর দিয়ে জানতে চাইল।

‘সালেমে আমি কি করি?’ বৃদ্ধ লোকটি হেসে উঠল। ‘হুম, আমি সালেমের রাজা!’

মানুষ অদ্ভুত কথা বলে, বালকটি ভাবল।মাঝে মাঝে ভেড়াগুলোর সাথে থাকা বেশ ভাল, যারা কিছু বলে না।আরো বেশি ভাল একজন মানুষের জন্য তার বইগুলো নিয়ে একা থাকা।তারা তাদের আশ্চর্যজনক গল্পগুলো সেই সময়ে বলে যখন তুমি তা শুনতে চাও।


আরো পড়ুন: অনুবাদ: এ্যালকেমিস্ট । পাওলো কোয়েলহো (পর্ব-২)। সায়মা মনি


পৃষ্ঠা ২৬

কিন্তু যখন তুমি লোকজনের সাথে কথা বলতে শুরু করেছো, তারা এমন অদ্ভুত কিছু বলে যে তুমি বুঝতে পারো না কি করে কথা চালিয়ে নেয়া যেতে পারে।

‘আমার নাম মেলচিজডেক,’ বৃদ্ধ লোকটি বলল। ‘তোমার কয়টি ভেড়া আছে?’

‘যথেষ্ট,’ বালকটি বলল।সে দেখতে পাচ্ছিল যে বৃদ্ধ লোকটি তার জীবন সম্পর্কে আরো কিছু জানতে চায়।

‘ঠিক আছে, তাহলে, আমরা একটি সমস্যায় পড়েছি।আমি তোমাকে সাহায্য করতে পারবো না যদি তুমি মনে কর যে তোমার যথেষ্ট সংখ্যক মেষ আছে।’

বালকটি বিরক্ত হয়ে যাচ্ছিল।সে তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করছিল না।এই বৃদ্ধ লোকটি যে কিনা তার মদ থেকে এক গ্লাস পান করতে চেয়েছিল, আর তার পরে কথোপকথকন শুরু করে।

‘আমাকে আমার বইটি দাও,’ বালকটি বলল। ‘আমাকে যেতে হবে আর মেষগুলো এক সাথে জড়ো করতে হবে আর চলে যেতে হবে।’

‘আমাকে তোমার ভেড়ার দশ ভাগের এক ভাগ দাও,’ বৃদ্ধ লোকটি বলল, ‘ আর আমি তোমাকে বলবো, কি করে গুপ্তধন খুঁজে বের করতে হবে।’

বালকটির তার স্বপ্নের কথা মনে পড়ল, আর হঠাৎ করে তার কাছে সবকিছু পরিষ্কার হয়ে গেল।বৃদ্ধ নারীটি কোন মুল্য নেয়নি তার কাছে, তবে এই বৃদ্ধ লোকটি সম্ভবত তার স্বামী ছিল – তাকে এমন কিছুর বিষয়ে তথ্য দিয়েছে যার অস্তিত্ব পর্যন্ত নেই তার বদলে আরো বেশি টাকা নেয়ার একটি পথ খুঁজছিল,

 

পৃষ্ঠা ২৭

বৃদ্ধ লোকটিও হয়তো একজন বেদুঈন ছিল।

কিন্তু বালকটি কিছু বলে উঠতে পারার আগে, বৃদ্ধ লোকটি হেলে গেল, একটি লাঠি তুলে নিল, আর প্লাজার বালিতে লিখতে শুরু করলেন। কিছু একটা উজ্জ্বল প্রতিফলিত হল তার বুক থেকে এমন এক তীব্রতা নিয়ে যা বালকটিকে কয়েক মুহুর্তের জন্য অন্ধ করে দিল। একটি আন্দোলিত হওয়া যা তার মত বয়সের কারো জন্য খুব দ্রুত ছিল, লোকটি তার হাতাহীন কোট দিয়ে ঢেকে ফেলল যাই ছিল এটা।যখন তার দৃষ্টি স্বাভাবিক হয়ে এল, বৃদ্ধ লোকটি যা লিখেছিল বালুতে তা বালকটি পড়তে পারল।

সেখানে, ওই ছোট শহরটির প্লাজার বালুতে, বালকটি তার বাবার নাম পড়ল আর তার মায়ের নাম আর যে বিদ্যালয়ে সে যেত, সেটার নাম। সে ব্যবসায়ীটির মেয়ের নাম পড়ল, যা সে নিজে এখনো জানে না, আর সে এমন কিছু পড়ল যা সে নিজে কখনও কাউকে এখনও বলেনি।

 

পৃষ্ঠা ২৮

‘আমি সালেমের রাজা,’ বৃদ্ধ লোকটি বলল।

‘ একজন রাজা কেন একজন মেষপালকের সাথে কথা বলে?’ বালকটি জিজ্ঞেস করল, বিস্ময় আর বিব্রত হল।

‘অনেকগুলো কারনে। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয় বলা যায়, তা হল তুমি তোমার অদৃষ্ট আবিষ্কার করতে পেরেছ।’

একজন মানুষের অদৃষ্ট কি হতে পারে তা বালকটি জানত না।

‘এটা হলে তুমি যে সবসময় চেয়েছো শেষ পর্যন্ত দেখতে প্রত্যেকে, যখন তারা তরুণ থাকে, তাদের অদৃষ্ট কি তা তারা জানে।’

তদের জীবনের সেই সময়ে, সবকিছু পরিষ্কার আর সবকিছু সম্ভব।তারা স্বপ্ন দেখতে ভয় পায় না, আর আকুল থাকে সবকিছুর জন্য যা তারা তাদের জীবনে ঘটুক দেখতে চায়। কিন্তু, সময় যত অতিবাহিত হয়, একটি রহস্যময় শক্তি তাদেরকে জোর করে বিশ্বাস করাতে শুরু করে যে তাদের জন্য তাদের অদৃষ্ট বোঝা অসম্ভব হবে।

বৃদ্ধ লোকটি যা বলেছিল তা বালকটির কাছে অর্থবোধক ছিল না।কিন্তু সে জানতে চাইল, ‘রহস্যময় শক্তি’ কি ছিল; ব্যবসায়ীর কন্যাকে প্রভাবিত করা যাবে যখন সে তাকে তার অনুভূতি সম্পর্কে বলবে।

 

পৃষ্ঠা ২৯

‘এমনকি এটা একটা কু শক্তির মত করে সামনে আসে, কিন্তু আসলে এটা তোমাকে দেখায় কি করে তোমার অদৃষ্ট তোমাকে খুঁজে বের করতে হবে। এটা তোমার স্পৃহা আর ইচ্ছাশক্তি তৈরি করে, কারন এই গ্রহে একটি মহান সত্যি আছে: তুমি যেই হও না কেন, অথবা তুমি যাই কর না কেন, যখন তুমি সত্যিই কিছু চাও, এর কারন হল ওই ইচ্ছা এই বিশ্ব ব্রক্ষ্মান্ডের আত্মার লালন পালন করে। এটা তোমার জীবনের উদ্দেশ্য এই পৃথিবীতে’

‘এমনকি এখন তুমি যা করতে চাও তা হল ভ্রমন? অথবা কাপড়ের ব্যবসায়ীর কন্যাকে বিবাহ করা?’

‘হ্যাঁ, অথবা সম্পদ খোঁজা। এই বিশ্বের আত্মা মানুষের সুখের দ্বারা পরিপুষ্ট হয়।আর মানুষের অসুখ দ্বারা, ঈর্ষা আর সন্দেহ দ্বারা। একজন মানুষের জন্য তার জীবনের লক্ষ্য বুঝতে পারা হল তার একমাত্র বাধ্যবাধকতা।সব কিছু মিলে এক হয়।’

‘আর যখন তুমি কিছু চাও, পুরো ব্রক্ষান্ড তোমাকে তা অর্জন করাতে চক্রান্ত করে।’

তারা দুজনে বেশ কিছু সময়ের জন্য চুপ করে ছিল, প্লাজা আর শহরের মানুষদের দেখছিল। বৃদ্ধ লোকটি প্রথমে কথা বলল।

‘তুমি কেন একটি মেষপালের তত্ত্বাবধান কর?’

‘কারন আমি ভ্রমণ করতে পছন্দ করি।’

 

পৃষ্ঠা ৩০

বৃদ্ধ লোকটি হঠাৎ প্লাজার একটি কর্নারে তার দোকানের জানালার পাশে দাঁড়ানো রুটির দোকানের দিকে নির্দেশ করল।’ যখন সে একজন শিশু ছিল, ওই লোকটিও ভ্রমণ করতে চেয়েছিল। কিন্তু সে প্রথমে তার রুটির দোকান কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আর কিছু টাকা আলাদা করে রাখতে চেয়েছিল।যখন সে একজন বয়ষ্ক মানুষ, সে আফ্রিকায় একমাস কাটাতে চলেছে।সে কখনও বুঝে উঠতে পারেনি যে মানুষ সব সময় সামর্থ্যবান, তার জীবনের যে কোন সময়ে, যা সে স্বপ্ন দেখে সেই অনুযায়ী কিছু করার।’

‘তার একজন মেষপালক হওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া উচিত ছিল,’ ছেলেটি বলল।

‘ঠিক, সে তা ভেবেছিল,’ বৃদ্ধ লোকটি বলল। ‘ কিন্তু রুটির দোকানের মালিক মেষপালকের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। রুটির দোকানদারের বাড়ি আছে, যখন মেষপালক খোলা জায়গায় ঘুমায়।বাবা মায়েরা তাদের সন্তানদের বিবাহ রুটির দোকানদারের সাথে হোক সেটা দেখতে পছন্দ করবে, মেষপালকের সাখে হওয়ার চেয়ে।’

বালকটি তার হৃদয়ে যন্ত্রণা অনুভব করল, ব্যবসায়ীর কন্যার কথা ভেবে। মেয়েটির শহরে নিশ্চয়ই রুটির দোকানদার ছিল

বৃদ্ধ লোকটি কথা চালিয়ে যেতে থাকল, ‘দীর্ঘ দিন পরে মানুষ মেষপালক সম্পর্কে যা ভাবে আর রুটির দোকানদার সম্পর্কে যা ভাবে তা বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে তাদের নিজেদের ভবিষ্যত ভাগ্যের চেয়ে।’ বৃদ্ধ লোকটি বইয়ের পাতা ওল্টাতে থাকল, আর যে পৃষ্ঠায় এল তা পড়তে পারল না।

error: সর্বসত্ব সংরক্ষিত