ঘুম থেকে ওঠার মতো শরতকাল চলে এল…রোদ্দুরে ডুব খেয়ে আছে চারিদিক। শান্ত হয়ে বসে থাকতে ইচ্ছে করে খুব। এতো রাগ, বুলেট, গুলিগোলার মাঝে অস্থির লাগে। শান্ত হয়ে কথা বলে যারা, তাদের খুঁজে পাই না। ‘অন্ধের স্পর্শের মত’ খুলে বসি। ঘন হয়ে আসে ভুলে যাওয়া সব দিন। পুরোনো পাড়া। বাকল-খসা সম্পর্ক। পুজোর আগে সব ফিরে ফিরে আসে।
মনে পড়ে শেষ বার চকোলেট রঙের জামদানি কেনা হয়েছিল। বাজি কেনা হয়েছিল আমার আগুনের ভয় কমে আসছিল ক্রমে…।
তারপর ঘুড়ি কেটে গেল। শরত মনে করে দেয় সব। মনে পড়ে, ফিরে পাওয়ার কথা। আহা — কী অপরূপ তার আসা। সে যেন এক উদাসীন রাজার ছেলে রূপে আলো সব অন্ধকার এও শরতেরই কথা। প্রথম পুজোতে, সে তামা রঙা সালোয়ার কামিজ কিনে এনেছিল। ফিরোজা-বাদামি-হলুদ ধীরে ধীরে।আবার শরতকাল ফিরে এল, আবার পোস্টম্যান আসার সময় এসে গেল। পুজো দিতে যাবে যারা, আমি তাদের শাড়ি দূর থেকে দেখি। দেখি, ফুলের দাম বেড়ে যাচ্ছে আবার। আবার আগুন জ্বলছে যাদবপুর নামের একতারায়। সুর কেটে গেলেও কেমন গান মনে রেখেছে ওরা মালার মতো দুলছে ওদের মিছিল, আমার শহরের গলায়।
রোদ্দুরের ধার কমে নি এখনও। পুজো এসে যাচ্ছে দ্রুত ফুচকা বিক্রি সেরে টাকা রাখছে মাধবলাল খুচরো গুনেগেঁথে বউয়ের ছাপা শাড়ির নগদ জমা রাখছে চায়ের দোকানি লাল ফুল আঁকা ফ্রক কিনতে ক’টাকা লাগে? জানতে চাইছে চার বছরের আইসক্রিম বিক্রেতা বাবা!
আমি আলতো চোখ মেলি অনেক পেইনকিলার, আন্টি বায়োটিক, আন্টি আলার্জিক পার হয়ে। শরতকাল ফিরে এসেছে, জ্বর এসেছে, ফিরেছে সেও। পুজোও এসে গেল।
এবার একটু শান্ত হয়ে বসো। একটু কাছাকাছি থাকা যাক! পুজো আসছে…। এসো, আসবে?
কবি, চলচ্চিত্র সমালোচক