হাপুগান ও শঙ্খলাগা গোখরো
যাগ যাগ যাগের ঘিনা
আয়লিসে আয়লিসে ভাঙা কোলঙ্গায় পিদিম রেখে,
আমার দুবড়া গালে চুমু খেসে।
বঁধু আমার আসবে বাড়ি
রাত বারোটার গাড়িতে।
এ-র-র-র—
যদি না আনে গহনা,
আমি তার কাছে যাবনা
অমনি কর্তা ছুটবে শ্যেকরা বাড়িতে।।
যাগ যাগ যাগের ঘিনা…
দুই ঠোঁটের উপর বাঁ হাতের তালু রেখে জোরে শব্দ করে ঘুঘলু। তার ডান হাতের তেলচিটে লাঠি দিয়ে সজোরে তিনবার পিঠের উপর আঘাত করে আর বলে, “হেই বাবুমশাইরা যার যা সাধ্যি মোকে দ্যান। আমার হাপুগান যদি ভালো লাগে একটাকা- দুটাকা দ্যান…ও দাদা-দিদিরা…”
দিনসাতেক হল ঘুঘলু শেয়ালদা সেকশানে হাপুগান শুনিয়ে পয়সা রজগার করছে। ওর বয়স পনের। বিকেল পাঁচটা পঞ্চাশের আপ গেদে লোকাল আড়ংঘাটা স্টেশনে থামা মাত্র ঘুঘলু নেমে গেল স্টেশনের একেবারে শেষপ্রান্তে। তারপর বাঁশের ফাটা লাঠিটা কোমরের গামছায় গুঁজে ট্যাক থেকে কয়েকটা দশটাকার নোট বের করে গুনল, এক-দুই-তিন… মোট পনেরটা। বুকপকেট থেকে খুঁচরো কয়েনগুলো বের করে গুনতে লাগল; মোট পঁচিশটা কয়েন। ট্রেনের কামড়ায় প্রাপ্ত কয়েনগুলো অন্যান্য হকারদের দিয়ে নোট করে নেয় সে। টাকাগুলো গোনার পর চোখে মুখে একটা তৃপ্তির ভাব ফুটে ওঠে তার। গুনে আবার ট্যাকে ঢুকিয়ে রাখে সে। প্লাটফর্মের একেবারে শেষ প্রান্তে রঘুর পানের দোকান। ঘুঘলু দকানে এসে দাঁড়াল; তারপর বলল, “একটা গুটখা দ্যাও তো; আর ছোট বিড়ি একবান্ডিল।“
“একটা হাপুগান শুনিয়ে যা!” রঘু বলল।
“শোনাতে পারি, পয়সা লাগবে কিন্তু।”
“তোর সাহস তো মন্দ নয়! আমার কাছে পয়সা চাস! যা ভাগ…”
ঘুঘলু আর দাঁড়াল না সেখানে একটা বিড়ি ধরিয়ে হালকা ধোঁয়া ছাড়তে ছাড়তে স্টেশন ছেড়ে নেমে এলো তাদের ছাউনির কাছে।
নভেম্বরের মাঝামাঝি। দিন ক্রমশ ছোট হয়ে আসছে। এখন তাড়াতাড়ি সন্ধে নামে পাড়াগাঁয়ে। গাছের সবুজ নীড়ে ফিরে আসা বন-বিহগদের কিচির মিচির ডাকে সরব হয়ে ওঠে হেমন্তের সন্ধে।
ঘুঘলুরা যাযাবর-বেদে। ওদের বাড়ি বীরভূমের লাভপুরের শীতল গ্রামে। প্রতি বছর শীতের মুখে এরা ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে পড়ে। ঘুঘলুদের দল এ সময়টা আড়ংঘাটা শটেশোনের ধারে ফাঁকা মাঠে তাঁবু খাটিয়ে আশ্রয় নেয়। প্রায় ছ-মাস এখানে থাকে। দিনের বেলা মেয়ে-মরদ যে যার মত বেরিয়ে পড়ে রজগারের ধান্ধায়। চাঙারি বুনে গৃহস্থ বাড়ির দুয়ারে দুয়ারে ফিরি করে মহিলারা; পুরুষেরা বাঁদর-নাচ অথবা মাদারির খেলা দেখায়। ছোট ছোট ছেলেরা খুব অল্প বয়সে হাপুগান শিখে নেয়। তারপর ট্রেনের কামরায় ছড়া কেটে পিঠে লাঠির আঘাত মেরে মানুষকে মুগ্ধ করে রজগার করে। ওদের মেয়েরাও হাপুগান গায়, তবে নিজের পিঠে লাঠির আঘাত করে নয়; ওদের দেশে গাজনের সময় ঢোল বাজিয়ে বোলান গান গাওয়া হয়; এটাও এক ধরণের হাপুগান। ঘুঘলু ওর বাবার গলায় বোলান গান শুনেছে। কখনো দুর্গা সেজে, আবার কখনো শিবের বেশে নেচে নেচে গাইতো বাবা। বাবার কাছ থেকেই তো এই গান শিখেছে সে। বাবা ওকে আদর করে কাছে টেনে নিতো, দুই গালে চুমু খেত। মাঝে মাঝে বাবার মুখ থেকে বিচ্ছিরি গন্ধ বেরত; পড়ে বুঝেছে ওটা চলাইয়ের গন্ধ। রাতের অন্ধকারে বাবা আর সর্দার জ্যাঠা চলাই নিয়ে বসত ঝপের আড়ালে; ঝিঝি পকার একঘেয়ে সুর ভেদ করে বাবার সেই হেড়ে গলা কানে পৌঁছাত—
…উলকিতে পালকি আঁকা
বুলবুলিতে খায়
ছেলের না বিছেন পেড়ে
নিজে ঘুমায়
যাগ্ যাগ্ খেচাক দম্ …।“
চখদুট জ্বালা করে ঘুঘলুর। শক্ত হাতে লাঠিটা চেপে ধরে নিজের পিঠে বসিয়ে দেয়। মুখে আওয়াজ করে, ‘শালা…’।
ছোট্ট মাঠের চারপাশে একসারি নারকেল গাছ; মাঝে কয়েকটা খেজুর গাছ। বেশ পুরু ঘাসে ঢাকা মাঠে আট-দশটা কালো তাঁবু পড়েছে ঘুঘলুদের। গত তিন বছর ধরে । গত তিনবছর ধরে এই সময়টা এই মাঠেই তাঁবু ফেলে ওরা। সূর্য অঠার আগেই ঘুমভাঙে ওদের। তারপর ভাতে ভাত চাপিয়ে দেয়; আগুন জ্বালে আর গোল হয়ে বসে সেই আগুনে সেঁকে নেয় যে-যার হাত-পা। সকাল আটটার মধ্যে বেরিয়ে পড়ে যে যার গন্তব্যে। কয়েকজনের উপর দায়িত্ব পড়ে কাঠ-খড় সংগ্রহের। পাশেই রেলের কল; সেই কলের জল পান করে ওরা। আবার সেই জলেই রজ স্নান করে; কেউবা কাছের পুকুরে নেমে সাঁতার কাটে। এইভাবে এই ছোট ছোট অর্ধাবৃত্তাকার তাঁবুগুলিতে সকাল হয় আবার সন্ধে নামে।
“ঘুঘলু নয় রে! এত দেরি করলি যে আজ?” সর্দারজ্যাঠা বিস্ময়ের সঙ্গে বলে।
“এই তো পাশের গাছতলায় বসেছিলাম।“ ঘুঘলু বলে।
“তোর মা এসেছিল তোর খোঁজ নিতে।“
“ওর খোঁজের কুনো ধার ধারি না আমি।“
গত বছর দেশের বাড়িতে গাজনের সময় বোর স্টেজে গান করার সময় ওর বাবার মুখ দিয়ে রক্ত ওঠে; হাঁসপাতালে নিয়ে যাবার পথেই মারা যায়। সেই থেকে মাকে আকড়ে ধরে বাঁচার স্বপ্ন দেখেছিল ঘুঘলু। হাপুগানের লাঠিখানা আরও শক্ত করে ধরেছিল; কিন্তু কোথা থেকে যে কী হয়ে গেল! ছ-মাস যেতে না যেতেই ওর মায়ের মনে আবার রঙ ধরল; ওদের গ্রামের একেবারে একেবারে শেষপ্রান্তে মংলা কাকার বাড়ি। মংলা আগেও এ বাড়িতে এসেছে কিন্তু ঘুঘলুর বাপ মারা যাবার পরে মংলার আনাগোনা যেন আরও বেড়ে গেল। মার চোখে যেন কীসের ঝিলিক। হুটহাট করে মংলা কাকা ওদের বাড়িতে এসে উঠত; ঘুঘলুর খোঁজখবর নিত, ওর চুলের ভিতর আঙুল চালিয়ে দিত। কিন্তু মঙ্গলার এই আচরণ ঘুঘলুর একেবারেই পছন্দ হত না। একদিন মাঝরাতে কীসের আওয়াজে ঘুঘলুর ঘুম ভেঙে যেতেই ও আবিষ্কার করল মা আর মংলা কাকার শঙ্খলাগা মূর্তি। বুকের ভেতর তখন মোচড় দিয়ে উঠেছে জিঘাংসা। ও কিছুতেই এই অনাচার সহ্য করবে না। বাপ ওকে বলেছিল, “ঘুঘলু, এই লাঠি তোকে অন্ন জগাবে, আবার এই লাঠিই তোকে শত্রুর হাত থেকে রক্ষা করবে”। হাপুখেলের লাঠিটা হাতের মুঠোয় শক্ত করে সে চলে এলো পাশের ঘরে; তারপর সজোরে মংলার মাথায় সজোরে আঘাত করল। পরের দিন সর্দার জ্যাঠা সকলকে ডাকল। তারপর ঘুঘলুর মায়ের সঙ্গে মংলার নিকে দিয়ে দিল। ঘুঘলু মনে মনে বলল, আমরা বেদে, আমরা যাযাবর; তাই বলে কি এর-ওর বৌ নিয়ে টানাটানি করব? মান্ষে মান্ষে সম্পর্কগুলান সব অলট-পালট হয়ে গেল। কিছুতেই আমি মংলাকে ‘বাবা’ বলে মেনে নিতে পারব না।
সেই থেকে ঘুঘলু থাকে সর্দার জ্যাঠার তাঁবুতে। সর্দারের আর কেউ নেই; তাই ঘুঘলুকে ছেলের মতই ভালোবাসে সর্দার জ্যাঠা।
“কীরে কী সব আসমান-জমিন ভাবিস?” সর্দার জ্যাঠা জিগ্যেস করল।
“জানি না; কতই কী ভাবি। আচ্ছা জ্যাঠা, জেঠিরে তোমার মনে নেই?”
“তারে কি ভোলা যায়? আজ দশ বছর হল সে মোক ছাড়ি জঙ্গলে চলি গ্যাছে। কিন্তু রোজ রাতে ওর কথা মনে জাগে। দিনে তো কাজের ভিতরে থাকি…” জ্যাঠার গলা আবেগে বুঁজে আসে।
“তুমিও তো নিকে করতে পারতে!”
“পারতাম; এখনও পারি। কিন্তু সেই মন আর নেই। এখন রামু আর শামুই আমার সব।“
“ওরা তো বাঁদর।“
“বাদর হলে কী হবে, ওরা আমার মনের দুঃখ বোঝে রে! যেমন বুঝিস তুই। তুইও তো আমার ছেলে রে…” জ্যাঠার চোখ চিকচিক করে ওঠে।
“তোমার সঙ্গে যদি আমার মায়ের নিকে হত, আমি কষ্ট পেতাম না।“ ঘুঘলু বলে।
“ও কথা মুখে আনতে নেই তোর মা কিন্তু তোকে খুব ভালোবাসে।“
“অমন ভালোবাসার মুখে আগুন। ইচ্ছে করে শুয়োরের বাচ্চাদুটকে আগুনে পুড়িয়ে মারি।“
“মংলার উপর তোর এত বিষ কেন রে?”
“তুমিই তো আমার থেকে বেশি জানো। দাঁড়িয়ে থেকে নিকে দিলে ওদের।“ আগুন ঠিকরে বেরিয়ে এল ওর দুচোখ থেকে।
“কী করব বল!”
“তাই বলে যেটা অন্যায়, তাকে পেচ্ছয় দেবো? তুমি কি ভাবছ ঘুঘলু জানে না! তার বাপেরে কেডা বিষ মেশানো মদ খাইয়েছে?” উত্তেজনায় ঘুঘলু থর থর করে কাঁপতে থাকে। সর্দার জ্যাঠা এগিয়ে এসে ঘুঘলুর হাত ধরে।
“ঘুঘলু, শোন মাথা গরম করিস না।“
“তুমি যদি আমার জায়গায় থাকতে কী করতে জ্যাঠা?”
সর্দারের আর কিছুই বলার থাকে না। দুজনে চুপ করে থাকে। কাছেই কোথাও ঝপের আড়ালে একটা শেয়াল ‘হুক্কা-হুয়া’ রবে ডেকে ওঠে। ঘুঘলু বরাবর শান্ত প্রকৃতির; আবার কিছুটা অন্তর্মুখী। ওদের সমাজে নর-নারীর সম্পর্কের বিন্যাস বড় এলোমেলো। ওর এই পনের বছরের জীবনে নিষিদ্ধ ইশারা কম আসেনি। প্রতিবেশীর মেয়ে সমবয়সী খুন্তা যেকোন আছিলায় ওদের বাড়িতে আসে। স্নানের সময় তাদের বাড়িতে আসে। স্নানের সময় ছলনা করে উঠন্ত বুক দেখায়। কিন্তু ঘুঘলু হেলা ভরে সেই ইশারা প্রত্যাখ্যান করে। বরং মায়ের দেওয়া এই যন্ত্রণায় রাতের পর রাত ঘুম হয় না। তখন হাপুর লাঠিখানা আকড়ে ধরে নিজের পিঠে দমাদম পেটাতে থাকে।
ঘুঘলুর মন কাদার মত নরম। ওদের গ্রামে কেউ কেউ সরু বাঁশের লগার উপর গদের আঠা লাগিয়ে গাছের উঁচু ডাল থেকে টিয়াপাখি ধরে। কারো কারো গলায় আবার লাল-কালো সরু রিং থাকে, এগুলকে চন্দনা বলে। গৃহস্থ বাড়িতে ঘুরে ঘুরে অথবা হাটে বসে এই সব পাখি বেচে ওরা। ঘুঘলুর মাঝে মাঝে নিজেকে এই রকম খাঁচায় আবদ্ধ পাখি বলে মনে হয়, দম আটকে আসে। এই জীবন থেকে যদি মুক্তি পেত…। হঠাত ওর ভাবনায় ছেদ পড়ে। হল্লা শুরু হয় উল্টোদিকের তাঁবুতে। ওর প্রায় সমবয়সী কিশোর পচা ওকে ডাক দেয়, “ঘুঘলু ইধার শোন।“
দৌড়ে যায় ঘুঘলু, “কী বলছিস?”
“চলাই টানবি?”
“কুথায় পেলি?”
“ইস্টিশানের এক দুকানে। প্যাকেটের মাল পেপসি।”
“চল টেষ্ট করি, কেমন মাল দেখি।“
ঘুঘলু এখন মাঝে মাঝে চলাই টানে। এতে বুকের জ্বালা কিছুটা প্রশমিত হয়। চলাই খেতে খেতে পচা বলে, “তোর লতুন বাপ আজ লদীর পাড় থিকে দুটো সাপ ধরেছে।”
“তাই নাকি?” ঘুঘলুর চোখে কৌতুক।
“দুটোই গোখরো; সাপদুটো নাকি শঙ্খ লেগে ছিল।“
ঘুঘলু কিছুক্ষণ কী যেন ভাবল; তারপরে বলল, “চলতো, দেখে আসি।“
মংলাকে সে ঘেন্না করে। ওর কাছে গেলেই ঘুঘলুর গা ঘিন ঘিন করে। সেই মংলার তাঁবুতে ও যখন এলো, মংলা তখন কড়কড়ে ভাতে লংকা ডলছে। ওর মা পাশে বসে আছে। ওকে দেখে মংলা ভ্রূ কোঁচকায়, “লাটসাহেব হঠাৎ ইদিকে কী মনে করে?”
“তোর সাথে পিরীত করতে আসিনি, সাপ দেখতি এসেছি।“ ঘুঘলু বলল।
“ঘুঘলুর মা, ঝাঁপিখান খুলে দেখাও ঘুঘলুরে।” মংলা বলল।
ঘুঘলু ঝাঁপির কাছে গিয়ে শুনে সাপের ফোঁস ফোঁসানি। জিগ্যেস করে, কী করবি এই সাপ?”
“খেলা দেখাতে পারি, আবার বিক্রিও করতে পারি; তোর তাতে কী?”
ঘুঘলু মুখ ফিরিয়ে চলে আসতে উদ্যত হয়। পিছন থেকে ওর মা ডাকে, “ঘুঘলু, একবার ইদিক শোন।“
“কী বলবি তাড়াতাড়ি বল।“
“শোলমাছের ঝোল রাঁধছি, খাবি?”
“তোর লতুন ভাতারকে দেগে যা।“ মনের ঝাল মেটানর জন্য মুখঝামটা দেয় সে।
রাতে সর্দারজ্যাঠার তাঁবুতে শুয়ে ভাবতে থেকে ঘুঘলু। কিছুতেই ঘুম আসে না ওর। মাথার মধ্যে আগুন জ্বলতে থাকে ওর।
ভোররাতে হঠাৎ মংলা আর ঘুঘলুর মায়ের চিৎকারে বেদে বস্তির সবাই জেগে ওঠে। “… সাপে কাটে রে! বাঁচাও…।”
“শেকড়-বাকড় তুলে কত রকম ইনিয়ে বিনিয়ে খেলা দেখায় বেদেরা। শেকড়ের স্পর্শে সাপেদের মাথা নিচু হয়, শেকড়ে সাপের বিষ নামে। কিন্তু এসব যে বুজরুকি, তা মংলার চেয়ে আর কেউ ভালো জানে না। কাল দুপুরে চূর্ণিপাড় থেকে যে জোড়া গোখরো ধরেছিল মংলা, কীভাবে যেন তারা ঝাঁপি থেকে বেরিয়ে বারবার দংশন করে মংলা আর ঘুঘলুর মায়ের যুগল শরীরে। সর্দার বেরিয়ে আসে চিৎকার শুনে। কিন্তু কারও কিছু করার আগেই ওদের মুখ থেকে গ্যাজলা বেরিয়ে আসে। একটু আগেই চারটে পাঁচের ডাউন শেয়ালদা লোকাল চলে গিয়েছে ঝমঝমিয়ে। সকালের রামপুর হাটের এক কামরা থেকে অপর কামড়ায় ঘুঘলু তখন হাপু গাইছে বগল বাজিয়ে, আর নিজের পিঠে লাঠির আঘাত করে আর বলে,
রসা—
জাল মাছের খোসা
শাশুড়ি-বৌ ল্যায় করেছে
ঘর সুমুদি গোসা।
মোষ কেন কালো
হোকনা কেন কালো বেয়ান
মাঘ-ফাগুনে ভালো
কালো হোক, খেদা হোক
সব সইতে পারি
নাগ তুলে তুলে কথা কয়
সেই জ্বলনে মরি
এ—র—র—র…।
জন্ম ১৯৭৪। শিক্ষাগত যোগ্যতা বাংলায় এম এ, বিএড। পেশায় শিক্ষক। আকৈশোর সাহিত্যপ্রেম। ছাত্রজীবনে কবিতা ও প্রবন্ধ দিয়ে লেখালেখির শুরু।